ঢাকা ০১:০৯ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ০৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ২৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
দুর্নীতির বিরুদ্ধে অবস্থান নিতে ‘ব্যর্থ’ অন্তর্বর্তী সরকার: টিআইবি খালেদা জিয়াকে নিতে এয়ার অ্যাম্বুলেন্স আসছে মঙ্গলবার বাংলাদেশসহ তিন দেশে আইইএলটিএস প্রতারণা, ব্রিটেনে ভিসা জালিয়াতির আশঙ্কা ‘রাষ্ট্রের ২৪ কোটি টাকা ক্ষতি’, সাবেক রাষ্ট্রপতির বিরুদ্ধে দুদকের অনুসন্ধান ভোট গ্রহণের সময় বাড়ল এক ঘণ্টা খালেদা জিয়ার অবস্থা স্থিতিশীল, চিকিৎসায় সাড়া দিচ্ছে শরীর বিশ্বকাপ ফুটবলে কোন দলের খেলা কোন দিন ভোটের আগে জোট, পর্দার আড়ালে ‘আন্ডারস্ট্যান্ডিং’ খালেদা জিয়া ‘বিমান ভ্রমণে সক্ষম নন’, মত মেডিকেল বোর্ডের শেখ হাসিনাই সিদ্ধান্ত নেবেন ভারতে কতদিন থাকবেন, জানালেন জয়শঙ্কর

মোহাম্মদ নাসিমের মৃত্যুতে রাজনৈকিক অঙ্গনে শোকের ছায়া
রবিবার সাড়ে ১০টায় বনানী কবরস্থানে দাফন

৫২ বাংলা
  • আপডেট সময় : ০৫:৫৩:৪৬ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৩ জুন ২০২০
  • / 1374
অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী ,জাতীয় নেতা ও আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য মোহাম্মদ নাসিম আর নেই (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)।

শনিবার বেলা ১১টা ১০ মিনিটে তাঁর মৃত্যুর কথা ঘোষণা করা হয়। টানা দুই সপ্তাহ হাসপাতালে জীবন-মৃত্যুর সঙ্গে লড়ে চলে গেলেন তিনি।

মোহাম্মদ নাসিমের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন মহামান্য রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘আমাদের মুক্তি সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধসহ দেশের সব গণতান্ত্রিক আন্দোলনে মোহাম্মদ নাসিম ছিলেন নির্ভীক যোদ্ধা। তিনি জনগণের প্রিয় নেতা ছিলেন বলেই পাঁচবার সংসদ সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হয়েছিলেন। তার মৃত্যু বাংলাদেশের জাতীয় রাজনীতিতে এক অপূরণীয় ক্ষতি। দেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে মোহাম্মদ নাসিমের নাম চির ভাস্বর হয়ে থাকবে।’

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা  এক শোকবার্তায়  বলেন, পিতার মতোই মোহাম্মদ নাসিম আমৃত্যু জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আর্দশকে ধারণ করে দেশ ও জাতির কল্যাণে কাজ করে গেছেন। সকল ঘাত-প্রতিঘাত উপেক্ষা করে মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ ও অসাম্প্রদায়িক চেতনা প্রতিষ্ঠায় তিনি অনন্য অবদান রেখেছেন।

শেখ হাসিনা আরও বলেন, মোহাম্মদ নাসিমের মৃত্যুতে বাংলাদেশ একজন দেশপ্রেমিক ও জনমানুষের নেতাকে হারাল। আমি হারালাম একজন বিশ্বস্ত সহযোদ্ধাকে।

প্রধানমন্ত্রী তাঁর বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করেন ও শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।

