শনিবার, ৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪ খ্রীষ্টাব্দ | ২৩ ভাদ্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
https://blu-ray.world/ download movies
Sex Cams
সর্বশেষ সংবাদ
লন্ডনে বিসিএ এ্যাওয়ার্ডস ২৮ অক্টোবর থাকছে নানা চমকপ্রদ আয়োজন  » «   বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ৩২নং বাসভবন ভস্মীভূত এবং ভাস্কর্য ভাংচুরের নিন্দা ও প্রতিবাদ  » «    অদ্ভুত দেশপ্রেম ও খাঁটি ব্যক্তিগত স্বার্থ  » «   বাংলাদেশের সাম্প্রতিক পরিস্থিতি তুলে ধরে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরাবারে বঙ্গবন্ধু লেখক সাংবাদিক ফোরামের স্মারকলিপি প্রদান  » «   দাম দিয়ে কিনেছি বাংলা কারো দানে পাওয়া নয়  » «   টাওয়ার হ্যামলেটসের বো এলাকায় নতুন কাউন্সিল ভবনের উদ্বোধন করেছেন নির্বাহী মেয়র লুৎফুর  » «   বাংলাদেশে বিপুল সংখ্যক শিক্ষার্থী ও সাংবাদিকের প্রাণহানি এবং সৃষ্ট অস্থিরতা-সহিংসতায় লন্ডন বাংলা প্রেস ক্লাবের ক্ষোভ-নিন্দা  » «   সৃজনের আলোয় মুস্তাফিজ শফি, লন্ডনে বর্ণাঢ্য সংবর্ধনা  » «   বৃটেনে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত তাহমিনার অসাধারণ সাফল্য  » «   দুই বঙ্গকন্যা ব্রিটিশ মন্ত্রীসভায় স্থান পাওয়ায় বঙ্গবন্ধু লেখক এবং সাংবাদিক ফোরামের আনন্দ সভা ও মিষ্টি বিতরণ  » «   কেয়ার হোমের লাইসেন্স বাতিলের বিরুদ্ধে আইনী লড়াইয়ে ল’ম্যাটিক সলিসিটর্সের সাফল্য  » «   যুক্তরাজ্যে আবারও চার ব্রিটিশ-বাংলাদেশী  পার্লামেন্টে  » «   আমি লুলা গাঙ্গ : আমার আর্তনাদ কেউ  কী শুনবেন?  » «   বাংলাদেশে মানবাধিকার লঙ্ঘনের প্রতিবাদে লন্ডনে ইউনিভার্সেল ভয়েস ফর হিউম্যান রাইটসের সেমিনার অনুষ্ঠিত  » «   লন্ডনে বাংলা কবিতা উৎসব ৭ জুলাই  » «  
সাবস্ক্রাইব করুন
পেইজে লাইক দিন

এমসি কলেজে রাজনৈতিক পাপ: জেগে ওঠার এখনই সময়



সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন

 

ঐতিহ্যবাহী সিলেট এমসি (মুরারিচাঁদ) কলেজে  বেড়াতে যাওয়া  দম্পতির স্বামীকে ছাত্রাবাসে আটকিয়ে রেখে তার স্ত্রী কে  ছাত্রলীগ নামধারী কিছু কুলাঙ্গার কর্তৃক গণধর্ষণের ঘটনা সমস্ত দেশবাসীর মত আমাকেও মর্মাহত ও লজ্জিত করেছে। এই পৈশাচিক ঘটনাটি শুনার পর থেকে অনেকের মতো আমিও নিজেকে কোনোভাবে স্বস্তিতে রাখতে পারছিনা । এই হৃদয়বিদারক ঘটনাটি  বারবার  মনে উদিত হয় এবং বারবার আমি নিজের কাছে নিজে লজ্জিত হই।

আধ্যাত্মিক নগরী হজরত শাহজালাল ও শাহপরানের পূণ্য ভূমিতে অবস্থিত শত বছরের অধিক সময়ের শত ঐতিহ্যে লালিত এই বিদ্যাপীঠে ঘটে যাওয়া এমন পাশবিক  ঘটনা আমার মত সমস্ত দেশবাসীর বিবেকে নাড়া দিয়েছে তা প্রমাণ স্বরূপ  প্রিন্ট, ইলেকট্রনিক মিডিয়া, ফেইসবুক সহ দেশের সর্বস্তরে মানুষ আজ এর সুষ্ঠু বিচারের দাবিতে সোচ্চার।

