­
­
বুধবার, ২ এপ্রিল ২০২৫ খ্রীষ্টাব্দ | ১৯ চৈত্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সর্বশেষ সংবাদ
জাফলং ঘুরতে গিয়ে পানিতে ডুবে প্রাণ গেলো কিশোরের  » «   ১৭ বছর পরে জাতীয় ঈদগাহের ঈদ জামাতে সরকারপ্রধান  » «   ঈদ আসে, গাজায় আনন্দ আসে না  » «   এপ্রিলের মাঝামাঝি দেশে ফিরতে পারেন খালেদা জিয়া  » «   মিয়ানমারে বিধ্বংসী ভূমিকম্পের পরও হামলা চালাচ্ছে জান্তা বাহিনী  » «   ঈদযাত্রা: শুক্র ও শনিবার ঢাকা ছেড়েছে ৪১ লাখ সিমধারী  » «   তিস্তা প্রকল্প নিয়ে ‘ইতিবাচক’, মোংলায় আরেকটি অর্থনৈতিক অঞ্চল করতে চায় চীন  » «   মিয়ানমারে কেন এত বড় বিধ্বংসী ভূমিকম্প, কী বলছেন বিশেষজ্ঞরা?  » «   বাংলাদেশে সাজাপ্রাপ্ত উগ্রবাদীদের মুক্তি নিরাপত্তার জন্য ‘মারাত্মক উদ্বেগের’: ভারত  » «   চাঁদ দেখা গেছে, সৌদিতে ঈদ রবিবার  » «   এনসিপি: অম্ল-মধুর একমাস পার, ভোটের পথে প্রস্তুতি কতদূর?  » «   চট্টগ্রাম, সিলেট, ময়মনসিংহ ও ঢাকা ভূমিকম্পের উচ্চ ঝুঁকিতে, ফায়ার সার্ভিসের সতর্কতা  » «   মিয়ানমারে ভূমিকম্প: মৃতের সংখ্যা হাজার ছাড়িয়েছে  » «   এশিয়ার দেশগুলোর ‘যৌথ সমৃদ্ধির পথরেখা’ চাইলেন ইউনূস  » «   বাংলাদেশের কাছে সামরিক সরঞ্জাম বিক্রির আলোচনায় যুক্তরাষ্ট্র  » «  

আমেরীকান-বাংলাদেশি দম্পতির প্রতিষ্ঠান প্রেজিস্টিয়াস ইনক ৫ হাজারের তালিকায়



যুক্তরাষ্ট্রের বিজনেস ম্যাগাজিন ইন্ক( Inc) প্রতিবছরের ন্যায় প্রকাশ করেছে ৫ হাজার ব্যবসায়ীদের তালিকা । যুক্তরাষ্ট্রের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এ ম্যাগাজিনে ব্যবসায়ী হিসেবে স্থান করে নেয়া অনেক মর্যাদার। আমেরীকার অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখা প্রতিষ্ঠানগুলোকে ‘ Inc. 5000 ‘ প্রতিবছর নতুন নতুন নাম প্রকাশ করে থাকে। উল্লেখ করা যেতে, ইতোপূর্বে এই ম্যাগাজিনের তালিকা মাইক্রোসফটসহ Intuit, Zappos, Under Armour, Microsoft, Patagonia তথা পৃথিবীর খ্যতিমান প্রতিষ্ঠানগুলো জায়গা করে নিয়েছিল। এরই ক্রমধারায় বাংলাদেশী বংশদ্ভোত এক দম্পতির প্রতিষ্ঠিত প্রতিষ্ঠান এসজে ইনোভেশন এই ম্যাগাজিনের ৪৪৪২ নম্বর তালিকায় স্থান করে নিতে সক্ষম হয়েছে ২০২১ এ। গত ১৮ আগস্ট ম্যাগাজিনটি এই তালিকা প্রকাশ করে।

