ঢাকা ০৯:২৩ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ০৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ২১ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশে আরও ৩০ দেশের নাগরিকের ওপর নিষেধাজ্ঞা খাঁচা থেকে বের হওয়া সিংহী আড়াই ঘণ্টা পর নিয়ন্ত্রণে লন্ডনে ফ্লাই রবিবার, নির্জন কারাবাস থেকেই খালেদা জিয়ার ‘নানা রোগের সূচনা’ জানালেন ফখরুল মহাকাশ থেকে পবিত্র  কাবা শরিফের উজ্জ্বল ছবি আন্দোলনে থাকা প্রাথমিকের শিক্ষকদের বদলি, ‘শাটডাউন’ কর্মসূচি স্থগিত তারেক রহমানের দেশে ফেরা আবার অনিশ্চিত, কীভাবে ভোটার হবেন? খালেদা জিয়া ছাড়া পরিবারের কেউ ভিভিআইপি সুবিধা পাবেন না কুকুরছানা হত্যা মামলায় মায়ের সঙ্গে কারাগারে ২ বছরের শিশু খালেদা জিয়াকে লন্ডন নিতে ঢাকায় আসছেন জুবাইদা যুক্তরাজ্যের ৯ বিশ্ববিদ্যালয়ে নিষিদ্ধ বাংলাদেশি শিক্ষার্থী!

গণতন্ত্রবিরোধীরা আবার জোট পাকাচ্ছে বলে মির্জা ফখরুল কাদেরকে ইঙ্গিত করলেন?

৫২ বাংলা
  • আপডেট সময় : ০৫:৩৯:১৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৯ জুলাই ২০২৫
  • / 232
অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থানে ভয়াবহ ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছে। ফলে আমরা নতুন করে একটা গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে প্রতিষ্ঠিত করার একটা সুযোগ পেয়েছি। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে যত দিন যাচ্ছে পরিস্থিতি যেন জটিল হয়ে উঠছে। দেশে গণতন্ত্রবিরোধীরা আবার জোট পাকাচ্ছে।

শনিবার (১৯ জুলাই ২০২৫) জাতীয় প্রেস ক্লাবে জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তিতে ‘গণঅভ্যুত্থানের প্রত্যাশা ও দেশে গণতান্ত্রিক উত্তরণের পথ’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। এ সভার আয়োজন করে গণতন্ত্র মঞ্চ।

মির্জা ফখরুল বলেন, যারা গণতন্ত্র ও জনগণের অগ্রযাত্রা বিশ্বাস করে না, যারা একটা শোষণহীন সমাজ গড়ে উঠার রাজনীতি বিশ্বাস করে না, তারা আবার জোট পাকাচ্ছে। এতে যত দিন যাচ্ছে ততই পরাজিত শক্তি ভেতরে ভেতরে আবার সংগঠিত হচ্ছে এবং ক্ষমতা ফিরে পাওয়ার চক্রান্তে লিপ্ত হয়েছে।

বিএনপি মহাসচিব কাদেরকে ইঙ্গিত করে এ বক্তব্য দিচ্ছেন তা স্পষ্ট করেননি। তবে রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের ধারণা, শনিবার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জামায়াতে ইসলামের সমাবেশকে তিনি ইঙ্গিত করেছেন। এই সমাবেশে সংখ্যাানুপাতিক প্রতিনিধিত্ব বা পিআর পদ্ধতির পক্ষের রাজনৈতিক দলসমূহ অংশ নিচ্ছে। তারা আগে নির্বাচনের আগে সংস্কার ও বিচারের দাবি জানাচ্ছে। অপরদিকে বিএনপি সবার আগে নির্বাচনের দাবি জানাচ্ছে। জামাতের এই সমাবেশে কেবল বিএনপি ও এবি পার্টিকে এই সমাবেশে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি।