এই ঘটনা এক  অর্থে প্রমাণ করে বর্তমান সমাজ ব্যবস্থায় মা-বোন নিয়ে কেউ আমরা নিরাপদ নয়। আমাদেরকে নিরাপদ ও মানসম্মানে বাঁচাতে এর মূল উৎপাটন জরুরী । এর জন্য দায়ী কে ?  কাদের ব্যর্থতায় এমন পৈশাচিক ঘটনা সংগঠিত হয়েছে তা আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেয়া এখন  সময়ের দাবী ।

এই পৈশাচিক ঘটনার প্রতিবাদ করতে অনেকে বিভিন্ন মাধ্যমে লিখেছেন, এই পবিত্র স্থানে এমন বর্বরতা কল্পনা করতে পারিনি । আসলে   আমরা মনভুলা জাতি, দুদিন পূর্বে কি ঘটেছে তা আমরা অনেক সময় ভুলে যাই । কোন ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে কোন ঘটনা ঘটে -তা আমরা অনেক সময় অনুধাবন করতে পারিনা ।

এই পৈশাচিক ঘটনা হুট করে  ঘটেছে এমন নয়, এর ধরাবাহিকতা রয়েছে । এর দায়িত্ব কেউ না কেউ নিতে হবে। যদি কেউ স্বেচ্ছায় তার ভুলের কথা স্বীকার করে  জনগণের কাছে ক্ষমা না চায়   তাহলে সে যতবড় মাপের নেতা হউক না কেন, জোরকরে তার গলায় কলঙ্কের মালা  ঝুলিয়ে দেয়া এখন সময়ের দাবি ।

আমি মনেকরি এর জন্য দায়ী  সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের  প্রতিনিধিত্বকারী কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব ও সিলেটের কৌটায় সরকারে প্রতিনিত্বকারী ব্যক্তি ও তাঁদের নোংরা রাজনীতি।

আমার সাথে দ্বিমত করে হয়তো অনেকে বলতে পারেন কলেজ ক্যাম্পাসের অধীনে থাকা জায়গায় সংঘটিত ঘটনার দায়িত্ব কলেজ প্রশাসনের। এই কথার সাথে দ্বিমত পোষণ না করে বলতে চাই,

বাংলাদেশের বাস্তবতায় যখন যে দল রাষ্ট্রিয়  ক্ষমতায় আসে সেই দলের নেতা বা সরকারে প্রতিনিধিত্বকারী ব্যক্তি প্রশাসনের সকল ক্ষমতা নির্লজ্জভাবে   কুক্ষিগত করে ফেলেন। এখানে কলেজ প্রশাসন বলেন আর পুলিশ প্রশাসন বলেন, কেউ তার নিজ গতিতে কর্যক্রম পরিচালনা করা সম্ভব হয়ে উঠেনা । তাই যারা ক্ষমতার অনধিকার চর্চা করেন, সকল অপবাদ তাদের উপর বর্তাবে এটাই স্বাভাবিক ।

খ.

মানুষ এক দিনে যেমন ভদ্রতা শিখতে পারে না, তেমনি, একদিনে বেয়াদব-ও হয়না ।তার জন্য  প্রয়োজন হয় সময়ের  । ভালো এবং মন্দ দুটো পরিবেশেরও প্রয়োজন হয় । এমসি বিশ্ববিদ্যালয়ের যে সমস্ত ছাত্ররা এই জঘন্যতম ঘটনায় সম্পৃক্ত হয়েছে তারা  মেধাবী । তথ্যের ভিত্তিতে আমরা জানি মেধাবী ছাত্র – ছাত্রী ছাড়া এমসি কলেজে ভর্তি হওয়া যায় না। নিশ্চয় তাদের পিতা -মাতা সে ভাবে মেধাবী করে গড়ে তুলেছিল । তাদের স্বপ্ন ছিল হয়তো একদিন জ্ঞানে- গুনে ভরপুর হয়ে তারা পিতা- মাতার মুখ সমাজে আলোকিত করবে। কিন্তু আজ সন্তানের অপকর্মে এরকম স্বপ্ন দেখা কিছু পিতা-মাতার মুখে কলঙ্কের ছাই লেপন হয়েছে  ।

শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বর্তমান পরিস্থিতিতে আমার -আপনার শত কষ্টে বড় করা সন্তান এধরণের কাজে লিপ্ত হওয়া অস্বাভাবিক কিছু নয় । তাই যাদের পশ্রয়ে  এবং যাদের ব্যর্থতায় এমন কলঙ্কিত কাজে সন্তান লিপ্ত হয়  তাদের নাম সমাজে উন্মোচিত করা আমাদের সকলের দায়িত্ব ।

