ঢাকা ০৭:০২ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ০৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ২৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

নিষেধজ্ঞার মধ্যেও কর্মচারীদের বিক্ষোভ, সচিবালয়ে পুলিশের পাশাপাশি সোয়াট-বিজিবি-র‌্যাব

৫২ বাংলা
  • আপডেট সময় : ০১:৩২:১৭ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৭ মে ২০২৫
  • / 237
অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫ বাতিলের দাবিতে সচিবালয়ের কর্মচারীরা টানা চতুর্থ দিনের মতো আন্দোলনে অংশ নিচ্ছেন। মঙ্গলবার (২৭ মে ২০২৫) সকাল থেকে সচিবালয়ে কঠোর নিরাপত্তাব্যবস্থার মধ্যে কর্মসূচি পালন করতে দেখা যায় তাদের।

ঘোষিত সময় অনুযায়ী, বেলা ১১টার পর শুরু হয় বিক্ষোভ। সচিবালয়ের ভেতরে দুপুর পৌনে ১২টার দিকে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ ও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের নতুন ভবনের সামনে বিপুলসংখ্যক কর্মচারী মিছিল নিয়ে জড়ো হয়ে অবস্থান নেন।

এদিকে, কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে গোটা সচিবালয় এলাকায় গড়ে তোলা হয় কঠোর নিরাপত্তার বলয়। সকাল থেকেই সেখানে মোতায়েন ছিল পুলিশ, সোয়াট ও বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। সচিবালয়ের মূল ফটকে সোয়াট টিমের অবস্থান ছিল স্পষ্ট, সঙ্গে ছিল বিজিবির উপস্থিতিও।

প্রশাসনের নির্দেশনায় সচিবালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারী ছাড়া বাইরের কেউ সেখানে প্রবেশ করতে পারেননি। এমনকি সাংবাদিকদের প্রবেশও নিষিদ্ধ করা হয় প্রথমদিকে, যদিও দুপুরের পর সাংবাদিকদের প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হয়।

উল্লেখ্য, গত বৃহস্পতিবার উপদেষ্টা পরিষদ সরকারি চাকরি আইন সংশোধনের প্রস্তাব অনুমোদন দেয় এবং রবিবার রাতে রাষ্ট্রপতির অনুমোদনের পর এটি অধ্যাদেশ আকারে জারি হয়। এরপরই তা বাতিলের দাবিতে সচিবালয়ের বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা রবিবার সকাল থেকে আন্দোলন শুরু করেন। তারা এই অধ্যাদেশকে ‘নিবর্তনমূলক কালো আইন’ আখ্যা দিয়ে তা প্রত্যাহারের দাবি জানাচ্ছেন।

এদিকে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) নেতা হাসনাত আবদুল্লাহ সচিবালয়ের চলমান পরিস্থিতিকে ‘ক্যান্টনমেন্ট’ আখ্যা দিয়ে ‘ক্যু’ সম্পর্কে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়েছেন। ফেসবুক পোস্টে আন্দোলনকারীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, “পাঁচ আগস্ট পর্যন্ত কালো ব্যাজ ধারণ করে, হাসিনাকে সমর্থন দিয়ে অফিস করা সচিবালয়ের কর্মকর্তারা তাদের ক্যু অব্যাহত রাখলে তাদের পরিণতি পতিত হাসিনার মতো হবে। সুতরাং, সাবধান!”

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় মঙ্গলবার সচিবালয়ে দর্শনার্থীদের প্রবেশ সাময়িকভাবে বন্ধ রাখার ঘোষণা দেয়। পাশাপাশি, ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) সচিবালয় ও এর আশপাশে সভা-সমাবেশ, গণজমায়েত, মিছিল ও শোভাযাত্রা নিষিদ্ধ করে গণবিজ্ঞপ্তি জারি করে।

ডিএমপির সোমবার রাতের নির্দেশনায় বলা হয়, বাংলাদেশ সচিবালয় এবং প্রধান উপদেষ্টার সরকারি বাসভবন ‘যমুনা’ ও এর পার্শ্ববর্তী এলাকায় সকল ধরনের গণজমায়েত নিষিদ্ধ। তা সত্ত্বেও সকাল সাড়ে ১০টায় সচিবালয়ের বাদামতলায় ‘বাংলাদেশ সচিবালয় কর্মকর্তা-কর্মচারী ঐক্য ফোরাম’ সমাবেশের ডাক দেয়।

এই কর্মসূচিকে ঘিরেই সকাল থেকেই সচিবালয়ে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়। পুলিশের পাশাপাশি সোয়াট ও বিজিবিও সতর্ক অবস্থানে থাকে। আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন ও আনসার সদস্যদের পাশাপাশি অতিরিক্ত নিরাপত্তাকর্মীর উপস্থিতিও লক্ষ করা যায়। সচিবালয়ের বাইরে রাখা হয় সাঁজোয়া যান (এপিসি)।