রক্তচাপজনিত সমস্যা নিয়ে ১ জুন হাসপাতালে ভর্তি হন মোহাম্মদ নাসিম। ওই দিনই তাঁর করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়। এরপর ৪ জুন তাঁর অবস্থার কিছুটা উন্নতি হলেও ৫ জুন ভোরে তিনি স্ট্রোকে আক্রান্ত হন। মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণের কারণে দ্রুত অস্ত্রোপচার করে তাঁকে আইসিইউতে রাখা হয়। এরপর দুই দফায় ৭২ ঘণ্টায় করে পর্যবেক্ষণে রাখে মেডিকেল বোর্ড। এর মধ্যেই পরপর তিনবার নমুনা পরীক্ষা করে করোনাভাইরাস পাওয়া যায়নি তাঁর শরীরে।

কয়েক দিন স্থিতিশীল থাকলেও গত বৃহস্পতিবার রক্তচাপ অস্বাভাবিক ওঠানামা করতে থাকে নাসিমের। এরপর ১২ জুন শুক্রবার পরিস্থিতি আরও জটিল হতে থাকে।

১৯৭৫ সালের ৩ নভেম্বর কারাগারের অভ্যন্তরে নিহত জাতীয় চার নেতার একজন এম মনসুর আলীর ছেলে মোহাম্মদ নাসিম। তিনি সংসদে পঞ্চমবারের মতো সিরাজগঞ্জের কাজীপুরের মানুষের প্রতিনিধিত্ব করছিলেন।

১৯৪৮ সালের ২ এপ্রিল সিরাজগঞ্জের কাজীপুর উপজেলায় এম মনসুর আলী ও মোসাম্মত আমেনা মনসুরের ঘরে মোহম্মদ নাসিমের জন্ম।  মোহাম্মদ নাসিমের বয়স হয়েছিল ৭২ বছর। তিনি স্ত্রী ও তিন সন্তান রেখে গেছেন।

মোহাম্মদ নাসিম বর্তমান সরকারের খাদ্য মন্ত্রণালয়-সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির সভাপতি। তিনি আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য। এ ছাড়া আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন ১৪ দলের মুখপাত্রও তিনি।

২০১৪ সালের নির্বাচনের পর আওয়ামী লীগ সরকারের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পান মোহাম্মদ নাসিম। এর আগে ১৯৯৬-২০০১ সালের আওয়ামী লীগ সরকারের সময় তিনি একাধিক মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পালন করেন।

১৪জুন রোববার সকাল সাড়ে ১০টায় বনানী কবরস্থানে দাফন করা হবে সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ নেতা মোহাম্মদ নাসিমকে। তার আগে সেখানেই তাঁর জানাজা অনুষ্ঠিত হবে বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া দুপুরে প্রথম আলোকে এটি নিশ্চিত করেছেন।

করোনাভাইরাসের কারণে জনগণের স্বাস্থ্যবিধি ও স্বাস্থ্যসচেতনতার বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে তাঁর মরদেহ সিরাজগঞ্জে নেওয়া হচ্ছে না।

 

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

মোহাম্মদ নাসিমের মৃত্যুতে রাজনৈকিক অঙ্গনে শোকের ছায়া
রবিবার সাড়ে ১০টায় বনানী কবরস্থানে দাফন

আপডেট সময় : ০৫:৫৩:৪৬ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৩ জুন ২০২০

সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী ,জাতীয় নেতা ও আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য মোহাম্মদ নাসিম আর নেই (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)।

শনিবার বেলা ১১টা ১০ মিনিটে তাঁর মৃত্যুর কথা ঘোষণা করা হয়। টানা দুই সপ্তাহ হাসপাতালে জীবন-মৃত্যুর সঙ্গে লড়ে চলে গেলেন তিনি।

মোহাম্মদ নাসিমের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন মহামান্য রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘আমাদের মুক্তি সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধসহ দেশের সব গণতান্ত্রিক আন্দোলনে মোহাম্মদ নাসিম ছিলেন নির্ভীক যোদ্ধা। তিনি জনগণের প্রিয় নেতা ছিলেন বলেই পাঁচবার সংসদ সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হয়েছিলেন। তার মৃত্যু বাংলাদেশের জাতীয় রাজনীতিতে এক অপূরণীয় ক্ষতি। দেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে মোহাম্মদ নাসিমের নাম চির ভাস্বর হয়ে থাকবে।’