আমাদের সকলের নিশ্চয় মনে আছে  ২০১২   সালে ছাত্রলীগ নামধারী কিছু চিহ্নিত সন্ত্রাসী  সামান্য অজুহাতে শত ঐতিহ্যে লালিত সিলেট এমসি কলেজের ছাত্রাবাস পুড়ানোর কথা।এই বর্বরতায় তখন সমস্ত সিলেটবাসীর হৃদয়ে রক্তক্ষরণ হয়েছিল । এই চরম জঘন্য  ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের বিচারের দাবিতে তখন দল মত নির্বিশেষে সকল মহল থেকে  দাবি উঠেছিল। প্রতিবাদী মানুষের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে তখন এই সিলেটের সন্তান এমসি কলেজের প্রাক্তন ছাত্র তৎকালীন সরকারের অর্থমন্ত্রী আবুল মাল মুহিত, শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ  ও কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক  মিছবা উদ্দিন সিরাজ পোড়ানো কলেজ হোস্টেল পরিদর্শনে আসেন এবং এর সুষ্ঠু বিচারের আশ্বাস প্রদান করেন। জনগণ নেতাদের কথায় আস্থা রাখলেও আজ পর্যন্ত মানুষের কাছে   ‘আই ওয়াশ’ মূলক  একটি মামলা করা ছাড়া কোন  প্রকৃত আসামী গ্রেফতার ও তার বিচার কিছুই হয়নি ।

তথ্য অনুসন্ধানে দেখা যায়,  এই অপরাধীদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ না নেয়ার মূল কারণ ছিল-  সিলেট এক আসনের সম্ভাব্য পরবর্তী জাতীয় নির্বাচনের প্রার্থী  ছিলেন আবুল মাল মুহিত ও মিছবা উদ্দিন সিরাজ । তাদের ভোটের প্রয়োজনে এই সমস্ত লাঠিয়াল বাহিনী তাদের প্রয়োজন ছিল। অন্যদিকে নুরুল ইসলাম নাহিদ কেন্দ্রীয় নেতা হিসেবে সিলেট শহরে অবস্থানে প্রয়োজন ছিল ক্যাডার বাহিনী। কারণ  নুরুল ইসলাম নাহিদ কমিউনিষ্ট পাটির নেতা ছিলেন। সিলেটে আওয়ামীলীগ ও এর অঙ্গ সংগঠনের তৃণমূল বা নেতাদের সাথে তার সাংগঠনিক সম্পর্ক  স্বাভাবিকভাবেই ছিলনা। তাই  শিক্ষামন্ত্রী হয়েও তার শিক্ষালয়ে সংগঠিত ন্যাক্ষারজনক ঘটনার বিচারে হাত দিতে পারেননি! শুধু গণমাধ্যমের ক্যামেরার সামনে চোখের জল ফেলেছেন মাত্র।

অর্থাৎ এই তিন কেন্দ্রীয় নেতা নিজেদের ব্যক্তি স্বার্থের প্রয়োজন  বিবেচনায় নিয়েই   মূলত তারা সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেয়া থেকে বিরত থেকেছেন।

নেতাদের স্বার্থপরতা, বিচারহীনতা,সন্ত্রাসী লালনের মাসুল দিতে হচ্ছে আজ  সিলেটবাসীকে । আজ প্রতিদিন  পত্রিকার হেডলাইন হচ্ছে সিলেটের গণধর্ষণের ঘটনা,যা সিলেটবাসীর জন্য লজ্জা ও অপমানের ।

সিলেটের এই নেতাদের হীন স্বার্থপরতার কারণে ছাত্রাবাস পোড়ার মতো এই পৈশাচিক ঘটনা ঘটেছিল- তা রাজনৈতিক মহলে সে সময় সবাই মতপ্রকাশে বলেছেনও।  সাবেক দুই মন্ত্রী কে দুটো  প্রশ্ন করতে ইচ্ছে হয় । আপনারা জনগণের অভিভাবক হয়েছিলেন জনগণের কাছে গিয়ে তাদের  হাতে পায়ে ধরে ভোট ভিক্ষা চেয়ে । এমপি অথবা মন্ত্রী হিসেবে শপথ নিয়েছেন তাদের  জান ও মালের সুরক্ষা দেবেন বলে । আপনাদের কাছে জানতে চাই পুরনো ছাত্রাবাসটি কার টাকায় নির্মিত হয়েছিল ? জনগণের না আপনাদের বাপ-দাদার টাকায় ? যদি জনগণের টেক্স এর টাকায় হয়ে থাকে তাহলে, সন্ত্রাসীদের বিচারের আওতায় না এনে সন্ত্রাসীদের পক্ষে আপনাদের অবস্থান সুস্পষ্ট শপথের বরখেলাপ নয় কি?  দ্বিতীয় প্রশ্ন : কলেজ কে সন্ত্রাসীদের হাত থেকে  সুরক্ষা  না করে পোড়া ছাত্রাবাসটি আট কোটি টাকা ব্যয়ে পুন:নির্মাণের এই অধিকার আপনাদের কে দিয়েছে ? এই দুটি প্রশ্নের উত্তর জনগণ আপনাদের কাছ থেকে জানতে পারবে বলে আশা করি ।

