ঢাকা ১১:২০ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ০৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ২১ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশে আরও ৩০ দেশের নাগরিকের ওপর নিষেধাজ্ঞা খাঁচা থেকে বের হওয়া সিংহী আড়াই ঘণ্টা পর নিয়ন্ত্রণে লন্ডনে ফ্লাই রবিবার, নির্জন কারাবাস থেকেই খালেদা জিয়ার ‘নানা রোগের সূচনা’ জানালেন ফখরুল মহাকাশ থেকে পবিত্র  কাবা শরিফের উজ্জ্বল ছবি আন্দোলনে থাকা প্রাথমিকের শিক্ষকদের বদলি, ‘শাটডাউন’ কর্মসূচি স্থগিত তারেক রহমানের দেশে ফেরা আবার অনিশ্চিত, কীভাবে ভোটার হবেন? খালেদা জিয়া ছাড়া পরিবারের কেউ ভিভিআইপি সুবিধা পাবেন না কুকুরছানা হত্যা মামলায় মায়ের সঙ্গে কারাগারে ২ বছরের শিশু খালেদা জিয়াকে লন্ডন নিতে ঢাকায় আসছেন জুবাইদা যুক্তরাজ্যের ৯ বিশ্ববিদ্যালয়ে নিষিদ্ধ বাংলাদেশি শিক্ষার্থী!

‘দুলছে হাওয়ায়’ যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচন ফলাফল

৫২ বাংলা
  • আপডেট সময় : ১১:২৬:০৫ অপরাহ্ন, বুধবার, ৪ নভেম্বর ২০২০
  • / 1039
অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি
যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রপ্রধান নির্বাচনের ফলাফল এখন একটি দোদুল্যমান অবস্হায় আছে। বর্তমানে ছ’টি অঙ্গরাজ্যে – আরিজোনা, জর্জিয়া, মিশিগান, পেনসেলভানিয়া, উইসকনসিন ও নর্থ ক্যারোলাইনা – লড়াইটা এমনই হাড্ডাহাড্ডি যে পাল্লা যে কোন দিকে ঝুঁকতে পারে। গতকালের ভোটপ্রদান ও ভোটের ফলাফল দেখে আমার পাঁচটি কথা মনে হয়েছে।
প্রথমত: যুক্তরাষ্ট্রের সমাজে আজ যে বিবিধ বিভাজন আছে, তা আরও গভীর হচ্ছে। এ বিভাজন শুধু লাল-নীল অঙ্গরাজ্যের নয়, এ বিভাজন বর্ণের, বিত্তের, অভিবাসনের, শিক্ষার, গ্রাম ও শহরের ইত্যাদি। এ বিভাজনকে আরে সুদৃঢ় করে কট্টরপন্হী রাজনৈতিক প্রক্রিয়া ক্ষমতার মুনাফা লুটে যাচ্ছে। বৈচিত্র্যের শক্তি নয়, বিভাজনের দূর্বলতাকেই তারা পুঁজি করছে।
দ্বিতীয়ত: যুক্তরাষ্ট্রের রাজনৈতিক অপশক্তি রাজনৈতিক প্রক্রিয়ার মাঝে একটি ‘শঙ্কার সংস্কৃতি’ প্রোথিত করতে চাইছে।শেটার মাধ্যমেই তারা দরিদ্র, কৃষ্ণাঙ্গ, অভিবাসী জনগোষ্ঠীকে দমাতে চাইছে। সহিংসতা হয়ে গেছে তাদের ভাষা, ভীতি প্রদর্শণ তাদের সংস্কৃতি।
তৃতীয়ত: যুক্তরাষ্ট্রের রাজনৈতিক পন্ডিতেরা এ সত্যটি আবারও প্রমান করলেন যে, পন্ডিতেরা সবকিছু পন্ড করেন। তাঁদের ঘোষিত জরিপ আর প্রাক্কলনের সঙ্গে বাস্তবতার ফারাক এতোই বেশী যে, তাঁদেরকে আমার ‘আবহাওয়া পাঠকদের’ মতো মনে হয়।
চতুর্থত: যুক্তরাষ্ট্রের রাস্ট্রপ্রধান নির্বাচনের কাঠামোটি বিগত শতাব্দীর এবং এর আশু সংস্কার প্রয়োজন। ‘নির্বাচনী কলেজ ভোট’ বলে যে বস্তুটি রয়েছে, তা জনগনের সিদ্ধান্তকে প্রতিফলিত করে না। এ দ্বিত্বতার পথ ধরেই জটিলতা আসে। তাই জনভোট বেশী পেয়েও বহু প্রার্থী যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রপ্রধান হতে পারেন নি। পুরো ব্যবস্হাটি আমাকে আইয়ুব খানের ‘বুনিয়াদী গণতন্ত্র’ কাঠামোর কথা মনে করিয়ে দেয়, যেখানে ৮০ হাজার ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের ভোটে পাকিস্তানের রাষ্ট্রপ্রধান নির্বাচিত হতেন।
পঞ্চমত: এ বছরের নির্বাচনে আসলে জয়ী হয়েছে গণতন্ত্র। এতো বেশী সংখ্যায় মানুষ যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে ভোট দেয় নি। তার একটি কারন অবশ্য করোনার কারনে আগাম ভোট ও ডাক-ভোটের ব্যবস্হা। এ উৎসাহ আগামীতে কতটা ধরে রাখা যাবে, সেটাও প্রশ্ন।
শেষের কথা বলি। আজ সতীর্থ বন্ধু মহিউদ্দীন আহমেদ অবয়বপত্রে লিখেছেন, ‘আমার একটা উপলব্ধি হলো- জো বাইডেন আমেরিকার জন্য ভালো। কিন্তু পৃথিবীর জন্য ভালো হবে ডোনাল্ড ট্রাম্প’। জানি না শেষ কথাটা সঠিক কি না, তবে আমার ক্ষুদ্র উপলব্ধি হলো, ‘ডোনাল্ড ট্রাম্প মানবতার জন্যে ভালো নয়’।
সেলিম জাহান : অর্থনীতিবিদ ও লেখক

