ঢাকা ০৬:৫০ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ০৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ২১ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :

৩৫% শুল্ক বসিয়ে বাংলাদেশকে ট্রাম্পের চিঠি

৫২ বাংলা
  • আপডেট সময় : ০৩:৩১:০৯ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৮ জুলাই ২০২৫
  • / 229
অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি


পাল্টা শুল্ক এড়াতে আলোচনার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বেঁধে দেওয়া ৯০ দিনের সময়সীমা শেষ হচ্ছে বুধবার। তার আগেই বাংলাদেশি পণ্যের ওপর ৩৫ শতাংশ শুল্ক বসিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে চিঠি দিয়েছেন ট্রাম্প।

৭ জুলাই লেখা এই চিঠিতে বাংলাদেশ থেকে আমদানি করা পণ্যের ওপর ৩৫ শতাংশ শুল্ক ধরা হয়েছে বলে লিখেছেন ট্রাম্প। এই শুল্ক হার আগামী ১ আগস্ট থেকে কার্যকর হবে।

এই শুল্ক হার আগে ঘোষিত হারের চেয়ে ২ শতাংশ পয়েন্ট কম। এনিয়ে সরকারের কোনও প্রতিক্রিয়া এখনও পাওয়া যায়নি। তবে গত এপ্রিলে ট্রাম্প পাল্টা শুল্ক আরোপের পর ওয়াশিংটনের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে তার সুরাহা করার কথা জানানো হয়েছিল।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের চেয়ারে ফেরার পর গত ৩ এপ্রিল বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ওপর পাল্টা শুল্ক আরোপ করেন ট্রাম্প। সে সময় বাংলাদেশি পণ্যের ওপর ৩৭ শতাংশ পাল্টা শুল্ক আরোপ করা হয়েছিল। এর আগে দেশটিতে বাংলাদেশি পণ্যের ওপর গড়ে ১৫ শতাংশ করে শুল্ক ছিল।

তিন মাস ধরে আলোচনার পর বাংলাদেশি পণ্যের ওপর ৩৫ শতাংশ শুল্ক বসালেন ট্রাম্প।

সোমবার বাংলাদেশের পাশাপাশি দক্ষিণ কোরিয়া ও জাপানসহ মোট ১৪টি দেশের ওপর নতুন করে শুল্ক হার নির্ধারণের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। হোয়াইট হাউসের ৯০ দিনের শুল্ক বিরতির সময়সীমা শেষ হতে চলায় ট্রাম্প এই ঘোষণা দেন।

এর আগে ৯ জুলাই থেকে নতুন শুল্ক হার কার্যকরের কথা থাকলেও সেটি পিছিয়ে ১ আগস্ট নির্ধারণ করা হয়েছে।

দক্ষিণ কোরিয়া ও জাপান থেকে আমদানি করা পণ্যের ওপর নতুন করে ২৫ শতাংশ শুল্ক হার নির্ধারণ করেছে ট্রাম্প প্রশাসন। এছাড়া মিয়ানমার ও লাওসের পণ্যের ওপর ৪০ শতাংশ, দক্ষিণ আফ্রিকার ওপর ৩০ শতাংশ এবং মালয়েশিয়ার ওপর ২৫ শতাংশ, তিউনিসিয়ার ওপর ২৫ শতাংশ, ইন্দোনেশিয়ার ওপর ৩২ শতাংশ, বসনিয়ার ওপর ৩০ শতাংশ, সার্বিয়ার ওপর ৩৫ শতাংশ, কম্বোডিয়া ও থাইল্যান্ডের ওপর ৩৬ শতাংশ এবং কাজাখস্তানের ওপর ২৫ শতাংশ শুল্ক হার নির্ধারণ করা হয়েছে।

চূড়ান্ত শুল্কের পরিমাণ উল্লেখ করে ১৪টি দেশের নেতাদের চিঠি পাঠিয়েছেন ট্রাম্প। এসব চিঠি নিজের ট্রুথ সোশাল হ্যান্ডেলে প্রকাশ করেন তিনি।

বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূসকে লেখা চিঠিতে ট্রাম্প বলেছেন, “২০২৫ সালের ১ আগস্ট থেকে যুক্তরাষ্ট্রে পাঠানো সব বাংলাদেশি পণ্যের ওপর ৩৫ শতাংশ শুল্ক বসবে। এটি খাতভিত্তিক শুল্কের সঙ্গে আলাদাভাবে যোগ হবে। উচ্চ শুল্ক এড়াতে যদি কোনও পণ্য ঘুরপথে যুক্তরাষ্ট্রে আনা হয়, তাহলে সেই পণ্যের ওপরও উচ্চ শুল্কই আরোপ করা হবে।”

চিঠিতে আরও বলা হয়েছে, “দয়া করে বুঝুন, ৩৫ শতাংশ শুল্ক আমাদের দেশের সঙ্গে আপনার দেশের যে বড় বাণিজ্য ঘাটতি রয়েছে, তা দূর করার জন্য যথেষ্ট নয়— এই হার আসলে তার চেয়ে অনেক কম।

“আপনি নিশ্চয়ই জানেন, যদি বাংলাদেশ বা বাংলাদেশের কোনও কোম্পানি যুক্তরাষ্ট্রে কারখানা গড়ে পণ্য উৎপাদন করে, তাহলে সেই পণ্যের ওপর কোনো শুল্ক থাকবে না। বরং আমরা দ্রুত, পেশাদারভাবে এবং নিয়ম মেনে সব অনুমোদন দেওয়ার জন্য সর্বোচ্চ সহযোগিতা করব—অর্থাৎ কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই সব প্রক্রিয়া সম্পন্ন হবে।”

যুক্তরাষ্ট্রের পাল্টা শুল্ক এড়াতে আলোচনার জন্য বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রে রয়েছেন বাংলাদেশের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা খলিলুর রহমান ও বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন।

কিন্তু এরই মধ্যে বাংলাদেশ থেকে আমদানি করা পণ্যের ওপর ৩৫ শতাংশ শুল্ক নির্ধারণ করলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

৩৫% শুল্ক বসিয়ে বাংলাদেশকে ট্রাম্পের চিঠি

আপডেট সময় : ০৩:৩১:০৯ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৮ জুলাই ২০২৫


পাল্টা শুল্ক এড়াতে আলোচনার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বেঁধে দেওয়া ৯০ দিনের সময়সীমা শেষ হচ্ছে বুধবার। তার আগেই বাংলাদেশি পণ্যের ওপর ৩৫ শতাংশ শুল্ক বসিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে চিঠি দিয়েছেন ট্রাম্প।

৭ জুলাই লেখা এই চিঠিতে বাংলাদেশ থেকে আমদানি করা পণ্যের ওপর ৩৫ শতাংশ শুল্ক ধরা হয়েছে বলে লিখেছেন ট্রাম্প। এই শুল্ক হার আগামী ১ আগস্ট থেকে কার্যকর হবে।

এই শুল্ক হার আগে ঘোষিত হারের চেয়ে ২ শতাংশ পয়েন্ট কম। এনিয়ে সরকারের কোনও প্রতিক্রিয়া এখনও পাওয়া যায়নি। তবে গত এপ্রিলে ট্রাম্প পাল্টা শুল্ক আরোপের পর ওয়াশিংটনের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে তার সুরাহা করার কথা জানানো হয়েছিল।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের চেয়ারে ফেরার পর গত ৩ এপ্রিল বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ওপর পাল্টা শুল্ক আরোপ করেন ট্রাম্প। সে সময় বাংলাদেশি পণ্যের ওপর ৩৭ শতাংশ পাল্টা শুল্ক আরোপ করা হয়েছিল। এর আগে দেশটিতে বাংলাদেশি পণ্যের ওপর গড়ে ১৫ শতাংশ করে শুল্ক ছিল।

