ইতালির রাজধানী রোমে বর্ণাঢ্য আয়োজনে বিশ্ব সিলেট উৎসব-২০১৯ অনুষ্ঠিত হয়েছে। জালালাবাদ এসোসিয়েশন ইতালি আয়োজিত এই উৎসবে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ সরকারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডক্টর এ.কে আব্দুল মোমেন।
শুরুতে বিশ্ব সিলেট উৎসব এর শুভ উদ্বোধন ঘোষণা করেন জালালাবাদ এসোসিয়েশন ঢাকা কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি ও উৎসবের বিশেষ অতিথি- ড.এ. কে. আব্দুল মুবিন।
এছাড়াও বিশেষ অতিথি ছিলেন ইতালিতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত আবদুস সোবহান সিকদার,ইউকে জালালাবাদ এসোসিয়েশনের সভাপতি মুহিবুর রহমান মুহিব, বাহরাইন জালালাবাদ এসোসিয়েশনের সভাপতি কায়েশ আহাম্মেদ।
২৭ অক্টোবর, রবিবার আনন্দমুখর পরিবেশে রোমের স্থানীয় একটি গির্জা হলে জালালাবাদ এসোসিয়েশন ইতালির সভাপতি অলি উদ্দিন শামীমের সভাপতিত্বে ও মাহিদুল ইসলাম মুকুলের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত হয়।
প্রধান অতিথি বাংলাদেশ সরকারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডক্টর এ.কে আব্দুল মোমেন বলেছেন,‘প্রবাসীদের রেমিট্যান্স বৃদ্ধির ফলে বাংলাদেশের রিজার্ভ কয়েকগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। আগে সাড়ে ৩ বিলিয়ন রিজার্ভ ছিল ।এখন ৩৩ বিলিয়ন হয়েছে। প্রবাসীদের রেমিটেন্সে রপ্তানি আয় অনেক বেড়েছে। বাংলাদেশ এখন আর টানাটানির মধ্যে নেই। আমরা এখন ভালো অবস্থানে আছি।’
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. আব্দুল মোমেন বলেন,‘প্রবাসীদের সম্পৃক্ততা বাড়ানোর জন্য আমরা একটা প্রস্তাব দিয়েছি ,যার নাম-রাইপেন। এর মানে হলো রেমিট্যান্স। কারণ আপনারা বাংলাদেশী প্রবাসীরা দেশে অর্থ প্রেরণ করার কারণেই কেবলমাত্র আমাদের দেশের অর্থনীতির চাকা এখন খুব ভালো অবস্থানে রয়েছে। এক সময় বিশ্বের কাছে দরিদ্র ও অভাবী দেশ হিসেবে পরিচিত বাংলাদেশে এখন আর কেউ না খেয়ে মরবে না। অর্থনৈতিক চাঙ্গাভাবের জন্য বিশ্বের কাছে বাংলাদেশ একটি আদর্শ।’
তিনি আরও বলেন,২০৩০ সালের মধ্যে পিছনের সব লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করবে বাংলাদেশ এবং ২০৪১ সালে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন- আমাদের স্বপ্ন পূরণ হয়ে দেশটি হবে সোনার একটি বাংলাদেশ।
প্রধান অতিথি পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ,কে আব্দুল মোমেন জালালাবাদ অ্যাসোসিয়েশন এর সমাজবান্ধব সাংগঠনিক কাজের ভূয়সি প্রশংসা করে বলেন- জালালাবাদ এসোসিয়েশন দল-মত-নির্বিশেষে সিলেটবাসীদের সংগঠন। আমার বিশ্বাস আগামীতেও দেশে এবং প্রবাসে বসবাসরত সিলেটিরা নিজ অঞ্চলের ঐতিহ্যবাহী সংগঠনের মাধ্যমে সমাজ উন্নয়নে ধারাবাহিকভাবে কাজ করবে।
উৎসবে আরও বক্তব্য রাখেন ইতালিতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত আব্দুস সোবাহান সিকদার। তিনি তার বক্তব্যে বলেন, ‘পাসপোর্ট নিয়ে আপনাদের যে সমস্যা আছে তা অচিরেই দূর হবে। আপনারা পাসপোর্টের সমস্যা নিয়ে আগে অনেক সমস্যায় পড়েছেন কারণ ইমেইলের মাধ্যমে অ্যাপয়েন্টমেন্ট নিতে হতো। যারা কম্পিউটারে তেমন কিছু বুঝেন না তাদের অ্যাপয়েন্টমেন্ট নিতে সমস্যা হতো অথবা এজন্য বাড়তি পয়সা খরচ করে সেটা বাইরে থেকে কারো সাহায্যে করতে হতো। আগামীর এই সেবাটি রোম বাংলাদেশ দূতাবাস আন্তরিকতার করে দিবে।
উৎসবে অতিথি হিসাবে আরও বক্তব্য রাখেন-জালালাবাদ এসোসিয়েশন সভাপতি অলি উদ্দিন শামীম, জালালাবাদ এসোসিয়েশন ইউকের সভাপতি মুহিবুর রহমান মুহিব, সাধারণ সম্পাদক আমিনুল হক জিল্লু, সহসভাপতি আবুল কালাম আজাদ ছোটন, বাহরাইন জালালাবাদ এসোসিয়েশন এর প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি কয়েছ আহমেদ।
এছাড়াও অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন জালালাবাদ এসোসিয়েশন ইতালির সাংগঠনিক সম্পাদক- শাহ আলম,সহ-আইন সম্পাদক- সৈয়দ হাফিজ উদ্দীন, ইতালি আওয়ামী লীগের সভাপতি হাজি ইদ্রিস ফরাজি, সাধারণ সম্পাদক হাসান ইকবাল।
অনুষ্ঠানে জালালাবাদ এসোসিয়েশন ইউকে থেকে উপস্থিত ছিলেন সহসাধারণ সম্পাদক মুহিব উদ্দিন চৌধুরী, প্রচার, প্রকাশণা ও গণযোগাযোগ সম্পাদক মোহাম্মদ আব্দুল মুনিম জাহেদী ক্যারল, দপ্তর সম্পাদক শামীম আহমদ, আন্তর্জাতিক বিষয়ক শাহরিয়ার আহমদ সুমন, নির্বাহী সদস্যরা জাহাঙ্গীর খান, মোহাম্মাদ আব্দুল ওদুদ দীপক ও বাহার উদ্দিন।
এছাড়াও আরো উপস্থিত ছিলেন ধূমকেতুর স্বত্বাধিকারী নুরে আলম সিদ্দিকী বাচ্চু, সাবেক ইতালি বিএনপি’র সভাপতি শাহ তাইফুর রহমান ছোটন, সাধারণ সম্পাদক সাব্বির আহমেদ , ইতালি ছাত্রলীগ,ইতালি বঙ্গবন্ধু শিশু কিশোর মেলা , নেপলী আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ সহ রাজনৈতিক,সামাজিক,সাংস্কৃতিক ও সাংবাদিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।
উৎসবের দ্বিতীয় পর্বে অনুষ্ঠিত হয় এক মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।