ঢাকা ০৮:৪৪ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ০৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ২১ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
খাঁচা থেকে বের হওয়া সিংহী আড়াই ঘণ্টা পর নিয়ন্ত্রণে লন্ডনে ফ্লাই রবিবার, নির্জন কারাবাস থেকেই খালেদা জিয়ার ‘নানা রোগের সূচনা’ জানালেন ফখরুল মহাকাশ থেকে পবিত্র  কাবা শরিফের উজ্জ্বল ছবি আন্দোলনে থাকা প্রাথমিকের শিক্ষকদের বদলি, ‘শাটডাউন’ কর্মসূচি স্থগিত তারেক রহমানের দেশে ফেরা আবার অনিশ্চিত, কীভাবে ভোটার হবেন? খালেদা জিয়া ছাড়া পরিবারের কেউ ভিভিআইপি সুবিধা পাবেন না কুকুরছানা হত্যা মামলায় মায়ের সঙ্গে কারাগারে ২ বছরের শিশু খালেদা জিয়াকে লন্ডন নিতে ঢাকায় আসছেন জুবাইদা যুক্তরাজ্যের ৯ বিশ্ববিদ্যালয়ে নিষিদ্ধ বাংলাদেশি শিক্ষার্থী! কাতারের রাজপরিবারের এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে যেসব অত্যাধুনিক সুবিধা রয়েছে

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে ‘গণহত্যাকারী’ বলে এফবিতে পোস্ট: হাজতবাসে শিলচরের প্রভাষক

৫২ বাংলা
  • আপডেট সময় : ০৭:২৮:৫৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ২ মার্চ ২০২০
  • / 1231
অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

হাজতবাসে মুক্তির প্রহর গুণছেন শিলচরের গুরুচরণ কলেজের পদার্থবিদ্যার তরুণ প্রভাষক সৌরদীপ সেনগুপ্ত। গত শুক্রবার দিল্লির নৃশংসতার বিরুদ্ধে এফবিতে তিনি একটি দীর্ঘ পোস্ট লিখে হিন্দুত্ববাদীদের কঠোর নিন্দা জানানোর পাশাপাশি সনাতন ধর্ম নিয়েও কিছু ‘আপত্তিকর’ মন্তব্য করেন। এখানেই তিনি থেমে যাননি। ভারতবর্ষের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে “গণহত্যাকারী” বলে তিনি আখ্যায়িত করেন। বলেন, দেশবাসী একজন গণহত্যাকারীকে ভোট দিয়ে প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত করেছেন।

উল্লেখ্য, মোদি গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী থাকাকালীন ২০০২ সালে মুসলিম নিধনযজ্ঞ সংঘটিত হয় এবং সেই নিধনযজ্ঞে গুজরাটের তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির প্রচ্ছন্ন মদত ছিল বলে দেশের মিডিয়া ব্যক্তিত্ব, রাজনীতিক, সমাজসেবীসহ অনেকেই মনে করেন। সেই সময় হাজারের অধিক মুসলমানকে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয় সরকারি অবিমৃশ্যকারিতায়। রেশন কার্ড দেখে দেখে মুসলিমদের শত শত বাড়ি, মসজিদ, মাদ্রাসা, স্কুল ইত্যাদি পুড়িয়ে ফেলে হিন্দুত্ববাদীরা।

