­
­
মঙ্গলবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৫ খ্রীষ্টাব্দ | ১৬ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সর্বশেষ সংবাদ
ইউরোপ ও যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে রফতানিতে চমক: চীনের ঘাটতি পূরণ করছে বাংলাদেশ  » «   কানাডায় লিবারেলদের জয়, কী কারণ  » «   রাখাইনের জন্য করিডর বাংলাদেশের জন্য কী ঝুঁকি তৈরি করতে পারে?  » «   ইউরোপ ৪ দেশ বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন!  » «   ডলারের বিপরীতে টাকার মান বৃদ্ধি  » «   বিশ্বে সামরিক ব্যয় রেকর্ড বেড়ে ২.৭ ট্রিলিয়ন ডলার  » «   নতুন এক লাখ ১৩ হাজার রোহিঙ্গার অনুপ্রবেশ  » «   ৬০ টন পণ্য নিয়ে সিলেট থেকে উড়ল প্রথম কার্গো ফ্লাইট  » «   রাখাইনে মানবিক সহায়তায় শর্তসাপেক্ষে করিডোর দিতে রাজি সরকার  » «   শেখ হাসিনাকে ‘চুপ’ রাখতে পারবেন না বলে জানান মোদি  » «   ‘জন্মই আমার আজন্ম পাপ’ কবিতার কবি দাউদ হায়দার আর নেই  » «   গুজরাটে ১ হাজারের বেশি বাংলাদেশি আটক  » «   ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা কোন দিকে মোড় নিতে পারে?  » «   পাকিস্তানের আছে ১৫০টি পরমাণু বোমা, ভারতের কত?  » «   কাশ্মীর নিয়ে ভারত আর পাকিস্তানের লড়াইয়ের কারণ কী?  » «  

বাংলাদেশে ঘরে থাকার আকুতি জানিয়ে যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসীর খোলা চিঠি



 

প্রিয় বাংলাদেশ,

তোমার সন্তানেরা বিশ্বের কোথাও আজ সুখে নেই। করোনা ভাইরাস একে একে কেড়ে নিচ্ছে  প্রিয় মুখ। প্রিয়জন। প্রতিবেশী। আমাদের সুখ শান্তি।

কোভিক-১৯ আজ তোমার বুকেও তার  ঠিকানা বানাচ্ছে।  একে একে লক ডাউন হয়েছে জেলা থেকে উপজেলা, উপজেলা থেকে ইউনিয়ন, ইউনিয়ন থেকে গ্রাম।পাড়া- মহল্লা। শুরু হয়েছে সবদিকে চরম নির্মমতা ।

তোমার জন্য আমাদের  চিন্তার শেষ নেই। কষ্ট  বয়ে বেড়ানোর শক্তি হারাচ্ছি দিন দিন। কারণ একটাই, আমার মাতৃভূমিই আমার হৃদস্পন্দন। আমার নাড়ী। আমি যেখানেই থাকি না কেন- বাংলাদেশই  আমার প্রাণ। আমার অক্সিজেন এর মতো।

প্রিয় বাংলামায়ের সন্তান,

বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া অন্তত্ এই কিছু দিন  ঘরে থাকুন। বাইরে মৃত্যুর হাতছানি।রাক্ষসের চেয়েও ভয়ন্কর মৃত্যু থাবা নিয়ে কোবিক ১৯ বসে আছে সবখানে। রাক্ষস একজনকে মারে। করোনা ছড়ায় একজন থেকে শতজনে, অল্প সময়ে। এই তথ্যটি বাংলাদেশের জনগণ জানে না- এমন কী কেউ এখনও আছেন?

বিশ্বের ক্ষমতাসীনরা অসহায় এর মত আকাশের দিকে চেয়ে আছে, যদি কোন সাহায্য উপর থেকে আসে।  বাংলাদেশের মানুষ  কি দেখতে পাচ্ছেনা- স্পেন, ইতালী, চীন, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্যের গণকবর।  জাতি ধর্ম বর্ণের মৃত মানুষের সারি সারি লাইন। অপেক্ষায় আছে কখন, কোনদিন হবে  তাদের স্বজনদের কবর।