সভায় অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, নির্বাচন নিয়ে যত দেরি করছেন ততই কিন্তু পরিস্থিতি আরও ঘোলাটে হচ্ছে। যারা অভ্যুত্থানের বিরুদ্ধে ছিল, বাংলাদেশের বিরুদ্ধে যারা রয়েছে, গণতন্ত্রের বিরুদ্ধে যারা রয়েছে তারা আবার সংগঠিত হয়ে গণতন্ত্রকে নস্যাৎ করার জন্য কাজ শুরু করেছে। তাই দেরি না করে যত দ্রুত সংস্কার, সনদ এবং নির্বাচনকে এগিয়ে নেওয়া যাবে ততই দেশের জন্য মঙ্গল হবে।
তিনি বলেন, মবোক্রেসি, হত্যা, ছিনতাই, গুম ভয়ানকভাবে বেড়ে যাচ্ছে। এই বিষয়গুলো বিশেষ করে সচেতন নাগরিক এবং রাজনৈতিক কর্মী হিসেবে অত্যন্ত উদ্বিগ্ন করে তুলছে। কোনো রাজনৈতিক দল বা ব্যক্তিকে নিয়ে কোনো কথা বলতে চাই না। আমাদের সামনে সুযোগ এসেছে, এই সুযোগকে যদি আমরা হারিয়ে ফেলি তাহলে বাংলাদেশ আরও বহু বছর পিছিয়ে যাবে। প্রতিবার একটা করে অভ্যুত্থান হবে, জনগণ প্রাণ দেবে, আমাদের ছেলেরা প্রাণ দেবে এবং সুযোগ তৈরি হবে। আর আমরা আমাদের দায়িত্বহীনতার কারণে সেই সুযোগ হারাব, এটা হতে দেওয়া উচিত নয়।

‘একাত্তর প্রশ্নে কোনো আপোস নেই’
মির্জা ফখরুল আরও বলেন, ১৯৭১ হচ্ছে- আমাদের মূল কথা, স্বাধীনতা যুদ্ধ। এখানে আমাদের কোনো আপোস নেই। গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায়ও কোনো আপোস নেই। এর বাইরে অন্য যা আছে তা আলোচনার মাধ্যমে ঠিক করব। গণতন্ত্রের মূল বিষয় হচ্ছে, আলোচনা, সহনশীল, অন্যের মতকে মেনে নেওয়া সব কিছু নিয়ে আমরা অবশ্যই এমন একটা জায়গায় পৌঁছাতে পারব যেখানে থেকে আমরা আবার নতুন করে একটা গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র ব্যবস্থায় ফিরে যেতে পারব।
সভায় গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি বলেন, নানা লক্ষণ আমরা দেখছি। মিটফোর্ডে যেভাবে একটা হত্যা করা হয়েছে এবং যেভাবে তার ভিডিও ফুটেজ, ন্যারেটিভ হাজির হয়েছে তাতে পরিষ্কারভাবে ষড়যন্ত্র চলছে, যেভাবে গোপালগঞ্জে হামলা হয়েছে। দেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি দেখানোর জন্য ষড়যন্ত্র চলছে।
তিনি বলেন, আজকে বিচার, সংস্কার ও নির্বাচন এই তিনটা জিনিসই আমাদের রাজনৈতিক উত্তরণের জন্য অপরিহার্য বিষয়ে পরিণত হয়েছে। আমরা বিচার চাই, সংস্কার চাই, আমরা সংস্কার সম্পন্ন করার জন্য নির্বাচন চাই। নির্বাচন ছাড়া সংস্কার সম্পন্ন হবে না, জনগণের অংশগ্রহণ ছাড়া সংস্কার সম্পন্ন হবে না। কাজেই কোনোভাবে নির্বাচনকে ব্যাহত করা চেষ্টা আসলে বিচার এবং সংস্কারকেও ব্যাহত করা চেষ্টা।
গণতন্ত্র মঞ্চের সমন্বয়ক ভাসানী জনশক্তি পার্টির সভাপতি শেখ শহিদুল ইসলাম বাবলুর সভাপতিত্বে ও মহাসচিব আবু ইউসুফ সেলিম সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য রাখেন জাতীয় পার্টি (কাজী জাফর) মোস্তফা জামাল হায়দার, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের হাসনাত কাইয়ুম, জেএসডি‘র তানিয়া রব, এবি পার্টির মজিবুর রহমান মঞ্জু, নাগরিক ঐক্যের শহীদুল্লাহ কায়সার, গণফোরামের এম মিজানুর রহমান, গণঅধিকার পরিষদের নুরুল হক নূর, জাতীয় নাগরিক পার্টির আখতার হোসেন, গণসংহতি আন্দোলনের আবুল হাসান রুবেল, বাংলাদেশ জাসদের নাজমুল হক প্রধান, মুক্তিযোদ্ধা সংসদের নঈম জাহাঙ্গীর প্রমুখ।

