ঢাকা ১১:৫৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ০৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ২১ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশে আরও ৩০ দেশের নাগরিকের ওপর নিষেধাজ্ঞা খাঁচা থেকে বের হওয়া সিংহী আড়াই ঘণ্টা পর নিয়ন্ত্রণে লন্ডনে ফ্লাই রবিবার, নির্জন কারাবাস থেকেই খালেদা জিয়ার ‘নানা রোগের সূচনা’ জানালেন ফখরুল মহাকাশ থেকে পবিত্র  কাবা শরিফের উজ্জ্বল ছবি আন্দোলনে থাকা প্রাথমিকের শিক্ষকদের বদলি, ‘শাটডাউন’ কর্মসূচি স্থগিত তারেক রহমানের দেশে ফেরা আবার অনিশ্চিত, কীভাবে ভোটার হবেন? খালেদা জিয়া ছাড়া পরিবারের কেউ ভিভিআইপি সুবিধা পাবেন না কুকুরছানা হত্যা মামলায় মায়ের সঙ্গে কারাগারে ২ বছরের শিশু খালেদা জিয়াকে লন্ডন নিতে ঢাকায় আসছেন জুবাইদা যুক্তরাজ্যের ৯ বিশ্ববিদ্যালয়ে নিষিদ্ধ বাংলাদেশি শিক্ষার্থী!

নিচতলায় আগুন, ছাদের গেটে তালা—ফাঁদে পড়ে ১৬ জনের মৃত্যু, স্বজনদের খোঁজে উদ্বেগাকুল মানুষ

৫২ বাংলা
  • আপডেট সময় : ০৯:৪১:২৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৪ অক্টোবর ২০২৫
  • / 68

স্বজনদের খোঁজ পেতে উদ্বেগাকুল মানুষ

অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

রাজধানীর মিরপুরের শিয়ালবাড়িতে পোশাক কারখানা ও কসমিক ফার্মা নামের একটি কেমিক্যাল গুদামে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে ১৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। নিহত সবার মরদেহ পোশাক কারখানার ভবনের দ্বিতীয় ও তৃতীয় তলা থেকে উদ্ধার করা হয়। ভবনের নিচতলায় আগুনের তীব্রতা এবং ছাদে ওঠার দরজা দুটি তালাবদ্ধ থাকায় অনেকে বের হতে পারেননি। ফলে দ্বিতীয় ও তৃতীয় তলায় আটকে আগুনে পুড়ে মারা যান তারা।

মঙ্গলবার (১৪ অক্টোবর) রাতে অগ্নিনিয়ন্ত্রণ ও উদ্ধার কার্যক্রম নিয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের পরিচালক (অপারেশন অ্যান্ড মেইনটেন্যান্স) লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম চৌধুরী।

তাজুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, “অগ্নিকাণ্ডে পোশাক কারখানা থেকে মোট ১৬টি মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। একজন স্বেচ্ছাসেবক আহত হয়েছেন। তবে ফায়ার সার্ভিসের কেউ আহত হননি।”

তিনি আরও বলেন, “মরদেহগুলো একে একে অ্যাম্বুলেন্সে করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হচ্ছে। মরদেহগুলোর এমন অবস্থা যে, ডিএনএ টেস্ট ছাড়া শনাক্ত করা সম্ভব নয়। চেহারা দেখে বা অন্যভাবে শনাক্ত করা যাচ্ছে না।”

ফায়ার সার্ভিসের এই কর্মকর্তা জানান, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, অগ্নিকাণ্ডের সময় বিস্ফোরণের ফলে যে সাদা ধোঁয়া বা টক্সিক গ্যাস তৈরি হয়, সেটি অত্যন্ত বিষাক্ত ছিল। আগুন লাগার শুরুতেই ফ্ল্যাশওভার হয় এবং আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। “এই বিষাক্ত গ্যাসে অনেকে হয়তো মুহূর্তেই সেন্সলেস হয়ে পড়েন, পরে আর বের হতে পারেননি,” বলেন তাজুল ইসলাম।

