অক্সফোর্ডের ভ্যাকসিনের অনুমোদন দিল যুক্তরাজ্য। এর আগে ফাইজার-বায়োএনটেকের ভ্যাকসিনের অনুমোদন দেয় দেশটি। সম্প্রতি ফাইজারের ভ্যাকসিন কার্যক্রমের আওতায় যুক্তরাজ্যের বিভিন্ন স্থানে টিকাদান কর্মসূচি চলছে।
আগামী সপ্তাহের সোমবার অক্সফোর্ডের ভ্যাকসিন কার্যক্রম শুরু হবে। অক্সফোর্ডের ১০ কোটি ডোজ ভ্যাকসিন সরবরাহের জন্য চুক্তি করেছে যুক্তরাজ্য, যা ৫ কোটি মানুষকে ভ্যাকসিন প্রদানের জন্য যথেষ্ঠ।
যুক্তরাজ্যের ওষুধ প্রশাসন এই ভ্যাকসিনের অনুমোদন দেওয়ার পর এ নিয়ে এখন পর্যন্ত সৃষ্টি হওয়া ধোঁয়াশা ও সংশয় কেটে যাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। সাধারণ মানুষও ভ্যাকসিন গ্রহণে আস্থা পাবে।
অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকা চলতি বছরের জানুয়ারিতে তাদের ভ্যাকসিন তৈরি করে। গত এপ্রিলে স্বেচ্ছাসেবীদের ওপর ক্লিনিক্যাল টেস্ট শুরু হয়। এরপর বিভিন্ন দেশের কয়েক হাজার মানুষের শরীরে এর পরীক্ষামূলক প্রয়োগ করা হয়।
তৃতীয় ধাপের ভ্যাকসিনের পরীক্ষার অন্তর্বর্তী বিশ্লেষণে দুটি ডোজের ব্যবহারে কার্যকারিতা ৭০ শতাংশ প্রকাশ করা হয়। অপর দুটির কার্যকারিতা ৯০ ও ৬২ শতাংশ বলে জানানো হয়। এরপর নানা সময় ভ্যাকসিন মানব শরীরে প্রয়োগ নিয়ে তৈরি হয় জটিলতা।
চলতি সপ্তাহের রোববার অ্যাস্ট্রাজেনেকার প্রধান নির্বাহী পাস্কাল সরিওট দাবি করেন, তাদের প্রস্তুতকৃত ভ্যাকসিন ৯৫ শতাংশ করোনা প্রতিরোধে কার্যকর। এরপরই বুধবার দেশটির ওষধ প্রশাসন ভ্যাকসিনটি মানব দেহে প্রয়োগের অনুমোদন দিলো।
যুক্তরাজ্যের স্বাস্থ্যমন্ত্রী ম্যাট হ্যানকক বলেন, ফাইজার এবং অক্সফোর্ডের ভ্যাকসিন দিয়ে দেশের সবাইকে ভ্যাকসিনের আওতায় আনা সম্ভব হবে। তিনি এই পরিস্থিতিকে ভ্যাকসিনের বিরুদ্ধে যুদ্ধে একটি উল্লেখযোগ্য মুহূর্ত বলে উল্লেখ করেছেন।
তিনি বলেন, এখন তিনি আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে এটা বলতে পারেন যে, প্রত্যেককে ভ্যাকসিন দেওয়া সম্ভব হবে। তিনি বলেন, পুরো জনগোষ্ঠীকে ভ্যাকসিনের আওতায় আনতে আমরা যথেষ্ঠ পরিমাণ ডোজ সরবরাহ করেছি। অক্সফোর্ডের ১০ কোটি ডোজ এবং ফাইজারের ৩ কোটি ডোজ ভ্যাকসিন সরবরাহ করা হয়েছে বলে উল্লেখ করেছেন তিনি।
এমন এক সময়ে অক্সফোর্ডের ভ্যাকসিনের অনুমোদন দেওয়া হলো যখন ইংল্যান্ডে স্টে অ্যাট হোম অর্ডার জারির পরিকল্পনা করা হচ্ছে। ফলে লাখ লাখ মানুষ ঘরবন্দি হয়ে পড়বে। মঙ্গলবার যুক্তরাজ্যে ৫৩ হাজার ১৩৫ জনের দেহে করোনাভাইরাসের উপস্থিতি ধরা পড়েছে। একদিনে এটাই এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ সংক্রমণের রেকর্ড। দেশটিতে এখন পর্যন্ত করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা ২৩ লাখ ৮২ হাজার ৮৬৫ এবং মারা গেছে ৭১ হাজার ৫৬৭ জন।