­
­
বুধবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৫ খ্রীষ্টাব্দ | ১০ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সর্বশেষ সংবাদ
ট্রাম্প প্রশাসনের বিরুদ্ধে আইনি লড়াইয়ে জয় বাংলাদেশি শিক্ষার্থী, থাকবেন যুক্তরাষ্ট্রেই  » «   চট্টগ্রাম থেকে চীনে চালু হচ্ছে কার্গো ফ্লাইট, খুলবে বাণিজ্যের নতুন দুয়ার  » «   ইউনূসের বিরুদ্ধে শ্রমিকদের ২৫ কোটি টাকা আত্মসাৎ মামলা বাতিল  » «   হামজার ওপর চড়াও বার্নলি সমর্থকরা  » «   যুক্তরাষ্ট্র থেকে ৩১ জনকে ফেরত, বাংলাদেশিদের মধ্যে উদ্বেগ  » «   লন্ডনে বিয়ের অনুষ্ঠানে আ.লীগের সাকেক চার মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী  » «   ব্রিটেনে কি দ্বিদলীয় রাজনীতি অবসানের পথে  » «   কী আছে নারী কমিশনের প্রতিবেদনে, কেনো ইসলামী দলগুলোর বিরোধিতায়?  » «   বাংলাদেশে ভ্রমণে সতর্কর্তা যুক্তরাষ্ট্রের, পার্বত্য অঞ্চলে নিষেধাজ্ঞা  » «   যুক্তরাজ্যে বিরল চিকিৎসা কীর্তি, ২বার ভূমিষ্ঠ হলো একই শিশু  » «   সিলেট থেকে কার্গো ফ্লাইটের পূর্ণাঙ্গ কার্যক্রম শুরু ২৭ এপ্রিল  » «   যুক্তরাষ্ট্র থেকে রেমিটেন্স বেড়েছে দ্বিগুণের বেশি, কমেছে আমিরাত থেকে  » «   পাকিস্তানের পররাষ্ট্র সচিবকে কী বললো ঢাকা?  » «   বিয়ানীবাজার জনকল্যাণ সমিতি ইউকের উদ্যোগে ব্যাডমিন্টন টুর্নামেন্ট অনুষ্ঠিত  » «   নির্বাচনের জন্য জামায়াত আমিরের ৩ শর্ত, ফেব্রুয়ারি ২৬-এর সময়সীমা কঠিন নয়  » «  

‘আলোয় আলোয় মুক্তির’ সন্ধানে বর্ষবরণ করবে ছায়ানট



বাঙালি সমাজকে নিয়ে মুক্তির পথযাত্রী হতে এবার ছায়ানটের বর্ষবরণের বার্তা- ‘আমার মুক্তি আলোয় আলোয়’। ছায়ানটের ৫৮তম এ আয়োজন যথারীতি শুরু হবে নতুন বছরের প্রথম দিন ভোর সোয়া ৬টায়। ভোরের আলো ফুটতে ফুটতে ভৈরবীর রাগালাপ দিয়ে ছায়ানটের ১৪৩২ বঙ্গাব্দবরণের সূচনা হবে বলে জানায় আয়োজন সংশ্লিষ্টরা।

শুক্রবার (১১ এপ্রিল ২০২৫) বিকালে ছায়ানট সংস্কৃতি-ভবনে সংবাদ সম্মেলনে আয়োজনের বিস্তারিত তুলে ধরা হয়। লিখিত বক্তব্যে ছায়ানট সাধারণ সম্পাদক লাইসা আহমদ লিসা বলেন, “বিশ্বব্যাপী যেমন ক্ষয়ে চলেছে মানবতা, তেমনি এদেশেও ক্রমান্বয়ে অবক্ষয় ঘটছে মূল্যবোধের। তবুও আমরা আশাহত হই না, দিশা হারাই না, স্বপ্ন দেখি হাতে হাত রেখে সকলে একসাথে মিলবার, চলবার। “বাঙালি জাগবেই, সবাই মিলে সুন্দর দিন কাটানোর সময় ফিরবেই। সার্থক হবেই হবে, মানুষ-দেশ, এ পৃথিবীকে ভালোবেসে চলবার মন্ত্র।”

ষাটের দশকে রমনার বটমূলে যে বর্ষবরণ অনুষ্ঠানের সূচনা করেছিল ছায়ানট, এখন তা বাঙালির নববর্ষ উদযাপনের অন্যতম প্রধান অনুষঙ্গ।

১৯৬৭ সালে নগরে যে বর্ষবরণ অনুষ্ঠানের সূচনা করেছিল ছায়ানট, ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের বছর ছাড়া প্রতিটি পহেলা বৈশাখেই সে অনুষ্ঠান হয়েছে; নতুন বছরকে স্বাগত জানানো হয়েছে সুরের মূর্ছনা আর কথামালায়। কোভিডের দুবছর এ আয়োজন করা হয় ভার্চুয়ালি। ২০০১ সালে ছায়ানটের বৈশাখ বরণের অনুষ্ঠানে বোমা হামলা চালায় জঙ্গিরা। তাতে ১০ জন নিহত হন। এরপর থেকে কঠোর নিরাপত্তা বেষ্টনীর মধ্যেই প্রতি বছর বর্ষবরণের এ আয়োজন হচ্ছে। ১৯৬১ সালে পাকিস্তানি শাসকদের বাধা উপেক্ষা করে রবীন্দ্রজন্মশতবর্ষ উদযাপন এবং তার সূত্র ধরে পরে সাংস্কৃতিক সংগঠন ছায়ানট গঠনে অনেকের সঙ্গে সনজীদা খাতুন ছিলেন নেতৃস্থানে।