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা  এক শোকবার্তায়  বলেন, পিতার মতোই মোহাম্মদ নাসিম আমৃত্যু জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আর্দশকে ধারণ করে দেশ ও জাতির কল্যাণে কাজ করে গেছেন। সকল ঘাত-প্রতিঘাত উপেক্ষা করে মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ ও অসাম্প্রদায়িক চেতনা প্রতিষ্ঠায় তিনি অনন্য অবদান রেখেছেন।

শেখ হাসিনা আরও বলেন, মোহাম্মদ নাসিমের মৃত্যুতে বাংলাদেশ একজন দেশপ্রেমিক ও জনমানুষের নেতাকে হারাল। আমি হারালাম একজন বিশ্বস্ত সহযোদ্ধাকে।

প্রধানমন্ত্রী তাঁর বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করেন ও শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।

রক্তচাপজনিত সমস্যা নিয়ে ১ জুন হাসপাতালে ভর্তি হন মোহাম্মদ নাসিম। ওই দিনই তাঁর করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়। এরপর ৪ জুন তাঁর অবস্থার কিছুটা উন্নতি হলেও ৫ জুন ভোরে তিনি স্ট্রোকে আক্রান্ত হন। মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণের কারণে দ্রুত অস্ত্রোপচার করে তাঁকে আইসিইউতে রাখা হয়। এরপর দুই দফায় ৭২ ঘণ্টায় করে পর্যবেক্ষণে রাখে মেডিকেল বোর্ড। এর মধ্যেই পরপর তিনবার নমুনা পরীক্ষা করে করোনাভাইরাস পাওয়া যায়নি তাঁর শরীরে।

কয়েক দিন স্থিতিশীল থাকলেও গত বৃহস্পতিবার রক্তচাপ অস্বাভাবিক ওঠানামা করতে থাকে নাসিমের। এরপর ১২ জুন শুক্রবার পরিস্থিতি আরও জটিল হতে থাকে।

১৯৭৫ সালের ৩ নভেম্বর কারাগারের অভ্যন্তরে নিহত জাতীয় চার নেতার একজন এম মনসুর আলীর ছেলে মোহাম্মদ নাসিম। তিনি সংসদে পঞ্চমবারের মতো সিরাজগঞ্জের কাজীপুরের মানুষের প্রতিনিধিত্ব করছিলেন।

১৯৪৮ সালের ২ এপ্রিল সিরাজগঞ্জের কাজীপুর উপজেলায় এম মনসুর আলী ও মোসাম্মত আমেনা মনসুরের ঘরে মোহম্মদ নাসিমের জন্ম।  মোহাম্মদ নাসিমের বয়স হয়েছিল ৭২ বছর। তিনি স্ত্রী ও তিন সন্তান রেখে গেছেন।

মোহাম্মদ নাসিম বর্তমান সরকারের খাদ্য মন্ত্রণালয়-সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির সভাপতি। তিনি আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য। এ ছাড়া আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন ১৪ দলের মুখপাত্রও তিনি।

২০১৪ সালের নির্বাচনের পর আওয়ামী লীগ সরকারের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পান মোহাম্মদ নাসিম। এর আগে ১৯৯৬-২০০১ সালের আওয়ামী লীগ সরকারের সময় তিনি একাধিক মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পালন করেন।

১৪জুন রোববার সকাল সাড়ে ১০টায় বনানী কবরস্থানে দাফন করা হবে সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ নেতা মোহাম্মদ নাসিমকে। তার আগে সেখানেই তাঁর জানাজা অনুষ্ঠিত হবে বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া দুপুরে প্রথম আলোকে এটি নিশ্চিত করেছেন।

করোনাভাইরাসের কারণে জনগণের স্বাস্থ্যবিধি ও স্বাস্থ্যসচেতনতার বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে তাঁর মরদেহ সিরাজগঞ্জে নেওয়া হচ্ছে না।