টাওয়ার হ্যামলেটস কাউন্সিল কর্তৃক অভিযুক্ত হওয়ার পর, ২০২৪ সালের নভেম্বর মাসে মোট ১৫টি অপরাধের জন্য তারা দোষী সাব্যস্ত হন। সাউথওয়ার্ক ক্রাউন কোর্ট গত সোমবার এবং মঙ্গলবার (২৪ এবং ২৫ মার্চ ২০২৫) বিভিন্ন মেয়াদে পাঁচজনকে সাজা প্রদান করে।
টাওয়ার হ্যামলেটস কাউন্সিলের ট্রেডিং স্ট্যান্ডার্ড অফিসাররা এসব অসাধু লেটিং এজেন্টদের বিরুদ্ধে একটি ব্যাপক তদন্ত পরিচালনা করেন। এরই ফলশ্রুতিতে এই সাজা প্রদান করা হয়েছে। অফিসাররা দৃঢ়তা এবং সাহসিকতার সাথে এসব খারাপ লেটিং এজেন্টদের অনুসরণ করেছিলেন, যারা বিভিন্ন নামে কোম্পানি খুলেছিলো। পরবর্তীতে অভিযান পরিচালনার মাধ্যমে লেটিং এজেন্টদের অবৈধ এবং অন্যায্য কার্যক্রমগুলোর প্রমাণ জব্দ করা হয়। বাসিন্দাদের করা অভিযোগগুলোর পরিপ্রেক্ষিতেই অভিযানটি পরিচালনা করা হয়েছিল।
লেটিং এজেন্টরা বিশেষ করে কম বয়সী এবং যুক্তরাজ্যে আগত নতুন ওয়ার্কার এবং ছাত্র-ছাত্রীদের টার্গেট করেছিল, যারা সম্প্রতি লন্ডনে এসেছিলেন এবং ইউকে লেটিং মার্কেটে অভ্যস্ত ছিলেন না।
লেটিং এজেন্টরা বিভিন্ন ধরনের অন্যায্য এবং বেআইনি লেটিং প্রথার উপর নির্ভর করত, যার মধ্যে রয়েছে: ভাড়াটেদের আমানত নিরাপদে রক্ষা করতে ব্যর্থ হওয়া বা ফেরত দিতে অস্বীকার করা, স্পেয়াররুমের মতো প্ল্যাটফর্মে বিভ্রান্তিকর বিজ্ঞাপন দেওয়া এবং শর্টহোল্ড টেন্যান্সি চুক্তির পরিবর্তে দখলের লাইসেন্স প্রদান করা, যাতে ভাড়াটেদের আইনি অধিকার অস্বীকার করা যায় বা তা থেকে তাদেরকে বঞ্চিত করা যায় (যেমন আদালতের আদেশ ছাড়াই উচ্ছেদ থেকে প্রটেকশন।)
তারা নিয়মিত রুমগুলোর “লোভনীয়” বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে আগ্রহীদের টোপ দিত, যেখানে তারা সুন্দর রুমগুলোর বিজ্ঞাপন দিত এবং টেনেন্টরা সম্মত হওয়ার পর এবং আমানত প্রদান করার পর, তাদেরকে এই দুর্বৃত্ত বা অসাধু লেটিং এজেন্টরা অপেক্ষাকৃত নিম্নমানের রুমের প্রস্তাব দিতো। ভুক্তভোগীদের মধ্যে এমনও ব্যক্তিরা ছিলেন যারা সুটকেস হাতে নিয়ে মাত্রই যুক্তরাজ্যে পৌঁছেছিলেন, যারা আসল এগ্রিড প্রোপার্টিতে উঠছেন, এমন আশায়।
দণ্ডাদেশ এবং সাজার সারাংশ:
