অন্ধকারে আলো শ্লোগাণ নিয়ে কাজ করা শিক্ষা, লেখক ও সামাজিক অনুপ্রেরণাবান্ধব চ্যারিটি প্রতিষ্ঠান সমছুল-করিমা ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে বড়লেখা উপজেলার সুজাউল ফাজিল ডিগ্রী মাদ্রাসায় ফলজ ও ঔষধি বৃক্ষরোপন করা হয়েছে।
সবুজে হাসি সবুজে বাঁচি- শিরোনামে অস্বচ্ছল পরিবার ও বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ফলজ ও ঔষধি বৃক্ষরোপন প্রকল্পের অংশ হিসাবে বড়লেখা উপজেলার প্রাচীন এই বিদ্যাপীঠে বৃক্ষরোপন করা হয়।
২৬ আগস্ট বৃহস্পতিবার বেলা দুইটায় আড়ম্বরহীনভাবে মাদ্রাসার ক্যাম্পাসে ‘সবুজে হাসি সবুজে বাঁচি’ র ফলজ চারা লাগিয়ে উদ্বোধন করেন প্রধান অতিথি ৫নং দক্ষিণ শাহবাজপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো: সাহাব উদ্দিন।
তিনি বলেন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ফলজ ও ঔষধি গাছ রোপন একটি অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত। এতে করে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা নিজ ক্যাম্পাসে উৎপাদিত ফলমূল খাওয়ার আনন্দ এবং কিছুটা হলেও পুষ্টি পূরণের সুযোগ পাবেন।
প্রধান অতিথি সমছুল-করিমা ফাউন্ডেশন কে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, প্রতিষ্ঠানটি গতানুগতিকভাবে চলা বৃক্ষরোপন কর্মসূচীর মতো নয়। গাছ নির্বাচন, রোপন ও পরিচর্চার বিষয়টি সমন্বিত পরিকল্পনার মাধ্যমে করা হচ্ছে,যা বিজ্ঞান ভিত্তিক। একই সময়ে পরিবেশ ও মানুষের কল্যাণে নিবেদিত থাকার মতো এই প্রজেক্টটি ভবিষ্যতে আরও বেশী বেশী শিক্ষা ও সেবামূলক প্রতিষ্ঠানে ছড়িয়ে দেবার অনুরোধ করছি। আমার বিশ্বাস অচিরেই ‘সবুজে হাসি সবুজে বাঁচি’ সমাজে ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে।
সুজাউল ফাজিল ডিগ্রী মাদ্রাসার পক্ষ থেকে বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন মাদ্রাসার শিক্ষক মাওলানা বদরুল ইসলাম। তিনি বলেন, সমছুল- করিমা ফাউন্ডেশনের বৃক্ষরোপন কার্যক্রমটি অত্যন্ত বুদ্ধিদ্বীপ্ত এবং মানবিক। বৃক্ষরোপন এ শিক্ষক -শিক্ষার্থীদের সুস্বাস্থ্যর কথা মাথায় রেখেই ফলজ ও ঔষধি গাছ নির্বাচন করা হয়েছে। প্রায় ১৫টি বিভিন্ন জাতের ফলের ভালো জাত ও মানের অনেকগুলো চারা নিজ খরচে লাগিয়ে দিয়েছেন। এবং তিনটি ধাপে গাছগুলোর সার্বিক পরিচর্যা ও মনিটরিং করবেন, যাতে গাছগুলো নষ্ট না হয় এবং দ্রুত ফলন উপযোগি হয়। তিনি ‘সবুজে হাসি সবুজে বাঁচি’ প্রকল্পের সাথে সংশ্লিষ্টদের আন্তরিক ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, এই মহতি উদ্যোগ যে কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের জন্য হতে পারে অনুকরণীয়।