গুরুচরণ কলেজের পদার্থবিদ্যার খণ্ডকালীন প্রভাষক সৌরদীপ সেনগুপ্ত গুজরাট ও দিল্লির নৃশংস হত্যাকাণ্ড নিয়ে মোদি সরকার তথা হিন্দুত্ববাদীদের দোষারূপ করেন তাঁর এফবি পোস্টে। এতে ব্যাপক চটে যান তাঁরই কলেজের একাংশ ছাত্রসহ আরএসএস ও বিভিন্ন হিন্দুত্ববাদী সংগঠনের কর্মকর্তারা। তারা তৎক্ষণাৎ শিলচর সদর থানায় ইন্ডিয়ান প্যানেল কোডের বিভিন্ন ধারায় উক্ত প্রভাষকের বিরুদ্ধে এজাহার দাখিল করে ও তাঁকে গ্রেফতারের দাবি জানায়। কলেজের গেটে বিক্ষোভ দেখাতে থাকে।অবস্থা বেগতিক দেখে সৌরদীপ সেনগুপ্ত পোস্টটি ডিলিট করার পাশাপাশি ক্ষমা চেয়ে নেন। কিন্তু বিক্ষোভকারী হিন্দুত্ববাদীরা তাতে ক্ষান্ত হয়নি। সৌরদীপের বাড়িতে এসে তাঁর মাকে অবরুদ্ধ করে রাখে। মা’র অবরুদ্ধ হওয়ার খবর শুনে তিনি বাড়িতে এলে রাস্তায় তাঁকেও অবরুদ্ধ করে অপদস্থ করে বিক্ষোভকারীরা। খবর শুনে পুলিশও আসে এবং তাঁকে গ্রেফতার করে সদর থানায় নিয়ে যায়।

শনিবার আদালত তাঁকে দু দিনের পুলিশি হেফাজতে রাখার নির্দেশ প্রদান করে। প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত তাঁর মুক্তির খবর পাওয়া যায়নি। এদিকে, হিন্দুত্ববাদীরা সৌরদীপের ঘরে গিয়ে কোথাও দেবদেবীর ছবি দেখতে না-পেয়ে আবার ক্ষুব্ধ হয়ে পড়ে। তারা জানতে চায়, সৌরদীপের পরিবার কেমন ধরনের হিন্দু, যাদের ঘরে দেবদেবীর ছবি পর্যন্ত নেই! উল্লেখ্য, সৌরদীপ কলকাতার প্রেসিডেন্সি কলেজ থেকে স্নাতক ও দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পদার্থবিদ্যায় স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করে মাস সাতেক ধরে শিলচরের গুরুচরণ কলেজে খণ্ডকালীন প্রভাষক হিসেবে কর্মরত। গতকাল শিলচরের কতিপয় মুক্তমনা ব্যক্তি সৌরদীপের ইটখলার বাড়িতে গিয়ে তাঁর পরিবারের পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। উক্ত অভাবনীয় ঘটনায় সুশীল সমাজে মিশ্র প্রতিক্রিয়া লক্ষ করা যাচ্ছে। অনেকে পোস্টটি ডিলিট করে ক্ষমা চাওয়ার পরও পুলিশি হয়রানির তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন।

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে ‘গণহত্যাকারী’ বলে এফবিতে পোস্ট: হাজতবাসে শিলচরের প্রভাষক

আপডেট সময় : ০৭:২৮:৫৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ২ মার্চ ২০২০

হাজতবাসে মুক্তির প্রহর গুণছেন শিলচরের গুরুচরণ কলেজের পদার্থবিদ্যার তরুণ প্রভাষক সৌরদীপ সেনগুপ্ত। গত শুক্রবার দিল্লির নৃশংসতার বিরুদ্ধে এফবিতে তিনি একটি দীর্ঘ পোস্ট লিখে হিন্দুত্ববাদীদের কঠোর নিন্দা জানানোর পাশাপাশি সনাতন ধর্ম নিয়েও কিছু ‘আপত্তিকর’ মন্তব্য করেন। এখানেই তিনি থেমে যাননি। ভারতবর্ষের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে “গণহত্যাকারী” বলে তিনি আখ্যায়িত করেন। বলেন, দেশবাসী একজন গণহত্যাকারীকে ভোট দিয়ে প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত করেছেন।

