বাংলাদেশেও সামরিক ঘাঁটি চায় চীন!
যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা প্রতিবেদন
- আপডেট সময় : ০২:১৮:০৪ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৬ মে ২০২৫
- / 353
চীনের কমিউনিস্ট পার্টির সদস্য হওয়ার শপথ নেওয়ার অনুষ্ঠানে পিএলএ সদস্যরা।
চীন বাংলাদেশসহ একাধিক দেশে সামরিক ঘাঁটি নির্মাণে আগ্রহী—এমনটাই দাবি করেছে যুক্তরাষ্ট্র। দেশটির প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা সংস্থা ডিফেন্স ইন্টেলিজেন্স এজেন্সির (ডিআইএ) সদ্য প্রকাশিত ‘বার্ষিক হুমকি মূল্যায়ন’ প্রতিবেদনে উঠে এসেছে এই তথ্য।
মার্কিন প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা সংস্থা ডিআইএ প্রতিবছর বৈশ্বিক হুমকি নিয়ে বিশ্লেষণমূলক প্রতিবেদন প্রকাশ করে। সদ্য প্রকাশিত ২০২৫ সালের সংস্করণটির শিরোনাম ‘২০২৫ ওয়ার্ল্ডওয়াইড থ্রেট অ্যাসেসমেন্ট’। চীন অংশে উঠে এসেছে বিভিন্ন সম্ভাব্য হুমকির চিত্র, যেখানে বাংলাদেশ, পাকিস্তান, মিয়ানমারসহ একাধিক দেশের নাম উল্লেখ করা হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চীন পিপলস লিবারেশন আর্মি (পিএলএ)–এর জন্য নতুন সামরিক ঘাঁটি স্থাপনের বিষয়টি সক্রিয়ভাবে বিবেচনা করছে। সম্ভাব্য দেশগুলোর তালিকায় রয়েছে—মিয়ানমার, থাইল্যান্ড, ইন্দোনেশিয়া, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা, সংযুক্ত আরব আমিরাত, কিউবা, কেনিয়া, ইকুয়েটোরিয়াল গিনি, সেশেলস, তানজানিয়া, অ্যাঙ্গোলা, নাইজেরিয়া, নামিবিয়া, মোজাম্বিক, গ্যাবন, বাংলাদেশ, পাপুয়া নিউ গিনি, সলোমন দ্বীপপুঞ্জ এবং তাজিকিস্তান।
ডিআইএ’র মতে, চীন এমন সামর্থ্য গড়ে তুলছে, যাতে পিএলএ দেশের সীমানা ছাড়িয়ে দীর্ঘমেয়াদি সামরিক অভিযান পরিচালনা করতে পারে। এই উদ্দেশ্যে বৈশ্বিক মোতায়েন টিকিয়ে রাখতে একটি শক্তিশালী বৈদেশিক সরবরাহ ও ঘাঁটি অবকাঠামো গড়ে তোলার চেষ্টা করছে তারা। এই ধরনের উদ্যোগ ভবিষ্যৎ সংঘাতের সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের বৈশ্বিক সামরিক কার্যক্রম এবং আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের জন্য হুমকি হয়ে উঠতে পারে বলেও সতর্ক করেছে ডিআইএ।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, চীন বিভিন্ন ধরনের সামরিক ঘাঁটির মডেল বিবেচনায় নিচ্ছে। এর মধ্যে রয়েছে—স্থায়ী গ্যারিসন ঘাঁটি, স্বাগতিক দেশের সঙ্গে ভাগ করা সামরিক স্থাপনা, বাণিজ্যিক অবকাঠামোর সঙ্গে যুক্ত একচেটিয়া সরবরাহ কেন্দ্র কিংবা জরুরি প্রয়োজনে বাণিজ্যিক অবকাঠামোর সাময়িক ব্যবহার—যার মাধ্যমে তারা বৈশ্বিক সামরিক সরবরাহ চাহিদা মেটাতে চায়।
প্রতিবেদনে আরও দাবি করা হয়েছে, তানজানিয়ায় সামরিক মহড়ার মাধ্যমে চীন তাদের বৈশ্বিক সামরিক সক্ষমতার বার্তা দিতে চেয়েছে। ২০২৪ সালে পিএলএ দেশটিতে একটি বৃহৎ ও সুপরিকল্পিত মহড়া পরিচালনা করে, যা আফ্রিকার ইতিহাসে চীনের সবচেয়ে বড় সামরিক মহড়া হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। ওই মহড়ায় সমুদ্র ও আকাশপথে এক হাজারেরও বেশি সেনা মোতায়েন করে চীন তাদের মোতায়েন সক্ষমতা প্রদর্শন করে।
এছাড়া প্রতিবেদনে বলা হয়, চলতি বছরের ২৫ এপ্রিল কম্বোডিয়ার রিম নৌঘাঁটিতে একটি যৌথ সরবরাহ ও প্রশিক্ষণ কেন্দ্র উদ্বোধন করেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী এবং পিএলএ প্রতিনিধিরা। চীনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের দাবি, এটি সন্ত্রাসবিরোধী কার্যক্রম, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা, মানবিক সহায়তা এবং প্রশিক্ষণের জন্য যৌথ উদ্যোগ। তবে কেন্দ্রটি আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধনের আগেই সেখানে পিএলএ দুটি নৌযুদ্ধজাহাজ মোতায়েন রেখেছে, যেগুলো তিন দফায় বদল করা হয়।
মার্কিন প্রতিবেদনে উত্থাপিত এই অভিযোগের বিষয়ে চীনের পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত কোনও আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া আসেনি।



















