এরপর সোমবার (২৪ আগস্ট) সকালে ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলার চন্ডীপাশা ইউনিয়নের নিজবানাইল গ্রামে তাদের মরদেহ নিয়ে আসা হয়। দুপুরে নিজ বাড়িতে তাদের নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়।
এ সময় ময়মনসিংহ-৯ নান্দাইল আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ারুর আবেদিন তুহিন, স্থানীয় নেতৃবৃন্দ, তার পরিবার, আত্মীয়-স্বজন ও শুভাকাঙ্ক্ষীসহ উপজেলার হাজারও মানুষ উপস্থিত হয়।
জানাজা শেষে তাদের ঘর তোলার নির্ধারিত জায়গায় দুই ভাইকে পাশাপাশি দাফন করা হয়।
জানা যায়, নান্দাইল উপজেলার চন্ডীপাশাই উনিয়নের নিজবানাইল গ্রামের সিরাজুল ইসলাম ভূঁইয়া ডিভি লটারিতে ১৯৯১ সালে আমেরিকা যান। বর্তমানে নিউইয়র্ক শহরের এরোস্টিয়া নামক স্থানে বসবাস করে তিনি নির্বাচন কমিশনে চাকরি করছেন।
পরবর্তীতে তিনি স্ত্রীসহ তিন ছেলে মোজাম্মেল হক রাসেল (৩৫), হিমেল আক্তার জয় (৩০), আমিনুল হক আপেল (২৫) ও মেয়ে সাদিয়া শাওলিন বৈশাখীকেও সেখানে নিয়ে যান। বড় ও মেজো ছেলে চাকরি করতেন। ছোট ছেলে ও একমাত্র মেয়ে এখনও পড়াশোনা করছেন।
নিহতদের চাচাত ভাই মোশাররফ হোসেন ভূইয়া জানান, সাপ্তাহিক ছুটিতে তিন ভাই তাদের বন্ধু টাঙ্গাইলের শিহাবকে নিয়ে ব্যক্তিগত গাড়িতে করে কানাডার নায়েগ্রা জলপ্রপাত দেখতে যান। সেখানে দুদিন অবস্থানের পর স্থানীয় সময় গত সোমবার (১৭ আগস্ট) রাত ১টার দিকে ফেরার পথে বাড়ি থেকে প্রায় ৩০০ মাইল দূরে সংঘটিত এক সড়ক দুর্ঘটনায় চারজনই আহত হন। মুমূর্ষু অবস্থায় তাদের পাশের একটি হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানে রাসেল ও হিমেল মারা যান।
তিনি আরও বলেন, সর্বশেষ করোনার আগে বাড়িতে এসে বসত ঘর করার পরিকল্পনা করে জায়গাও ঠিক করে রেখে গিয়েছিলেন তারা। বাকি ছিল শুধু নির্মাণ সামগ্রী এনে বসত ঘর নির্মাণ করা। তবে এখন সেই স্থানেই নির্মাণ করা হয়েছে দুটি কবর। পাশপাশি দুই ভাই। এ দৃশ্য দেখে এলাকার লোকজন ছাড়াও জানাজায় উপস্থিত সকলেই ডুকরে কেঁদেছেন।
এর আগে মঙ্গলবার (১৮ আগস্ট) ভোররাতে বাফেলো থেকে নিউ ইয়র্কে ফেরার পথে সড়ক দুর্ঘটনায় মোজাম্মেল হক রাসেল (৩৫) ও হিমেল আক্তার জয় (৩০) নিহত হয়।
নিহত মোজাম্মেল হক রাসেল যুক্তরাষ্ট্র ছাত্রলীগের সাবেক প্রচার সম্পাদক ও ময়মনসিংহ বিভাগ তারুণ্য নামক একটি সংগঠনের নেতা ছিলেন।