• মোহাম্মদ মঈনুল হককে তিন বছর পাঁচ মাসের তাৎক্ষণিক হেফাজত দেওয়া হয়েছে এবং ১০ বছরের জন্য তিনি পরিচালক হিসেবে অযোগ্য থাকবেন। তিনি প্রতারণামূলক ব্যবসায় ৪টি এবং ২০০৮ সালের কনজিউমার প্রটেকশন ফ্রম আনফেয়ার ট্রেডিং রেগুলেশন (Consumer Protection from Unfair Trading Regulations, 2008) লঙ্ঘনের জন্য ২টিতে দোষী সাব্যস্ত হন। মোহাম্মদ মঈনুল হক, যিনি ৮টি অভিযোগে অভিযুক্ত ছিলেন, তিনি বেশ কয়েকটি ব্যবসা পরিচালনা করেছিলেন যেগুলি প্রতারণামূলক কার্যক্রমের বাহন ছিল। এভিডেন্সের মাধ্যমে প্রমাণিত হয়েছে, যথেষ্ট পরিমান অর্থ তার ব্যক্তিগত অ্যাকাউন্ট এবং কোম্পানির অ্যাকাউন্টের মধ্যে স্থানান্তরিত হয়েছে। এছাড়াও অর্থের লেনদেন হয়েছে এমন সব কোম্পানিতে যা তিনি নিজে চালাতেন বা ঐসব কোম্পানিতে তার ইন্টারেস্ট ছিল।
• হকের প্রাক্তন স্ত্রী ফাতেমা বেগমকে ৪ মাসের কারাদণ্ড (৬ মাসের জন্য স্থগিত), ৩ মাসের কারফিউ এবং ২ বছরের ব্যবসায়িক অযোগ্যতার শাস্তি দেওয়া হয়েছে। তিনি প্রতারণামূলক ব্যবসার ১টি অপরাধে দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন।
• গনজালো গোমেজ এগিয়াকে ২ বছরের হেফাজত (কাস্টডি), ১৮০ ঘন্টা অবৈতনিক কাজ, এবং ৪ বছরের জন্য ব্যবসা পরিচালনায়
অযোগ্যতার শাস্তি দেওয়া হয়েছে। গঞ্জালো ২টি ব্যবসার একজন ম্যানেজার ছিলেন এবং ২টি প্রতারণামূলক ব্যবসার জন্য দোষী সাব্যস্ত হন।
• রাজউর রহমান অলিকে ৯ মাসের কারাদণ্ড (১২ মাসের জন্য স্থগিত),৩ মাসের কারফিউ, এবং ৪ বছরের অযোগ্যতা দেওয়া হয়েছে। তিনি তার কোম্পানি ব্যারনস লন্ডন লিমিটেডের অধীনে প্রতারণামূলক লেনদেনের জন্য দোষী সাব্যস্ত হন। এছাড়াও ২০০৮ সালের কনজিউমার প্রটেকশন ফ্রম আনফেয়ার ট্রেডিং রেগুলেশনের (Consumer Protection from Unfair Trading Regulations 2008) অধীনে ১টি অপরাধে দোষী সাব্যস্ত হন।
• নজির আহমেদকে ৪ মাসের জেল (১২ মাসের জন্য স্থগিত), ১৫০ ঘন্টা অবৈতনিক কাজ এবং ২ বছরের অযোগ্যতা প্রদান করা হয়েছে। তার কোম্পানি যা রুমশেয়ার লিমিটেডের অধীনে কাজ করে, তিনি ২০০৮ সালের কনজিউমার প্রটেকশন ফ্রম আনফেয়ার ট্রেডিং রেগুলেশনের (Consumer Protection from Unfair Trading Regulations 2008) অধীনে ২টি অপরাধের জন্য দোষী সাব্যস্ত হন।
টাওয়ার হ্যামলেটসের নির্বাহী মেয়র লুৎফুর রহমান বলেন,
