ঢাকা ০৫:৫১ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ০৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ২১ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :

কান্দাহারে পাকিস্তানের বিমান হামলায় নিহত ৪০

৫২ বাংলা
  • আপডেট সময় : ১১:৩৩:২৩ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৮ অক্টোবর ২০২৫
  • / 120

কান্দাহারে পাকিস্তানের বিমান হামলা

অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

অস্থায়ী যুদ্ধবিরতির মেয়াদ শেষ হওয়ার অল্প সময় পর আফগানিস্তানের কান্দাহার প্রদেশের স্পিন বোলদাক শহরে বিমান হামলা চালিয়েছে পাকিস্তানের বিমান বাহিনী। এতে অন্তত ৪০ জন নিহত এবং আরও ১৭৯ জন আহত হয়েছেন।

আফগানিস্তান-পাকিস্তান সীমান্তের কাছেই অবস্থিত শহরটি। স্পিন বোলদাকের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা করিমুল্লাহ জুবাইর আগার বরাতে আফগান সংবাদমাধ্যম তোলো নিউজ জানিয়েছে, নিহত ও আহতদের সবাই বেসামরিক নাগরিক, যাদের মধ্যে নারী ও শিশুর সংখ্যা উল্লেখযোগ্য।

সীমান্ত এলাকায় ১১ থেকে ১৪ অক্টোবর পর্যন্ত টানা সংঘর্ষ, হামলা-পাল্টা হামলার পর ১৫ অক্টোবর থেকে ৪৮ ঘণ্টার যুদ্ধবিরতিতে যায় দুই প্রতিবেশী দেশ পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের সেনাবাহিনী। সেই যুদ্ধবিরতির মেয়াদ শেষ হয় গতকাল শুক্রবার (১৭ অক্টোবর) স্থানীয় সময় দুপুর ১টার দিকে।

বিরতি শেষ হওয়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই পাকিস্তান এই বিমান হামলা চালায়। হামলার পর বেঁচে যাওয়া প্রত্যক্ষদর্শীরা এ ঘটনার নিন্দা জানিয়েছেন।

হামলায় আহত হাজি বাহরাম নামের এক ব্যক্তি তোলো নিউজকে বলেন, “আমি ইতিহাসে কখনও এমন অবিচার দেখিনি। একটি দেশ, যারা নিজেদের মুসলিম বলে দাবি করে— তারা এখানে নারী, শিশু ও বেসামরিক লোকজনের ওপরে হামলা করল।”

বিমান বাহিনীর অভিযানের পাশাপাশি স্পিন বোলদাক শহরের নোকলি, হাজি হাসান কেলাই, ওয়ার্দাক, কুচিয়ান, শহীদ ও শোরবাক এলাকায় একের পর এক আর্টিলারি গোলা নিক্ষেপ করেছে পাকিস্তানি স্থলবাহিনী। এতে বহু ঘরবাড়ি ও দোকানপাট ধ্বংস হয়ে গেছে, হতাহত হয়েছেন আরও অনেকে।

সংঘাতের পটভূমি

আফগানিস্তানের সঙ্গে পাকিস্তানের সাম্প্রতিক সংঘাতের কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে পাকিস্তানের তালেবানপন্থি সশস্ত্র রাজনৈতিক গোষ্ঠী তেহরিক-ই-তালেবান পাকিস্তান (টিটিপি)। কয়েক বছর আগে পাকিস্তান সরকার গোষ্ঠীটিকে নিষিদ্ধ করে। এরপর থেকে টিটিপি পাকিস্তানের আঞ্চলিক অখণ্ডতার জন্য বড় চ্যালেঞ্জে পরিণত হয়েছে।

পাকিস্তানের সীমান্তবর্তী খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশ টিটিপির প্রধান ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত। ২০২১ সালে আফগানিস্তানে তালেবান সরকার ক্ষমতায় আসার পর এই গোষ্ঠী আরও বেপরোয়া হয়ে ওঠে।

পাকিস্তানের অভিযোগ, আফগানিস্তানের তালেবান সরকার টিটিপিকে আশ্রয় ও মদত দিচ্ছে। তবে কাবুল সরকার এসব অভিযোগ বরাবরই অস্বীকার করে আসছে।

সংঘাতের সূত্রপাত

গত ৯ অক্টোবর আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলে বিমান হামলা চালিয়ে টিটিপির শীর্ষ নেতা নূর ওয়ালি মেহসুদকে হত্যা করে পাকিস্তানের বিমান বাহিনী।

এর দু’দিন পর, ১১ অক্টোবর থেকে আফগানিস্তানের সঙ্গে লাগোয়া খাইবার পাখতুনখোয়া সীমান্তে পাক ও আফগান সেনাবাহিনীর মধ্যে তীব্র সংঘর্ষ শুরু হয়।

চার দিন টানা সংঘাতের পর ১৫ অক্টোবর ৪৮ ঘণ্টার যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয় দুই দেশ। সেই যুদ্ধবিরতির মেয়াদ শেষ হয় ১৭ অক্টোবর স্থানীয় সময় দুপুর ১টায়। একই সময়ে মির আলী সেনা ক্যাম্পে হামলার ঘটনাও ঘটে।

