বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ও ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি সুলতান মোহাম্মদ মনসুর বলেছেন, সেই বিভৎস দৃশ্য আর পাষণ্ডদের হিংস্র তাণ্ডব আজও যেন চোখের সামনে স্পষ্ট হয়ে ভাসে। মৃত্যু আর রক্তস্রোতের সেই ভয়ঙ্কর স্মৃতি আজও তাড়া করে। আমরা যেন জীবিত থেকেও মৃত। মৃত্যুযন্ত্রণায় কাতর সেই সময়কার মুখগুলো এখনো আমাকে তাড়া করে।
হয়তো আমৃত্যু তাড়া করেই যাবে। কারণ চোখের সামনেই সেদিন আমি কেয়ামত দেখেছিলাম। প্রিয় মানুষদের এভাবে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ার দৃশ্য দেখে নিজের আহত হওয়ার কথাও ভুলে গিয়েছিলাম। পরবর্তীতে আকস্মিক জ্ঞান ফিরলে জানলাম আমি আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
চিকিৎসকরা আমাকে জানালেন, নিবেদিতপ্রাণ নেতাকর্মীদের কয়েকজন অজ্ঞান অবস্থায় আমাকে ধরে নিয়ে এসেছেন।
দিনটি ছিল শনিবার। বিকেলে বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে সন্ত্রাস ও বোমা হামলার বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগের সমাবেশ। সমাবেশ শেষে সন্ত্রাসবিরোধী মিছিল হওয়ার কথা। তাই মঞ্চ নির্মাণ না করে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে একটি ট্রাককে মঞ্চ হিসেবে ব্যবহার করা হয়।
সমাবেশে অন্য কেন্দ্রীয় নেতাদের বক্তব্যের পর বর্তমান প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা বক্তব্যের শেষান্ত। তখন আনুমানিক বিকেল সাড়ে ৫টা। হঠাৎ করেই শুরু হয়ে গেল নারকীয় গ্রেনেড হামলা। বিকট শব্দে বিস্ফোরিত হতে লাগল একের পর এক গ্রেনেড। বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউ মুহূর্তেই পরিণত হলো মৃত্যুপুরীতে। কিছু বুঝে ওঠার আগেই মুহুর্মুহু গ্রেনেড হামলার বীভৎসতায় মুহূর্তেই রক্ত-মাংসের স্তুপে পরিণত হয় সমাবেশস্থল। দলের অনেক নেতাকর্মী এদিন প্রাণে বেঁচে গেলেও এখনো দেহে অসংখ্য ঘাতক স্পিন্টারের তীব্র যন্ত্রণা নিয়ে পথ চলছেন তারা।