ঢাকা ০৮:৪৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ০৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ২১ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
খাঁচা থেকে বের হওয়া সিংহী আড়াই ঘণ্টা পর নিয়ন্ত্রণে লন্ডনে ফ্লাই রবিবার, নির্জন কারাবাস থেকেই খালেদা জিয়ার ‘নানা রোগের সূচনা’ জানালেন ফখরুল মহাকাশ থেকে পবিত্র  কাবা শরিফের উজ্জ্বল ছবি আন্দোলনে থাকা প্রাথমিকের শিক্ষকদের বদলি, ‘শাটডাউন’ কর্মসূচি স্থগিত তারেক রহমানের দেশে ফেরা আবার অনিশ্চিত, কীভাবে ভোটার হবেন? খালেদা জিয়া ছাড়া পরিবারের কেউ ভিভিআইপি সুবিধা পাবেন না কুকুরছানা হত্যা মামলায় মায়ের সঙ্গে কারাগারে ২ বছরের শিশু খালেদা জিয়াকে লন্ডন নিতে ঢাকায় আসছেন জুবাইদা যুক্তরাজ্যের ৯ বিশ্ববিদ্যালয়ে নিষিদ্ধ বাংলাদেশি শিক্ষার্থী! কাতারের রাজপরিবারের এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে যেসব অত্যাধুনিক সুবিধা রয়েছে

৩০টি আসন চেয়েছিল জামায়াত, রাজি না হওয়ায় পিআর নিয়ে আন্দোলন

৫২ বাংলা
  • আপডেট সময় : ০৩:৩২:৫২ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • / 84

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর

অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপির কাছে ৩০টি আসন দাবি করেছিল জামায়াতে ইসলামী। বিএনপি সে প্রস্তাবে রাজি না হওয়াতেই জামায়াত এখন সংখ্যানুপাতিক (পিআর) পদ্ধতিতে নির্বাচন নিয়ে আন্দোলনে নেমেছে বলে জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

ভারতীয় গণমাধ্যম এই সময়-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ফেব্রুয়ারির নির্বাচন নিয়ে বিএনপির কোনো শঙ্কা নেই। বরং প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস আন্তরিকভাবেই নির্বাচন আয়োজনের চেষ্টা করছেন। ফখরুলের দাবি, যদি ফেব্রুয়ারিতে ভোট না হয়, তবে মার্চ থেকে প্রধান উপদেষ্টা দায়িত্বে থাকতে চান না বলে জানিয়েছেন ইউনূস।

ঢাকার গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে এই সময়-এর সাংবাদিক অনমিত্র চট্টোপাধ্যায় এই সাক্ষাৎকার নেন। সোমবার সাক্ষাৎকারটি প্রকাশ করে ভারতীয় গণমাধ্যমটি।

আগামী ফেব্রুয়ারির ভোট নিয়ে জামায়াতের পিআর আন্দোলন ও এনসিপির গণপরিষদসহ অন্যান্য দাবির প্রেক্ষিতে শঙ্কা আছে কি না জানতে চাইলে বিএনপি মহাসচিব বলেন, এ ধরনের কোনো সংশয় নেই।

মির্জা ফখরুল বলেন, “আগামী বছর ফেব্রুয়ারিতেই ভোট হবে। সংশয়ের কোনো জায়গা নেই। কোনো অশান্তিও হবে না। মানুষ ভোটাধিকার ফেরত চাইছে, নির্বাচন চাইছে। ফেব্রুয়ারিতে উৎসবের মতো নির্বাচন হবে।”

জামায়াত-এনসিপির দাবির প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, “জামায়াত ভোটে আসবে। পিআর-টিআর নয়, বাংলাদেশে ভোট হবে প্রচলিত সেই পদ্ধতিতে, যা মানুষ বোঝে। জামায়াতও অংশ নেবে। আর এনসিপিকে আমরা কোনো শক্তি মনে করি না। হ্যাঁ, এই ছাত্ররাই শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্দোলনের স্ফুলিঙ্গ জ্বালিয়েছিল, কিন্তু এখন তাদের কিছু নেই। ডাকলেও লোক জোটে না।”

