ঢাকা ০৬:৫০ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ০৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ২১ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :

পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভায় হট্টগোল, বিজেপি বিধায়ককে টেনে বের করা হলো

৫২ বাংলা
  • আপডেট সময় : ০৫:০৭:১৪ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • / 97

পশ্চিমবঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী মততা

অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

বাংলা ভাষার অবমাননা ও বাঙালিদের হেনস্তার ইস্যুতে মঙ্গলবারের পর বৃহস্পতিবার (৪ সেপ্টেম্বর) ফের উত্তপ্ত হয়ে উঠল পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা। অধিবেশনের শেষ দিনে উপস্থিত ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এসময় তীব্র হট্টগোল শুরু হলে বিজেপি বিধায়ক শঙ্কর ঘোষকে ‘সাসপেন্ড’ ঘোষণা করেন স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। পরে তাঁকে মার্শালরা টেনে-হিঁচড়ে বাইরে নিয়ে যান।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম আনন্দবাজার অনলাইনের খবরে বলা হয়, অধিবেশন শুরু হতেই বিজেপির বিধায়করা বিক্ষোভ শুরু করেন। স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় মন্তব্য করেন, “চিরকাল এদের (বিজেপি) কাজ হাউজকে অবমাননা করা।” এরপর তিনি শঙ্কর ঘোষকে শান্ত হওয়ার আহ্বান জানান। তবে বিজেপি বিধায়কেরা বিরোধীদলীয় নেতাকে সাসপেন্ডের প্রতিবাদে স্লোগান দেন। উত্তেজনা বাড়লে শঙ্কর ঘোষকে স্পিকার আবার সতর্ক করেন এবং শেষ পর্যন্ত তাঁকে সাসপেন্ড করার সিদ্ধান্ত দেন। সঙ্গে সঙ্গে মার্শাল দিয়ে তাঁকে বার করে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়।

একপর্যায়ে বিজেপি বিধায়কেরা শঙ্করকে ঘিরে ধরে স্লোগান দিতে থাকেন এবং মার্শালদের বাধা দেওয়ার চেষ্টা করেন। শেষ পর্যন্ত শঙ্কর ঘোষকে টেনে বাইরে নিয়ে যাওয়া হয়।

এ সময় মুখ্যমন্ত্রী ও তৃণমূল কংগ্রেস প্রধান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিজেপিকে তীব্র আক্রমণ করেন। তিনি বলেন, “আমি আমার সময় কেটে ওদের বলতে দিয়েছিলাম। ওরা বাংলা ভাষা নিয়ে আলোচনা চায় না। এরা গদি চোর, ভোট চোর, বাংলা বিরোধী দল, অত্যাচারী দল। বিজেপি দেশের লজ্জা। বাংলার মানুষ এদের কাউকে বিধানসভায় দেখতে চাইবে না।”

মমতা আরও বলেন, “সংসদে আমাদের এমপিদের আঘাত করা হয়েছে। এই বাংলা রবীন্দ্রনাথ, নজরুলের বাংলা। বিজেপি চোর, আমি সব চোরদের চিনি। এদের মতো অভদ্র ও নির্লজ্জ দল আর দেখিনি। ওরা যখন বলবে, ওদের কাউকে বলতে দেওয়া হবে না, তখন আমি বলতেই থাকব।”

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে কটাক্ষ করে তিনি বলেন, “আজ রাশিয়া, চীন, আমেরিকা, ইসরায়েলের পায়ে পড়েছেন। দেশের সম্মান নষ্ট করছেন। এরা দেশ চালাবে? বিভেদের রাজনীতি, চক্রান্তের রাজনীতি করে। ইংরেজদের সঙ্গে যোগসাজশ করে বাংলা ও ভারত ভাগ করেছিল। বিদায়ের ঘণ্টা বেজে গেছে। বিজেপির চলে যাওয়ার সময় হয়ে এসেছে। আমি অনেকক্ষণ ধৈর্য ধরেছি।”

মমতার অভিযোগ, “টাকা-অস্ত্র ব্যবহার করে নির্বাচন কমিশনকে দিয়ে ভোট জেতে বিজেপি। চোরের মায়ের বড় গলা। ভয় পেয়েছে বলেই বাংলা ভাষার ওপর আক্রমণ করছে। মোদি চোর, বিজেপি চোর, অমিত শাহ চোর। চোরদের সম্রাট, লুটেরাদের দল। বাংলা ভাষাকে অপমান করছে। মানুষ ক্ষমা করবে না। এরা বাংলা জানে না, বাংলার আন্দোলন জানে না। জাতীয় সঙ্গীত বাংলাই তৈরি করেছে। স্বাধীনতা আন্দোলনের সময় এদের জন্মই হয়নি। তখন ইংরেজদের দালালি করত। বাংলার ইতিহাস এরা জানে না।”

তবে তাতে হট্টগোল থামেনি। পরে বিজেপি বিধায়ক অগ্নিমিত্রা পাল, অশোক দিন্দা ও মিহির গোস্বামীকেও সাসপেন্ড করা হয়। মিহির গোস্বামীকে পাঁজাকোল করে বাইরে নিয়ে যান মার্শালরা।