তিনি আরও বলেন, “মরদেহগুলো ভবনের দ্বিতীয় ও তৃতীয় তলার বিভিন্ন কোণে পাওয়া গেছে। তারা নিচে নামতে পারেননি, আর ছাদে যাওয়ার যে গ্রিলের দরজা ছিল, সেটি দুইটি তালা দিয়ে বন্ধ ছিল। ফলে তারা দুই ও তিন তলায় আটকে মারা যান।”

আগুন নিয়ন্ত্রণে ফায়ার সার্ভিসের ১২টি ইউনিট অংশ নেয়। পোশাক কারখানার আগুন সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে এলেও কেমিক্যাল গুদামের আগুন তখনও জ্বলছিল। “অগ্নিনির্বাপণের কাজ সম্পন্ন হয়নি। গুদামটি এখনো নিরাপদ নয়। সেখানে আগুনের শিখা ও ধোঁয়া দেখা যাচ্ছে। আগুন সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে আনতে আরও সময় লাগবে,” জানান তাজুল ইসলাম।

তিনি বলেন, “যতটুকু জানা গেছে, কেমিক্যাল গুদামে ছয় থেকে সাত ধরনের রাসায়নিক ছিল। আগুন নেভাতে পাউডার, পানি, এনজাইম ও হাইড্রোজেন পারঅক্সাইড ব্যবহার করা হচ্ছে।”

কেমিক্যাল গুদাম ও পোশাক কারখানায় কোনো অগ্নিনিরাপত্তা ব্যবস্থা ছিল না উল্লেখ করে তিনি বলেন, “এখানে কোনো ফায়ার সেফটি প্ল্যান ছিল না, এমনকি কোনো লাইসেন্সও ছিল না। স্থানীয়দের জিজ্ঞাসা করেও পোশাক কারখানার নাম জানা যায়নি।”

এর আগে মঙ্গলবার বেলা ১১টা ৪০ মিনিটে ফায়ার সার্ভিসে আগুনের খবর আসে। প্রথম ইউনিট ১১টা ৫৬ মিনিটে ঘটনাস্থলে পৌঁছে। শুরুতে পাঁচটি ইউনিট আগুন নেভানোর চেষ্টা চালায়, পরে আরও সাতটি ইউনিট যুক্ত হয়।

স্বজনদের খোঁজে উৎকণ্ঠিত মানুষ

মঙ্গলবার সকাল তখন সাড়ে ১১টা। দিনের কর্মচাঞ্চল্য তখন পুরোদমে চলছে। হঠাৎই তা থেমে যায় ভয়াবহ এক আগুনে। রাজধানীর রূপনগরের শিয়ালবাড়িতে কসমিক ফার্মা নামে একটি কেমিক্যাল গুদাম ও একটি গার্মেন্টস কারখানায় আগুন লাগে। এখন পর্যন্ত ১৬ জনের মৃত্যু ও আটজন দগ্ধ হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। তবে নিখোঁজের সংখ্যা নিশ্চিত নয়। প্রিয়জনের কোনো খোঁজ না পেয়ে পরিবারের সদস্যরা অপেক্ষায়— কেউ হাতে ছবি নিয়ে, কেউ চোখে অশ্রু নিয়ে প্রহর গুনছেন।

মঙ্গলবার (১৪ অক্টোবর) সন্ধ্যায় ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, স্বজনরা উদ্বেগে দিশেহারা।

ছেলের শালিকা আসমা আক্তারকে খুঁজতে ছবি হাতে দাঁড়িয়ে ছিলেন রেশমা আক্তার। তিনি বলেন, “সকালে আগুন লাগার পর থেকেই ওর কোনো খোঁজ পাচ্ছি না। আমার ছেলে ঢাকা মেডিক্যালে গিয়েছে খোঁজ নিতে, কিন্তু এখনো ওকে (আসমা) পাইনি।”

রেশমা জানান, আসমার বাড়ি ময়মনসিংহের নেত্রকোনায়; ঢাকায় তিনি খালার বাসায় থাকতেন।

মেয়ে ফারজানা আক্তার (১৫)-এর খোঁজে পুড়ে যাওয়া গার্মেন্টস কারখানার সামনে এসে দাঁড়িয়েছেন বাবা রতন। ফারজানা ওই গার্মেন্টসে কাজ করতেন। তিনি বলেন, “আগুনের খবর শুনে মেয়ের খোঁজে এসেছি। এখনো কোনো হদিস পাইনি। কেউ কিছু জানাচ্ছে না। বলা হয়েছে, যারা মারা গেছেন, তাদের ঢাকা মেডিক্যালে পাঠানো হয়েছে। শুধু মেয়েকে ফিরে পেতে চাই।”

শফিকুল ইসলাম তাঁর ভাগ্নি মাহিরা (১৪)-এর ছবি হাতে নিয়ে চারপাশে খুঁজছেন। কান্নাভেজা কণ্ঠে তিনি বলেন, “আমার ভাগ্নি গার্মেন্টসের তিন তলায় কাজ করত। আগুন লাগার পর থেকেই খুঁজছি, হাসপাতালেও গেছি, কিন্তু পাইনি। ফায়ার সার্ভিস বলেছে ধৈর্য ধরতে।”

নিখোঁজ নারগিস আক্তারের বড় বোন লাইজু বেগম বলেন, “আমার বোন সকাল আনুমানিক ৮টার দিকে কাজে গিয়েছিল। সকাল ১১টার দিকে খবর পাই আগুন লেগেছে। সেখানকার একজনের সঙ্গে ফোনে কথা বলে জানতে পারি— কেউ ভেতর থেকে বের হতে পারেনি। তারপর থেকে আর কোনো খোঁজ নেই— আমার বোন কোথায় আছে জানি না।”

প্রত্যক্ষদর্শী বিইউবিটির শিক্ষার্থী আবু জাফর মোহাম্মদ নোমান বলেন, “আমি ইউনিভার্সিটিতে যাওয়ার সময় আগুন দেখি। তখন থেকেই এখানে আছি। আগুন লাগার পর কেমিক্যাল গুদামে বিস্ফোরণ হয়, তারপর পাশের গার্মেন্টসেও আগুন ধরে যায়। আগুন লাগার ২০ মিনিটের মধ্যে ফায়ার সার্ভিস আসে এবং আগুন নেভানোর চেষ্টা শুরু করে।”

নিউজটি শেয়ার করুন

নিচতলায় আগুন, ছাদের গেটে তালা—ফাঁদে পড়ে ১৬ জনের মৃত্যু, স্বজনদের খোঁজে উদ্বেগাকুল মানুষ

আপডেট সময় : ০৯:৪১:২৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৪ অক্টোবর ২০২৫

রাজধানীর মিরপুরের শিয়ালবাড়িতে পোশাক কারখানা ও কসমিক ফার্মা নামের একটি কেমিক্যাল গুদামে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে ১৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। নিহত সবার মরদেহ পোশাক কারখানার ভবনের দ্বিতীয় ও তৃতীয় তলা থেকে উদ্ধার করা হয়। ভবনের নিচতলায় আগুনের তীব্রতা এবং ছাদে ওঠার দরজা দুটি তালাবদ্ধ থাকায় অনেকে বের হতে পারেননি। ফলে দ্বিতীয় ও তৃতীয় তলায় আটকে আগুনে পুড়ে মারা যান তারা।

মঙ্গলবার (১৪ অক্টোবর) রাতে অগ্নিনিয়ন্ত্রণ ও উদ্ধার কার্যক্রম নিয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের পরিচালক (অপারেশন অ্যান্ড মেইনটেন্যান্স) লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম চৌধুরী।

তাজুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, “অগ্নিকাণ্ডে পোশাক কারখানা থেকে মোট ১৬টি মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। একজন স্বেচ্ছাসেবক আহত হয়েছেন। তবে ফায়ার সার্ভিসের কেউ আহত হননি।”

তিনি আরও বলেন, “মরদেহগুলো একে একে অ্যাম্বুলেন্সে করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হচ্ছে। মরদেহগুলোর এমন অবস্থা যে, ডিএনএ টেস্ট ছাড়া শনাক্ত করা সম্ভব নয়। চেহারা দেখে বা অন্যভাবে শনাক্ত করা যাচ্ছে না।”

ফায়ার সার্ভিসের এই কর্মকর্তা জানান, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, অগ্নিকাণ্ডের সময় বিস্ফোরণের ফলে যে সাদা ধোঁয়া বা টক্সিক গ্যাস তৈরি হয়, সেটি অত্যন্ত বিষাক্ত ছিল। আগুন লাগার শুরুতেই ফ্ল্যাশওভার হয় এবং আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। “এই বিষাক্ত গ্যাসে অনেকে হয়তো মুহূর্তেই সেন্সলেস হয়ে পড়েন, পরে আর বের হতে পারেননি,” বলেন তাজুল ইসলাম।

তিনি আরও বলেন, “মরদেহগুলো ভবনের দ্বিতীয় ও তৃতীয় তলার বিভিন্ন কোণে পাওয়া গেছে। তারা নিচে নামতে পারেননি, আর ছাদে যাওয়ার যে গ্রিলের দরজা ছিল, সেটি দুইটি তালা দিয়ে বন্ধ ছিল। ফলে তারা দুই ও তিন তলায় আটকে মারা যান।”

আগুন নিয়ন্ত্রণে ফায়ার সার্ভিসের ১২টি ইউনিট অংশ নেয়। পোশাক কারখানার আগুন সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে এলেও কেমিক্যাল গুদামের আগুন তখনও জ্বলছিল। “অগ্নিনির্বাপণের কাজ সম্পন্ন হয়নি। গুদামটি এখনো নিরাপদ নয়। সেখানে আগুনের শিখা ও ধোঁয়া দেখা যাচ্ছে। আগুন সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে আনতে আরও সময় লাগবে,” জানান তাজুল ইসলাম।

তিনি বলেন, “যতটুকু জানা গেছে, কেমিক্যাল গুদামে ছয় থেকে সাত ধরনের রাসায়নিক ছিল। আগুন নেভাতে পাউডার, পানি, এনজাইম ও হাইড্রোজেন পারঅক্সাইড ব্যবহার করা হচ্ছে।”

কেমিক্যাল গুদাম ও পোশাক কারখানায় কোনো অগ্নিনিরাপত্তা ব্যবস্থা ছিল না উল্লেখ করে তিনি বলেন, “এখানে কোনো ফায়ার সেফটি প্ল্যান ছিল না, এমনকি কোনো লাইসেন্সও ছিল না। স্থানীয়দের জিজ্ঞাসা করেও পোশাক কারখানার নাম জানা যায়নি।”

এর আগে মঙ্গলবার বেলা ১১টা ৪০ মিনিটে ফায়ার সার্ভিসে আগুনের খবর আসে। প্রথম ইউনিট ১১টা ৫৬ মিনিটে ঘটনাস্থলে পৌঁছে। শুরুতে পাঁচটি ইউনিট আগুন নেভানোর চেষ্টা চালায়, পরে আরও সাতটি ইউনিট যুক্ত হয়।