এনসিপি ও জামায়াত বিএনপির সঙ্গে আসন ভাগাভাগি করতে চেয়েছিল কি না— এ প্রশ্নে তিনি বলেন, “এনসিপি কখনো আসন দাবি করেনি। তাদের একমাত্র উদ্দেশ্য বিএনপিকে সরকার গঠন থেকে বিরত রাখা। তবে জামায়াত ৩০টি আসন চাইছিল। আমরা খুব উৎসাহ দেখাইনি, বরং অনেক কম সংখ্যক আসনের কথা বলেছিলাম। তারা তাতে রাজি হয়নি।”

পিআর আন্দোলন নিয়ে তিনি মন্তব্য করেন, “এটা বিএনপিকে চাপে রাখার কৌশল মাত্র। জামায়াতকে আর মাথায় উঠতে দেবো না। তারা যত বড় শক্তিই হোক না কেন, আমরা অকারণে তাদের আরও বেশি গুরুত্ব দিয়েছি। পিআর-টিআর এসবই চাপ সৃষ্টি করার জন্য। কিন্তু বাস্তবে জামায়াত নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছে, প্রার্থীর নামও ঘোষণা করছে।”

আগে এনসিপির প্রতি সরকারের পক্ষপাতের অভিযোগ তুললেও এখন নির্বাচন নিয়ে সরকারের ওপর আস্থা রাখছে বিএনপি। এ প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল বলেন, “পরিস্থিতি বদলেছে। দলের পক্ষ থেকে আমি প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে কথা বলেছি। দেখছি, তিনি সর্বোচ্চ সিরিয়াস। আন্তরিকভাবেই চান ফেব্রুয়ারিতে ভোট হোক।”

প্রধান উপদেষ্টা ও সেনাপ্রধান ওয়াকার-উজ-জামানের সঙ্গে আলোচনার প্রসঙ্গ তুলে তিনি বলেন, “৫ আগস্ট অধ্যাপক ইউনূস নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করেন। তার আগের রাতে তার বাসায় আমার দীর্ঘ আলোচনা হয় ইউনূস ও সেনাপ্রধানের সঙ্গে। সেনাপ্রধান ডিসেম্বরে ভোটের প্রস্তাব দিলেও ফেব্রুয়ারিতে রাজি ছিলেন। তিনি আশ্বাস দিয়েছেন, সব সহযোগিতা করবেন। তার ইচ্ছা, নির্বাচন করিয়ে সেনাবাহিনী এবার ব্যারাকে ফিরুক।”

ফখরুল আরও বলেন, “সেই আলোচনায় অধ্যাপক ইউনূসও স্পষ্ট করে দেন— ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচিত সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করে তিনি দায়িত্ব থেকে সরে দাঁড়াতে চান। তিনি চাপ নিতে পারছেন না। আমরা আশ্বাস দিয়েছি, সরকার গঠনের পরও সংস্কার চলবে এবং স্বৈরাচারীদের বিচারও চলবে। এই তিনটি আলাদা বিষয়।”

নিউজটি শেয়ার করুন

৩০টি আসন চেয়েছিল জামায়াত, রাজি না হওয়ায় পিআর নিয়ে আন্দোলন

আপডেট সময় : ০৩:৩২:৫২ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপির কাছে ৩০টি আসন দাবি করেছিল জামায়াতে ইসলামী। বিএনপি সে প্রস্তাবে রাজি না হওয়াতেই জামায়াত এখন সংখ্যানুপাতিক (পিআর) পদ্ধতিতে নির্বাচন নিয়ে আন্দোলনে নেমেছে বলে জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

ভারতীয় গণমাধ্যম এই সময়-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ফেব্রুয়ারির নির্বাচন নিয়ে বিএনপির কোনো শঙ্কা নেই। বরং প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস আন্তরিকভাবেই নির্বাচন আয়োজনের চেষ্টা করছেন। ফখরুলের দাবি, যদি ফেব্রুয়ারিতে ভোট না হয়, তবে মার্চ থেকে প্রধান উপদেষ্টা দায়িত্বে থাকতে চান না বলে জানিয়েছেন ইউনূস।

ঢাকার গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে এই সময়-এর সাংবাদিক অনমিত্র চট্টোপাধ্যায় এই সাক্ষাৎকার নেন। সোমবার সাক্ষাৎকারটি প্রকাশ করে ভারতীয় গণমাধ্যমটি।

