ফ্রান্সে ভ্রমণকারীদের জন্য শিথিল করা হচ্ছে করোনার বিধিনিষেধ। দুই ডোজ ভ্যাকসিন নেয়া যে কোন দেশের নাগরিকগণ ভ্রমণ করতে পারবেন ফ্রান্সে। এছাড়া ভ্যাকসিন না নিলেও যুক্তরাজ্য, স্পেন, পর্তুগাল, সাইপ্রাস, ন্যাদারল্যান্ডস ও গ্রিস থেকে যে কেউ ফ্রান্সে প্রবেশ করতে পারবেন। তবে এক্ষেত্রে প্রবেশের ২৪ ঘণ্টা পূর্বে তাদের কোভিড টেস্ট করাতে হবে। যার মেয়াদ থাকবে ৭২ ঘণ্টা। এসব নিয়ম কার্যকর হবে ১৮ জুলাই থেকে। শনিবার এ বিবৃতিতে এসব তথ্য জানান ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল ম্যাক্রোঁ।
তবে ফ্রান্সে ভ্রমণের আওতায় আসছেন না সব ধরনের ভ্যাকসিন গ্রহীতারা। ম্যাক্রোঁ বলেন, যারা ফাইজার বায়োএনটেক, মডার্না, অ্যাস্ট্রাজেনেকা, জনসন এন্ড জনসনের দুই ডোজ টিকা নিয়েছেন তাদের জন্য করোনা টেস্টের প্রয়োজন হবে না। কোন ধরনের টেস্ট ছাড়াই তারা ফ্রান্সে প্রবেশ করতে পারবেন। তবে ভ্রমণকারীদের সঙ্গে রাখতে হবে ভ্যাকসিন সার্টিফিকেট।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, উল্লেখিত ভ্যাকসিনগুলো ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টরোধে কার্যকরী। তাই এগুলোকে আওতাভুক্ত করা হয়েছে।
এছাড়া ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টে নাজুক অবস্থায় থাকা তিউনিসিয়া, মোজাম্বিক, কিউবা ও ইন্দোনেশিয়াকে রেড লিস্টে রেখেছে ফ্রান্স। ফ্রান্স ভ্রমণে এসব দেশের নাগরিকরা দুই ডোজ টিকা নেয়ার পরও সাতদিনের কোয়ারেন্টিনে করতে হবে।
এদিকে ভ্রমণকারীদের টানতে দীর্ঘ ৯ মাস পর ১৬ জুলাই থেকে পুনরায় চালু করা হয়েছে আইফেল টাওয়ার। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর প্রথমবার এত দীর্ঘ সময় ধরে আইফেল টাওয়ার বন্ধ রাখা হয়েছিল। আইফেল টাওয়ারের আয়রন লেডি লিফটে যেন প্রাণ ফিরে এসেছে। এই লিফটে করেই পর্যটকরা ৩শ মিটার উঁচুতে ভ্রমণ করেন।
করোনা মহামারির কারণে দীর্ঘদিন ধরেই এই লিফটগুলো বন্ধ ছিল। ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসের কেন্দ্রে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে থাকা লোহার তৈরি আইফেল টাওয়ারের উচ্চতা ১ হাজার ৫০ ফুট বা ৩২০ মিটার। আইফেল টাওয়ার খুলে দেয়া হলেও এর চূড়ায় যেতে পারবেন সীমিত সংখ্যক দর্শনার্থীরা।
বর্তমানে প্রতিদিন আইফেল টাওয়ারে ১৩ হাজার মানুষকে প্রবেশের অনুমতি দেয়া হয়েছে। সাধারণ সময়ের তুলনায় এই সংখ্যা অর্ধেক। মূলত সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করতেই এমন পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে।
তবে আগামী বুধবার থেকে আইফেল টাওয়ারে গেলে দর্শনার্থীদেরকে টিকার প্রমাণপত্র বা করোনা পরীক্ষার নেগেটিভ রিপোর্ট দেখাতে হবে। ফ্রান্স সরকারের সাম্প্রতিক নির্দেশনার অংশ হিসেবেই এগুলো দেখাতে হবে বলে জানানো হয়েছে।
করোনা মহামারির কারণে ফ্রান্সের পর্যটন খাতে ধস নেমে এসেছে। কিন্তু গত কয়েক সপ্তাহ ধরেই স্বাভাবিক জীবন-যাপনে ফেরার চেষ্টা করছে ফ্রান্স। এরই অংশ হিসেবে পর্যটকদের জন্য আইফেল টাওয়ারের দরজা খুলে দেয়া হলো।