যুদ্ধে জড়ালো যুক্তরাষ্ট্র : ইরানের ৩ পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা
- আপডেট সময় : ১০:১৮:৫৮ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২২ জুন ২০২৫
- / 265

ইরানে যুক্তরাষ্ট্র বিমান হামলা চালিয়েছে বলে সোশ্যাল মিডিয়া ট্রুথ সোশ্যালে পোস্ট করেছেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ইরানের রাষ্ট্রীয় টিভি ভাষ্যকার বলেছেন এই অঞ্চলের প্রতিটি আমেরিকান নাগরিক বা সামরিক স্থাপনা এখন একটি বৈধ লক্ষ্য।
ট্রাম্প তার পোস্টে লিখেছেন ইরানের ফোর্দো, নাতাঞ্জ আর ইসফাহানের পারমাণবিক ঘাঁটিতে সফলভাবে হামলা চালানো হয়েছে এবং হামলা শেষে সব বিমান এখন ইরানের আকাশসীমার বাইরে আছে।
এর কিছুক্ষণ পর ডোনাল্ড ট্রাম্প আবার পোস্ট করেন ‘ফোর্দো ইজ গন’ অর্থাৎ ‘ফোর্দো শেষ।’
যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এ হামলায় বি-টু বোমারু বিমান জড়িত।
এর আগে, মার্কিন বি-টু স্টিলথ বোমারু বিমানগুলোকে মার্কিন দ্বীপপুঞ্জ গুয়ামে স্থানান্তরিত করা হয়েছে বলে জানা গিয়েছিল।
যার ফলে জল্পনা – কল্পনা শুরু হয় যে বিমানটি ইরানে মার্কিন হামলায় জড়িত থাকতে পারে।
এদিকে, আনুষ্ঠানিকভাবে ফোর্দো, নাতাঞ্জ এবং ইসফাহানের হামলার কথা স্বীকার করেছে ইরান। দেশটির কর্মকর্তারা গণমাধ্যমে বিষয়টি জানিয়েছে।
সংবাদ সংস্থা তাসনিম জানিয়েছে, কোম প্রদেশের ক্রাইসিস ম্যানেজম্যান্টের মুখপাত্র মোর্তোজা হায়দারি বলেন, ” ফোর্দো পারমাণবিক কেন্দ্রের একটি অংশ বিমান হামলার শিকার হয়েছে।”
ইসফাহানের নিরাপত্তা সংক্রান্ত উপ – গভর্নর আকবর সালেহি বলেছেন, ” নাতাঞ্জ এবং ইসফাহানে বেশ কয়েকটি বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে। আমরা ইসফাহান ও নাতাঞ্জের পারমাণবিক স্থাপনার কাছে হামলা দেখেছি। “
অর্থাৎ যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প যেসব পারমাণবিক কেন্দ্রে হামলা করার কথা দাবি করেছেন সেই তিনটি স্থানেই হামলার তথ্য নিশ্চিত করেছে ইরানিয়ান কর্মকর্তারা।
পারমাণবিক স্থাপনাগুলো এরই মধ্যে খালি করার কথা জানিয়েছে ইরান। দেশটির রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
ইরানের রাষ্ট্রীয় সম্প্রচারকের ডেপুটি পলিটিক্যাল ডিরেক্টর হাসান আবেদিনি স্থানীয় সময়ে কিছুক্ষণ আগে মাত্র রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে সরাসরি উপস্থিত হয়েছেন।
তিনি বলেছেন, ” ইরান ‘কিছুক্ষণ আগে’ এই তিনটি পারমাণবিক স্থাপনা খালি করেছে।”
তিনি আরও বলেছেন, ট্রাম্প যা বলেছেন তা যদি সত্য হয়ও ইরান ” বড় কোন ক্ষতির সম্মুখীন হয়নি, কারণ পারমাণবিক কেন্দ্রের উপকরণগুলো ইতোমধ্যেই সরিয়ে নেওয়া হয়েছিল।”
এদিকে, ইরানে ট্রাম্পের হামলার সিদ্ধান্তের পর এ্রর পক্ষে – বিপক্ষে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের আইন প্রণেতারা।
কয়েকজন সিনেটর যেমন এই পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়েছেন, তেমনি কেউ কেউ এটিকে ‘অসাংবিধানিক’ বলে সমালোচনাও করেছেন।
সাউথ ক্যারোলাইনার সিনেটর লিন্ডসে গ্রাহাম ট্রাম্পকে শুভেচ্ছা জানিয়ে বলেছেন, ” তিনি সঠিক কাজটি করেছেন।”
তিনি আরও যোগ করেন, “(ইরানের) সরকার এটারই যোগ্য।”
রিপাবলিকান সিনেটর রজার উইকার বলেছেন, ট্রাম্প ইরান ‘ইসরায়েলের অস্তিত্বের ওপর যে হুমকি’ সৃষ্টি করেছে তা দূর করার জন্য একটি ‘সঠিক’ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
তবে, কেন্টাকির রিপাবলিকান সিনেটর থমাস ম্যাসি সমালোচনা করে বলেছেন, “এটি সাংবিধানিক নয়”।
ক্যালিফোর্নিয়ার ডেমোক্র্যাটিক প্রতিনিধি সারা জ্যাকবস বলেছেন, এ হামলা “একটি ক্রমবর্ধমান পরিস্থিতি, যা যুক্তরাষ্ট্রকে আরেকটি অন্তহীন এবং মারাত্মক যুদ্ধে নিয়ে যাওয়ার ঝুঁকিপূর্ণ”।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও ট্রাম্পের ট্রুথ সোশ্যালের পােস্টটি পুনরায় শেয়ার করেছেন, তবে এখনও পর্যন্ত এই হামলা সম্পর্কে প্রকাশ্যে কোনও মন্তব্য করেননি।



