নিউজটি শেয়ার করুন

কান্দাহারে পাকিস্তানের বিমান হামলায় নিহত ৪০

আপডেট সময় : ১১:৩৩:২৩ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৮ অক্টোবর ২০২৫

অস্থায়ী যুদ্ধবিরতির মেয়াদ শেষ হওয়ার অল্প সময় পর আফগানিস্তানের কান্দাহার প্রদেশের স্পিন বোলদাক শহরে বিমান হামলা চালিয়েছে পাকিস্তানের বিমান বাহিনী। এতে অন্তত ৪০ জন নিহত এবং আরও ১৭৯ জন আহত হয়েছেন।

আফগানিস্তান-পাকিস্তান সীমান্তের কাছেই অবস্থিত শহরটি। স্পিন বোলদাকের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা করিমুল্লাহ জুবাইর আগার বরাতে আফগান সংবাদমাধ্যম তোলো নিউজ জানিয়েছে, নিহত ও আহতদের সবাই বেসামরিক নাগরিক, যাদের মধ্যে নারী ও শিশুর সংখ্যা উল্লেখযোগ্য।

সীমান্ত এলাকায় ১১ থেকে ১৪ অক্টোবর পর্যন্ত টানা সংঘর্ষ, হামলা-পাল্টা হামলার পর ১৫ অক্টোবর থেকে ৪৮ ঘণ্টার যুদ্ধবিরতিতে যায় দুই প্রতিবেশী দেশ পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের সেনাবাহিনী। সেই যুদ্ধবিরতির মেয়াদ শেষ হয় গতকাল শুক্রবার (১৭ অক্টোবর) স্থানীয় সময় দুপুর ১টার দিকে।

বিরতি শেষ হওয়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই পাকিস্তান এই বিমান হামলা চালায়। হামলার পর বেঁচে যাওয়া প্রত্যক্ষদর্শীরা এ ঘটনার নিন্দা জানিয়েছেন।

হামলায় আহত হাজি বাহরাম নামের এক ব্যক্তি তোলো নিউজকে বলেন, “আমি ইতিহাসে কখনও এমন অবিচার দেখিনি। একটি দেশ, যারা নিজেদের মুসলিম বলে দাবি করে— তারা এখানে নারী, শিশু ও বেসামরিক লোকজনের ওপরে হামলা করল।”

বিমান বাহিনীর অভিযানের পাশাপাশি স্পিন বোলদাক শহরের নোকলি, হাজি হাসান কেলাই, ওয়ার্দাক, কুচিয়ান, শহীদ ও শোরবাক এলাকায় একের পর এক আর্টিলারি গোলা নিক্ষেপ করেছে পাকিস্তানি স্থলবাহিনী। এতে বহু ঘরবাড়ি ও দোকানপাট ধ্বংস হয়ে গেছে, হতাহত হয়েছেন আরও অনেকে।

সংঘাতের পটভূমি

আফগানিস্তানের সঙ্গে পাকিস্তানের সাম্প্রতিক সংঘাতের কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে পাকিস্তানের তালেবানপন্থি সশস্ত্র রাজনৈতিক গোষ্ঠী তেহরিক-ই-তালেবান পাকিস্তান (টিটিপি)। কয়েক বছর আগে পাকিস্তান সরকার গোষ্ঠীটিকে নিষিদ্ধ করে। এরপর থেকে টিটিপি পাকিস্তানের আঞ্চলিক অখণ্ডতার জন্য বড় চ্যালেঞ্জে পরিণত হয়েছে।

পাকিস্তানের সীমান্তবর্তী খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশ টিটিপির প্রধান ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত। ২০২১ সালে আফগানিস্তানে তালেবান সরকার ক্ষমতায় আসার পর এই গোষ্ঠী আরও বেপরোয়া হয়ে ওঠে।

পাকিস্তানের অভিযোগ, আফগানিস্তানের তালেবান সরকার টিটিপিকে আশ্রয় ও মদত দিচ্ছে। তবে কাবুল সরকার এসব অভিযোগ বরাবরই অস্বীকার করে আসছে।

সংঘাতের সূত্রপাত

গত ৯ অক্টোবর আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলে বিমান হামলা চালিয়ে টিটিপির শীর্ষ নেতা নূর ওয়ালি মেহসুদকে হত্যা করে পাকিস্তানের বিমান বাহিনী।

এর দু’দিন পর, ১১ অক্টোবর থেকে আফগানিস্তানের সঙ্গে লাগোয়া খাইবার পাখতুনখোয়া সীমান্তে পাক ও আফগান সেনাবাহিনীর মধ্যে তীব্র সংঘর্ষ শুরু হয়।

চার দিন টানা সংঘাতের পর ১৫ অক্টোবর ৪৮ ঘণ্টার যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয় দুই দেশ। সেই যুদ্ধবিরতির মেয়াদ শেষ হয় ১৭ অক্টোবর স্থানীয় সময় দুপুর ১টায়। একই সময়ে মির আলী সেনা ক্যাম্পে হামলার ঘটনাও ঘটে।