ঢাকা ০৬:৫৭ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ০৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ২১ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :

এশিয়া কাপ : এখন ফাইনালের স্বপ্ন দেখছে বাংলাদেশ

৫২ বাংলা
  • আপডেট সময় : ০১:১০:৩৪ অপরাহ্ন, রবিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • / 196

সুপার ফোর-এর প্রথম খেলায় জেতার পর উৎফুল্ল বাংলাদেশ দল

অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

দুবাই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামের গ্যালারিতে বারবার চোখে পড়েছে লাল-সবুজ পতাকা। ম্যাচ শেষে সেই পতাকাগুলো যেন আরও উজ্জ্বল হয়ে উঠল। উল্লাসে মুখর হলো পুরো গ্যালারি। সুপার ফোরে নিজেদের প্রথম ম্যাচেই শ্রীলঙ্কাকে ৪ উইকেটে হারিয়েছে লিটন দাসের দল। বাংলাদেশ জেতায় ভুলে যাওয়া গেল শরীফুল ইসলামের খরুচে বোলিং কিংবা হাত ফসকে যাওয়া ক্যাচের হতাশা।

আবারও আলো ছড়ালেন মোস্তাফিজুর রহমান। নিজের উপস্থিতি জানান দিলেন সাইফ হাসান। কিছুক্ষণ তাঁর সঙ্গী ছিলেন লিটন দাস। ক্যাচ মিসের ক্ষতিপূরণ করলেন তাওহিদ হৃদয়। এমন ছোট ছোট মুহূর্তগুলো মিলিয়েই বাংলাদেশ লিখল দুর্দান্ত এক জয়ের গল্প। যে জয় এখন দেখাচ্ছে আরও বড় স্বপ্ন—এশিয়া কাপের ফাইনাল। কদিন আগেও যে পথটা মনে হচ্ছিল কঠিন, এখন তা অনেকটা সহজ মনে হচ্ছে। আগামী বুধবার ভারতের বিপক্ষে ম্যাচ, পরদিন পাকিস্তানের সঙ্গে। এই দুটি ম্যাচের একটিতে জয় পেলেই বাংলাদেশের ফাইনালে ওঠার সম্ভাবনা থাকবে যথেষ্ট। হেরে গেলে অবশ্যই আর কোনো সুযোগ থাকবে না। তবে ভারত বা পাকিস্তানকে হারানো ছাড়া ফাইনাল খেলা যায় না—এটা সবারই জানা।

যদিও শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ম্যাচের শুরুটা দেখে এ ধরনের আলোচনা বাড়াবাড়ি মনে হয়েছিল। মাত্র ৪ ওভারেই শ্রীলঙ্কা তোলে ৩৬ রান। পঞ্চম ওভারের প্রথম বলেই ছক্কা খান তাসকিন আহমেদ। তবে শেষ বলে পাতুম নিশাঙ্কাকে ফিরিয়ে চাপ কমান তিনিই। এরপর মেহেদী হাসান নেন টানা দুটি উইকেট। তবুও চাপ সামলে ঘুরে দাঁড়ান দাসুন শানাকা।

শানাকা আর চারিত আসালাঙ্কার ২৭ বলে ৫৭ রানের জুটি আবারও চাপে ফেলে বাংলাদেশকে। শামীম ও হৃদয়ের হাত ফসকে তিনটি ক্যাচ মিস হওয়ায় বড় রানে চেপে ধরার আশঙ্কা তৈরি হয়। ঠিক তখনই ভরসা জোগালেন মোস্তাফিজ।

প্রথম তিন ওভারে ১৫ রান দিয়ে একটি উইকেট নিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু ইনিংসের ১৯তম ও নিজের শেষ ওভারে ম্যাচ ঘুরিয়ে দিলেন। প্রথম বলেই হৃদয়ের হাত ফসকে আসালাঙ্কার ক্যাচ বেরিয়ে যায়, তবে রানআউটে বিদায় নেন তিনি। এরপরের পাঁচ বলে মাত্র ৩ রান দিয়ে তুলে নেন আরও ২ উইকেট।

