বিশ্ব সন্ত্রাসবাদ সূচক ২০২৫–এর সবশেষ প্রতিবেদনে আমেরিকার চেয়ে ভালো অবস্থানে আছে বাংলাদেশ। ২০২৫ সালের গ্লোবাল টেররিজম ইনডেক্স (জিটিআই) সূচকে বাংলাদেশ স্কোর তিন দশমিক শূন্য তিন। অন্যদিকে, আমেরিকা তিন দশমিক পাঁচ এক স্কোর নিয়ে ঠিক বাংলাদেশের এক ধাপ পেছনে অর্থাৎ ৩৪ তম স্থানে অবস্থান করছে। এই স্কোরের ভিত্তিতে ১৬৩টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশ ৩৫তম স্থানে রয়েছে, যা আগের বছরের তুলনায় উন্নতি হয়েছে। এর আগে ২০২৪ সালে বাংলাদেশ ছিল ৩২তম স্থানে।
বুধবার (৫ মার্চ ২০২৫) অস্ট্রেলিয়া ভিত্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান ইনস্টিটিউট ফর ইকোনমিক্স অ্যান্ড পিস প্রকাশ করে গ্লোবাল টেররিজম ইনডেক্স (জিটিআই) সূচক। ২০২৪ সালের পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে এই সূচক তৈরি করা হয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২৪ সালে বাংলাদেশে সন্ত্রাসবাদের ঝুঁকি ভারত, পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের তুলনায় কম ছিল।
বিশ্ব সন্ত্রাসবাদ সূচকে দক্ষিণ এশিয়ায় সবচেয়ে ভালো অবস্থানে আছে শ্রীলংকা এবং ভূটান। উভয় দেশের স্কোর শূন্য। এক দশমিক এক এক স্কোর নিয়ে এর পরের অবস্থানেই রয়েছে নেপাল। এরপরে বাংলাদেশের অবস্থান। বাংলাদেশের পর যথাক্রমে ভারত (৬ দশমিক ১১), আফগানিস্তান (৭ দশমিক ২৬) এবং পাকিস্তান ৮ দশমিক ৩৭ স্কোর নিয়ে সবশেষে অবস্থান করছে।
বিশ্ব সন্ত্রাসবাদ সূচকে প্রথম দশটি দেশের মধ্যে বুরকিনা ফাসো সবচেয়ে বেশি সন্ত্রাসবাদের শিকার দেশ হিসেবে রয়ে গেছে। যদিও সেখানে হামলা ও প্রাণহানির হার যথাক্রমে ৫৭ শতাংশ ও ২১ শতাংশ কমেছে, তবুও বিশ্বব্যাপী সন্ত্রাসবাদজনিত মোট মৃত্যুর এক-পঞ্চমাংশ এই দেশেই ঘটেছে। এর পরেই রয়েছে পাকিস্তান ও সিরিয়া। এরপরে রয়েছে যথাক্রমে মালি, নাইজার, নাইজেরিয়া, সোমালিয়া, ইসরায়েল, আফগানিস্তান, ক্যামেরুন।
জিটিআই বিশ্বব্যাপী সন্ত্রাসবাদের প্রবণতা বিশ্লেষণের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সূচক। স্কোর নির্ধারণে হামলার সংখ্যা, প্রাণহানি, আহতের সংখ্যা ও জিম্মিদের পরিস্থিতির মতো নানা উপাদান বিবেচনা করা হয়। পাশাপাশি সংঘাত ও আর্থসামাজিক তথ্য বিশ্লেষণ করে সন্ত্রাসবাদের সামগ্রিক চিত্র তুলে ধরা হয়।
২০২৪ সালে বিশ্বে সন্ত্রাসী হামলার শিকার হওয়া দেশের সংখ্যা ৫৮ থেকে বেড়ে ৬৬-তে পৌঁছেছে, যা প্রায় এক দশকের উন্নতির বিপরীত চিত্র তুলে ধরেছে। ৪৫টি দেশের পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে, অন্যদিকে ৩৪টি দেশে উন্নতি হয়েছে। ২০২৪ সালে চারটি প্রধান সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর সহিংসতা বৃদ্ধি পাওয়ায় বিশ্বব্যাপী সন্ত্রাসী হামলায় মৃত্যুর সংখ্যা ১১ শতাংশ বেড়েছে।