ঢাকা ০৯:১৬ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ০৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ২১ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশে আরও ৩০ দেশের নাগরিকের ওপর নিষেধাজ্ঞা খাঁচা থেকে বের হওয়া সিংহী আড়াই ঘণ্টা পর নিয়ন্ত্রণে লন্ডনে ফ্লাই রবিবার, নির্জন কারাবাস থেকেই খালেদা জিয়ার ‘নানা রোগের সূচনা’ জানালেন ফখরুল মহাকাশ থেকে পবিত্র  কাবা শরিফের উজ্জ্বল ছবি আন্দোলনে থাকা প্রাথমিকের শিক্ষকদের বদলি, ‘শাটডাউন’ কর্মসূচি স্থগিত তারেক রহমানের দেশে ফেরা আবার অনিশ্চিত, কীভাবে ভোটার হবেন? খালেদা জিয়া ছাড়া পরিবারের কেউ ভিভিআইপি সুবিধা পাবেন না কুকুরছানা হত্যা মামলায় মায়ের সঙ্গে কারাগারে ২ বছরের শিশু খালেদা জিয়াকে লন্ডন নিতে ঢাকায় আসছেন জুবাইদা যুক্তরাজ্যের ৯ বিশ্ববিদ্যালয়ে নিষিদ্ধ বাংলাদেশি শিক্ষার্থী!

১৫ বছরে যেটা হয়নি, আজ সেটাই হলো: রুমিন ফারহানা
রুমিনের বিরুদ্ধে এনসিপি নেতাকে ধাক্কার অভিযোগ

৫২ বাংলা
  • আপডেট সময় : ০৮:৫৩:২২ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৪ অগাস্ট ২০২৫
  • / 144

নির্বাচন কমিশনে মারামারির ঘটনার পর সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন রুমিন ফারহানা

অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

‘ভেবেছিলাম, নির্বাচন কমিশনের (ইসি) মর্যাদা রক্ষায় কেউ গুন্ডাপান্ডা নিয়ে ঢুকবে না। কিন্তু ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ আসনের প্রার্থী খালেদ হোসেন মাহবুব ২০ থেকে ২৫ জন নিয়ে এসে গুন্ডামি করেছেন। ১৫ বছরে যেটা হয়নি, আজ সেটাই হলো—অলমোস্ট আমাকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে। যে বিএনপির নেতা–কর্মীদের জন্য ১৫ বছর লড়েছি, তাঁরাই আমাকে ধাক্কা দিল।’ কথাগুলো বলেছেন বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক রুমিন ফারহানা।

রবিবার (২৪ আগস্ট) দুপুরে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে সংসদীয় আসনের সীমানা পুনর্নির্ধারণ নিয়ে শুনানিতে ধাক্কাধাক্কি ও কিল-ঘুষির ঘটনার পর সাংবাদিকদের এ কথা জানান রুমিন ফারহানা। তিনি অভিযোগ করে বলেন, ‘কমিশনে আমি ভদ্রলোক নিয়ে এসেছি, গুন্ডা নয়। কিন্তু তারা আবোল–তাবোল বলে যাচ্ছিল। শেষ দিকে আমি বক্তব্য দিতে দাঁড়ালে আমাকে ধাক্কা দেওয়া হয়।’

দুপুর ১২টার দিকে নির্বাচন কমিশনের এই শুনানি শুরু হয়। কিছুক্ষণ পর রুমিন ফারহানার এলাকা ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ ও পাশের ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ আসনের সীমানা পুনর্নির্ধারণ নিয়ে শুনানি হয়। এর এক পর্যায়ে হাতাহাতি ও মারামারির ঘটনা ঘটে। সীমানা পুনর্নির্ধারণে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার বিজয়নগর উপজেলার তিনটি ইউনিয়নকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ (সদর-বিজয়নগর) আসন থেকে কেটে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ (সরাইল-আশুগঞ্জ)-এর সঙ্গে যুক্ত করার খসড়া করেছে নির্বাচন কমিশন। এই ইউনিয়নগুলো হলো বুধন্তী, চান্দুরা ও হরষপুর। নির্বাচন কমিশনের এই প্রস্তাবের পক্ষে রুমিন ফারহানা।

