বিশ্বের শীর্ষ মেধাবীদের জন্য কিছু ভিসা ফি মওকুফের বিষয়টি বিবেচনা করছেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার। ফাইন্যান্সিয়াল টাইমসের (এফটি) সোমবারের (২২ সেপ্টেম্বর) প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বাড়ানোর পরিকল্পনার অংশ হিসেবেই এ ধরনের পদক্ষেপ ভেবে দেখা হচ্ছে। এ সময় যুক্তরাষ্ট্র অভিবাসন নীতিতে আরও কঠোর অবস্থান নিয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, স্টারমারের ‘গ্লোবাল ট্যালেন্ট টাস্ক ফোর্স’ এমন প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা করছে, যার মধ্যে বিশ্বের শীর্ষ পাঁচ বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থী বা মর্যাদাপূর্ণ পুরস্কারপ্রাপ্তদের সম্পূর্ণ ফি মওকুফের বিষয়ও থাকতে পারে।
এক কর্মকর্তা এফটিকে বলেন, “আমরা এমন মানুষদের কথা বলছি, যারা বিশ্বের সেরা পাঁচ বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়েছেন অথবা মর্যাদাপূর্ণ পুরস্কার অর্জন করেছেন। খরচ শূন্যে নামিয়ে আনার বিষয়টি আমরা পর্যালোচনা করছি।”
প্রতিবেদনে বলা হয়, এসব সংস্কার নিয়ে আলোচনা হচ্ছিল প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ও ট্রেজারির মধ্যে। এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের ট্রাম্প প্রশাসন ঘোষণা দিয়েছে, প্রযুক্তি খাতে বহুল ব্যবহৃত এইচ-১বি ভিসার নতুন আবেদনকারীদের এখন থেকে ১ লাখ ডলার ফি দিতে হবে। গত রবিবার থেকেই সিদ্ধান্ত কার্যকর হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের এই পদক্ষেপ ব্রিটিশ সরকারের ভিসা সংস্কার উদ্যোগকে আরও গতিশীল করেছে। আলোচনায় যুক্ত কর্মকর্তাদের মতে, নভেম্বরে বাজেট ঘোষণার আগে প্রবৃদ্ধি বাড়াতে এ ধরনের প্রণোদনা জরুরি হয়ে পড়েছে।
বর্তমানে যুক্তরাজ্যের গ্লোবাল ট্যালেন্ট ভিসার খরচ প্রতিটি আবেদনকারীর জন্য ৭৬৬ পাউন্ড। একই ফি প্রযোজ্য হয় স্বামী/স্ত্রী ও সন্তানের ক্ষেত্রেও। পাশাপাশি প্রত্যেককে বছরে ১ হাজার ৩৫ পাউন্ড স্বাস্থ্য সারচার্জ দিতে হয়। ২০২০ সালে চালু হওয়া এই ভিসা ব্যবস্থা মূলত বিজ্ঞান, প্রকৌশল, মানবিক বিদ্যা, চিকিৎসা, ডিজিটাল প্রযুক্তি এবং শিল্প-সংস্কৃতির স্বীকৃত ব্যক্তিদের জন্য তৈরি।
‘গ্লোবাল ট্যালেন্ট টাস্কফোর্স’ বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় বিজ্ঞানী, একাডেমিক ও ডিজিটাল বিশেষজ্ঞদের যুক্তরাজ্যে আনতে নানা পরিকল্পনা করছে। টাস্ক ফোর্সের নেতৃত্ব দিচ্ছেন স্টারমারের ব্যবসা উপদেষ্টা বরুণ চন্দ্র এবং বিজ্ঞানমন্ত্রী লর্ড প্যাট্রিক ভ্যালান্স। যদিও হোম অফিস এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে এসব প্রস্তাব অনুমোদন করেনি, তবে কর্মকর্তারা নিশ্চিত করেছেন—ভিসার নিয়মকানুন পর্যালোচনা করা হচ্ছে।
এক কর্মকর্তা বলেন, “এই উদ্যোগ সরকারের অভিবাসন কমানোর লক্ষ্যের বিপরীতে যাবে না। বরং বিশ্বের সেরা প্রতিভাবান মানুষদের যুক্তরাজ্যে আকৃষ্ট করাই মূল উদ্দেশ্য। এ বিষয়ে সরকারের সব দপ্তর ও নেতৃত্বের মধ্যে ঐক্যমত রয়েছে।”


