ওভারের শেষ বলে হাসারাঙ্গাকে আউট করে মোস্তাফিজ ছুঁয়ে ফেললেন সাকিব আল হাসানকে। দুজনই এখন বাংলাদেশের হয়ে টি–টোয়েন্টিতে সর্বোচ্চ উইকেটের মালিক। শ্রীলঙ্কার ইনিংস থেমে যায় ১৬৮ রানে।

তাড়া করতে নেমে তানজিদ হাসানের ব্যাট দেখে মনে হচ্ছিল, বাংলাদেশ হয়তো এবারও ব্যর্থ হবে। নুয়ান তুষারার বিরুদ্ধে তার দুরবস্থা চলছেই—ছয়বার মুখোমুখি হয়ে চারবারই আউট হলেন। তবে এর পরের গল্পটা সাইফ হাসান ও লিটন দাসের। দ্বিতীয় উইকেটে ৩৪ বলে গড়েন ৫৯ রানের জুটি।

পাওয়ার প্লের ৬ ওভারে ৫৯ রান তুললেও সপ্তম ওভারে হাসারাঙ্গার বলে সুইপ করতে গিয়ে আউট হন লিটন। ১৬ বলে ২৩ রান করে ফেরেন তিনি। এরপর সাইফ কিছুক্ষণ ধরে রাখেন ইনিংস। টি–টোয়েন্টি ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় ফিফটি তুলে নিয়ে ৪৫ বলে করেন ৬১ রান, ৪ ছক্কা আর ২ চারের সাজানো ইনিংস।

সাইফ আউট হওয়ার পর দায়িত্ব নেন হৃদয়। কামিন্দু মেন্ডিসের এক ওভারেই ২ চার ও ১ ছক্কায় নেন ১৬ রান। তখনই ম্যাচ পুরোপুরি বাংলাদেশের নিয়ন্ত্রণে চলে যায়।

শেষ দিকে ৩ বলে দরকার ছিল ১ রান। এর মধ্যেই হারায় ২ উইকেট। তবে তাতে লাভ হয়নি শ্রীলঙ্কার। নাসুম আহমেদ জয়সূচক রান নিতেই অন্য প্রান্তে উল্লাসে লাফিয়ে ওঠেন শামীম হোসেন। বাংলাদেশের ডাগআউটে আনন্দের জোয়ার, আর যেন তার প্রতিধ্বনি শোনা গেল পুরো দুবাইয়ে।

নিউজটি শেয়ার করুন

এশিয়া কাপ : এখন ফাইনালের স্বপ্ন দেখছে বাংলাদেশ

আপডেট সময় : ০১:১০:৩৪ অপরাহ্ন, রবিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৫

দুবাই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামের গ্যালারিতে বারবার চোখে পড়েছে লাল-সবুজ পতাকা। ম্যাচ শেষে সেই পতাকাগুলো যেন আরও উজ্জ্বল হয়ে উঠল। উল্লাসে মুখর হলো পুরো গ্যালারি। সুপার ফোরে নিজেদের প্রথম ম্যাচেই শ্রীলঙ্কাকে ৪ উইকেটে হারিয়েছে লিটন দাসের দল। বাংলাদেশ জেতায় ভুলে যাওয়া গেল শরীফুল ইসলামের খরুচে বোলিং কিংবা হাত ফসকে যাওয়া ক্যাচের হতাশা।

আবারও আলো ছড়ালেন মোস্তাফিজুর রহমান। নিজের উপস্থিতি জানান দিলেন সাইফ হাসান। কিছুক্ষণ তাঁর সঙ্গী ছিলেন লিটন দাস। ক্যাচ মিসের ক্ষতিপূরণ করলেন তাওহিদ হৃদয়। এমন ছোট ছোট মুহূর্তগুলো মিলিয়েই বাংলাদেশ লিখল দুর্দান্ত এক জয়ের গল্প। যে জয় এখন দেখাচ্ছে আরও বড় স্বপ্ন—এশিয়া কাপের ফাইনাল। কদিন আগেও যে পথটা মনে হচ্ছিল কঠিন, এখন তা অনেকটা সহজ মনে হচ্ছে। আগামী বুধবার ভারতের বিপক্ষে ম্যাচ, পরদিন পাকিস্তানের সঙ্গে। এই দুটি ম্যাচের একটিতে জয় পেলেই বাংলাদেশের ফাইনালে ওঠার সম্ভাবনা থাকবে যথেষ্ট। হেরে গেলে অবশ্যই আর কোনো সুযোগ থাকবে না। তবে ভারত বা পাকিস্তানকে হারানো ছাড়া ফাইনাল খেলা যায় না—এটা সবারই জানা।