গ.

আজ আমরা অনেকে কলেজে সংগঠিত ঘটনার  ধারাবাহিকতা না জেনে বিভিন্ন মাধ্যমে এই ঘটনার জন্য কলেজের অধ্যক্ষ , হল সুপারেন্টেন্ড অথবা প্রহরী কে দায়ি করছি এবং তাদের অপসারণ দাবি করছি। আবার অনেকে প্রশ্ন তুলেছেন  গত আঠারো মার্চ   থেকে করোনা ভাইরাস জনিত কারণে অদ্যাবধি কলেজ বন্ধ থাকলে ছাত্ররা হোস্টেলে থাকে কিভাবে ? কলেজ প্রশাসনের পক্ষ থেকে কেন তাদের বাধা প্রদান করা হয়নি ?

এই সব প্রশ্নের উত্তর খুব সহজ ও স্বচ্ছ । যারা ছাত্রাবাস পোড়িয়ে  ক্ষমতাসীনদের আশীর্বাদে থেকে বুক ফুলিয়ে আমাদের ‘মুনুষ্য  সমাজে’ চলাফেরা করতে পারে, তাদের জন্য কলেজ প্রশাসনের আদেশ অমান্য করে কলেজ হোস্টেলে থাকা কোনো ব্যাপার-ই না ।

আমরা লক্ষ্য করেছি, কলেজ ছাত্রাবাসে পৈশাচিক ঘটনা সংগঠিত হওয়ার পর পুলিশ সন্ত্রাসীদের রাখা আগ্নেয়আস্ত্র ও ধারালো দা উদ্ধার করেছে। এই সমস্ত অস্ত্র যাদের কাছে সংরক্ষিত থাকে তাদেরকে কলেজের অধ্যক্ষ , হল সুপারেন্টেন্ড অথবা প্রহরী  কার এমন বুকের পাটা আছে যে, তাদের কলেজ হোস্টেলে থাকতে বাধা প্রদান করবে!

আজ আমাদেরকে শিক্ষাঙ্গনের সুষ্ঠ পরিবেশ বাঁচাতে হলে এই কুচক্রী মহলের বিরুদ্ধে সাহসিকতার সাথে যার যার অবস্থান থেকে  রুখে দাঁড়াতে হবে। সন্ত্রাসীদের দলীয় পরিচয় কি অথবা তাদের নেতা কে তা আর বিবেচনার সময় নেই। সর্ব প্রথম যে দলের নাম ভাঙ্গিয়ে এই কুকর্ম পরিচালিত হচ্ছে প্রথমে তাদেরকে প্রতিবাদি হয়ে দাঁড়াতে হবে।  বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ  দলের একজন সদস্য হয়ে আমি তীব্র ঘৃণায় প্রতিবাদ করছি । আমি দল করি বলে কোনো নেতার কাছে আমার বিবেক বন্ধক দেইনি।  প্রথমত জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর আদর্শের এবং মহান মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্বদানকারী সংগঠন  বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ এর  আপনি যদি একজন কর্মী  হন তাহলে দলীয় আদর্শের  ভাই-বোন হিসাবে অধিকার খাটিয়ে অনুরোধ করছি-  আপনিও রুখে দাঁড়ান ।  সমাজের যে কোন পর্যায়ের  একজন সচেতন মানুষ আপনাকেও অনুরোধ- দেশে-বিদেশে যে কোন স্থান ও অবস্থান থেকে প্রতিবাদ করুন। আপনিও রুখে দাঁড়ান।

আমি, আপনি, আমরা সবাই দলমত নির্বিশেষে  সকলের ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধই দিতে পারে  এ থেকে মুক্তি।

ঘ.

