ঢাকা ১২:১৮ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ০৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ২২ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
খালেদা জিয়া ‘বিমান ভ্রমণে সক্ষম নন’, মত মেডিকেল বোর্ডের শেখ হাসিনাই সিদ্ধান্ত নেবেন ভারতে কতদিন থাকবেন, জানালেন জয়শঙ্কর আরও পেছাল খালেদা জিয়ার লন্ডনযাত্রা ইসলামে পারিবারিক নির্যাতনের কোনো স্থান নেই-শায়খ আব্দুল কাইয়ুম লিবিয়া থেকে ৩১০ বাংলাদেশি দেশে ফিরলেন যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশে আরও ৩০ দেশের নাগরিকের ওপর নিষেধাজ্ঞা খাঁচা থেকে বের হওয়া সিংহী আড়াই ঘণ্টা পর নিয়ন্ত্রণে লন্ডনে ফ্লাই রবিবার, নির্জন কারাবাস থেকেই খালেদা জিয়ার ‘নানা রোগের সূচনা’ জানালেন ফখরুল মহাকাশ থেকে পবিত্র  কাবা শরিফের উজ্জ্বল ছবি আন্দোলনে থাকা প্রাথমিকের শিক্ষকদের বদলি, ‘শাটডাউন’ কর্মসূচি স্থগিত

দেশে ২ জনকে গ্রেপ্তারের পর লিবিয়ায় জিম্মি দুই বাংলাদেশি মুক্ত

৫২ বাংলা
  • আপডেট সময় : ১১:২৯:১৪ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১০ জুলাই ২০২৫
  • / 193
অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

লিবিয়ার রাজধানী ত্রিপোলি থেকে অপহরণের পর ৪২ দিন জিম্মি থাকা দুই বাংলাদেশিকে উদ্ধার করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। তারা হলেন, আলমগীর হোসেন (৪৫) ও সিরাজ উদ্দিন (৩৫)।

বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে পিবিআই ঢাকা মেট্রো উত্তরের কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানানো হয়। এর আগে গত ৮ জানুয়ারি লিবিয়ার জমাজৈতন এলাকার একটি ওয়ার্কশপ থেকে তাদের অপহরণ করে একটি চক্র। অপহরণকারীরা পরিবারকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভয়াবহ শারীরিক নির্যাতনের ভিডিও পাঠিয়ে জনপ্রতি ২২ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে।

পিবিআই’র অতিরিক্ত ডিআইজি মো. এনায়েত হোসেন মান্নান জানান, ভিকটিম সিরাজ উদ্দিনের পরিবার দেড় লাখ টাকা পাঠালেও তাদের মুক্তি দেওয়া হয়নি। পরবর্তী সময়ে দুই জিম্মির মুক্তির জন্য দুই লাখ করে আরও ৪ লাখ টাকা দেওয়া হয়। তাতেও অত্যাচার কমেনি তাদের ওপর। এরপর আলমগীর হোসেনের ভাই বাদী হয়ে ২৯ জানুয়ারি রাজধানীর আদাবর থানায় একটি মামলা করেন। মামলাটি গুরুত্ব সহকারে তদন্ত শুরু করে পিবিআই ঢাকা মেট্রো (উত্তর)।

এনায়েত হোসেন জানান, তদন্তের প্রথমে রাজশাহী থেকে মো. রাসেল হক (২৫) ও পরে বাগেরহাট থেকে মো. মিন্টু ফরাজীকে (৩৯) গ্রেফতার করা হয়। তাদের কাছ থেকে মুক্তিপণের লেনদেন সংক্রান্ত মোবাইল, ব্যাংক স্লিপ, অডিও-ভিডিও প্রমাণাদি উদ্ধার করা হয়। পরবর্তী সময়ে গত ১৮ ফেব্রুয়ারি অপহরণকারীরা ভিকটিমদের লিবিয়ার জিলজিয়া হাসপাতাল এলাকায় ফেলে রেখে যায়। ভিকটিমরা পরে ইন্টারন্যাশনাল অরগানাইজেশন ফর মাইগ্রেশন ও ব্র্যাক মাইগ্রেশনের সহায়তায় বাংলাদেশ দূতাবাসের হেফাজতে আসেন। এরপর গত ৯ জুলাই হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছালে পিবিআই আলমগীর হোসেনকে হেফাজতে নেয়। অপর ভিকটিম সিরাজ উদ্দিনের দেশে ফেরত আনার প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে বলে জানানো হয়।

সংবাদ সম্মেলনে ভুক্তভোগী আলমগীর জানান, তিনি ২০২২ সালের অক্টোবরে লিবিয়াতে গিয়েছিলেন। প্রথমে চাকরি করলেও নিজেই ওয়ার্কশপের দোকান দেন। যেখান থেকে চলতি বছরের ৮ জানুয়ারি সহকর্মী সিরাজকেসহ তাকে অপহরণ করে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে টানা নির্যাতনের পর ১৯ ফেব্রুয়ারি তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়।

তিনি জানান, অপহরণের দিন সকাল বেলা দোকান খোলার সময় মিলিশিয়ার কয়েকজন লোকজন তাদের দুজনকে গাড়িতে উঠিয়ে চোখ বেঁধে নিয়ে যায়। এসময় তাদের পাসপোর্টও নিয়ে নেওয়া হয়। একটা বাগানে নিয়া যায়, এরপর চোখ খুলে দেয়। প্রথমে ইতালিতে লোক পাঠাস বলে অনেকক্ষণ টর্চার করে চলে যায়। পরেরদিন আবার এসে মারে। এরপরদিন বাংলা মাফিয়ার কাছে বিক্রি করে দেয় চক্রটি। এরপর তাদের একটি ক্যাম্পে নিয়ে টানা নির্যাতন শুরু করে।