যদিও শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ম্যাচের শুরুটা দেখে এ ধরনের আলোচনা বাড়াবাড়ি মনে হয়েছিল। মাত্র ৪ ওভারেই শ্রীলঙ্কা তোলে ৩৬ রান। পঞ্চম ওভারের প্রথম বলেই ছক্কা খান তাসকিন আহমেদ। তবে শেষ বলে পাতুম নিশাঙ্কাকে ফিরিয়ে চাপ কমান তিনিই। এরপর মেহেদী হাসান নেন টানা দুটি উইকেট। তবুও চাপ সামলে ঘুরে দাঁড়ান দাসুন শানাকা।

শানাকা আর চারিত আসালাঙ্কার ২৭ বলে ৫৭ রানের জুটি আবারও চাপে ফেলে বাংলাদেশকে। শামীম ও হৃদয়ের হাত ফসকে তিনটি ক্যাচ মিস হওয়ায় বড় রানে চেপে ধরার আশঙ্কা তৈরি হয়। ঠিক তখনই ভরসা জোগালেন মোস্তাফিজ।

প্রথম তিন ওভারে ১৫ রান দিয়ে একটি উইকেট নিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু ইনিংসের ১৯তম ও নিজের শেষ ওভারে ম্যাচ ঘুরিয়ে দিলেন। প্রথম বলেই হৃদয়ের হাত ফসকে আসালাঙ্কার ক্যাচ বেরিয়ে যায়, তবে রানআউটে বিদায় নেন তিনি। এরপরের পাঁচ বলে মাত্র ৩ রান দিয়ে তুলে নেন আরও ২ উইকেট।

ওভারের শেষ বলে হাসারাঙ্গাকে আউট করে মোস্তাফিজ ছুঁয়ে ফেললেন সাকিব আল হাসানকে। দুজনই এখন বাংলাদেশের হয়ে টি–টোয়েন্টিতে সর্বোচ্চ উইকেটের মালিক। শ্রীলঙ্কার ইনিংস থেমে যায় ১৬৮ রানে।

তাড়া করতে নেমে তানজিদ হাসানের ব্যাট দেখে মনে হচ্ছিল, বাংলাদেশ হয়তো এবারও ব্যর্থ হবে। নুয়ান তুষারার বিরুদ্ধে তার দুরবস্থা চলছেই—ছয়বার মুখোমুখি হয়ে চারবারই আউট হলেন। তবে এর পরের গল্পটা সাইফ হাসান ও লিটন দাসের। দ্বিতীয় উইকেটে ৩৪ বলে গড়েন ৫৯ রানের জুটি।

পাওয়ার প্লের ৬ ওভারে ৫৯ রান তুললেও সপ্তম ওভারে হাসারাঙ্গার বলে সুইপ করতে গিয়ে আউট হন লিটন। ১৬ বলে ২৩ রান করে ফেরেন তিনি। এরপর সাইফ কিছুক্ষণ ধরে রাখেন ইনিংস। টি–টোয়েন্টি ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় ফিফটি তুলে নিয়ে ৪৫ বলে করেন ৬১ রান, ৪ ছক্কা আর ২ চারের সাজানো ইনিংস।

সাইফ আউট হওয়ার পর দায়িত্ব নেন হৃদয়। কামিন্দু মেন্ডিসের এক ওভারেই ২ চার ও ১ ছক্কায় নেন ১৬ রান। তখনই ম্যাচ পুরোপুরি বাংলাদেশের নিয়ন্ত্রণে চলে যায়।

শেষ দিকে ৩ বলে দরকার ছিল ১ রান। এর মধ্যেই হারায় ২ উইকেট। তবে তাতে লাভ হয়নি শ্রীলঙ্কার। নাসুম আহমেদ জয়সূচক রান নিতেই অন্য প্রান্তে উল্লাসে লাফিয়ে ওঠেন শামীম হোসেন। বাংলাদেশের ডাগআউটে আনন্দের জোয়ার, আর যেন তার প্রতিধ্বনি শোনা গেল পুরো দুবাইয়ে।