আমাদের মনে রাখা উচিত এই ঘটনা প্রতিটি ঘটনার মত যে চাপা দেয়া হবে না তা নয় ।  ধামা-চাপা দেয়ার  প্রক্রিয়া  ইতিমধ্যে  শুরু হয়ে গেছে।  বিভিন্ন মাধ্যমে জানতে পারলাম – ‘উদোর পিন্ডি বুধোর ঘাড়ে ’ চাপানোর প্রক্রিয়া একধাপ এগিয়ে যাওয়া হয়েছে । এই পৈশাচিক ঘটনার দায় দুজন নিরীহ প্রহরীর উপর চাপিয়ে দিয়ে  ইতিমধ্যে তাদেরকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়েছে ।

আমাদের সমাজ ব্যবস্থায়  অনেক সময় দেখা যায়, কোনো  ভদ্র লেবাসধারী বদমাশিতে ফেসে গেলে গ্রাম্য বিচারে  ভদ্রলোক কে বাঁচাতে ভদ্রলোকের দায়  তার নিরিহ কাজের লোকের উপর চাপিয়ে দেয়া হয়। বাংলা নাটক-সিনেমায় এই দৃশ্য বাংলাদেশীরা দেখেননি এই রকম মানুষের সংখ্যা নি:সন্দেহে হবে নগণ্য। সংবাদ ও গণমাধ্যমে প্রকাশিত এমসি কলেজে ধর্ষণের  পৈশাচিক ঘটনার সহজভাবেও যদি  পর্যালোচনায় নেয়া যায়, তাহলেও কী  প্রমাণ করে- এই দায় একজন নিরীহ প্রহরীর ।

আমি এই কাজের তীব্র নিন্দা, ক্ষোভ ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি এবং তাদের চাকরি ফিরিয়ে দেয়ার জোরালো দাবি জানাচ্ছি ।

ঘটনা সংঘটিত হওয়ার দিন থেকে আজ পর্যন্ত যারা এই ঘটনা বিভিন্ন মাধ্যমে সমাজে সামনে তুলে ধরেছেন অথবা প্রতিবাদ করেছেন, তাদেরকে অনেক  ধন্যবাদ । বিশেষ করে এই বর্বরোচিত  ঘটনার সময়  ভিকটিমের অসহায় স্বামীকে সহায়তা দানকারী সিলেট জলা ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক  মিহিত গুহ  চৌধুরী বাবলা ; যার  আপোশহীন,সাহসী ভূমিকার কারণেই এই ঘটনা জনসম্মুখে আসে । এবং গত ২৮ মে  সিলেট মেট্রো পলিটন আদালতে  এই ঘটনায় আটক আসামীদের পক্ষে প্রতিবাদ হিসেবে সিলেট বারের কোনো আইনজীবী অবস্থান না নেয়ায় তাদের প্রতিও রইল শ্রদ্ধা ও কৃতজ্ঞতা। যদিও অনেকে মানবাধিকা চর্চার  প্রসঙ্গ টেনে  আসামীর পক্ষে আইনজীবী থাকা কে ন্যায় বিচার প্রক্রিয়ার অংশ হিসাবে দেখছেন।  এই   যুক্তির  বিরোধিতা করছি না। তবে  আমি আমার সিলেটবাসী আইনজীবীদের স্যালুট জানাই- অন্তত নৈতিকভাবে সিলেটের আইনজীবীরা এই পাশবিক ঘটনার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছেন।  পৈচাশিকরা চাইলে দেশের যে কোন জেলার আইনজীবী এনে তার সুবিচার পাওয়ার  অধিকার সিলেটের আইনজীবীরা তো রুদ্ধ করেননি।

সত্যের জয় হোক। মানুষ অন্যায়ের বিরুদ্ধে জাগুক। অন্যকে জাগানোর মতো অনুপ্রেরণামূলক কাজের চর্চার হোক- অন্তত এই সময়ে আমার একান্ত প্রার্থনা

২৯.০৯.২০২০, লন্ডন।

ছরওয়ার আহমদ: স্যোসাল এক্টিভিস্ট, সাবেক ভিপি ; বিয়ানীবাজার সরকারী কলেজ।যুক্তরাজ্য প্রবাসী।

 

আরও পড়ুন:

গ্যালারি অব একসেলেন্স: ঘৃণা লজ্জা এবং সত্যের বিজয়


সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন

"এই বিভাগে প্রকাশিত মতামত ও লেখার দায় লেখকের একান্তই নিজস্ব " -সম্পাদক