আগামী ফেব্রুয়ারির ভোট নিয়ে জামায়াতের পিআর আন্দোলন ও এনসিপির গণপরিষদসহ অন্যান্য দাবির প্রেক্ষিতে শঙ্কা আছে কি না জানতে চাইলে বিএনপি মহাসচিব বলেন, এ ধরনের কোনো সংশয় নেই।

মির্জা ফখরুল বলেন, “আগামী বছর ফেব্রুয়ারিতেই ভোট হবে। সংশয়ের কোনো জায়গা নেই। কোনো অশান্তিও হবে না। মানুষ ভোটাধিকার ফেরত চাইছে, নির্বাচন চাইছে। ফেব্রুয়ারিতে উৎসবের মতো নির্বাচন হবে।”

জামায়াত-এনসিপির দাবির প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, “জামায়াত ভোটে আসবে। পিআর-টিআর নয়, বাংলাদেশে ভোট হবে প্রচলিত সেই পদ্ধতিতে, যা মানুষ বোঝে। জামায়াতও অংশ নেবে। আর এনসিপিকে আমরা কোনো শক্তি মনে করি না। হ্যাঁ, এই ছাত্ররাই শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্দোলনের স্ফুলিঙ্গ জ্বালিয়েছিল, কিন্তু এখন তাদের কিছু নেই। ডাকলেও লোক জোটে না।”

এনসিপি ও জামায়াত বিএনপির সঙ্গে আসন ভাগাভাগি করতে চেয়েছিল কি না— এ প্রশ্নে তিনি বলেন, “এনসিপি কখনো আসন দাবি করেনি। তাদের একমাত্র উদ্দেশ্য বিএনপিকে সরকার গঠন থেকে বিরত রাখা। তবে জামায়াত ৩০টি আসন চাইছিল। আমরা খুব উৎসাহ দেখাইনি, বরং অনেক কম সংখ্যক আসনের কথা বলেছিলাম। তারা তাতে রাজি হয়নি।”

পিআর আন্দোলন নিয়ে তিনি মন্তব্য করেন, “এটা বিএনপিকে চাপে রাখার কৌশল মাত্র। জামায়াতকে আর মাথায় উঠতে দেবো না। তারা যত বড় শক্তিই হোক না কেন, আমরা অকারণে তাদের আরও বেশি গুরুত্ব দিয়েছি। পিআর-টিআর এসবই চাপ সৃষ্টি করার জন্য। কিন্তু বাস্তবে জামায়াত নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছে, প্রার্থীর নামও ঘোষণা করছে।”

আগে এনসিপির প্রতি সরকারের পক্ষপাতের অভিযোগ তুললেও এখন নির্বাচন নিয়ে সরকারের ওপর আস্থা রাখছে বিএনপি। এ প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল বলেন, “পরিস্থিতি বদলেছে। দলের পক্ষ থেকে আমি প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে কথা বলেছি। দেখছি, তিনি সর্বোচ্চ সিরিয়াস। আন্তরিকভাবেই চান ফেব্রুয়ারিতে ভোট হোক।”

প্রধান উপদেষ্টা ও সেনাপ্রধান ওয়াকার-উজ-জামানের সঙ্গে আলোচনার প্রসঙ্গ তুলে তিনি বলেন, “৫ আগস্ট অধ্যাপক ইউনূস নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করেন। তার আগের রাতে তার বাসায় আমার দীর্ঘ আলোচনা হয় ইউনূস ও সেনাপ্রধানের সঙ্গে। সেনাপ্রধান ডিসেম্বরে ভোটের প্রস্তাব দিলেও ফেব্রুয়ারিতে রাজি ছিলেন। তিনি আশ্বাস দিয়েছেন, সব সহযোগিতা করবেন। তার ইচ্ছা, নির্বাচন করিয়ে সেনাবাহিনী এবার ব্যারাকে ফিরুক।”

ফখরুল আরও বলেন, “সেই আলোচনায় অধ্যাপক ইউনূসও স্পষ্ট করে দেন— ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচিত সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করে তিনি দায়িত্ব থেকে সরে দাঁড়াতে চান। তিনি চাপ নিতে পারছেন না। আমরা আশ্বাস দিয়েছি, সরকার গঠনের পরও সংস্কার চলবে এবং স্বৈরাচারীদের বিচারও চলবে। এই তিনটি আলাদা বিষয়।”