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

‘দুলছে হাওয়ায়’ যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচন ফলাফল

আপডেট সময় : ১১:২৬:০৫ অপরাহ্ন, বুধবার, ৪ নভেম্বর ২০২০
যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রপ্রধান নির্বাচনের ফলাফল এখন একটি দোদুল্যমান অবস্হায় আছে। বর্তমানে ছ’টি অঙ্গরাজ্যে – আরিজোনা, জর্জিয়া, মিশিগান, পেনসেলভানিয়া, উইসকনসিন ও নর্থ ক্যারোলাইনা – লড়াইটা এমনই হাড্ডাহাড্ডি যে পাল্লা যে কোন দিকে ঝুঁকতে পারে। গতকালের ভোটপ্রদান ও ভোটের ফলাফল দেখে আমার পাঁচটি কথা মনে হয়েছে।
প্রথমত: যুক্তরাষ্ট্রের সমাজে আজ যে বিবিধ বিভাজন আছে, তা আরও গভীর হচ্ছে। এ বিভাজন শুধু লাল-নীল অঙ্গরাজ্যের নয়, এ বিভাজন বর্ণের, বিত্তের, অভিবাসনের, শিক্ষার, গ্রাম ও শহরের ইত্যাদি। এ বিভাজনকে আরে সুদৃঢ় করে কট্টরপন্হী রাজনৈতিক প্রক্রিয়া ক্ষমতার মুনাফা লুটে যাচ্ছে। বৈচিত্র্যের শক্তি নয়, বিভাজনের দূর্বলতাকেই তারা পুঁজি করছে।
দ্বিতীয়ত: যুক্তরাষ্ট্রের রাজনৈতিক অপশক্তি রাজনৈতিক প্রক্রিয়ার মাঝে একটি ‘শঙ্কার সংস্কৃতি’ প্রোথিত করতে চাইছে।শেটার মাধ্যমেই তারা দরিদ্র, কৃষ্ণাঙ্গ, অভিবাসী জনগোষ্ঠীকে দমাতে চাইছে। সহিংসতা হয়ে গেছে তাদের ভাষা, ভীতি প্রদর্শণ তাদের সংস্কৃতি।
তৃতীয়ত: যুক্তরাষ্ট্রের রাজনৈতিক পন্ডিতেরা এ সত্যটি আবারও প্রমান করলেন যে, পন্ডিতেরা সবকিছু পন্ড করেন। তাঁদের ঘোষিত জরিপ আর প্রাক্কলনের সঙ্গে বাস্তবতার ফারাক এতোই বেশী যে, তাঁদেরকে আমার ‘আবহাওয়া পাঠকদের’ মতো মনে হয়।
চতুর্থত: যুক্তরাষ্ট্রের রাস্ট্রপ্রধান নির্বাচনের কাঠামোটি বিগত শতাব্দীর এবং এর আশু সংস্কার প্রয়োজন। ‘নির্বাচনী কলেজ ভোট’ বলে যে বস্তুটি রয়েছে, তা জনগনের সিদ্ধান্তকে প্রতিফলিত করে না। এ দ্বিত্বতার পথ ধরেই জটিলতা আসে। তাই জনভোট বেশী পেয়েও বহু প্রার্থী যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রপ্রধান হতে পারেন নি। পুরো ব্যবস্হাটি আমাকে আইয়ুব খানের ‘বুনিয়াদী গণতন্ত্র’ কাঠামোর কথা মনে করিয়ে দেয়, যেখানে ৮০ হাজার ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের ভোটে পাকিস্তানের রাষ্ট্রপ্রধান নির্বাচিত হতেন।
পঞ্চমত: এ বছরের নির্বাচনে আসলে জয়ী হয়েছে গণতন্ত্র। এতো বেশী সংখ্যায় মানুষ যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে ভোট দেয় নি। তার একটি কারন অবশ্য করোনার কারনে আগাম ভোট ও ডাক-ভোটের ব্যবস্হা। এ উৎসাহ আগামীতে কতটা ধরে রাখা যাবে, সেটাও প্রশ্ন।
শেষের কথা বলি। আজ সতীর্থ বন্ধু মহিউদ্দীন আহমেদ অবয়বপত্রে লিখেছেন, ‘আমার একটা উপলব্ধি হলো- জো বাইডেন আমেরিকার জন্য ভালো। কিন্তু পৃথিবীর জন্য ভালো হবে ডোনাল্ড ট্রাম্প’। জানি না শেষ কথাটা সঠিক কি না, তবে আমার ক্ষুদ্র উপলব্ধি হলো, ‘ডোনাল্ড ট্রাম্প মানবতার জন্যে ভালো নয়’।
সেলিম জাহান : অর্থনীতিবিদ ও লেখক