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

নিষেধজ্ঞার মধ্যেও কর্মচারীদের বিক্ষোভ, সচিবালয়ে পুলিশের পাশাপাশি সোয়াট-বিজিবি-র‌্যাব

আপডেট সময় : ০১:৩২:১৭ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৭ মে ২০২৫

সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫ বাতিলের দাবিতে সচিবালয়ের কর্মচারীরা টানা চতুর্থ দিনের মতো আন্দোলনে অংশ নিচ্ছেন। মঙ্গলবার (২৭ মে ২০২৫) সকাল থেকে সচিবালয়ে কঠোর নিরাপত্তাব্যবস্থার মধ্যে কর্মসূচি পালন করতে দেখা যায় তাদের।

ঘোষিত সময় অনুযায়ী, বেলা ১১টার পর শুরু হয় বিক্ষোভ। সচিবালয়ের ভেতরে দুপুর পৌনে ১২টার দিকে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ ও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের নতুন ভবনের সামনে বিপুলসংখ্যক কর্মচারী মিছিল নিয়ে জড়ো হয়ে অবস্থান নেন।

এদিকে, কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে গোটা সচিবালয় এলাকায় গড়ে তোলা হয় কঠোর নিরাপত্তার বলয়। সকাল থেকেই সেখানে মোতায়েন ছিল পুলিশ, সোয়াট ও বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। সচিবালয়ের মূল ফটকে সোয়াট টিমের অবস্থান ছিল স্পষ্ট, সঙ্গে ছিল বিজিবির উপস্থিতিও।

প্রশাসনের নির্দেশনায় সচিবালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারী ছাড়া বাইরের কেউ সেখানে প্রবেশ করতে পারেননি। এমনকি সাংবাদিকদের প্রবেশও নিষিদ্ধ করা হয় প্রথমদিকে, যদিও দুপুরের পর সাংবাদিকদের প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হয়।

উল্লেখ্য, গত বৃহস্পতিবার উপদেষ্টা পরিষদ সরকারি চাকরি আইন সংশোধনের প্রস্তাব অনুমোদন দেয় এবং রবিবার রাতে রাষ্ট্রপতির অনুমোদনের পর এটি অধ্যাদেশ আকারে জারি হয়। এরপরই তা বাতিলের দাবিতে সচিবালয়ের বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা রবিবার সকাল থেকে আন্দোলন শুরু করেন। তারা এই অধ্যাদেশকে ‘নিবর্তনমূলক কালো আইন’ আখ্যা দিয়ে তা প্রত্যাহারের দাবি জানাচ্ছেন।

এদিকে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) নেতা হাসনাত আবদুল্লাহ সচিবালয়ের চলমান পরিস্থিতিকে ‘ক্যান্টনমেন্ট’ আখ্যা দিয়ে ‘ক্যু’ সম্পর্কে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়েছেন। ফেসবুক পোস্টে আন্দোলনকারীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, “পাঁচ আগস্ট পর্যন্ত কালো ব্যাজ ধারণ করে, হাসিনাকে সমর্থন দিয়ে অফিস করা সচিবালয়ের কর্মকর্তারা তাদের ক্যু অব্যাহত রাখলে তাদের পরিণতি পতিত হাসিনার মতো হবে। সুতরাং, সাবধান!”

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় মঙ্গলবার সচিবালয়ে দর্শনার্থীদের প্রবেশ সাময়িকভাবে বন্ধ রাখার ঘোষণা দেয়। পাশাপাশি, ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) সচিবালয় ও এর আশপাশে সভা-সমাবেশ, গণজমায়েত, মিছিল ও শোভাযাত্রা নিষিদ্ধ করে গণবিজ্ঞপ্তি জারি করে।

ডিএমপির সোমবার রাতের নির্দেশনায় বলা হয়, বাংলাদেশ সচিবালয় এবং প্রধান উপদেষ্টার সরকারি বাসভবন ‘যমুনা’ ও এর পার্শ্ববর্তী এলাকায় সকল ধরনের গণজমায়েত নিষিদ্ধ। তা সত্ত্বেও সকাল সাড়ে ১০টায় সচিবালয়ের বাদামতলায় ‘বাংলাদেশ সচিবালয় কর্মকর্তা-কর্মচারী ঐক্য ফোরাম’ সমাবেশের ডাক দেয়।

এই কর্মসূচিকে ঘিরেই সকাল থেকেই সচিবালয়ে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়। পুলিশের পাশাপাশি সোয়াট ও বিজিবিও সতর্ক অবস্থানে থাকে। আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন ও আনসার সদস্যদের পাশাপাশি অতিরিক্ত নিরাপত্তাকর্মীর উপস্থিতিও লক্ষ করা যায়। সচিবালয়ের বাইরে রাখা হয় সাঁজোয়া যান (এপিসি)।