“আজকের শাস্তি দুর্বৃত্ত তথা অসাধু এবং খারাপ লেটিং এজেন্ট এবং বাড়িওয়ালাদের জন্য একটি শক্তিশালী সতর্কবাণী হিসাবে কাজ করবে। কাউন্সিল তাদের পাশে দাঁড়াবে না, কারণ তারা টেনেন্টদের সুরক্ষার জন্য ডিজাইন করা আইনগুলিকে লঙ্ঘন করেছে এবং আমাদের রেসিডেন্টদের ঝুঁকির মধ্যে ফেলেছে ৷ ভাড়া দেওয়া সম্পত্তিগুলি সঠিকভাবে উপস্থাপন করা হয় তা নিশ্চিত করা এবং সমস্ত প্রাসঙ্গিক নির্দেশ মেনে চলার জন্য লেটিং এজেন্ট এবং বাড়িওয়ালারা দায়বদ্ধ। আমাদের রেসিডেন্টদের শোষণ করলে বা তাদের নিরাপত্তা বিপন্ন করলে, কাউন্সিল আপনাকে বিচারের আওতায় আনার জন্য যা যা করা দরকার তার সবই করবে।
“যারা আদালতে তাদের অভিজ্ঞতা শেয়ার করেছেন, কীভাবে এই বেআইনি এবং বিভ্রান্তিকর কার্যক্রমগুলো তাদের জীবনকে প্রভাবিত করেছে তার উপর আলোকপাত করেছেন – আমি সেসকল অভিযোগকারীদের প্রতি আমার আন্তরিক কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করতে চাই।”
“আরো ধন্যবাদ দিতে চাই ট্রেডিং স্ট্যান্ডার্ড কাউন্সিল অফিসারদের, ন্যাশনাল ট্রেডিং স্ট্যান্ডার্ড অফিসারদের এবং লিগাল টিমকে।
দুর্বৃত্ত বাড়িওয়ালাদের ও খারাপ এজেন্টদের, যারা লাভের জন্য আইনকে অবহেলা করে, তাদেরকে দমন করার জন্য এই মামলাটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ ছিল। আর এসব অবৈধ কার্যক্রমগুলো ক্ল্যাম্প ডাউন করতে আমরা দৃঢ়প্রতিজ্ঞ।”
মামলার পটভূমি:
বছরের পর বছর ধরে, দুর্বৃত্ত লেটিং এজেন্টরা একটি নৃশংস চক্র পরিচালনা করেছিল। তারা অসংখ্য অভিযোগ পাওয়ার পর একটি কোম্পানি বন্ধ করে দিত, এবং দ্রুতই ভিন্ন একটি নামে নতুন একটি কোম্পানি প্রতিষ্ঠা করে তাদের অবৈধ কার্যকলাপ চালিয়ে যেত। এই পুরো সময়ে, একই ব্যক্তিরা এই কর্মকান্ডে জড়িত ছিল এবং এই কাজে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই ২২০ বো কমন লেইন ঠিকানাটি ব্যবহার করা হয়েছিল।
২০১৭ সালে, কাউন্সিল সিটিসাইড প্রপার্টিজ লিমিটেড নামে একটি লেটিং এজেন্সির বিরুদ্ধে আনফেয়ার লেটিং প্রাকটিসের অভিযোগ পায়।
ক্রমবর্ধমান অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে, সিটিসাইডের মিঃ হক ফ্লিন্টনস নামে একটি নতুন কোম্পানি চালু করেন।
ফেব্রুয়ারী ২০১৮ সালের মধ্যে, ফ্ল্যাটশেয়ারিং লিমিটেড, যা ফ্লিনটস হিসাবে ব্যবসা করছিলো, তা একটি প্রধান প্রসিকিউশন মামলার কেন্দ্রীয় অংশ হয়ে ওঠে। এর কর্মীদের নানা নেতিবাচক কর্মকাণ্ডের ফলে কনজিউমাররা অ্যাকশন ফ্রড এবং সিটিজেনস অ্যাডভাইস কনজিউমার সার্ভিসের কাছে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক অভিযোগ তুলে ধরেন। এছাড়াও প্ল্যাটফর্ম অপারেটর যেমন স্পেয়াররুম কিংবা প্রোপার্টি ওমবাডসমেনেই কাছেও ঘন ঘন অভিযোগ আসতে থাকে। আর এ কারণেই ব্যবসাটি ন্যাশনাল মিডিয়ার দৃষ্টি আকর্ষণ করে, যার পরিপ্রেক্ষিতে টাওয়ার হ্যামলেটস কাউন্সিল ২০১৯ সালের আগস্ট মাসে তাদের অফিসে অভিযান চালিয়ে কম্পিউটারগুলি জব্দ করে।