উল্লেখ্য, মোদি গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী থাকাকালীন ২০০২ সালে মুসলিম নিধনযজ্ঞ সংঘটিত হয় এবং সেই নিধনযজ্ঞে গুজরাটের তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির প্রচ্ছন্ন মদত ছিল বলে দেশের মিডিয়া ব্যক্তিত্ব, রাজনীতিক, সমাজসেবীসহ অনেকেই মনে করেন। সেই সময় হাজারের অধিক মুসলমানকে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয় সরকারি অবিমৃশ্যকারিতায়। রেশন কার্ড দেখে দেখে মুসলিমদের শত শত বাড়ি, মসজিদ, মাদ্রাসা, স্কুল ইত্যাদি পুড়িয়ে ফেলে হিন্দুত্ববাদীরা।

গুরুচরণ কলেজের পদার্থবিদ্যার খণ্ডকালীন প্রভাষক সৌরদীপ সেনগুপ্ত গুজরাট ও দিল্লির নৃশংস হত্যাকাণ্ড নিয়ে মোদি সরকার তথা হিন্দুত্ববাদীদের দোষারূপ করেন তাঁর এফবি পোস্টে। এতে ব্যাপক চটে যান তাঁরই কলেজের একাংশ ছাত্রসহ আরএসএস ও বিভিন্ন হিন্দুত্ববাদী সংগঠনের কর্মকর্তারা। তারা তৎক্ষণাৎ শিলচর সদর থানায় ইন্ডিয়ান প্যানেল কোডের বিভিন্ন ধারায় উক্ত প্রভাষকের বিরুদ্ধে এজাহার দাখিল করে ও তাঁকে গ্রেফতারের দাবি জানায়। কলেজের গেটে বিক্ষোভ দেখাতে থাকে।অবস্থা বেগতিক দেখে সৌরদীপ সেনগুপ্ত পোস্টটি ডিলিট করার পাশাপাশি ক্ষমা চেয়ে নেন। কিন্তু বিক্ষোভকারী হিন্দুত্ববাদীরা তাতে ক্ষান্ত হয়নি। সৌরদীপের বাড়িতে এসে তাঁর মাকে অবরুদ্ধ করে রাখে। মা’র অবরুদ্ধ হওয়ার খবর শুনে তিনি বাড়িতে এলে রাস্তায় তাঁকেও অবরুদ্ধ করে অপদস্থ করে বিক্ষোভকারীরা। খবর শুনে পুলিশও আসে এবং তাঁকে গ্রেফতার করে সদর থানায় নিয়ে যায়।

শনিবার আদালত তাঁকে দু দিনের পুলিশি হেফাজতে রাখার নির্দেশ প্রদান করে। প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত তাঁর মুক্তির খবর পাওয়া যায়নি। এদিকে, হিন্দুত্ববাদীরা সৌরদীপের ঘরে গিয়ে কোথাও দেবদেবীর ছবি দেখতে না-পেয়ে আবার ক্ষুব্ধ হয়ে পড়ে। তারা জানতে চায়, সৌরদীপের পরিবার কেমন ধরনের হিন্দু, যাদের ঘরে দেবদেবীর ছবি পর্যন্ত নেই! উল্লেখ্য, সৌরদীপ কলকাতার প্রেসিডেন্সি কলেজ থেকে স্নাতক ও দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পদার্থবিদ্যায় স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করে মাস সাতেক ধরে শিলচরের গুরুচরণ কলেজে খণ্ডকালীন প্রভাষক হিসেবে কর্মরত। গতকাল শিলচরের কতিপয় মুক্তমনা ব্যক্তি সৌরদীপের ইটখলার বাড়িতে গিয়ে তাঁর পরিবারের পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। উক্ত অভাবনীয় ঘটনায় সুশীল সমাজে মিশ্র প্রতিক্রিয়া লক্ষ করা যাচ্ছে। অনেকে পোস্টটি ডিলিট করে ক্ষমা চাওয়ার পরও পুলিশি হয়রানির তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন।