ঢাকা ১০:১০ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ০৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ২১ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশে আরও ৩০ দেশের নাগরিকের ওপর নিষেধাজ্ঞা খাঁচা থেকে বের হওয়া সিংহী আড়াই ঘণ্টা পর নিয়ন্ত্রণে লন্ডনে ফ্লাই রবিবার, নির্জন কারাবাস থেকেই খালেদা জিয়ার ‘নানা রোগের সূচনা’ জানালেন ফখরুল মহাকাশ থেকে পবিত্র  কাবা শরিফের উজ্জ্বল ছবি আন্দোলনে থাকা প্রাথমিকের শিক্ষকদের বদলি, ‘শাটডাউন’ কর্মসূচি স্থগিত তারেক রহমানের দেশে ফেরা আবার অনিশ্চিত, কীভাবে ভোটার হবেন? খালেদা জিয়া ছাড়া পরিবারের কেউ ভিভিআইপি সুবিধা পাবেন না কুকুরছানা হত্যা মামলায় মায়ের সঙ্গে কারাগারে ২ বছরের শিশু খালেদা জিয়াকে লন্ডন নিতে ঢাকায় আসছেন জুবাইদা যুক্তরাজ্যের ৯ বিশ্ববিদ্যালয়ে নিষিদ্ধ বাংলাদেশি শিক্ষার্থী!

নির্বাচনে প্রার্থী হচ্ছেন জহির রায়হান–সুচন্দার ছেলে তপু রায়হান

৫২ বাংলা
  • আপডেট সময় : ১০:১১:০৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ৯ নভেম্বর ২০২৫
  • / 137

ঢাকা-১৭ আসন থেকে নির্বাচন করার ঘোষণা দেন সুচন্দার ছেলে তপু রায়হান

অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন কিংবদন্তি চলচ্চিত্র নির্মাতা শহীদ জহির রায়হান এবং অভিনেত্রী সুচন্দার ছেলে তপু রায়হান। শুক্রবার (৯ নভেম্বর) রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ ঘোষণা দেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন তার মা, জনপ্রিয় অভিনেত্রী কোহিনূর আক্তার সুচন্দা।

ছেলের সিদ্ধান্তে সন্তোষ জানিয়ে সুচন্দা বলেন, “জয়–পরাজয় থাকবেই। আমার ছেলে যেন মানুষের জন্য, দেশের জন্য, সবার জন্য কাজ করে—এটাই আমার চাওয়া। পরিবারের সবাই খুব খুশি। হয়তো আজ ওর বাবা (জহির রায়হান) বেঁচে থাকলে তিনিও খুব আনন্দিত হতেন। আমার ছেলে বলে বলছি না, তপুর মধ্যে মানুষের প্রতি গভীর ভালোবাসা আছে।”

জহির রায়হান নিখোঁজ হওয়ার পর কঠিন সময় পার করার স্মৃতি তুলে ধরে সুচন্দা বলেন, “এমনও দিন গেছে, সন্তানদের নিয়ে গাছের পাতা খেয়েছি। কারণ, তখন প্রায় সময়ই খাবার জুটত না। তারপরও হাল ছাড়িনি। সন্তানদের মানুষ করেছি। আমার বিশ্বাস ছিল, তারা তাদের বাবার মতোই মানবিক ও দেশপ্রেমিক হবে। রাজনীতি না করলেও রাজনৈতিক আদর্শ লালন করবে। আজ সেই বিশ্বাস সত্যি হয়েছে।”

স্বাধীনতার সময়কার স্মৃতি টেনে তিনি আরও বলেন, “দেশ স্বাধীন করতে যখন মাঠে নেমেছিলাম, তখন পায়ে জুতা ছিল কি না, তা খেয়াল করিনি। আমাদের লক্ষ্য ছিল একটি স্বাধীন ও সমৃদ্ধ দেশ গড়া। তখন সংসদ কী, তা বুঝতাম না।”

স্বামীকে স্মরণ করে সুচন্দা বলেন, “জহির রায়হান রাজনীতি করতেন না, তবে রাজনীতি লালন করতেন সবসময়। তার লেখনী ও চলচ্চিত্রে দেশ ও মানুষের কথা থাকত। তিনি নিপীড়িত ও বঞ্চিত মানুষের পক্ষে কাজ করতেন।”

সন্তানের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “আমাদের ছোট ছেলে তপু রায়হান বাবাকে দেখেনি। কিন্তু তার মধ্যে জহির রায়হানের প্রতিচ্ছবি দেখি। সুযোগ পেলেই মানুষের কল্যাণে ছুটে যায়। তাই ঢাকা-১৭ আসনে তার প্রার্থী হওয়ার সিদ্ধান্তে আমি খুশি হয়েছি। হার–জিত থাকবেই, তবে আমি বিশ্বাস করি, মানুষ তার পাশে থাকবে।”

গুলশান, বনানী, নিকেতন, মহাখালী, বারিধারা, শাহজাদপুর এবং ঢাকা সেনানিবাসের একাংশ নিয়ে গঠিত ঢাকা-১৭ আসন থেকে নির্বাচনে অংশ নেবেন তপু রায়হান।

সংবাদ সম্মেলনে সুচন্দা জানান, তিনি এই এলাকার সমস্যাগুলো সম্পর্কে অবগত। বলেন, “গুলশান, বনানী, ক্যান্টনমেন্ট, শাহজাদপুর, ভাসানটেক ও মহাখালী এলাকার উন্নয়ন নিয়ে আমি দীর্ঘদিন কাজ করেছি। বিশেষ করে নিম্ন আয়ের মানুষের সমস্যা চিহ্নিত করে সমাধানের পথ তৈরি করা গেলে তা সারাদেশের জন্য একটি কার্যকর মডেল হতে পারে।”

তপু রায়হান জানান, তিনি কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত নন, স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে লড়বেন। নিজের ঘোষিত নির্বাচনী ইশতেহারকে তিনি ‘ঐকমত্যের ইশতেহার’ হিসেবে উল্লেখ করেন।

তিনি বলেন, “আমি কোনো প্রথাগত রাজনীতি করতে আসিনি, বরং সহযোগিতার রাজনীতি চালু করতে চাই। আমার বাবা জহির রায়হান রাজনৈতিক সচেতন হলেও কোনো দলের সক্রিয় সদস্য ছিলেন না। তার মানবতাবাদী সমাজ প্রতিষ্ঠার স্বপ্নকেই আমি ধারণ করেছি। বিশ্বাস করি, সংসদীয় গণতন্ত্রের মধ্যেই মানবকল্যাণমুখী রাজনীতি সম্ভব।”

নিউজটি শেয়ার করুন

নির্বাচনে প্রার্থী হচ্ছেন জহির রায়হান–সুচন্দার ছেলে তপু রায়হান

আপডেট সময় : ১০:১১:০৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ৯ নভেম্বর ২০২৫

আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন কিংবদন্তি চলচ্চিত্র নির্মাতা শহীদ জহির রায়হান এবং অভিনেত্রী সুচন্দার ছেলে তপু রায়হান। শুক্রবার (৯ নভেম্বর) রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ ঘোষণা দেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন তার মা, জনপ্রিয় অভিনেত্রী কোহিনূর আক্তার সুচন্দা।

ছেলের সিদ্ধান্তে সন্তোষ জানিয়ে সুচন্দা বলেন, “জয়–পরাজয় থাকবেই। আমার ছেলে যেন মানুষের জন্য, দেশের জন্য, সবার জন্য কাজ করে—এটাই আমার চাওয়া। পরিবারের সবাই খুব খুশি। হয়তো আজ ওর বাবা (জহির রায়হান) বেঁচে থাকলে তিনিও খুব আনন্দিত হতেন। আমার ছেলে বলে বলছি না, তপুর মধ্যে মানুষের প্রতি গভীর ভালোবাসা আছে।”

জহির রায়হান নিখোঁজ হওয়ার পর কঠিন সময় পার করার স্মৃতি তুলে ধরে সুচন্দা বলেন, “এমনও দিন গেছে, সন্তানদের নিয়ে গাছের পাতা খেয়েছি। কারণ, তখন প্রায় সময়ই খাবার জুটত না। তারপরও হাল ছাড়িনি। সন্তানদের মানুষ করেছি। আমার বিশ্বাস ছিল, তারা তাদের বাবার মতোই মানবিক ও দেশপ্রেমিক হবে। রাজনীতি না করলেও রাজনৈতিক আদর্শ লালন করবে। আজ সেই বিশ্বাস সত্যি হয়েছে।”

স্বাধীনতার সময়কার স্মৃতি টেনে তিনি আরও বলেন, “দেশ স্বাধীন করতে যখন মাঠে নেমেছিলাম, তখন পায়ে জুতা ছিল কি না, তা খেয়াল করিনি। আমাদের লক্ষ্য ছিল একটি স্বাধীন ও সমৃদ্ধ দেশ গড়া। তখন সংসদ কী, তা বুঝতাম না।”

স্বামীকে স্মরণ করে সুচন্দা বলেন, “জহির রায়হান রাজনীতি করতেন না, তবে রাজনীতি লালন করতেন সবসময়। তার লেখনী ও চলচ্চিত্রে দেশ ও মানুষের কথা থাকত। তিনি নিপীড়িত ও বঞ্চিত মানুষের পক্ষে কাজ করতেন।”

সন্তানের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “আমাদের ছোট ছেলে তপু রায়হান বাবাকে দেখেনি। কিন্তু তার মধ্যে জহির রায়হানের প্রতিচ্ছবি দেখি। সুযোগ পেলেই মানুষের কল্যাণে ছুটে যায়। তাই ঢাকা-১৭ আসনে তার প্রার্থী হওয়ার সিদ্ধান্তে আমি খুশি হয়েছি। হার–জিত থাকবেই, তবে আমি বিশ্বাস করি, মানুষ তার পাশে থাকবে।”

গুলশান, বনানী, নিকেতন, মহাখালী, বারিধারা, শাহজাদপুর এবং ঢাকা সেনানিবাসের একাংশ নিয়ে গঠিত ঢাকা-১৭ আসন থেকে নির্বাচনে অংশ নেবেন তপু রায়হান।

সংবাদ সম্মেলনে সুচন্দা জানান, তিনি এই এলাকার সমস্যাগুলো সম্পর্কে অবগত। বলেন, “গুলশান, বনানী, ক্যান্টনমেন্ট, শাহজাদপুর, ভাসানটেক ও মহাখালী এলাকার উন্নয়ন নিয়ে আমি দীর্ঘদিন কাজ করেছি। বিশেষ করে নিম্ন আয়ের মানুষের সমস্যা চিহ্নিত করে সমাধানের পথ তৈরি করা গেলে তা সারাদেশের জন্য একটি কার্যকর মডেল হতে পারে।”

তপু রায়হান জানান, তিনি কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত নন, স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে লড়বেন। নিজের ঘোষিত নির্বাচনী ইশতেহারকে তিনি ‘ঐকমত্যের ইশতেহার’ হিসেবে উল্লেখ করেন।

তিনি বলেন, “আমি কোনো প্রথাগত রাজনীতি করতে আসিনি, বরং সহযোগিতার রাজনীতি চালু করতে চাই। আমার বাবা জহির রায়হান রাজনৈতিক সচেতন হলেও কোনো দলের সক্রিয় সদস্য ছিলেন না। তার মানবতাবাদী সমাজ প্রতিষ্ঠার স্বপ্নকেই আমি ধারণ করেছি। বিশ্বাস করি, সংসদীয় গণতন্ত্রের মধ্যেই মানবকল্যাণমুখী রাজনীতি সম্ভব।”