যদিও ফ্লিন্টনস ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারী মাসের কাছাকাছি সময়ে লেনদেন বন্ধ করে দিয়েছিল, তবে জব্দ করা সামগ্রী বিশ্লেষণ করে ব্যারনস লন্ডন লিমিটেড এবং রুমশেয়ার লিমিটেডসহ (মেফিল্ডস হিসাবে ব্যবসা করছিলো) অন্যান্য কোম্পানিগুলোর সাথে ফ্লিন্টনসের আরও ব্যবসায়িক সংযোগ উন্মোচিত হয়েছিল।
ন্যাশনাল ট্রেডিং স্ট্যান্ডার্ডস ট্রাই রিজিওন ইনভেস্টিগেশন টিমের সমর্থিত বিচারকাজটি শুরু হয়েছিল ৮ই এপ্রিল, ২০২৪ সালে। জড়িতদের ২০২৪ সালের নভেম্বরে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছিল।
লিখিত,মৌখিক কিংবা বিদেশ থেকে ভিডিও লিঙ্কের মাধ্যমে প্রায় ৪০ জন অভিযোগকারী সাক্ষ্য দিয়েছেন এবং আদালতে বিস্তারিত জানিয়েছেন কিভাবে এই অসৎ কোম্পানিগুলো তাদের ওয়েলবিং এবং আর্থিক অবস্থায় নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছিল। স্পেয়াররুমও (spareroom.co) বিভ্রান্তিকর বিজ্ঞাপন, হোল্ডিং ডিপোজিট ফেরত দিতে ব্যর্থতা এবং সমস্যাগুলির সমাধান ইত্যাদি বিষয়ে আদালতে বিস্তারিত প্রমাণ সরবরাহ করেছে। অভিযোগকারী এবং কর্মকর্তাদের কাছ থেকে সাক্ষ্যের পাশাপাশি, স্পেয়াররুমের প্রমাণটিও দোষী সাব্যস্ত করার ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে।
২০২৪ সালের নভেম্বরে নিকোলা ক্রিস্টিনেল-স্ট্যান বলেছিলেন:
“আমি এমন একটি উচ্ছেদের শিকার যা বেআইনি, ইমোশনালী এবং ফিনান্সিয়ালি এটি ছিল অত্যন্ত কষ্টদায়ক। কোনো সতর্কতা ছাড়াই বাড়িতে এসে আমাদের রুম খালি দেখতে পাওয়াটা ছিল অত্যন্ত বিধ্বংসী; অবমাননা করে আমাদের হোমলেস করা হয়েছে। আমাকে ধাক্কা দেওয়া হয়েছিল এবং এজেন্সির লোকজন মৌখিকভাবে হয়রানি করেছিল, অসম্মান করা হয়েছিল, নির্মম আচরণ করা হয়েছিল , যা আমার মানসিক স্বাস্থ্যকে মারাত্মকভাবে প্রভাবিত করেছিল। আমি অনেক আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছিলাম এবং জরুরি একোমোডেশনের জন্য আমাকে বন্ধুদের উপর নির্ভর করতে হয়েছিল যা ব্যাঘাত ঘটিয়েছিল আমার কাজ এবং দৈনন্দিন জীবনে। এই কঠিন পরীক্ষা সিস্টেমের প্রতি আমার মোহভঙ্গ ঘটিয়েছে, যে সিস্টেম টেনেন্টদের রক্ষা করবে বলে আমি বিশ্বাস করতাম। পজেশন লস, ইমোশনাল ট্রমা এবং চলমান আর্থিক চাপ আমাকে অনেক দিন বহন করতে হবে।”
২০২৪ সালের নভেম্বরে জিব্রিল সাইন কথা বলতে গিয়ে বলেছিলেন:
“প্রথমেই বলতে হবে, তাদের এই অবৈধ কর্মকাণ্ডগুলো আমাকে হোমলেস বানিয়েছে, আমাকে প্রতারিত করেছে, আমার পকেট খালি করেছে আর তীব্র ঠান্ডার মাঝে আমাকে রাস্তায় নামিয়ে দিয়েছে। শুধু বেড এন্ড ব্রেকফাস্টের জন্য আমাকে একাউন্ট থেকে ওভারড্রাফট সুবিধা ব্যবহার করতে হয়েছিল, পরবর্তীতে সে সুবিধাটিও শেষ হয়ে যায়। আমি যে কলেজ কোর্সে সাইন আপ করেছিলম তাও হারিয়ে ফেলেছি যেহেতু আমার থাকার জন্য নির্দিষ্ট কোনও ঠিকানা ছিল না। একটি বছর হারিয়ে আবার শুন্য থেকে শুরু করতে হয়েছে। নগদ অর্থ দিয়ে আপনি কখনোই এই ধরনের ক্ষতির মূল্য নির্ধারণ করতে পারবেন না।
লর্ড মাইকেল বিচার্ড (চেয়ার, ন্যাশনাল ট্রেডিং স্ট্যান্ডার্ড) বলেছেন:
“আন্তর্জাতিক ওয়ার্কার এবং স্টুডেন্ট, যারা যুক্তরাজ্যে মাত্রই এসেছিল এবং রেন্টাল মার্কেটের সাথে অপরিচিত ছিল, তাদের ইচ্ছাকৃতভাবে শোষণ করা হয়েছিল। অনেকের পকেট অবৈধভাবে খালি করা হয়েছিল এবং তাদেরকে চুক্তির দুষ্ট চক্রে আটকানো হয়েছিল। আমি ট্রেডিং স্ট্যান্ডার্ড অফিসারদের ধন্যবাদ ও অভিনন্দন জানাতে চাই যাদের কাজ এই গ্যাংকে বিচারের মুখোমুখি করেছে।
আপনি বা আপনার পরিচিত কাউকে এই ধরনের রেন্টাল স্ক্যাম বা ভাড়া কেলেঙ্কারির মাধ্যমে লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছে বলে সন্দেহ করলে দয়া করে ০৮০৮ ২২৩ ১১৩৩ নম্বরে কল করে সিটিজেনস অ্যাডভাইস কনজিউমার সার্ভিসে রিপোর্ট করুন ৷ রেন্টাল স্ক্যাম বা ভাড়া কেলেঙ্কারি থেকে কীভাবে নিজেকে রক্ষা করবেন সে সম্পর্কে পরামর্শের জন্য, অনুগ্রহ করে অ্যাকশন ফ্রড ওয়েবসাইটে ভিসিট করুন৷”
স্পেয়াররুমের কমিউনিকেশন ডিরেক্টর ম্যাট হাচিনসন বলেছেন:
“যদিও আমরা গর্বিত যে আমরা একটি মামলা নিষ্পত্তি করার জন্য কর্তৃপক্ষকে সমর্থন করতে পেরেছি, তবে এতে আজ কোন বিজয়ী নেই। ক্ষতিগ্রস্থরা, যারা কেবল থাকার জন্য একটি নিরাপদ জায়গা খুঁজে পেতে চেয়েছিল, তারা অনেক আর্থিক এবং মানসিক ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে। এখন তাদের এই ভয়াবহ পরিণতি নিয়ে বেঁচে থাকতে হবে। পুরো রেন্টাল সেক্টরকে এ ধরনের অবৈধ ও অনৈতিক