বিয়ানীবাজার ওয়েলফেয়ার ট্রাস্টের ট্রাষ্টিদের নিয়ে ২৯ শে অগাস্ট,বুধবার ২০১৮ তারিখে পূর্বলন্ডনের মাইক্রো-বিজনেস সেন্টারে একটি জনাকীর্ণ প্রতিবাদ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সংগঠনের ট্রাস্টি জনাব আতিকুর রহমান আনা‘র সভাতিত্বে এবং ইকবাল হোসেন বুলবুল ও ফরহাদ হোসেন টিপুর পরিচালনায় সভার শুরুতেই পবিত্র কোরান শরীফ থেকে তেলাওয়াত করেন সংগঠনের ট্রাস্টি বিশিষ্ট আলীমে দ্বীন মাওলানা জিল্লুর রহমান চৌধুরী। ।
সভা আহবানকারীদের মধ্য থেকে ছরওয়ার আহমেদ ট্রাষ্টিদের পক্ষ হয়ে ২০১৩-২০১৫ সালের কার্যকরী পরিষদের বিভিন্ন অনিয়মের কথা তুলে ধরেন। তিনি বলেন- আপনারা অবগত আছেন যে , আজ থেকে প্রায় আড়াই বৎসর পূর্বে ট্রাস্টের নির্বাচন, সংবিধান এবং হিসাব নিয়ে সমস্যা সমাধান না করার কারণে ২০১৬ সালের ১৪ই ফেব্রুয়ারী পূর্ব লন্ডনের ব্রাডি আর্ট সেন্টারে অনুষ্ঠিত সভায় ট্রাস্টের তখনকার সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক,ট্রেজারসহ সকল সাধারণ ট্রাষ্টিরা ট্রাস্টের কার্যক্রম স্থগিত করে, ট্রাস্টের সিনিয়র ট্রাস্টি ও কমিউনিটি ব্যক্তিত্ব আলহাজ সামছুদ্দিন খাঁন এর কাছে হস্থান্তর করার সিদ্ধান্ত গ্রহন করেন । ১৪ ফেব্রয়ারী ২০১৬ উল্লেখিত কার্যকরী কমিটির মেয়াদের ছিল শেষ দিন।
কিন্তু দুংখজনক হলেও সত্য যে, কার্যকরী পরিষদ পরবর্তিতে ঐ সিদ্ধান্ত অমান্য করে নির্বাচন ছাড়াই, এমনকি অনেক ট্রাস্টিদের না জানিয়ে-ই চলিত বছরের ২৯শে এপ্রিল ট্রাস্টের নতুন কমিটি ঘোষণা করেন । এছাড়াও ট্রাষ্টিদের মতামত না নিয়ে তাদের ট্রাস্টিশীপ বাতিল করে সদস্য হিসাবে রেজিস্টার্ড করা শুরু করেন।’
এসময় তিনি ট্রাষ্টিদের উদ্দেশ্য করে বলেন-‘ মানুষ ভুল করতে পারে কিন্তু সুযোগ পেয়েও তা সংশোধন না করলে সেটা আর ভুলের হিসাবে পড়েনা; অন্যায় অবিচারের হিসাবে পড়ে।
একটি ট্রাষ্টের প্রায় দেড়কোটি টাকার তহবিল থাকলেও তার সঠিক হিসাব নাই, দুইটি সংবিধান, নির্বাচন ব্যাক্তি বিশেষের ইচ্ছামত হয় , এইগুলো মারাত্বক ভুল । আমি বলবো এই ভুল থেকে যারা সরে আসতে চাচ্ছেন না, তারা ট্রাস্টের ক্ষতি সাধন করায় লিপ্ত ।
তিনি সবাইকে স্বরণ করে দেয়ার জন্য উল্লেখ করেন, ব্রাডি সেন্টারে ১৪ই ফেব্রুয়ারী‘র সভায় সুস্পষ্টভাবে সকল ট্রাস্টিরা বলেছিলেন, কোনো ব্যাক্তি বিশেষ এর সৃষ্টি করা অনিয়মের আইনী খরছ সংগঠনের তহবিল থেকে করা যাবেনা । কিন্তু তারা সকলের কথা অমান্য করে ট্রাস্ট্রিদের ফান্ডের তহবিল থেকে খরচ করেছে।‘
প্রতিবাদ সভায় উপস্থিত ট্রাষ্টিরা তাদের বক্তব্যে বলেন, যতো দ্রুত সম্ভব হয় সংশ্লিষ্ট সবাই ট্রাস্টের এই সমস্যাগুলো সমাধান করে ঐতিহ্যবাহী এই ট্রাস্টের সাধারণ গতি ফিরিয়ে আনার জন্য কাজ করতে হবে । মনে রাখতে হবে ট্রাস্ট হল সকল ট্রাষ্টির । কোনো ব্যাক্তি, দল,গোষ্টীর নয় ।