বিশেষ অতিথি ইসলামী ব্যাংক অফিস বাজার আউটলেট শাখার ইনচার্জ মো: মুজাহিদুল ইসলাম এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, ফলজগাছ রোপনের মাধ্যমে সরাসরি এই মাদ্রাসার সকলেই উপকৃত হবেন। বিশেষ করে শিক্ষার্থীদের মাঝে এই মানবিক কাজটি অনুপ্রেরণাও যোগাবে, তারা যখন ফলমূল খাবেন এবং দৃষ্টিনন্দন বাগান দেখবেন তখন এর আলোকিত দিকটি তাদেরকে প্রভাবিত করবে বলে আমার বিশ্বাস।
বিশেষ অতিথি মাদ্রাসার শিক্ষক মাওলানা সামছুল ইসলাম বলেন,সমছুল -করিমা ফাউন্ডেশনের ‘সবুজে হাসি সবুজে বাঁচি’ প্রকল্পের মাধ্যমে মাদ্রাসায় ফলজগাছ রোপনে বারমাস ফল -ফসলের চিন্তাকে প্রাধান্য দেয়া হয়েছে। যাতে করে সকল ঋতুতে কোন না কোন ফল শিক্ষার্থীরা খেতে পারেন। বৃক্ষরোপনে এই দূরপ্রসারী চিন্তা পরিবেশ, মানুষ এবং পশুপাখির কল্যাণে একই সময়ে সমানভাবে উপকার করবে।
সুজাউল ফাজিল ডিগ্রী মাদ্রাসায় সবুজে হাসি সবুজে বাঁচি’ প্রজেক্টের কো-অর্ডিনেটর সাংবাদিক মো: ইবাদুর রহমান জাকির মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ,অতিথিবৃন্দ এবং স্বেচ্ছাসেবকদের প্রতি কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ জানিয়ে বলেছেন, সকলের সহযোগিতায় বৃক্ষরোপন সম্পন্ন হয়েছে। মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষের সাথে আমরা তিনটি ধাপে এর পরিচর্চায় বৃক্ষগুলো দ্রুত ফলনশীল হবে বলে আমরা আশাবাদি এবং একই সাথে আমাদের প্রচেষ্টাও সফল হবে বলে মনে করি ।
বৃক্ষরোপনে আরও উপস্থিত ছিলেন আব্দুস সামাদ,আব্দুল আহাদ, আবু বক্কর, শাহরিয়া রাব্বি। মাদ্রাসার পক্ষ থেকে ফলজ ও ঔষধি বাগানের সার্বিক তত্বাবধানে থাকবেন শিক্ষক মাওলানা সামছুল ইসলাম ও শিক্ষক মাওলানা এজাজুল হক (তমজিদ)।
প্রসঙ্গত অন্ধকারে আলো শ্লোগাণ নিয়ে ২০০৪ সাল থেকে সমছুল-করিমা ফাউন্ডেশন বিভিন্ন মানবিক , শিক্ষা- শিক্ষক সম্পর্কিত এবং সমাজসেবামূলক কাজ ধারাবাহিকভাবে নিদৃষ্ট প্রকল্পের মাধ্যমে করছে। ‘মানবিক স্বজন‘ এর আওতায় নিভৃতে বঞ্চিত ও দুস্থ মানুষের ঘরে খাবার সামগ্রী বিতরণ। ‘সবুজে হাসি সবুজে বাঁচি’ প্রকল্পের মাধ্যমে অস্বচ্ছল ও বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ফলজ ও ঔষধি বৃক্ষ রোপন, মৌলিক ও সৃজনশীল প্রকল্প- ’সৃষ্টি ঘর’ এর আওতায় প্রাথমিক বিদ্যালয়ে চিত্রাঙ্কন ও সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতা এবং প্রতিশ্রুতিশীল লেখকদের বই প্রকাশ, পবিত্র রমজান মাসে নিন্মবিত্ত পরিবারের জন্য ‘হাসি মুখে ইফতার’, প্রবীন অসহায়দের জন্য –’একচিলতে হাসি’, কৃষক ও ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের জন্য ‘আমার স্বপ্ন’ প্রকল্পের মাধ্যমে তৃণমূলে কাজ করে আসছে ।
সবুজে হাসি সবুজে বাচি ’র উদ্যোগে সুজাউল ফাজিল ডিগ্রী মাদ্রাসায় ফলজ ও ঔষধি বৃক্ষরোপন