আলামগীর বলেন, প্রতিদিন তিনবার করে মারধর করতো। ভোর রাতে উঠায়ে বাড়িতে কল দিতে বলতো টাকা দিতে। ফ্যামিলি টাকা ম্যানেজ করতে পারে না, আর আমাদের নির্যাতন করতো। যেখানে তাদের আটকে রেখে নির্যাতন করা হতো সেখানে সবাই বাংলাদেশি।

তাদের সঙ্গে আরও সাতজন বাংলাদেশিকে আটকে রেখে নির্যাতন করতে দেখেছেন বলেও জানান ভুক্তভোগী আলমগীর।

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

দেশে ২ জনকে গ্রেপ্তারের পর লিবিয়ায় জিম্মি দুই বাংলাদেশি মুক্ত

আপডেট সময় : ১১:২৯:১৪ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১০ জুলাই ২০২৫

লিবিয়ার রাজধানী ত্রিপোলি থেকে অপহরণের পর ৪২ দিন জিম্মি থাকা দুই বাংলাদেশিকে উদ্ধার করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। তারা হলেন, আলমগীর হোসেন (৪৫) ও সিরাজ উদ্দিন (৩৫)।

বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে পিবিআই ঢাকা মেট্রো উত্তরের কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানানো হয়। এর আগে গত ৮ জানুয়ারি লিবিয়ার জমাজৈতন এলাকার একটি ওয়ার্কশপ থেকে তাদের অপহরণ করে একটি চক্র। অপহরণকারীরা পরিবারকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভয়াবহ শারীরিক নির্যাতনের ভিডিও পাঠিয়ে জনপ্রতি ২২ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে।

পিবিআই’র অতিরিক্ত ডিআইজি মো. এনায়েত হোসেন মান্নান জানান, ভিকটিম সিরাজ উদ্দিনের পরিবার দেড় লাখ টাকা পাঠালেও তাদের মুক্তি দেওয়া হয়নি। পরবর্তী সময়ে দুই জিম্মির মুক্তির জন্য দুই লাখ করে আরও ৪ লাখ টাকা দেওয়া হয়। তাতেও অত্যাচার কমেনি তাদের ওপর। এরপর আলমগীর হোসেনের ভাই বাদী হয়ে ২৯ জানুয়ারি রাজধানীর আদাবর থানায় একটি মামলা করেন। মামলাটি গুরুত্ব সহকারে তদন্ত শুরু করে পিবিআই ঢাকা মেট্রো (উত্তর)।

এনায়েত হোসেন জানান, তদন্তের প্রথমে রাজশাহী থেকে মো. রাসেল হক (২৫) ও পরে বাগেরহাট থেকে মো. মিন্টু ফরাজীকে (৩৯) গ্রেফতার করা হয়। তাদের কাছ থেকে মুক্তিপণের লেনদেন সংক্রান্ত মোবাইল, ব্যাংক স্লিপ, অডিও-ভিডিও প্রমাণাদি উদ্ধার করা হয়। পরবর্তী সময়ে গত ১৮ ফেব্রুয়ারি অপহরণকারীরা ভিকটিমদের লিবিয়ার জিলজিয়া হাসপাতাল এলাকায় ফেলে রেখে যায়। ভিকটিমরা পরে ইন্টারন্যাশনাল অরগানাইজেশন ফর মাইগ্রেশন ও ব্র্যাক মাইগ্রেশনের সহায়তায় বাংলাদেশ দূতাবাসের হেফাজতে আসেন। এরপর গত ৯ জুলাই হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছালে পিবিআই আলমগীর হোসেনকে হেফাজতে নেয়। অপর ভিকটিম সিরাজ উদ্দিনের দেশে ফেরত আনার প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে বলে জানানো হয়।

সংবাদ সম্মেলনে ভুক্তভোগী আলমগীর জানান, তিনি ২০২২ সালের অক্টোবরে লিবিয়াতে গিয়েছিলেন। প্রথমে চাকরি করলেও নিজেই ওয়ার্কশপের দোকান দেন। যেখান থেকে চলতি বছরের ৮ জানুয়ারি সহকর্মী সিরাজকেসহ তাকে অপহরণ করে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে টানা নির্যাতনের পর ১৯ ফেব্রুয়ারি তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়।

তিনি জানান, অপহরণের দিন সকাল বেলা দোকান খোলার সময় মিলিশিয়ার কয়েকজন লোকজন তাদের দুজনকে গাড়িতে উঠিয়ে চোখ বেঁধে নিয়ে যায়। এসময় তাদের পাসপোর্টও নিয়ে নেওয়া হয়। একটা বাগানে নিয়া যায়, এরপর চোখ খুলে দেয়। প্রথমে ইতালিতে লোক পাঠাস বলে অনেকক্ষণ টর্চার করে চলে যায়। পরেরদিন আবার এসে মারে। এরপরদিন বাংলা মাফিয়ার কাছে বিক্রি করে দেয় চক্রটি। এরপর তাদের একটি ক্যাম্পে নিয়ে টানা নির্যাতন শুরু করে।

আলামগীর বলেন, প্রতিদিন তিনবার করে মারধর করতো। ভোর রাতে উঠায়ে বাড়িতে কল দিতে বলতো টাকা দিতে। ফ্যামিলি টাকা ম্যানেজ করতে পারে না, আর আমাদের নির্যাতন করতো। যেখানে তাদের আটকে রেখে নির্যাতন করা হতো সেখানে সবাই বাংলাদেশি।

তাদের সঙ্গে আরও সাতজন বাংলাদেশিকে আটকে রেখে নির্যাতন করতে দেখেছেন বলেও জানান ভুক্তভোগী আলমগীর।