নেত্রকোণার কলমাকান্দায় উপজেলায় শাহানা খাতুন (৩০) নামে ৮ মাসের গর্ভবতী এক গৃহবধূর মরদেহ উদ্ধার হয়েছে।
মরদেহের সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি শেষে বুধবার (২ জুন) দুপুরে ময়না তদন্তের জন্য নেত্রকোণা আধুনিক সদর হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ এবং এঘটনায় নিহতের স্বামী লালন মিয়াকে (৩৫) জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করেছে পুলিশ।
গৃহবধূ শাহানা খাতুন উপজেলার সদর ইউনিয়নের কাঞ্চনপুর গ্রামের মৃত রহিম মিয়ার ছেলে লালন মিয়ার স্ত্রী। শাহানা সুনামগঞ্জের ধর্মপাশা উপজেলায় দক্ষিণ বংশীকুন্ডা ইউনিয়নের চাঁনপুর গ্রামের মো. ফুল মিয়ার মেয়ে। নিহত গৃহবধুর বড় মেয়ে মরিয়ম (১০), ছেলে জামিম (৭) ও ছোট মেয়ে আছিয়া (৩) এই সন্তানের জননী এবং ৮ মাসের গর্ববর্তী ছিলেন শাহানা।
নিহতের বাবা ফুল মিয়া ৫২বাংলা টিভিকে জানান, কলমাকান্দা উপজেলার কাঞ্চনপুর গ্রামের লালন মিয়ার (৩৫) সাথে প্রায় ১০ বছর পূর্বে শাহানা আক্তারের বিয়ে হয়। তাদের দাম্পত্য জীবনে তিন সন্তান রয়েছে। আমার মেয়ে সন্তান নিয়ে স্বামীর সাথে ঢাকায় থাকতো। মেয়ের গর্ভে সন্তান আসলে তা নষ্ট করার জন্য চাপ দেয়। নষ্ট করতে অসম্মাতি জানালে মেয়েকে অত্যাচার করে স্বামী ও শ্বাশুরী। প্রায় পাঁচ মাস আগে একদিন ফোন করে জানায় সন্তানসহ আমার মেয়েকে ফেলে চলে গেছে ও লালন আরেকটি বিয়ে করেছে। পরে ঢাকা থেকে মেয়েকে আমার বাড়িতে নিয়ে আসি। ঈদের কয়েকদিন পরে লালন ও তার আত্মীয় স্বজন শাহানাকে বুঝিয়ে কলমাকান্দায় শ্বশুর বাড়িতে নিয়ে আসে।
গত মঙ্গলবার দিবাগত রাত ১টার দিকে ফোনে মেয়ের স্বামী লালন জানায় শাহানার শরীরের অবস্থা খারাপ। আমরা মাথায় পানি দিচ্ছি। খবর পেয়ে রাতেই নৌকা ও পাঁয়ে হেঁটে মেয়ের শ্বশুর বাড়িতে চলে আসি। এসে দেখি আমার মেয়ে মরে পড়ে আছে। শাহানার সাত বছরের ছোট ছেলে আমার নাতি জামিম বলে রাতে বাবা তার মাকে গলা চেপে ধরতে দেখেছে। আমি মেয়ের গলায় আঘাতের চিহ্ন দেখতে পেয়েছি। পরে বিষয়টি আমার এলাকার চেয়ারম্যানকে জানালে তিনি পুলিশকে জানায় এবং সকাল ৯ টার দিকে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে দুপুরের দিকে মরদেহ হাসপাতালে পাঠায়।
কলমাকান্দা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এ.টি.এম মাহমুদুল হক জানান, গৃহবধূর লাশ দুপুরের দিকে ময়নাতদন্তের জন্য নেত্রকোণা আধুনিক সদর হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে। নিহতের ছোট ছেলে জামিমের কাছ থেকে বেশ কিছু তথ্য পেয়েছি। এঘটনায় নিহতের স্বামী পুলিশ হেফাজতে আছে। মামলা প্রক্রিয়াধীন বলে তিনি জানান।