গণভোটে যে চার প্রশ্ন থাকবে, জুলাই জাতীয় সনদ জারি
- আপডেট সময় : ০৫:০৩:১১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৩ নভেম্বর ২০২৫
- / 97
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দিনই একসঙ্গে গণভোট আয়োজনের সময় দিয়ে জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়ন আদেশ জারি করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন এই আদেশ জারির পর আইন মন্ত্রণালয় এ সংক্রান্ত গেজেট প্রকাশ করেছে।
সনদ বাস্তবায়ন আদেশে একই সঙ্গে গণভোটে কী প্রশ্ন থাকছে, তাও উল্লেখ করা হয়েছে।
দীর্ঘ এক বছরের আলোচনা, সংলাপ ও বিতর্ক শেষে রাষ্ট্র সংস্কার উদ্যোগ নিয়ে জাতীয় সনদ চূড়ান্ত হয়, যার স্বাক্ষর হয় গত ১৭ অক্টোবর।
জুলাই সনদ কীভাবে বাস্তবায়ন হবে, তা নিয়ে মতবিরোধের কারণে ৩১ অক্টোবর জাতীয় ঐকমত্য পরিষদ সরকারের কাছে সুপারিশমালা জমা দেয়।
পরে জুলাই সনদ থেকে ‘নোট অব ডিসেন্ট’ বাদ দেওয়া ও গণভোটের সময় নির্ধারণ নিয়ে বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী ও এনসিপির মধ্যে তীব্র মতবিরোধ দেখা দেয়।
এ অবস্থায় সরকার দলগুলোকে মতভেদ নিরসনে এক সপ্তাহ সময় দেয়। সেই সময়সীমা সোমবার শেষ হলে সরকারের ওপর সিদ্ধান্ত দেওয়ার দায়িত্ব বর্তায়।
অবশেষে বৃহস্পতিবার সরকারের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আসে। জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস সরকারের এই সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেন।
জুলাই সনদ বাস্তবায়ন আদেশে যা বলা হয়েছে
‘জুলাই জাতীয় সনদ (সংবিধান সংস্কার) বাস্তবায়ন আদেশ’-এ উল্লেখ করা হয়েছে,
“জনগণের সার্বভৌম ক্ষমতা প্রয়োগের উদ্দেশ্যে এই আদেশ এবং জুলাই জাতীয় সনদের সংবিধান সংস্কার সম্পর্কিত অংশ গণভোটে উপস্থাপন করা হবে।”
গণভোটে ব্যালটে থাকছে যে প্রশ্ন
গণভোটে ভোটারদের সামনে উপস্থাপন করা হবে এই প্রশ্ন—
“আপনি কি জুলাই জাতীয় সনদ (সংবিধান সংস্কার) বাস্তবায়ন আদেশ, ২০২৫ এবং জুলাই জাতীয় সনদে লিপিবদ্ধ সংবিধান সংস্কার সম্পর্কিত নিম্নলিখিত প্রস্তাবসমূহের প্রতি আপনার সম্মতি জ্ঞাপন করিতেছেন?”
(হ্যাঁ / না)
চারটি মূল প্রস্তাব, যেগুলোর ওপর ভোট হবে
(ক) নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার, নির্বাচন কমিশন এবং অন্যান্য সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান জুলাই সনদে বর্ণিত প্রক্রিয়া অনুসারে গঠন করা হবে।
(খ) জাতীয় সংসদ হবে দ্বিকক্ষবিশিষ্ট। নির্বাচনে দলগুলোর প্রাপ্ত ভোটের অনুপাতে ১০০ সদস্যের উচ্চকক্ষ গঠিত হবে।
সংবিধান সংশোধনের ক্ষেত্রে উচ্চকক্ষের সংখ্যাগরিষ্ঠ অনুমোদন লাগবে।
(গ) নারীর প্রতিনিধিত্ব বৃদ্ধি, বিরোধী দল থেকে ডেপুটি স্পিকার ও কয়েকটি সংসদীয় কমিটির সভাপতি নির্বাচন, প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদ সীমিতকরণ, রাষ্ট্রপতির ক্ষমতা বৃদ্ধি, মৌলিক অধিকার, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা ও স্থানীয় সরকারসহ বিভিন্ন বিষয়ে ৩০ দফা ঐক্যমত—জুলাই সনদে যে দলীয় ঐকমত্য হয়েছে, তা বাস্তবায়ন বাধ্যতামূলক হবে।
(ঘ) জুলাই সনদে বর্ণিত অন্যান্য সংস্কার রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতিশ্রুতি অনুসারে বাস্তবায়ন করা হবে।
সময়সূচি ও ভোট পদ্ধতি
-
গণভোট অনুষ্ঠিত হবে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দিনেই।
-
ভোট হবে ব্যালটের মাধ্যমে গোপনে, নির্বাচন কমিশনের নির্ধারিত ব্যালটে।
-
আদেশে বলা হয়েছে, এই গণভোট আদেশ জারির পর অনুষ্ঠিতব্য জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দিনই কার্যকর হবে।
সরকার ও নির্বাচন কমিশন ইতিমধ্যে আগামী ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচন আয়োজনের প্রস্তুতি নিয়েছে।
ডিসেম্বরের প্রথমার্ধে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার কথা রয়েছে।
















