ঢাকা ০৬:৫০ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ০৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ২১ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :

ভারতের সঙ্গে সম্পর্কে টানাপড়েন, বাংলাদেশকে কাছে টানছে চীন

৫২ বাংলা
  • আপডেট সময় : ০৫:৪৮:৫১ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৫ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
  • / 321
অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

ভারতের সঙ্গে কূটনৈতিক টানাপড়েনের মধ্যে বাংলাদেশকে কাছে টানতে সক্রিয় হয়েছে চীন। এরই পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশের ২২ সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল ১০ দিনের সফরে চীন গেছে। ওই দলে রাজনৈতিক নেতা, সুশীল সমাজের কর্মী, বুদ্ধিজীবী এবং সাংবাদিকরা রয়েছেন। প্রতিনিধি দলের এক নেতা ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসিকে নিশ্চিত করেছেন, সফরকালে তারা চীনের সরকারি কর্মকর্তা এবং ক্ষমতাসীন কমিউনিস্ট পার্টির শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করবেন।
বিশ্লেষকরা বলছেন, বিভিন্ন বিষয়ে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে কূটনৈতিক উত্তেজনা বৃদ্ধি পাওয়ায় চীন ঢাকার সঙ্গে সম্পর্ক জোরদার করার চেষ্টা করছে। এর মধ্যে রয়েছে ভারতে নির্বাসিত বাংলাদেশের ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রত্যর্পণ। ঢাকা তাকে প্রত্যর্পণের অনুরোধ করেছে. কিন্তু দিল্লি তা প্রত্যাখ্যান করেছে।
বেইজিংয়ে প্রতিনিধিদলের নেতৃত্বদানকারী বিএনপির জ্যেষ্ঠ নেতা আব্দুল মঈন খান বিবিসিকে বলেন, এটি মূলত একটি সৌজন্যমূলক সফর, যা বেইজিংয়ের উদ্যোগে হয়েছে। এবার বাংলাদেশের বিভিন্ন গোষ্ঠীর প্রতিনিধিত্বকারী দলকে আমন্ত্রণ জানিয়েছে চীন।
প্রতিনিধিদলে বিএনপি ও তাদের মিত্রদের নেতা ছাড়াও ছাত্র আন্দোলনের বেশ কয়েকজন সদস্যও রয়েছেন। আর এটি ছিল সাম্প্রতিক মাসগুলোতে দ্বিতীয়বারের মতো বিএনপি নেতাদের চীন সফর।
শেখ হাসিনার ১৫ বছরের শাসনামলে বাংলাদেশ ভারতবান্ধব নীতি অনুসরণ করলেও চীনের সঙ্গেও সম্পর্ক বজায় রেখেছিল। কিন্তু তার পতনের পর চীন বাংলাদেশে নিজেদের প্রভাব আরও বিস্তৃত করার চেষ্টা করছে।
সেই পদক্ষেপের অংশ হিসেবে জানুয়ারিতে বাংলাদেশ সরকারের পররাষ্ট্রনীতি উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন বেইজিং সফর করেন এবং চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই’র সঙ্গে বৈঠক করেন। এমনিতেই চীন বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় বাণিজ্যিক অংশীদার এবং দুই দেশের বার্ষিক বাণিজ্যের পরিমাণ প্রায় ২৪ বিলিয়ন ডলার। বাংলাদেশের সামরিক সরঞ্জামের ৭০% আসে চীন থেকে।
বেইজিংয়ের সদিচ্ছার তুলনায় গত ছয় মাসে বরং ভারত ও বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের মধ্যে যোগাযোগ কমে এসেছে। বিএনপি ও সরকারের উপদেষ্টারা ভারতের সমালোচনা করেছে শেখ হাসিনাকে আশ্রয় দেওয়ার জন্য। গত ডিসেম্বরে বিএনপি ভারতবিরোধী বিক্ষোভ করেছে।
ভারত-বাংলাদেশের সম্পর্কের এই টানাপড়েন বাংলাদেশকে আরও বেশি চীনের দিকে ঠেলে দিচ্ছে, যা নেপাল, শ্রীলঙ্কা ও মালদ্বীপের মতো দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর ক্ষেত্রে ইতোমধ্যে দেখা গেছে।
বেইজিং বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনিয়র ফেলো চীনা বিশ্লেষক ঝো বো বলেন, ভারত যদি মনে করে পুরো উপমহাদেশ তার একচ্ছত্র প্রভাবাধীন, তবে সেটি ভারতের জন্যই ক্ষতির কারণ হতে পারে।
সূত্র: বিবিসি