এখানে উল্লেখ করা যেতে পারে যে, ইন্ক (Inc, http://www.inc.com/ ) ম্যাগজিনটি পৃথিবীর অন্যতম প্রধান একটা বিশ্বস্থ বিজনেস-মিডিয়া ব্র্যান্ড, যা ব্যবসায়ীদের এবং উদ্যোক্তাদের ব্যাবসায় আরও অভিজ্ঞ করে তুলতে বিভিন্ন ধরনের সংবাদ-ফিচার-নিবন্ধ তথা একটা ব্যবসায়িক নির্দেশনা হিসেবে উপস্থাপন করে থাকে।খ্যাতি পাওয়া এ ম্যাগজিনের ম্যটেরিয়েল কিংবা টুলস প্রতি মাসে ৫০ মিলিয়নেরও বেশী পাঠক-দর্শকদের কাছে পৌছে তাদের ওয়েবসাইট, নিউজলেটার, সোশ্যাল মিডিয়া, পডকাস্ট এবং প্রিন্ট সহ বিভিন্ন চ্যানেল জুড়ে।খ্যাতি পাওয়া এই ম্যাগাজিনটি মর্যাদপূর্ন ব্যবসায়ীক প্রতিষ্ঠানের একটা তালিকা প্রকাশ করে প্রতি বছর, যা ‘Inc 5000’ নামে পরিচিত। প্রেজিস্টিজিয়াস এই তালিকাটি ১৯৮২ সাল থেকে মার্কিন যুক্তরাষ্টের ক্রমবর্ধনশীল কিংবা ব্যক্তি উদ্যোগে পরিচালিত আমেরীকার জাতীয় অর্থনীতিতে প্রবৃদ্ধি বিবেচনায় নিয়ে ১৯৮২ সাল থেকে প্রকাশ করে আসছে।

বাংলাদেশে জন্মগ্রহণকারী নিউহয়র্কে বসবাসকারী শাহেদ ইসলাম এবং বাংলাদেশী বংশদ্ভোত ব্রিটেনের ম্যানচেষ্টারে বেড়ে উঠা শাহেরা চৌধুরী ২০০৪ সাল থেকে আজ পর্যন্ত অর্থাৎ ১৭ বছরের ক্লান্তিহীন কাজের মধ্যি দিয়ে তাদের প্রতিষ্ঠানের দীর্ঘ পথ পরিক্রমায় ব্যবসাক্ষেত্রে এক দৃঢ় ভিত্তি স্থাপন করেছেন। সিলেট পাইলট স্কুল থেকে ম্যাট্রিক পাশ করে আমেরীকায় পাড়ি দেয়া শাহেদুর রহমান এবং যুক্তরাজ্যের ম্যানচেষ্টারে বেড়ে উঠা সাহেরা চৌধুরী দু’জনই সফটওয়ার প্রগ্রামিং এর উপর স্নাতক। শাহেদ নিউইয়র্ক এবং সাহেরা পড়েছেন ম্যানচেষ্টারের বিশ্ববিদ্যালয়ে । সতেরো বছর আগে প্রতিষ্ঠা করা এ প্রতিষ্ঠান তিল তিল করে এগিয়ে নিচ্ছিলেন তারা । উত্থান-পতন ছিল তাদের কোম্পানীতেও। কিন্তু তারপরও তাঁদের ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানটি এখন যুক্তরাষ্ট্রের কয়েক হাজার প্রতিষ্ঠানের একটি হিসেবে স্থান করে নিয়েছে ।

শাহেদ-সাহেরা দম্পতির পতিষ্ঠিত এবং পরিচালিত এসজে ইনোভেশন আমেরীকা ভিত্তিক বিভিন্ন কোম্পানীকে ওয়েব সেবা দিয়ে যাচ্ছে। গত ১৭ বছরে তারা ৩ হাজারেরও বেশী ওয়েব সাইটের উপর কাজ করেছে। পৃথিবীর পাঁচটি দেশে ছড়িয়ে থাকা প্রতিষ্ঠানটির অফিস এবং টীম মেম্বারদের মাঝে বাংলাদেশে আছে তাদের ঢাকা এবং সিলেট অফিস, যেখানে তারা ৭০ টি বিশ্বমানের জব সৃষ্ঠি করেছে।পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে রয়েছে তাদের বিশাল টীম । নিউইয়র্ক থেকে শুরু করে যুক্তরাজ্য, ইউক্রেন, ভারতের গোয়া, ঢাকা সিলেটে এই টীমে কাজ করছেন দেড় শতাধিকেরও বেশী উদ্যমী মানুষ।