শুনানিতে মারামারির জন্য রুমিন ফারহানার বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) যুগ্ম মুখ্য সংগঠক মো. আতাউল্লাহ। তিনি বলেন, ‘শুনানির সময় আমি বক্তব্য দিতে গেলে রুমিন ফারহানা আমাকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেন। এরপর তাঁর লোকজন আমাকে লাথি-ঘুষি মারতে থাকেন। আমার পাঞ্জাবি ছিঁড়ে যায়, হাতে আঘাত পেয়েছি। যেভাবে ছাত্রলীগ আমাদের ক্যাম্পাসে পিষত, সেভাবেই আমাকে পিষেছে।’

এ বিষয়ে এনসিপির ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সমন্বয়কারী আমিনুল হক চৌধুরী বলেন, ‘আমরা চাই বিজয়নগর একত্র থাকুক। কিন্তু শুনানির সময় রুমিন ফারহানা ও তাঁর লোকজন আমাদের ওপর হামলা করেছেন। কমিশনের সামনেই আমাদের মাটিতে ফেলে পিষেছে। এতে প্রমাণ হয়, দেশে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়।’

এনসিপি নেতা আতাউল্লাহর অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে রুমিন ফারহানা বলেন, ‘মুশকিলের বিষয় হচ্ছে, তিনি পরিচিত মুখ নন, তিনি এনসিপি থেকে এসেছেন, না জামায়াত থেকে এসেছেন, তা আমি জানি না। তবে উনি প্রথম, সাদা পাঞ্জাবি পরিহিত একজন আমাকে ধাক্কা দিয়েছেন। তারপর আমার লোকজন তো বসে থাকবে না। আমি তো একজন মহিলা। পরে যখন আমার লোকজনকে মারধর করেছে, আমার লোকজনও জবাব দিয়েছে। এটা সিম্পল।’

সীমানা নির্ধারণ নিয়ে রুমিন ফারহানা

সীমানা নির্ধারণ নিয়ে রুমিন ফারহানা বলেন, ‘দেশনেত্রী খালেদা জিয়া সব সময় বলেছেন, ২০০৮ সালের আগের সীমানায় বিএনপি নির্বাচন করতে চায়। বর্তমান সীমানা ফ্যাসিস্ট সরকার নিজেদের সুবিধায় নির্ধারণ করেছে। আমরা চাই, ২০০৮ সালের আগের সীমানায় ফিরে যাওয়া হোক।’

এই অবস্থানের পক্ষে যুক্তি তুলে ধরে রুমিন ফারহানা বলেন, ‘বর্তমান সীমানায় ভোটার সংখ্যায় ভারসাম্য নেই। আমাদের আসনে ভোটার প্রায় ৪ লাখ ২০ হাজার, বিজয়নগরে ৬ লাখ ১০ হাজার আর সদরে ৬ লাখ। সরাইলের সঙ্গে যদি বুধন্তী, চান্দুরা ও হরষপুর ইউনিয়ন যুক্ত হয়, তবে ভোটার সংখ্যায় ভারসাম্য তৈরি হবে।’

ওই তিন ইউনিয়নের বাসিন্দারা ভৌগোলিক ও সামাজিকভাবে সরাইলের সঙ্গে সম্পৃক্ত বলেও দাবি করেন রুমিন ফারহানা। তিনি বলেন, তাঁদেরকে দাপ্তরিক কাজ ও জমি রেজিস্ট্রি সরাইল উপজেলাতেই করতে হয়। যাতায়াতের দিক থেকেও সরাইল তাঁদের জন্য সহজ।

খালেদ হোসেনের পাল্টা বক্তব্য

রুমিন ফারহানা ইসিতে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ আসনে বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশী ইঞ্জিনিয়ার খালেদ হোসেন মাহবুব জেলা বিএনপিরও সভাপতির বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন। শুনানিতে মারামারির প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘এখানে আসলে এনসিপির সঙ্গে ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানার একটা তর্ক-বিতর্ক হয়েছে। এটা আসলে দুঃখজনক ও অনাকাঙ্ক্ষিত। এই লেভেলে এসে এই ধরনের ঘটনা খুবই দুঃখজনক।’

সীমানা পুনর্নির্ধারণ নিয়ে খালেদ হোসেন বলেন, ‘বিজয়নগরের ১০ ইউনিয়নের মধ্যে ৩টিকে সরাইল-আশুগঞ্জের সঙ্গে যুক্ত করা হয়েছে ভুল তথ্যের ভিত্তিতে। অথচ এই ইউনিয়নগুলো ভৌগোলিকভাবে বিজয়নগরের সঙ্গেই সম্পৃক্ত। আমরা চাই, এগুলো সদর-৩ আসনেই থাকুক।’

নিউজটি শেয়ার করুন

১৫ বছরে যেটা হয়নি, আজ সেটাই হলো: রুমিন ফারহানা
রুমিনের বিরুদ্ধে এনসিপি নেতাকে ধাক্কার অভিযোগ

আপডেট সময় : ০৮:৫৩:২২ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৪ অগাস্ট ২০২৫

‘ভেবেছিলাম, নির্বাচন কমিশনের (ইসি) মর্যাদা রক্ষায় কেউ গুন্ডাপান্ডা নিয়ে ঢুকবে না। কিন্তু ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ আসনের প্রার্থী খালেদ হোসেন মাহবুব ২০ থেকে ২৫ জন নিয়ে এসে গুন্ডামি করেছেন। ১৫ বছরে যেটা হয়নি, আজ সেটাই হলো—অলমোস্ট আমাকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে। যে বিএনপির নেতা–কর্মীদের জন্য ১৫ বছর লড়েছি, তাঁরাই আমাকে ধাক্কা দিল।’ কথাগুলো বলেছেন বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক রুমিন ফারহানা।

রবিবার (২৪ আগস্ট) দুপুরে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে সংসদীয় আসনের সীমানা পুনর্নির্ধারণ নিয়ে শুনানিতে ধাক্কাধাক্কি ও কিল-ঘুষির ঘটনার পর সাংবাদিকদের এ কথা জানান রুমিন ফারহানা। তিনি অভিযোগ করে বলেন, ‘কমিশনে আমি ভদ্রলোক নিয়ে এসেছি, গুন্ডা নয়। কিন্তু তারা আবোল–তাবোল বলে যাচ্ছিল। শেষ দিকে আমি বক্তব্য দিতে দাঁড়ালে আমাকে ধাক্কা দেওয়া হয়।’

দুপুর ১২টার দিকে নির্বাচন কমিশনের এই শুনানি শুরু হয়। কিছুক্ষণ পর রুমিন ফারহানার এলাকা ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ ও পাশের ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ আসনের সীমানা পুনর্নির্ধারণ নিয়ে শুনানি হয়। এর এক পর্যায়ে হাতাহাতি ও মারামারির ঘটনা ঘটে। সীমানা পুনর্নির্ধারণে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার বিজয়নগর উপজেলার তিনটি ইউনিয়নকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ (সদর-বিজয়নগর) আসন থেকে কেটে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ (সরাইল-আশুগঞ্জ)-এর সঙ্গে যুক্ত করার খসড়া করেছে নির্বাচন কমিশন। এই ইউনিয়নগুলো হলো বুধন্তী, চান্দুরা ও হরষপুর। নির্বাচন কমিশনের এই প্রস্তাবের পক্ষে রুমিন ফারহানা।

শুনানিতে মারামারির জন্য রুমিন ফারহানার বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) যুগ্ম মুখ্য সংগঠক মো. আতাউল্লাহ। তিনি বলেন, ‘শুনানির সময় আমি বক্তব্য দিতে গেলে রুমিন ফারহানা আমাকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেন। এরপর তাঁর লোকজন আমাকে লাথি-ঘুষি মারতে থাকেন। আমার পাঞ্জাবি ছিঁড়ে যায়, হাতে আঘাত পেয়েছি। যেভাবে ছাত্রলীগ আমাদের ক্যাম্পাসে পিষত, সেভাবেই আমাকে পিষেছে।’

এ বিষয়ে এনসিপির ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সমন্বয়কারী আমিনুল হক চৌধুরী বলেন, ‘আমরা চাই বিজয়নগর একত্র থাকুক। কিন্তু শুনানির সময় রুমিন ফারহানা ও তাঁর লোকজন আমাদের ওপর হামলা করেছেন। কমিশনের সামনেই আমাদের মাটিতে ফেলে পিষেছে। এতে প্রমাণ হয়, দেশে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়।’

এনসিপি নেতা আতাউল্লাহর অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে রুমিন ফারহানা বলেন, ‘মুশকিলের বিষয় হচ্ছে, তিনি পরিচিত মুখ নন, তিনি এনসিপি থেকে এসেছেন, না জামায়াত থেকে এসেছেন, তা আমি জানি না। তবে উনি প্রথম, সাদা পাঞ্জাবি পরিহিত একজন আমাকে ধাক্কা দিয়েছেন। তারপর আমার লোকজন তো বসে থাকবে না। আমি তো একজন মহিলা। পরে যখন আমার লোকজনকে মারধর করেছে, আমার লোকজনও জবাব দিয়েছে। এটা সিম্পল।’

সীমানা নির্ধারণ নিয়ে রুমিন ফারহানা

সীমানা নির্ধারণ নিয়ে রুমিন ফারহানা বলেন, ‘দেশনেত্রী খালেদা জিয়া সব সময় বলেছেন, ২০০৮ সালের আগের সীমানায় বিএনপি নির্বাচন করতে চায়। বর্তমান সীমানা ফ্যাসিস্ট সরকার নিজেদের সুবিধায় নির্ধারণ করেছে। আমরা চাই, ২০০৮ সালের আগের সীমানায় ফিরে যাওয়া হোক।’

এই অবস্থানের পক্ষে যুক্তি তুলে ধরে রুমিন ফারহানা বলেন, ‘বর্তমান সীমানায় ভোটার সংখ্যায় ভারসাম্য নেই। আমাদের আসনে ভোটার প্রায় ৪ লাখ ২০ হাজার, বিজয়নগরে ৬ লাখ ১০ হাজার আর সদরে ৬ লাখ। সরাইলের সঙ্গে যদি বুধন্তী, চান্দুরা ও হরষপুর ইউনিয়ন যুক্ত হয়, তবে ভোটার সংখ্যায় ভারসাম্য তৈরি হবে।’

ওই তিন ইউনিয়নের বাসিন্দারা ভৌগোলিক ও সামাজিকভাবে সরাইলের সঙ্গে সম্পৃক্ত বলেও দাবি করেন রুমিন ফারহানা। তিনি বলেন, তাঁদেরকে দাপ্তরিক কাজ ও জমি রেজিস্ট্রি সরাইল উপজেলাতেই করতে হয়। যাতায়াতের দিক থেকেও সরাইল তাঁদের জন্য সহজ।

খালেদ হোসেনের পাল্টা বক্তব্য

রুমিন ফারহানা ইসিতে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ আসনে বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশী ইঞ্জিনিয়ার খালেদ হোসেন মাহবুব জেলা বিএনপিরও সভাপতির বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন। শুনানিতে মারামারির প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘এখানে আসলে এনসিপির সঙ্গে ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানার একটা তর্ক-বিতর্ক হয়েছে। এটা আসলে দুঃখজনক ও অনাকাঙ্ক্ষিত। এই লেভেলে এসে এই ধরনের ঘটনা খুবই দুঃখজনক।’

সীমানা পুনর্নির্ধারণ নিয়ে খালেদ হোসেন বলেন, ‘বিজয়নগরের ১০ ইউনিয়নের মধ্যে ৩টিকে সরাইল-আশুগঞ্জের সঙ্গে যুক্ত করা হয়েছে ভুল তথ্যের ভিত্তিতে। অথচ এই ইউনিয়নগুলো ভৌগোলিকভাবে বিজয়নগরের সঙ্গেই সম্পৃক্ত। আমরা চাই, এগুলো সদর-৩ আসনেই থাকুক।’