যুদ্ধের পর প্রথম প্রকাশ্যে খামেনি
- আপডেট সময় : ০৪:৩১:২৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ৬ জুলাই ২০২৫
- / 286

আশুরা উপলক্ষে তেহরানের ইমাম খোমেনি মসজিদে উপস্থিত হন সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি। ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি ইসরায়েলের সঙ্গে সাম্প্রতিক ১২ দিনের যুদ্ধের পর প্রথমবারের মতো প্রকাশ্যে উপস্থিত হয়েছেন।
দেশটির রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, শনিবার তিনি তেহরানে একটি ধর্মীয় অনুষ্ঠানে অংশ নিয়েছেন।
রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে প্রচারিত একটি ভিডিওতে দেখা গেছে, ৮৬ বছর বয়সী এই নেতা তেহরানের কেন্দ্রীয় ইমাম খোমেনি মসজিদে উপস্থিত জনতার সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করছেন।
এই মসজিদটির নামকরণ করা হয়েছে ইসলামিক প্রজাতন্ত্রের প্রতিষ্ঠাতা ইমাম খোমেনির নামে। আশুরার মতো শিয়া মুসলিমদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ একটি দিনে, ইমাম হুসেইনের শাহাদতবার্ষিকী উপলক্ষে এই অনুষ্ঠানে অংশ নেন খামেনি।
ভিডিওতে দেখা যায়, কালো পোশাক পরিহিত খামেনি মঞ্চে উপস্থিত। আর তাঁর সামনে উপস্থিত জনতা মুষ্টি উঁচিয়ে স্লোগান দিচ্ছে, “আমাদের শিরায় রক্ত আমাদের নেতার জন্য!”
১৯৮৯ সাল থেকে ক্ষমতায় থাকা খামেনি গত সপ্তাহে একটি আগে ধারণ করা ভিডিওতে কথা বলেছিলেন- তবে ১৩ জুন ইসরায়েলের অতর্কিত বিমান হামলার মাধ্যমে যুদ্ধ শুরুর আগে তিনি প্রকাশ্যে উপস্থিত হননি।
তাঁর সর্বশেষ প্রকাশ্য উপস্থিতি ছিল ১১ জুন। সে সময় খামেনি সংসদ সদস্যদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছিলেন।
যুদ্ধ শেষের পর ইসরায়েলি প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাৎজ জানিয়েছিলেন, খামেনিকে হত্যা করার পরিকল্পনা তাদের ছিল। কিন্তু অবস্থান তারা জানতেন না। যদিও ট্রাম্প দাবি করেছেন- খামেনিকে হত্যার করার বিষয়টি তিনি অনুমোদন দেননি।
ইসরায়েল-ইরান যুদ্ধের প্রেক্ষাপট
ইসরায়েলের বিমান হামলা ছিল ইরানের সঙ্গে দশকব্যাপী ছায়াযুদ্ধের একটি অংশ, যার লক্ষ্য ছিল ইরানকে পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি থেকে বিরত রাখা। ইরান বরাবরই পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির উচ্চাকাঙ্ক্ষার কথা অস্বীকার করে আসছে।
এই হামলায় ইরানে ৯০০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছে বলে ইরানের বিচার বিভাগ জানিয়েছে।
অন্যদিকে, ইরানের পাল্টা ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ইসরায়েলের শহরগুলোতে কমপক্ষে ২৮ জন নিহত হয়েছে বলে আনুষ্ঠানিক তথ্যে জানা গেছে। তবে সামরিক ঘাঁটিতে হামলা সংক্রান্ত তথ্য প্রকাশ করেনি তেল আবিব।
যুক্তরাষ্ট্র ইসরায়েল-ইরান যুদ্ধের অংশ হিসেবে ইরানের তিনটি পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা চালানোর পর মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দাবি করেন, এই হামলা ইরানের পারমাণবিক সক্ষমতাকে ‘ধ্বংস’ করে দিয়েছে।
তবে গত সপ্তাহে জাতিসংঘের আনবিক শক্তি পর্যবেক্ষণ সংস্থা আইএইএ’র মহাপরিচালক রাফায়েল গ্রোসি সিবিএস নিউজকে জানিয়েছেন, ইরানের তিনটি স্থাপনায় হামলা গুরুতর ক্ষতি সাধন করলেও তা ‘সম্পূর্ণ ধ্বংস’ করতে পারেনি।
গ্রোসি বলেন, “স্পষ্টভাবে বলতে গেলে, কেউ দাবি করতে পারে না যে সবকিছু ধ্বংস হয়ে গেছে এবং সেখানে কিছুই নেই। ইরানের শিল্প ও প্রযুক্তিগত সক্ষমতা রয়েছে। তারা কয়েক মাসের মধ্যে, আমি বলব কয়েক মাসের মধ্যেই তারা সমৃদ্ধ ইউরেনিয়াম উৎপাদন করতে পারে, এমনকি তার চেয়েও কম সময়ে।”
তাঁর এই বক্তব্যের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে, একটি প্রাথমিক মার্কিন গোয়েন্দা মূল্যায়নেও বলা হয়েছে, হামলাগুলো ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচিকে মাত্র কয়েক মাস পিছিয়ে দিয়েছে।
রয়টার্সের সঙ্গে কথা বলা একটি সূত্র জানিয়েছে, এই কর্মসূচি এক থেকে দুই মাসের মধ্যে পুনরায় চালু হতে পারে।






















