বিনামূল্যে পাঠ্যপুস্তক বিতরণ তথা বই উৎসব দেশের সীমানা পেরিয়ে বিদেশের বাংলাদেশী স্কুলগুলোতেও হচ্ছে। বিদেশে এমন আয়োজনে বাংলাদেশী ছাত্র শিক্ষক ছাড়াও ভিনদেশীদের কাছে যেন এক বিস্ময়। এ যেন সারাবিশ্বের বিস্ময়। আরব আমিরাতের রাজধানী আবুধাবীর বাংলাদেশ স্কুলের বই উৎসবে ছিলো মৌ মৌ গন্ধের ছোঁয়া।
সংযুক্ত আরব আমিরাতের রাজধানী আবুধাবীতে রয়েছে শেখ খলিফা বিন জায়েদ বাংলাদেশ ইসলামিয়া প্রাইভেট স্কুল। ১৯৮০ সালে প্রতিষ্ঠিত এ বাংলাদেশী প্রতিষ্ঠান আবুধাবীর পরিবেশ বান্ধব স্কুল ছাড়াও ২০১৩ সালে জায়েদ ফিউচার এনার্জি প্রাইজ জিতেছে। ১ম শ্রেণী থেকে দ্বাদশ শ্রেণী পর্যন্ত রয়েছে এ স্কুলের পাঠদান। ৭ জানুয়ারি স্কুল অডিটোরিয়ামে ১ম শ্রেণী থেকে ১০ শ্রেণীর ৮০০ জন শিক্ষার্থীকে দেয়া হয়েছে সরকারের পক্ষ থেকে বিনামূল্যে বই।
বিনামূল্যে এসব বই সরকারের পক্ষ থেকে ২০১০ সাল থেকে দেয়া হচ্ছে বলে জানালেন আরব আমিরাতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত ডা. মোহাম্মদ ইমরান । প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। তিনি আরো বলেন, এ প্রজন্ম ভাগ্যবান যে তারা বিনামূল্যে মাধ্যমিকেও বই পাচ্ছে। এ সযোগ কাজে লাগিয়ে যোগ্য মানুষ হয়ে প্রবাসের মাটিতে দেশকে তুলে ধরতে তিনি শিক্ষার্থীদের প্রতি আহবান জানান।
ভিনদেশে এমন আয়োজন দেখে স্কুলে চাকুরী করা ভিনদেশী শিক্ষকের পাশাপাশি আরব আমিরাতের শিক্ষা বিষয়ক অধিকর্তারাও অবাক এমনটি জানালেন প্রতিষ্ঠানটির অধ্যক্ষ মীর আনিসুল হাসান । স্বগাতিক বক্তব্যে তিনি আরো বলেন, স্কুলটি এখন স্বক্রিয় বাংলাদেশী স্কুল হিসেবে সুপরিচিত বলেও তিনি জানান।
নতুন বছরের শুরুতে বিনামূল্যে বই পেয়ে খুশি শিক্ষার্থীরাও। জেএসসি পরীক্ষায় গোল্ডেন এ প্লাস প্রাপ্ত রাশিদা হাসান জানালো এগিয়ে যেতে সহযোগিতা করবে এ আয়োজন। এ সময় তার চোখে ছিলো রঙিন হাসির ঝিলিক।
আরব আমিরাত সরকারের প্রথমসারির বিশ্ববিদ্যালয় জায়েদ বিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. হাবিবুল হক খন্দকার জানালেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বই পড়ুয়া। তাই জাতিকে উপযুক্ত ভাবে গড়তে শেখ হাসিনার এই আয়োজন উন্নতবিশ্বের কাছে রোল মডেল। বিংশ শতাব্দির শুরুতেও বিদেশে বিনামূল্যে বইবিতরণ স্বপ্নেও ভাবা যায় নি। অসম্ভবকে সম্ভবকে করেছে শেখ হাসিনা সরকার বলে জানান তিনি।
বই উৎসব অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন স্কুলের সিনিয়র শিক্ষক এস এম আবু তাহের। এ সময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন স্কুলের পৃষ্ঠপোষক ওমর ফারুক, বাংলাদেশ দূতাবাস আবুধাবীর প্রথম সচিব জোবায়েদ হোসেন। প্রবাসের মাটিতে বাংলা বইয়ের গন্ধে বেড়ে ওঠুক পরবর্তী প্রজন্ম। হাজার ভাষার ভীড়ে নিজ দেশ আর ভাষাকে তারা তুলে ধরুক ভিনদেশীদের কাছে, এমন প্রত্যাশা্ সকল মা বাবার।
কণ্ঠ: তিশা সেন