নিউজটি শেয়ার করুন

গণতন্ত্রবিরোধীরা আবার জোট পাকাচ্ছে বলে মির্জা ফখরুল কাদেরকে ইঙ্গিত করলেন?

আপডেট সময় : ০৫:৩৯:১৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৯ জুলাই ২০২৫

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থানে ভয়াবহ ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছে। ফলে আমরা নতুন করে একটা গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে প্রতিষ্ঠিত করার একটা সুযোগ পেয়েছি। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে যত দিন যাচ্ছে পরিস্থিতি যেন জটিল হয়ে উঠছে। দেশে গণতন্ত্রবিরোধীরা আবার জোট পাকাচ্ছে।

শনিবার (১৯ জুলাই ২০২৫) জাতীয় প্রেস ক্লাবে জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তিতে ‘গণঅভ্যুত্থানের প্রত্যাশা ও দেশে গণতান্ত্রিক উত্তরণের পথ’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। এ সভার আয়োজন করে গণতন্ত্র মঞ্চ।

মির্জা ফখরুল বলেন, যারা গণতন্ত্র ও জনগণের অগ্রযাত্রা বিশ্বাস করে না, যারা একটা শোষণহীন সমাজ গড়ে উঠার রাজনীতি বিশ্বাস করে না, তারা আবার জোট পাকাচ্ছে। এতে যত দিন যাচ্ছে ততই পরাজিত শক্তি ভেতরে ভেতরে আবার সংগঠিত হচ্ছে এবং ক্ষমতা ফিরে পাওয়ার চক্রান্তে লিপ্ত হয়েছে।

বিএনপি মহাসচিব কাদেরকে ইঙ্গিত করে এ বক্তব্য দিচ্ছেন তা স্পষ্ট করেননি। তবে রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের ধারণা, শনিবার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জামায়াতে ইসলামের সমাবেশকে তিনি ইঙ্গিত করেছেন। এই সমাবেশে সংখ্যাানুপাতিক প্রতিনিধিত্ব বা পিআর পদ্ধতির পক্ষের রাজনৈতিক দলসমূহ অংশ নিচ্ছে। তারা আগে নির্বাচনের আগে সংস্কার ও বিচারের দাবি জানাচ্ছে। অপরদিকে বিএনপি সবার আগে নির্বাচনের দাবি জানাচ্ছে। জামাতের এই সমাবেশে কেবল বিএনপি ও এবি পার্টিকে এই সমাবেশে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি।

সভায় অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, নির্বাচন নিয়ে যত দেরি করছেন ততই কিন্তু পরিস্থিতি আরও ঘোলাটে হচ্ছে। যারা অভ্যুত্থানের বিরুদ্ধে ছিল, বাংলাদেশের বিরুদ্ধে যারা রয়েছে, গণতন্ত্রের বিরুদ্ধে যারা রয়েছে তারা আবার সংগঠিত হয়ে গণতন্ত্রকে নস্যাৎ করার জন্য কাজ শুরু করেছে। তাই দেরি না করে যত দ্রুত সংস্কার, সনদ এবং নির্বাচনকে এগিয়ে নেওয়া যাবে ততই দেশের জন্য মঙ্গল হবে।
তিনি বলেন, মবোক্রেসি, হত্যা, ছিনতাই, গুম ভয়ানকভাবে বেড়ে যাচ্ছে। এই বিষয়গুলো বিশেষ করে সচেতন নাগরিক এবং রাজনৈতিক কর্মী হিসেবে অত্যন্ত উদ্বিগ্ন করে তুলছে। কোনো রাজনৈতিক দল বা ব্যক্তিকে নিয়ে কোনো কথা বলতে চাই না। আমাদের সামনে সুযোগ এসেছে, এই সুযোগকে যদি আমরা হারিয়ে ফেলি তাহলে বাংলাদেশ আরও বহু বছর পিছিয়ে যাবে। প্রতিবার একটা করে অভ্যুত্থান হবে, জনগণ প্রাণ দেবে, আমাদের ছেলেরা প্রাণ দেবে এবং সুযোগ তৈরি হবে। আর আমরা আমাদের দায়িত্বহীনতার কারণে সেই সুযোগ হারাব, এটা হতে দেওয়া উচিত নয়।

