যুক্তরাজ্য প্রবাসী কবি দেলোয়ার হোসেন মঞ্জু সমাহিত হয়েছেন তার অন্যতম প্রিয় শহর বার্মিংহামে। মঙ্গলবার জোহরের নামাজ শেষে কভেন্ট্রী রোড জামে মসজিদে তাঁর জানাজার নামাজ অনুষ্ঠিত হয়। মঞ্জুর স্বজন আর ব্রিটেনের বিভিন্ন শহরের কবি-সাহিত্যিক সহ বার্মিংহামের শত শত মানুষের অংশগ্রহণে জানাজার নামাজ শেষে হ্যান্ডস ওয়ার্থ সেমেটারীতে তাঁকে সমাহিত করা হয়।
কবি দেলোয়ার হোসেন মঞ্জু গত শনিবার (১৭ নভেম্বর) স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৭টা ৫০ মিনিটে বার্মিংহাম শহরের মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন। ৪৮ বছর বয়স্ক এই কবি কিছুদিন ধরে দুরারোগ্য ফুসফুস ক্যানসারে ভুগছিলেন।
দেলোয়ার হোসেনের অকালপ্রয়াণে বিলেতের সাহিত্য-সংস্কৃতি পাড়া শোকবিহ্বল হয়ে পড়ে। হাসপাতাল ও বাসগৃহে অনেক শুভানুধ্যায়ী ভিড় জমান। তাঁর মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়ার পর দেশ-বিদেশে থাকা বন্ধুবান্ধব ও পাঠকেরা সোশ্যাল মিডিয়ায় স্মৃতিচারণসহ শোক প্রকাশ করেন।
প্রথাবিরোধী কবি হিসেবে সমসাময়িককালে তাঁকে চিহ্নিত করা হয়। নব্বইয়ের দশকে যে কজন কবির হাত ধরে বাংলা সাহিত্যের বাঁকবদল ঘটে তিনি তাদের অন্যতম। বাংলা ভাষায় নতুন গদ্য রীতির প্রবর্তক ও মুক্তগদ্যের কবি ছিলেন তিনি।
দেলোয়ার হোসেন মঞ্জু ১৯৭০ সালের ৩০ নভেম্বর সিলেট জেলার বিশ্বনাথে জন্মগ্রহণ করেন। সিলেটের এমসি কলেজে পড়াশোনার পর স্নাতকোত্তর অধ্যয়ন করেছেন রাশিয়ায়। ১৯৯৩ সাল থেকে তিনি বিলেতপ্রবাসী। লেখকের উল্লেখযোগ্য গ্রন্থ; ইস্পাতের গোলাপ, ঈসাপাখি বেদনা ফোটে মরিয়ম বনে, মৌলিক ময়ূর, জ্যোৎস্নার বেড়াল, তুলসীপত্র অথবা অভিজিৎ কুন্ডুর মুক্তগদ্য, বিদ্যুতের বাগান সমগ্র ও দক্ষিণামৃত।
উল্লেখ্য, কবি দেলোয়ার হোসেন মঞ্জু বিলেতের সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে দীর্ঘদিন থেকে যুক্ত। মানসম্মত বহু সাহিত্য অনুষ্ঠান ও অনুকরণীয় সাহিত্যকর্মের উদ্যোক্তা দেলোয়ার হোসেন মঞ্জু অসাম্প্রদায়িক ও প্রগতিশীল সমাজ নির্মাণকে ব্রত হিসেবে দেখতেন।
দেলোয়ার হোসেন স্ত্রী, দুই কন্যা ও দুই পুত্রসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী ও বন্ধু-বান্ধব রেখে গেছেন।