মানুষ কী সংবাদপত্রে, গণমাধ্যমে  দেখতে পাচ্ছে না  দশ বারো বছরের সন্তানদের নিয়ে অসুস্থ মার মর্মস্পর্শী সংগ্রাম। দিনের পর দিন ঘরে থেকে করোনার সাথে লোমহর্ষ যুদ্ধ করে পরাজিত হবার কথা। একই ঘরে পড়ে থাকা পিতার লাশ রেখে, অন্যঘরে করোনা ভাইরাসের সাথে সংগ্রাম করছে বাকী সন্তানরা। ভাগ্যে জুটছেনা প্রিয়জনের মৃতদেহ শেষ বারের মতো ছোয়ে  দেখার সুযোগও।

বাংলাদেশিরা নিশ্চয় গণমাধ্যমে দেখছেন-  হাসপাতালে রোগীদের চিকিৎসা সেবা দিয়ে ডাক্তার নার্স কেয়ারারও আক্রান্ত এবং  মৃত্যুর মিছিলে তাদের নামও দীর্ঘ হচ্ছে।

প্রিয় বাংলাদেশী,

আমরা জানি- আমাদের দেশের তরুন সমাজ   অনেক তথ্য পৃথিবীর বহু দেশের আগেই তথ্যপ্রযুক্তির কল্যাণে জানতে পারে। তবে কেন এই কোভিক-১৯ নিয়ে আমাদের এতো অবহেলা।

বর্তমান অবস্থা দেখে মনে হচ্ছে সবাই অন্যের সমালোচনা নিয়ে ব্যস্ত। কে স্বাস্থ্য নির্দেশনা মানছে না, কে দল বেধেঁ কোথায় গেছে বা যাচ্ছে, কার ছেলে ঢাকা- চট্রগ্রাম- সিলেট দৌড়াচ্ছে- ইত্যাদি বলে যেন নিজের দায়িত্ব পার করছেন। অথচ নিজে এবং নিজের পরিবারকে নিয়ে হোম কোরাইন্টেনে থাকার চিন্তাতেই নেই।

মনে হয় তাকে ও তার পরিবার থেকে শতমাইল দূরে থাকার কথা করোনা আগেই জানিয়ে গেছে। তাই করোনা দূর্যোগে এখন তার দায়িত্ব শুধু অন্যের নেতিবাচক সমালোচনা ও দুর্বলতাগুলোকে নিয়েই খোশগল্পে থাকা।

প্রিয় বাংলাদেশ,

প্রবাসে করোনা মহামারিতে আমরাও আটকে আছি। চারদিকে আক্রান্তদের তালিকার সাথে যুক্ত হচ্ছে আপনজন হারানোর বেদনা। শোকের মাতমও। এই দূ:সময়ে বলতে গেলে আমাদের কষ্টের মাঝে যুক্ত আছে প্রিয় বাংলাদেশ।

আমরা যেমন আমাদের নিয়ে চিন্তায় দিন পার করছি। তেমনি বাংলাদেশকে নিয়েও আমাদের সমান চিন্তা। মাতৃভূমি ভালো থাকলে পৃথিবীর সব দেশের সন্তানরাও সুখে থাকে।

প্লিজ ঘরে থাকুন। আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হয়ে  শতভাগ স্বাস্থ্য নির্দেশনা মেনে চলনু । পরিবার পরিজনদেরও এই নির্দেশনা মেনে চলতে ঘরে থেকেই বুঝিয়ে বলুন। বৃদ্ধ বাবা-মা ও শিশুদের প্রতি বাড়তি যত্ন নেয়া এই সময়ে সবচেয়ে বড় কর্তব্য- এই বিষয়টি  প্রবাসীদের চেয়েও অনেক ক্ষেত্রে  বাংলাদেশিরা ভালো জানেন। নিজেকে সময় দিন। প্রার্থনায় থাকুন-অন্যদেরও রাখুন।

আমাদের প্রার্থনায় সব সময় আছে মাতৃভূমি বাংলাদেশ।

মোহাম্মদ জাহেদ মাহমুদ সুমন : সংগঠক , মিশিগান স্টেট, যুক্তরাষ্ট্র  প্রবাসী।

 

সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন

"এই বিভাগে প্রকাশিত মতামত ও লেখার দায় লেখকের একান্তই নিজস্ব " -সম্পাদক

সাবস্ক্রাইব করুন
পেইজে লাইক দিন