নিউজটি শেয়ার করুন

পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভায় হট্টগোল, বিজেপি বিধায়ককে টেনে বের করা হলো

আপডেট সময় : ০৫:০৭:১৪ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫

বাংলা ভাষার অবমাননা ও বাঙালিদের হেনস্তার ইস্যুতে মঙ্গলবারের পর বৃহস্পতিবার (৪ সেপ্টেম্বর) ফের উত্তপ্ত হয়ে উঠল পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা। অধিবেশনের শেষ দিনে উপস্থিত ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এসময় তীব্র হট্টগোল শুরু হলে বিজেপি বিধায়ক শঙ্কর ঘোষকে ‘সাসপেন্ড’ ঘোষণা করেন স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। পরে তাঁকে মার্শালরা টেনে-হিঁচড়ে বাইরে নিয়ে যান।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম আনন্দবাজার অনলাইনের খবরে বলা হয়, অধিবেশন শুরু হতেই বিজেপির বিধায়করা বিক্ষোভ শুরু করেন। স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় মন্তব্য করেন, “চিরকাল এদের (বিজেপি) কাজ হাউজকে অবমাননা করা।” এরপর তিনি শঙ্কর ঘোষকে শান্ত হওয়ার আহ্বান জানান। তবে বিজেপি বিধায়কেরা বিরোধীদলীয় নেতাকে সাসপেন্ডের প্রতিবাদে স্লোগান দেন। উত্তেজনা বাড়লে শঙ্কর ঘোষকে স্পিকার আবার সতর্ক করেন এবং শেষ পর্যন্ত তাঁকে সাসপেন্ড করার সিদ্ধান্ত দেন। সঙ্গে সঙ্গে মার্শাল দিয়ে তাঁকে বার করে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়।

একপর্যায়ে বিজেপি বিধায়কেরা শঙ্করকে ঘিরে ধরে স্লোগান দিতে থাকেন এবং মার্শালদের বাধা দেওয়ার চেষ্টা করেন। শেষ পর্যন্ত শঙ্কর ঘোষকে টেনে বাইরে নিয়ে যাওয়া হয়।

এ সময় মুখ্যমন্ত্রী ও তৃণমূল কংগ্রেস প্রধান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিজেপিকে তীব্র আক্রমণ করেন। তিনি বলেন, “আমি আমার সময় কেটে ওদের বলতে দিয়েছিলাম। ওরা বাংলা ভাষা নিয়ে আলোচনা চায় না। এরা গদি চোর, ভোট চোর, বাংলা বিরোধী দল, অত্যাচারী দল। বিজেপি দেশের লজ্জা। বাংলার মানুষ এদের কাউকে বিধানসভায় দেখতে চাইবে না।”

মমতা আরও বলেন, “সংসদে আমাদের এমপিদের আঘাত করা হয়েছে। এই বাংলা রবীন্দ্রনাথ, নজরুলের বাংলা। বিজেপি চোর, আমি সব চোরদের চিনি। এদের মতো অভদ্র ও নির্লজ্জ দল আর দেখিনি। ওরা যখন বলবে, ওদের কাউকে বলতে দেওয়া হবে না, তখন আমি বলতেই থাকব।”

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে কটাক্ষ করে তিনি বলেন, “আজ রাশিয়া, চীন, আমেরিকা, ইসরায়েলের পায়ে পড়েছেন। দেশের সম্মান নষ্ট করছেন। এরা দেশ চালাবে? বিভেদের রাজনীতি, চক্রান্তের রাজনীতি করে। ইংরেজদের সঙ্গে যোগসাজশ করে বাংলা ও ভারত ভাগ করেছিল। বিদায়ের ঘণ্টা বেজে গেছে। বিজেপির চলে যাওয়ার সময় হয়ে এসেছে। আমি অনেকক্ষণ ধৈর্য ধরেছি।”

মমতার অভিযোগ, “টাকা-অস্ত্র ব্যবহার করে নির্বাচন কমিশনকে দিয়ে ভোট জেতে বিজেপি। চোরের মায়ের বড় গলা। ভয় পেয়েছে বলেই বাংলা ভাষার ওপর আক্রমণ করছে। মোদি চোর, বিজেপি চোর, অমিত শাহ চোর। চোরদের সম্রাট, লুটেরাদের দল। বাংলা ভাষাকে অপমান করছে। মানুষ ক্ষমা করবে না। এরা বাংলা জানে না, বাংলার আন্দোলন জানে না। জাতীয় সঙ্গীত বাংলাই তৈরি করেছে। স্বাধীনতা আন্দোলনের সময় এদের জন্মই হয়নি। তখন ইংরেজদের দালালি করত। বাংলার ইতিহাস এরা জানে না।”

তবে তাতে হট্টগোল থামেনি। পরে বিজেপি বিধায়ক অগ্নিমিত্রা পাল, অশোক দিন্দা ও মিহির গোস্বামীকেও সাসপেন্ড করা হয়। মিহির গোস্বামীকে পাঁজাকোল করে বাইরে নিয়ে যান মার্শালরা।