ইন্ক ৫০০০ এ তাদের তালিকাভূক্ত হওয়া এসজে ইনোভেশনের জন্য একটা বিশাল প্রাপ্তি । এ সাফল্যে প্রতিষ্ঠানটির প্রধান নির্বাহী (সি ই ও) এবং প্রতিষ্ঠাতা শাহেদ ইসলাম বলেন,”আমরা একটি সাধারন মিশন দিয়ে কাজ শুরু করেছি, ” কর্মচারীর সুখী রাখার মধ্যি দিয়েই ক্লায়েন্টদের সফলতা তথা কোম্পানীর সাফল্য নিয়ে আসা” এই ধারায় কোম্পানীটি আরও গ্রহণযোগ্য এবং মজবুত ভিত্তির উপর দাঁড় করাতে আমাদের কাজ করতে হয়েছে গত ১৭ বছর, এখনও আমরা নিরন্তর কাজ করে যাচ্ছি। এসময়ে আমাদের জন্য আরও সুখকর এবং অনন্দময় সংবাদ হল, মহামারীকালীন সময়েও আমরা বাংলাদেশে আরও কর্মী নিয়োগ দিতে সক্ষম হয়েছি। এসজে ইনোভেশন কমিউনিটি আউটরিচ প্রোগ্রামগুলিকে অগ্রাধিকার দিয়ে থাকে এবং শুধুমাত্র গত ৩ বছরে ৫০০জনেরও বেশি শিক্ষার্থীকে নতুন প্রযুক্তির উপর প্রশিক্ষণ দিয়েছে আমাদের প্রতিষ্ঠান। আমরা বাংলাদেশি হিসেবে, বাংলাদেশে ৭০ জন কর্মচারী নিয়োগের মাধ্যমে উচ্চ বেতনের চাকরি নিশ্চিত করেছি এবং পাশাপাশি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে বাংলাদেশে চাকুরীর সুযোগ বৃদ্ধি করতে পেরে আমরা গর্বিত। ‘এসজে ইনোভেশন’ টিম বাংলাদেশের সাথে ( http://nrb.gov.bd/ ) কাজ করছে— একটি ডিজিটালাইজড সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গঠনের অঙ্গীকারে এগিয়ে যাওয়া বাংলাদেশ সরকারের সহায়ক হতে SJ Innovation প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। ”

প্রতিষ্ঠানটি এ সাফল্যে এসজে ইনোভেশনের সহ ফাউন্ডার ও প্রতিষ্ঠানটির চীফ অপারেটিং অফিসার (সি ও ও) শাহেরা চৌধুরী উল্লেখ করেছেন, ”আমাদের কোম্পানী শুধু যে সারা পৃথিবীব্যাপীই ব্যাপ্তি পেয়েছে তা নয়, আমাদের এ প্রতিষ্ঠান মেধায়-প্রগ্গায় পরিপূর্ণতা পাচ্ছে প্রতিদিন। অভিগ্গতার মধি দিয়ে ব্যক্তিপর্যায়ে যেমন আমরা নিজেদের আরও বিকশিত করে তুলছি, ঠিক সেভাবেই পেশাগতভাবেও আমরা আমাদের নিয়ে আসতে পেরেছি এক ভিন্ন উচ্চতায়, এবং এটা ছিল আমাদের সফলতার জন্য অত্যাবশ্যক।”

প্রতিষ্ঠানটির ঢাকা এবং সিলেটের দায়ীত্বে থাকা ব্যবস্থাপক সাঈদ আহমদ উল্লেখ করেন, ”যুক্তরাষ্ট্রের পদ্ধতিগুলোকে প্রয়োগ করে আমরা কাজ করেছি প্রতিনিয়ত, প্রশিক্ষন দিয়েছি আমাদের বিশাল টীমকে। এসজে ইনোভেশন এ এমন সব কর্মীদের নিয়োগ দেয়া হয়েছে, যারা সাংস্কৃতিক দিক থেকে এগিয়ে। আমরা তাদের প্রযুক্তিগত দক্ষতার পাশাপাশি সফট স্কিলের কর্মীদের প্রশিক্ষণ দিয়ে এদের প্রযুক্তির ক্ষেত্রে দক্ষ করে তুলছি। ”

এসজে ইনোভেশন একটি নিউইয়র্কভিত্তিক সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্ট এজেন্সি, যা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের হয়ে সফটওয়ার সমস্যার জন্য কাস্টমাইজড সমাধান খোঁজে পেতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। প্রতিষ্ঠানটি ওয়েব ডেভেলপমেন্ট, মোবাইল অ্যাপ্লিকেশন এবং কোয়ালিটি অ্যাসুরেন্সে বিশেষজ্ঞ এবং সবই তাদের দক্ষ-অভিজ্ঞ কর্মীদের দ্বারা পরিচালিত। দশ বছরেরও বেশি সময় ধরে বাংলাদেশে কাজ করে যাচ্ছে এবং ২০১৮ সাল থেকে বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অ্যান্ড সফটওয়্যার (বেসিস) এর সদস্য এই প্রতিষ্ঠানটি।

সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন

সাবস্ক্রাইব করুন
পেইজে লাইক দিন