বাঙালির সাংস্কৃতিক পরিমণ্ডলে কিংবদন্তিতুল্য, গবেষকের চোখে বিস্ময় জাগানিয়া ব্যক্তিত্ব ছিলেন সনজীদা খাতুন, যার জীবন কেটেছে গানে গানে বাঙালির আত্ম পরিচয়ের সুলুক সন্ধানে। ঢাকার স্কয়ার হাসপাতালে গত ২৫ মার্চ বিকাল ৩টায় জীবনের এই বিপুল যাত্রা সাঙ্গ করেন তিনি। এবারই প্রথম সনজীদা খাতুনকে ছাড়া বর্ষবরণের অনুষ্ঠান আয়োজন করছে ছায়ানট। অনুষ্ঠানটি সুষ্ঠভাবে আয়োজন করা এবং আয়োজনের মর্মবাণী মানুষের মাঝে ছড়িয়ে দেওয়ার মাঝেই সনজীদা খাতুনকে সম্মান জানানো হবে বলে মনে করছেন ছায়ানট সংশ্লিষ্টরা।

ছায়ানটের নির্বাহী সভাপতি সারওয়ার আলী বলেন, “এই প্রথম ছায়ানট বর্ষবরণ আয়োজন করছে, যখন সনজীদা খাতুন নেই। তার যে চিন্তা, আমরা যেন ছড়িয়ে দিতে পারি। আয়োজনটি সুষ্ঠভাবে করতে পারা এবং বর্ষবরণের মর্মবাণী সবার মাঝে ছড়িয়ে দিতে পারাটাই হবে সনজীদা খাতুনকে শ্রদ্ধা জানানো।”

এবারের আয়োজনে কোনো নিরাপত্তা শঙ্কা রয়েছে কিনা, এমন প্রশ্নে সারওয়ার আলী বলেন, “একদমই করছি না।” বর্ষবরণ নিছক একদিনের জন্য বাঙালি সাজার প্রতিযোগিতা নয় মন্তব্য করে সারওয়ার আলী বলেন, “এই ধারাটি ধরে রেখে সকল মানুষ যেন স্বস্তির জীবনযাপন করতে পারি, তার প্রার্থনা করতে চাই।”

ছায়ানটের যুগ্ম সম্পাদক পার্থ তানভীর নভেদ বলেন, “ছায়ানট এ আয়োজন নিয়ে অনেক মানুষকে সম্পৃক্ত করতে পেরেছে- এটাই আমাদের পরম পাওয়া।”

ছায়ানট সাধারণ সম্পাদক লাইসা আহমদ লিসা বলেন, “যেভাবে মানবতার কথা বলে, সম্প্রীতির কথা বলে অনুষ্ঠান সাজানো হয়,এবারও তেমনটাই থাকছে।”

এবারের অনুষ্ঠানসজ্জায় ৯টি সম্মেলক, ১২টি একক গান ও ৩টি পাঠ অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। দুই ঘণ্টার অনুষ্ঠানে সব মিলিয়ে দেড়শতাধিক শিল্পী এ আয়োজনে অংশগ্রহণ করছেন।

ছায়ানটের লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, “বরাবরের মতই নতুন বাংলা বছরকে বরণ করার এই আয়োজন সুষ্ঠু রাখতে অক্লান্ত সেবা দিয়ে চলেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এবং গণপূর্ত অধিদপ্তর। ছায়ানট কর্মীদের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে নিরলস শ্রম দিয়ে চলেছেন স্বেচ্ছাসেবীরা, থার্টিনথ হুসার্স ওপেন রোভার গ্রুপের নির্বাচিত সদস্যরা। মঞ্চসহ সার্বিক সাজসজ্জার পরিকল্পনা করেছেন ছায়ানটের প্রাক্তনী সুজন চৌধুরী।”

রমনা উদ্যান থেকে দুই ঘণ্টাব্যাপী এই আয়োজন নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় সরাসরি সম্প্রচার করা হবে ছায়ানটের ইউটিউব চ্যানেল (youtube.com/@chhayanautbd) ও ফেইসবুক পেইজে (facebook.com/chhayanautbd)।

বিটিভিও সরাসরি সম্প্রচার করবে অনুষ্ঠান। সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ছায়ানটের সহ-সভাপতি খায়রুল আনাম শাকিল ও যুগ্ম সম্পাদক জয়ন্ত রায়।

সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন

সাবস্ক্রাইব করুন
পেইজে লাইক দিন