আচরণের ফল মোকাবেলা করতে হবে, যা টেনেন্টদের মধ্যে অবিশ্বাস ও ভয় জাগিয়ে তোলে এবং ক্ষতি করছে বৈধ ল্যান্ডলর্ড ও এজেন্টদের যারা আইন মেনে নৈতিকভাবে কাজ করে। আজকের সাজার ঘোষণা, দুর্বৃত্ত ও খারাপ অপারেটরদের কাছে এটি একটি শক্তিশালী বার্তা, যারা এই অপরাধগুলি করার অভিপ্রায় করবে, তারা ধরা পড়বে এবং শাস্তি পাবে।”
আরেক অসাধু ল্যান্ডলর্ড-এর £৯০,০০০ এর বেশি জরিমানা: শ্যাডওয়েলের ফ্ল্যাটে আগুনে মারা যান মিজানুর
এদিকে টাওয়ার হ্যামলেটস কাউন্সিল ম্যাডকস হাউসের চতুর্থ তলার দুই বেডরুমের ফ্ল্যাটে ২৩ জনকে ভাড়া দেওয়ার জন্য দুই বাড়িওয়ালা সোফিনা বেগম (৫২) এবং আমিনুর রহমান (৫৫) এর বিরুদ্ধে ৯০,০০০ পাউন্ডের বেশি জরিমানা করা হয়েছে।
টাওয়ার হ্যামলেটস কাউন্সিলের মামলার পরিপ্রেক্ষিতে টেমস ম্যাজিস্ট্রেট আদালত ২০২৩ সালের নভেম্বরে তাদের দোষী সাব্যস্ত করে এবং গত বৃহস্পতিবার (৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫) এই জুটিকে স্নেয়ার্সব্রুক ক্রাউন কোর্ট সাজা প্রদান করে।
একইসাথে কাউন্সিল সফলভাবে একটি কনফিসকেশন অর্ডার ( বাজেয়াপ্ত আদেশ) লাভ করেছে যা বেআইনি কার্যকলাপ থেকে প্রাপ্ত অর্থ পুনরুদ্ধারের জন্য একটি আদালতের আদেশ।
সোফিনা বেগমকে ১০,০০০ পাউন্ড জরিমানা এবং ২,০০০ পাউন্ড প্রসিকিউশন খরচের পাশাপাশি ভিকটিমকে ২,০০০ পাউন্ড সারচার্জ প্রদানের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তাকে ৭৮,০৪৯ পাউন্ডের একটি কনফিসকেশন অর্ডারও ( বাজেয়াপ্ত আদেশ) দিতে বলা হয়েছে।
আমিনুর রহমানকে ২,০০০ পাউন্ড জরিমানা এবং ৮০০পাউন্ড ভিকটিম সারচার্জের পাশাপাশি ১.০১ পাউন্ড বাজেয়াপ্ত করার আদেশ দেওয়া হয়েছে।
দুজন বাড়িওয়ালাই এর আগে হাউজিং অ্যাক্ট ২০০৪ এর অধীনে আনা মোট নয়টি অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত হয়েছিলেন, এর মধ্যে রয়েছে বাসার ভেতরে ভিড়ের অনুমতি দেওয়া, লাইসেন্সের শর্তাবলী মেনে চলতে ব্যর্থ হওয়া, প্রয়োজনীয় পরিদর্শন না করা, একটি বৈধ সেফটি সার্টিফিকেট না থাকা, এবং কাউন্সিলকে যথার্থ নথিপত্র সরবরাহ করতে ব্যর্থ হওয়া।
৪১ বছর বয়সী ভাড়াটিয়া মিজানুর রহমান, ৫ মার্চ ২০২৩-এ শ্যাডওয়েলের ফ্ল্যাটে আগুনে মারা যান। একটি ত্রুটিপূর্ণ লিথিয়াম-আয়ন ই-বাইকের ব্যাটারি সেই সময়ে চার্জ ছিল, যা থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়