তিন মাস ধরে আলোচনার পর বাংলাদেশি পণ্যের ওপর ৩৫ শতাংশ শুল্ক বসালেন ট্রাম্প।

সোমবার বাংলাদেশের পাশাপাশি দক্ষিণ কোরিয়া ও জাপানসহ মোট ১৪টি দেশের ওপর নতুন করে শুল্ক হার নির্ধারণের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। হোয়াইট হাউসের ৯০ দিনের শুল্ক বিরতির সময়সীমা শেষ হতে চলায় ট্রাম্প এই ঘোষণা দেন।

এর আগে ৯ জুলাই থেকে নতুন শুল্ক হার কার্যকরের কথা থাকলেও সেটি পিছিয়ে ১ আগস্ট নির্ধারণ করা হয়েছে।

দক্ষিণ কোরিয়া ও জাপান থেকে আমদানি করা পণ্যের ওপর নতুন করে ২৫ শতাংশ শুল্ক হার নির্ধারণ করেছে ট্রাম্প প্রশাসন। এছাড়া মিয়ানমার ও লাওসের পণ্যের ওপর ৪০ শতাংশ, দক্ষিণ আফ্রিকার ওপর ৩০ শতাংশ এবং মালয়েশিয়ার ওপর ২৫ শতাংশ, তিউনিসিয়ার ওপর ২৫ শতাংশ, ইন্দোনেশিয়ার ওপর ৩২ শতাংশ, বসনিয়ার ওপর ৩০ শতাংশ, সার্বিয়ার ওপর ৩৫ শতাংশ, কম্বোডিয়া ও থাইল্যান্ডের ওপর ৩৬ শতাংশ এবং কাজাখস্তানের ওপর ২৫ শতাংশ শুল্ক হার নির্ধারণ করা হয়েছে।

চূড়ান্ত শুল্কের পরিমাণ উল্লেখ করে ১৪টি দেশের নেতাদের চিঠি পাঠিয়েছেন ট্রাম্প। এসব চিঠি নিজের ট্রুথ সোশাল হ্যান্ডেলে প্রকাশ করেন তিনি।

বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূসকে লেখা চিঠিতে ট্রাম্প বলেছেন, “২০২৫ সালের ১ আগস্ট থেকে যুক্তরাষ্ট্রে পাঠানো সব বাংলাদেশি পণ্যের ওপর ৩৫ শতাংশ শুল্ক বসবে। এটি খাতভিত্তিক শুল্কের সঙ্গে আলাদাভাবে যোগ হবে। উচ্চ শুল্ক এড়াতে যদি কোনও পণ্য ঘুরপথে যুক্তরাষ্ট্রে আনা হয়, তাহলে সেই পণ্যের ওপরও উচ্চ শুল্কই আরোপ করা হবে।”

চিঠিতে আরও বলা হয়েছে, “দয়া করে বুঝুন, ৩৫ শতাংশ শুল্ক আমাদের দেশের সঙ্গে আপনার দেশের যে বড় বাণিজ্য ঘাটতি রয়েছে, তা দূর করার জন্য যথেষ্ট নয়— এই হার আসলে তার চেয়ে অনেক কম।

“আপনি নিশ্চয়ই জানেন, যদি বাংলাদেশ বা বাংলাদেশের কোনও কোম্পানি যুক্তরাষ্ট্রে কারখানা গড়ে পণ্য উৎপাদন করে, তাহলে সেই পণ্যের ওপর কোনো শুল্ক থাকবে না। বরং আমরা দ্রুত, পেশাদারভাবে এবং নিয়ম মেনে সব অনুমোদন দেওয়ার জন্য সর্বোচ্চ সহযোগিতা করব—অর্থাৎ কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই সব প্রক্রিয়া সম্পন্ন হবে।”

যুক্তরাষ্ট্রের পাল্টা শুল্ক এড়াতে আলোচনার জন্য বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রে রয়েছেন বাংলাদেশের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা খলিলুর রহমান ও বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন।

কিন্তু এরই মধ্যে বাংলাদেশ থেকে আমদানি করা পণ্যের ওপর ৩৫ শতাংশ শুল্ক নির্ধারণ করলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।