‘একাত্তর প্রশ্নে কোনো আপোস নেই’
মির্জা ফখরুল আরও বলেন, ১৯৭১ হচ্ছে- আমাদের মূল কথা, স্বাধীনতা যুদ্ধ। এখানে আমাদের কোনো আপোস নেই। গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায়ও কোনো আপোস নেই। এর বাইরে অন্য যা আছে তা আলোচনার মাধ্যমে ঠিক করব। গণতন্ত্রের মূল বিষয় হচ্ছে, আলোচনা, সহনশীল, অন্যের মতকে মেনে নেওয়া সব কিছু নিয়ে আমরা অবশ্যই এমন একটা জায়গায় পৌঁছাতে পারব যেখানে থেকে আমরা আবার নতুন করে একটা গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র ব্যবস্থায় ফিরে যেতে পারব।
সভায় গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি বলেন, নানা লক্ষণ আমরা দেখছি। মিটফোর্ডে যেভাবে একটা হত্যা করা হয়েছে এবং যেভাবে তার ভিডিও ফুটেজ, ন্যারেটিভ হাজির হয়েছে তাতে পরিষ্কারভাবে ষড়যন্ত্র চলছে, যেভাবে গোপালগঞ্জে হামলা হয়েছে। দেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি দেখানোর জন্য ষড়যন্ত্র চলছে।
তিনি বলেন, আজকে বিচার, সংস্কার ও নির্বাচন এই তিনটা জিনিসই আমাদের রাজনৈতিক উত্তরণের জন্য অপরিহার্য বিষয়ে পরিণত হয়েছে। আমরা বিচার চাই, সংস্কার চাই, আমরা সংস্কার সম্পন্ন করার জন্য নির্বাচন চাই। নির্বাচন ছাড়া সংস্কার সম্পন্ন হবে না, জনগণের অংশগ্রহণ ছাড়া সংস্কার সম্পন্ন হবে না। কাজেই কোনোভাবে নির্বাচনকে ব্যাহত করা চেষ্টা আসলে বিচার এবং সংস্কারকেও ব্যাহত করা চেষ্টা।
গণতন্ত্র মঞ্চের সমন্বয়ক ভাসানী জনশক্তি পার্টির সভাপতি শেখ শহিদুল ইসলাম বাবলুর সভাপতিত্বে ও মহাসচিব আবু ইউসুফ সেলিম সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য রাখেন জাতীয় পার্টি (কাজী জাফর) মোস্তফা জামাল হায়দার, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের হাসনাত কাইয়ুম, জেএসডি‘র তানিয়া রব, এবি পার্টির মজিবুর রহমান মঞ্জু, নাগরিক ঐক্যের শহীদুল্লাহ কায়সার, গণফোরামের এম মিজানুর রহমান, গণঅধিকার পরিষদের নুরুল হক নূর, জাতীয় নাগরিক পার্টির আখতার হোসেন, গণসংহতি আন্দোলনের আবুল হাসান রুবেল, বাংলাদেশ জাসদের নাজমুল হক প্রধান, মুক্তিযোদ্ধা সংসদের নঈম জাহাঙ্গীর প্রমুখ।