করোনাকালীন সময়ে প্রাথমিক শিক্ষার বর্তমান অবস্থা ও চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় করণীয় বিষয়ে সচেতন নাগরিক কমিটি (সনাক), কিশোরগঞ্জ-এর উদ্যোগে প্রাথমিক শিক্ষা কর্তৃপক্ষের সাথে অনলাইন সভা সম্পন্ন হয় গত বুধবার (১৯ আগস্ট) সন্থ্যা ৭:৩০ মিনিটে। সনাক সভাপতি সাইফুল হক মোল্লা দুলু-এর সভাপতিত্বে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার জনাব সুব্রত কুমার বণিক ও বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সহকারী জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার জনাব মাহবুব জামান। সভায় কিশোরগঞ্জ জেলার তেরোটি (১৩) উপজেলার উপজেলা শিক্ষা অফিসারবৃন্দ এবং সদর উপজেলার সকল সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসারবৃন্দও উপস্থিত ছিলেন।
সভার প্রথমে সনাকের শিক্ষা উপ-কমিটির সদস্য স্বপন কুমার বর্মন স্বাগত বক্তব্যে সভার লক্ষ্য, উদ্দেশ্য উল্লেখপূর্বক শিক্ষা খাতে সনাকের কাজের অগ্রগতি ও কর্তৃপক্ষের সহযোগিতা তুলে ধরে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। এরপর উপজেলা শিক্ষা অফিসারবৃন্দ করোনাকালীন সময়ে তাদের কর্মসূচি ও অগ্রগতি উপস্থাপন করে বলেন, অনলাইনে ক্লাসের আয়োজন করা হয়েছে যা রেকর্ড করে স্থানীয় ভিডিও চ্যানেলে প্রচার করা হয়, সংসদ টিভিতে পাঠ কার্যক্রম চালু আছে, সদর উপজেলায় প্রাথমিক শিক্ষদের সমিতির উদ্যোগেও বিশেষ কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। মুক্ত আলোচনায় বেশ কিছু চ্যালেঞ্জ উঠে আসে; সবার অনলাইন সেটআপ না থাকা, প্রত্যন্ত অঞ্চলে নেটওয়ার্ক দুর্বলতা ইত্যাদি । টিআইবি প্রধান কার্যালয় থেকে যুক্ত হয়েছিলেন সিভিক এঞ্জগেজমেন্ট বিভাগের সিনিয়র প্রোগ্রাম ম্যানেজার আতিকুর রহমান, তিনি সরকারের বিবিধ পদক্ষেপের কথা উল্লেখ পূর্বক কিশোরগঞ্জে এর অগ্রগতির বিষয়ে কর্তৃপক্ষের দৃষ্টিআকর্ষণ করেন।
প্রধান আতিথি তার বক্তব্যে বলেন, সরকারের মূল লক্ষ্য শিক্ষার্থীদের লেখা পড়ার সাথে সংযুক্ত রাখা, তারা যেনো মানসিকভাবে ভেঙ্গে না পরে। এলক্ষ্যে উপজেলা শিক্ষা অফিসারদের তত্ত¡াবধানে অনলাইন ক্লাস কার্যক্রম চালু করা হয়েছে। যারা বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতার কারণে যুক্ত হতে ব্যর্থ হচ্ছে তাদের সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হচ্ছে। তিনি উল্লেখ করেন, এখন পর্যন্ত ৯৭ শতাংশ শিক্ষার্থীদের সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়েছে। একজন শিক্ষক প্রতিদিন ধারাবাহিকভাবে পাঁচজন শিক্ষার্থীর সাথে যোগাযোগ করছে। তিনি আরো বলেন, যদিও এই প্রচেষ্টা বিদ্যালয়ে শিক্ষাদানের সমতুল্য হবেনা কিন্তু বিদ্যালয় খুলে দিলে যেন স্বল্প সময়ে সীমিত সিলেবাসে হলেও তাদের কোর্স সম্পন্ন করা সম্ভব হয়। এছাড়াও ইসলামিক ফাউন্ডেশনের সহযোগিতায় ইমামদের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের পড়া-লেখার প্রতি আভিভাবকদের যতœশীল করার উদ্যোগও নেয়া হয়েছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
সভাপতি সাইফুল হক মোল্লা দুলু, উপস্থিত সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, করোনার ফলে দেশের যে কয়টি খাত ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে তারমধ্যে সবথেকে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ খাত হচ্ছে শিক্ষাখাত। বর্তমান সংকটেও শিক্ষা কর্তৃপক্ষ যে দায়িত্বপালন করছে তা অবশ্যই প্রশংসনীয়। মতবিনিময় সভার উদ্দেশ্য সবাই যেনো আন্তরিকতার সহীত নিজ দায়িত্বটি পালন করে সংকট উত্তোরণে সহযোগিতা করেন। অন্যান্যদের মধ্যে আরো বক্তব্য রাখেন, সহকারী জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার জনাব মাহবুব জামান, টিআইবি’র সাধারণ পর্ষদের সদস্য মায়া ভৌমিক, কিশোরগঞ্জ সদরের উপজেলা শিক্ষা অফিসার মোঃ এনামুল হক খান, অষ্টগ্রামের উপজেলা শিক্ষা অফিসার মোঃ আশরাফুল আলম, উত্তর মকসুদপুর সরকারী প্রাথসিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক র,হ,ম সায়েখুল ইসলাম, শিক্ষার্থী ফাইরোজ হায়দার নবনীতা, অভিভাবক ম.ম জুয়েল, সনাক সদস্য মুনিরুজ্জামান সোহেল প্রমুখ। মতবিনিময় সভায় আরো উপস্থিত ছিলেন সম্মান্বিত সনাক ও স্বজন সদসবৃন্দ, ইয়েস সদস্যবৃন্দ ও টিআইবি কর্মকর্তাবৃন্দ।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তি