নিউজটি শেয়ার করুন

ভারতের সঙ্গে সম্পর্কে টানাপড়েন, বাংলাদেশকে কাছে টানছে চীন

আপডেট সময় : ০৫:৪৮:৫১ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৫ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

ভারতের সঙ্গে কূটনৈতিক টানাপড়েনের মধ্যে বাংলাদেশকে কাছে টানতে সক্রিয় হয়েছে চীন। এরই পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশের ২২ সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল ১০ দিনের সফরে চীন গেছে। ওই দলে রাজনৈতিক নেতা, সুশীল সমাজের কর্মী, বুদ্ধিজীবী এবং সাংবাদিকরা রয়েছেন। প্রতিনিধি দলের এক নেতা ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসিকে নিশ্চিত করেছেন, সফরকালে তারা চীনের সরকারি কর্মকর্তা এবং ক্ষমতাসীন কমিউনিস্ট পার্টির শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করবেন।
বিশ্লেষকরা বলছেন, বিভিন্ন বিষয়ে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে কূটনৈতিক উত্তেজনা বৃদ্ধি পাওয়ায় চীন ঢাকার সঙ্গে সম্পর্ক জোরদার করার চেষ্টা করছে। এর মধ্যে রয়েছে ভারতে নির্বাসিত বাংলাদেশের ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রত্যর্পণ। ঢাকা তাকে প্রত্যর্পণের অনুরোধ করেছে. কিন্তু দিল্লি তা প্রত্যাখ্যান করেছে।
বেইজিংয়ে প্রতিনিধিদলের নেতৃত্বদানকারী বিএনপির জ্যেষ্ঠ নেতা আব্দুল মঈন খান বিবিসিকে বলেন, এটি মূলত একটি সৌজন্যমূলক সফর, যা বেইজিংয়ের উদ্যোগে হয়েছে। এবার বাংলাদেশের বিভিন্ন গোষ্ঠীর প্রতিনিধিত্বকারী দলকে আমন্ত্রণ জানিয়েছে চীন।
প্রতিনিধিদলে বিএনপি ও তাদের মিত্রদের নেতা ছাড়াও ছাত্র আন্দোলনের বেশ কয়েকজন সদস্যও রয়েছেন। আর এটি ছিল সাম্প্রতিক মাসগুলোতে দ্বিতীয়বারের মতো বিএনপি নেতাদের চীন সফর।
শেখ হাসিনার ১৫ বছরের শাসনামলে বাংলাদেশ ভারতবান্ধব নীতি অনুসরণ করলেও চীনের সঙ্গেও সম্পর্ক বজায় রেখেছিল। কিন্তু তার পতনের পর চীন বাংলাদেশে নিজেদের প্রভাব আরও বিস্তৃত করার চেষ্টা করছে।
সেই পদক্ষেপের অংশ হিসেবে জানুয়ারিতে বাংলাদেশ সরকারের পররাষ্ট্রনীতি উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন বেইজিং সফর করেন এবং চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই’র সঙ্গে বৈঠক করেন। এমনিতেই চীন বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় বাণিজ্যিক অংশীদার এবং দুই দেশের বার্ষিক বাণিজ্যের পরিমাণ প্রায় ২৪ বিলিয়ন ডলার। বাংলাদেশের সামরিক সরঞ্জামের ৭০% আসে চীন থেকে।
বেইজিংয়ের সদিচ্ছার তুলনায় গত ছয় মাসে বরং ভারত ও বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের মধ্যে যোগাযোগ কমে এসেছে। বিএনপি ও সরকারের উপদেষ্টারা ভারতের সমালোচনা করেছে শেখ হাসিনাকে আশ্রয় দেওয়ার জন্য। গত ডিসেম্বরে বিএনপি ভারতবিরোধী বিক্ষোভ করেছে।
ভারত-বাংলাদেশের সম্পর্কের এই টানাপড়েন বাংলাদেশকে আরও বেশি চীনের দিকে ঠেলে দিচ্ছে, যা নেপাল, শ্রীলঙ্কা ও মালদ্বীপের মতো দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর ক্ষেত্রে ইতোমধ্যে দেখা গেছে।
বেইজিং বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনিয়র ফেলো চীনা বিশ্লেষক ঝো বো বলেন, ভারত যদি মনে করে পুরো উপমহাদেশ তার একচ্ছত্র প্রভাবাধীন, তবে সেটি ভারতের জন্যই ক্ষতির কারণ হতে পারে।
সূত্র: বিবিসি