উপস্থিত ট্রাষ্টিরা আরোও বলেন যে, গঠনতন্ত্র অনুযায়ী ট্রাস্টিদের মতামত না নিয়ে গঠনতন্ত্র পরিবর্তন করে ট্রাষ্টিশীপ বাতিল করা , গঠনতন্ত্র না মেনে ট্রাস্ট পরিচালনা করা , ট্রাস্টের টাকার সঠিক হিসাব না দিতে পারা , কয়েকজন ব্যাক্তি বিশেষের ইচ্ছামতো নির্বাচন ছাড়াই কমিটি গঠন করা অত্যন্ত নিন্দনীয় কাজ । এই পরিস্থিতি থেকে ট্রাস্টকে বাঁচানোর জন্য এলাকার এবং ট্রাস্টের সিনিয়র মুরব্বিদের সহযোগিতা নিয়ে এর সমাধানের জন্য সকল ধরণের প্রচেষ্টা করা প্রয়োজন। ট্রাষ্টকে সঠিক পথে পরিচালিত করতে হলে কোনো ধরণের অনিয়মকে প্রশ্রয় দেয়া উচিত হবেনা ।
১৯৯৯সালে গঠিত এই ট্রাস্টের সম্মানীত ট্রাস্টিরা বলেন, আমরা ৫০০ পাউন্ড দিয়ে ট্রাস্টি হয়েছি । এই সংগঠনের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী আমরা ট্রাষ্টি । আমাদেরকে এখন কেনো সদস্য হিসাবে দেখানোর চেষ্টা করা হচ্ছে ? এটা কার স্বার্থে ? কারো কোনো অনিয়ম ঢেকে রাখার জন্য আমাদের ট্রাস্টিশীপ হারাতে চাইনা । আমরা আমাদের ট্রাস্ট বাঁচিয়ে রাখতে চাই। ট্রাস্টি পরিচয়েই ট্রাষ্টে থাকতে চাই ।
ট্রাস্টিদের অধিকার রক্ষার জন্য ট্রাস্টিদের পক্ষে যে আইনজীবি কাজ করছেন, তিনি উপস্থিত হয়ে ট্রাস্টিদের অধিকার রক্ষায় যেসব আইনী দিক আছে, তা নিয়ে উপস্থিত ট্রাস্টিদের অবহিত করেন ।
সভায় বক্তারা ধন্যবাদ জানান সেই সকল ট্রাস্টিদের যারা সকল ট্রাস্টিদের পক্ষ হয়ে এই সকল অনিয়মের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে ট্রাস্টিদের একত্র করে ট্রাষ্টকে বাঁচানোর জন্য কাজ করে যাচ্ছেন ।
প্রতিবাদ সভায় উপস্থিত সবার সম্মতিক্রমে দুটি সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়; এক ট্রাস্টিগণ বিয়ানীবাজার ওয়েলফেয়ার ট্রাস্ট ইউকে( অনিবন্ধিত) এর ট্রাস্টি পরিচয়ে থাকতে চাই। দুই. সংগঠনের বিগত কমিটির আর্থিক অনিয়ম ও সংবিধান বিরোধী কার্যক্রমের বিরুদ্ধে আইনী প্রক্রিয়া চালিয়ে যাওয়ার পাশাপাশি এলাকার মুরব্বি ও প্রবীন ট্রাস্টিদের নিয়ে সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করা।
সভায় অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন ট্রাস্টের প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক নইম উদ্দীন রিয়াজ, প্রতিষ্ঠাতা ট্রেজারার এম সাব উদ্দীন, ট্রাস্টি সেলিম উদ্দিন এমপি, আফাজ উদ্দিন, মৌলানা জিল্লুর রহমান চৌধুরী, এম এ গণি, সাহাব উদ্দিন চঞ্চল, মনোজ্জির আলী, ওহিদ উদ্দিন, আব্দুল করিম নাজিম, ছরওয়ার আহমদ, ব্যারিষ্টার আবুল কালাম চৌধুরী, ব্যারিষ্টার আবু তাহের, নাজিম উদ্দিন, লুৎফুর রহমান ছায়াদ, ইসলাম উদ্দিন, আতাউর রহমান আতা, জগলু উদ্দিন, সাহাব উদ্দিন, ইফতেখার আহমদ শিপন, জালাল উদ্দিন এবং প্রগতি এডুকেশন ট্রাস্টের সভাপতি হাবিবুর রহমান ময়না। ( সংবাদ বিজ্ঞপ্তি )