স্বজনদের খোঁজে উৎকণ্ঠিত মানুষ

মঙ্গলবার সকাল তখন সাড়ে ১১টা। দিনের কর্মচাঞ্চল্য তখন পুরোদমে চলছে। হঠাৎই তা থেমে যায় ভয়াবহ এক আগুনে। রাজধানীর রূপনগরের শিয়ালবাড়িতে কসমিক ফার্মা নামে একটি কেমিক্যাল গুদাম ও একটি গার্মেন্টস কারখানায় আগুন লাগে। এখন পর্যন্ত ১৬ জনের মৃত্যু ও আটজন দগ্ধ হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। তবে নিখোঁজের সংখ্যা নিশ্চিত নয়। প্রিয়জনের কোনো খোঁজ না পেয়ে পরিবারের সদস্যরা অপেক্ষায়— কেউ হাতে ছবি নিয়ে, কেউ চোখে অশ্রু নিয়ে প্রহর গুনছেন।

মঙ্গলবার (১৪ অক্টোবর) সন্ধ্যায় ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, স্বজনরা উদ্বেগে দিশেহারা।

ছেলের শালিকা আসমা আক্তারকে খুঁজতে ছবি হাতে দাঁড়িয়ে ছিলেন রেশমা আক্তার। তিনি বলেন, “সকালে আগুন লাগার পর থেকেই ওর কোনো খোঁজ পাচ্ছি না। আমার ছেলে ঢাকা মেডিক্যালে গিয়েছে খোঁজ নিতে, কিন্তু এখনো ওকে (আসমা) পাইনি।”

রেশমা জানান, আসমার বাড়ি ময়মনসিংহের নেত্রকোনায়; ঢাকায় তিনি খালার বাসায় থাকতেন।

মেয়ে ফারজানা আক্তার (১৫)-এর খোঁজে পুড়ে যাওয়া গার্মেন্টস কারখানার সামনে এসে দাঁড়িয়েছেন বাবা রতন। ফারজানা ওই গার্মেন্টসে কাজ করতেন। তিনি বলেন, “আগুনের খবর শুনে মেয়ের খোঁজে এসেছি। এখনো কোনো হদিস পাইনি। কেউ কিছু জানাচ্ছে না। বলা হয়েছে, যারা মারা গেছেন, তাদের ঢাকা মেডিক্যালে পাঠানো হয়েছে। শুধু মেয়েকে ফিরে পেতে চাই।”

শফিকুল ইসলাম তাঁর ভাগ্নি মাহিরা (১৪)-এর ছবি হাতে নিয়ে চারপাশে খুঁজছেন। কান্নাভেজা কণ্ঠে তিনি বলেন, “আমার ভাগ্নি গার্মেন্টসের তিন তলায় কাজ করত। আগুন লাগার পর থেকেই খুঁজছি, হাসপাতালেও গেছি, কিন্তু পাইনি। ফায়ার সার্ভিস বলেছে ধৈর্য ধরতে।”

নিখোঁজ নারগিস আক্তারের বড় বোন লাইজু বেগম বলেন, “আমার বোন সকাল আনুমানিক ৮টার দিকে কাজে গিয়েছিল। সকাল ১১টার দিকে খবর পাই আগুন লেগেছে। সেখানকার একজনের সঙ্গে ফোনে কথা বলে জানতে পারি— কেউ ভেতর থেকে বের হতে পারেনি। তারপর থেকে আর কোনো খোঁজ নেই— আমার বোন কোথায় আছে জানি না।”

প্রত্যক্ষদর্শী বিইউবিটির শিক্ষার্থী আবু জাফর মোহাম্মদ নোমান বলেন, “আমি ইউনিভার্সিটিতে যাওয়ার সময় আগুন দেখি। তখন থেকেই এখানে আছি। আগুন লাগার পর কেমিক্যাল গুদামে বিস্ফোরণ হয়, তারপর পাশের গার্মেন্টসেও আগুন ধরে যায়। আগুন লাগার ২০ মিনিটের মধ্যে ফায়ার সার্ভিস আসে এবং আগুন নেভানোর চেষ্টা শুরু করে।”