মব সৃষ্টি করে ৭১ মঞ্চের সভা পণ্ড : লতিফ সিদ্দিকী ও ঢা.বি শিক্ষককে পুলিশে সোপর্দ
- আপডেট সময় : ০২:১১:৪০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৮ অগাস্ট ২০২৫
- / 255
মব সৃষ্টি করে পণ্ড করে দেওয়া হয়েছে ‘মঞ্চ ৭১’ নামের প্ল্যাটফর্ম আয়োজিত ‘আমাদের মহান স্বাধীনতা যুদ্ধ এবং বাংলাদেশের সংবিধান’ শীর্ষক গোলটেবিল আলোচনা অনুষ্ঠান। অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে যোগ দেওয়া সাবেক সংসদ সদস্য আবদুল লতিফ সিদ্দিকী ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক শেখ হাফিজুর রহমান কার্জনকে অবরুদ্ধ করে রাখে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিকারী একদল বহিরাগত। পরে তাদেরকে পুলিশে সোপর্দ করা হয়েছে। মব সৃষ্টিকারীরা নিজেদের ‘জুলাই যোদ্ধা’ হিসেবে পরিচয় দিয়েছেন।
বৃহস্পতিবার (২৮ আগস্ট ২০২৫) সকালে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে (ডিআরইউ) মিলনায়তনে ছিল এ গোলটেবিল আলোচনা অনুষ্ঠান।
আয়োজক ছিল আলোচনা সভার প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকার কথা বাংলাদেশের সংবিধানের অন্যতম প্রণেতা ও গণফোরামের ইমেরিটাস সভাপতি ড. কামাল হোসেনের। সকাল ১০ টায় গোলটেবিল আলোচনা শুরুর কথা থাকলেও বেলা ১১টায় আলোচনা সভাটি শুরু হয়।
আলোচনা সভায় প্রথমে বক্তব্য দেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক শেখ হাফিজুর রহমান কার্জন। তিনি বলেন, ‘আমরা দেখতে পাচ্ছি দেশের সংবিধানকে ছুড়ে ফেলার পাঁয়তারা করা হচ্ছে। এর পেছনে রয়েছে জামায়াত শিবির ও জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। অধ্যাপক ইউনূসের নেতৃত্বে তাঁরা মুক্তিযোদ্ধাদের জুতার মালা পরাচ্ছে।’
শেখ হাফিজুর রহমানের বক্তব্য শেষ হওয়ার পরেই মিছিল নিয়ে একদল ব্যক্তি ডিআরইউ মিলনায়তনে ঢোকেন। এ সময় তাঁরা ‘জুলাইয়ের হাতিয়ার, গর্জে উঠুক আরেকবার’, ‘লীগ ধর, জেলে ভর’, ‘জুলাইয়ে যোদ্ধারা এক হও লড়াই করো’ প্রভৃতি স্লোগান দেন। তারা অনুষ্ঠানে আসা শ্রোতাদের বের করে দেয়। অতিথিদেরও বের করে দেওয়ার চেষ্টা করে। তাদের গায়েও ধাক্কা দেয়। অতিথিরা মঞ্চে বসা ছিলেন। এক পর্যায়ে আক্রমনের মুখে অতিথিরা চলে গেলেও বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকীর বড় ভাই লতিফ সিদ্দিকী মঞ্চে বসেই থাকেন। হামলাকারীরা অভিযোগ করেন আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা এ অনুষ্ঠানে জড়ো হয়েছেন।
উত্তেজনাকর পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে ওঠে যখন স্থানীয় যুবদল ও বিএনপি নেতাকর্মীরাও যোগ দেন। হামলাকারীরা কয়েকজনকে শারীরিকভাবেও লাঞ্ছিত করে। তারা পুলিশকে লতিফ সিদ্দিকীকে আটক করার দাবি জানান।
এ সময় আবদুল লতিফ সিদ্দিকী বলেন, ‘আমি জানতাম না এখানে সমস্যা হবে। আওয়ামী লীগের সঙ্গে আমার কোনো সম্পর্ক নেই। এই অনুষ্ঠানে দাওয়াত পেয়েই এসেছিলাম।’
একপর্যায়ে তাঁরা গোলটেবিল আলোচনার ব্যানার ছিঁড়ে আলোচনায় অংশ নেওয়াদের অবরুদ্ধ করে রাখেন। দুপুর সোয়া বারোটার দিকে পুলিশের (ডিএমপি) একটি দল আসলে তাঁরা পুলিশের কাছে লতিফ সিদ্দিকী, অধ্যাপক শেখ হাফিজুর রহমানসহ অন্তত ১৫ জনকে তুলে দেন।
পল্টন থানা জামায়াতে ইসলামীর নেতা শামীম হোসাইন বলেন, ‘একটি গোষ্ঠী একাত্তর ও চব্বিশকে মুখোমুখি করে চব্বিশকে প্রশ্নবিদ্ধ করার চেষ্টা করছে। আমরা মনে করি, একাত্তর আমাদের ভিত্তি এবং চব্বিশ আমাদের মুক্তি। এখানে যাঁরা জড়ো হয়েছেন, তারা সবাই চব্বিশের খুনের সঙ্গে জড়িত। অনেকের বিরুদ্ধে মামলাও আছে। আমরা আইন হাতে তুলে না নিয়ে তাঁদের পুলিশে সোপর্দ করেছি।’
আলোচনা সভায় অতিথি হিসেবে আরও উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের সাবেক অধ্যাপক একুশে পদকপ্রাপ্ত সৈয়দ আনোয়ার হোসেন, সাবেক সচিব আবু আলম শহীদ খান, মঞ্চ ৭১-এর সমন্বয়ক অধ্যাপক আবদুল্লাহ আল মাহমুদ প্রমুখ।

















