ঢাকা ১১:২৭ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ০৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ২১ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশে আরও ৩০ দেশের নাগরিকের ওপর নিষেধাজ্ঞা খাঁচা থেকে বের হওয়া সিংহী আড়াই ঘণ্টা পর নিয়ন্ত্রণে লন্ডনে ফ্লাই রবিবার, নির্জন কারাবাস থেকেই খালেদা জিয়ার ‘নানা রোগের সূচনা’ জানালেন ফখরুল মহাকাশ থেকে পবিত্র  কাবা শরিফের উজ্জ্বল ছবি আন্দোলনে থাকা প্রাথমিকের শিক্ষকদের বদলি, ‘শাটডাউন’ কর্মসূচি স্থগিত তারেক রহমানের দেশে ফেরা আবার অনিশ্চিত, কীভাবে ভোটার হবেন? খালেদা জিয়া ছাড়া পরিবারের কেউ ভিভিআইপি সুবিধা পাবেন না কুকুরছানা হত্যা মামলায় মায়ের সঙ্গে কারাগারে ২ বছরের শিশু খালেদা জিয়াকে লন্ডন নিতে ঢাকায় আসছেন জুবাইদা যুক্তরাজ্যের ৯ বিশ্ববিদ্যালয়ে নিষিদ্ধ বাংলাদেশি শিক্ষার্থী!

উইঘুর মুসলিমদের হাজার হাজার মসজিদ ধ্বংস করেছে চীন

৫২ বাংলা
  • আপডেট সময় : ০৫:৫২:২৩ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২০
  • / 1558
অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

সংখ্যালঘু উইঘুর মুসলিম অধ্যুষিত চীনের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের জিনজিয়াং প্রদেশে হাজার হাজার মসজিদ ধ্বংস করেছে চীনা কর্তৃপক্ষ। শুক্রবার অস্ট্রেলিয়ার একটি থিঙ্ক ট্যাঙ্ক প্রতিষ্ঠান এক প্রতিবেদনে জিনজিয়াংয়ে মুসলিমদের মসজিদ, কবরস্থান, মাজার ধ্বংস করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে।

উইঘুর মুসলিমদের ওপর চীনা কর্তৃপক্ষের ব্যাপক মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা প্রায়ই বিশ্ব গণমাধ্যমে আসছে। মানবাধিকার সংস্থাগুলো বলছে, ১০ লাখের বেশি উইঘুরকে জিনজিয়াংয়ের শত শত বন্দিশিবিরে আটকে রাখা হয়েছে। চীনের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় এই উইঘুরদের বেশিরভাগই তুর্কি মুসলিম। ঐতিহ্যবাহী ধর্মীয় কার্যক্রম ও ইসলামি রীতি-নীতি ত্যাগে উইঘুরদের ওপর চাপ প্রয়োগ করছে চীন।

অস্ট্রেলীয় স্ট্র্যাটেজিক পলিসি ইনস্টিটিউটের (এএসপিআই) প্রতিবেদনে জিনজিয়াংয়ে প্রায় ১৬ হাজার মসজিদ ধ্বংস অথবা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে জানানো হয়েছে। ওই এলাকার পরিসংখ্যানগত মডেলিংয়ের মাধ্যমে স্যাটেলাইটে প্রাপ্ত চিত্র বিশ্লেষণ করে শতাধিক পবিত্র স্থান ও হাজার হাজার মসজিদ ধ্বংসের প্রমাণ পেয়েছে সংস্থাটি।

এএসপিআই বলছে, বেশিরভাগ মসজিদ ধ্বংস করা হয়েছে গত তিন বছরে। প্রায় সাড়ে ৮ হাজার মসজিদ পুরোপুরি গুঁড়িয়ে দেয়া হয়েছে। এই ধ্বংসযজ্ঞ বেশি চালানো হয়েছে জিনজিয়াংয়ের রাজধানী উরুমকি ও কাশগর শহরের আশপাশে।

অস্ট্রেলীয় এই থিঙ্ক ট্যাঙ্ক বলছে, যেসব মসজিদ ধ্বংসযজ্ঞ থেকে রক্ষা পেয়েছে, সেসবের মিনার এবং গম্বুজ ভেঙে ফেলা হয়েছে। তবে এখনও জিনজিংয়াংয়ে প্রায় ১৫ হাজার ৫০০ মসজিদ অক্ষত এবং আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত অবস্থায় টিকে আছে।

এএসপিআই বলছে, এই পরিসংখ্যান যদি সত্যি হয়, তাহলে ১৯৯০ এর দশকে চীনে সাংস্কৃতিক বিপ্লবের পর মুসলিমদের উপাসনালয়ের সংখ্যা এবারই সর্বনিম্ন হবে। মসজিদ ধ্বংস করা হলেও জিনজিয়াংয়ে খ্রিস্টানদের গির্জা এবং বৌদ্ধদের মন্দির অক্ষত অবস্থায় রয়েছে বলে জানিয়েছে সংস্থাটি।

অস্ট্রেলীয় স্ট্র্যাটেজিক পলিসি ইনস্টিটিউট বলছে, মসজিদ ছাড়াও জিনজিয়াংয়ের অন্যান্য ইসলামি পবিত্র স্থাপনা – কবরস্থান, মাজার এবং তীর্থযাত্রার পথের এক-তৃতীয়াংশই ধ্বংস করা হয়েছে।

এর আগে, গত বছর ফরাসী বার্তাসংস্থা এএফপির এক অনুসন্ধানেও চীনের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের এই প্রদেশে কয়েক ডজন কবরস্থান ধ্বংস করা হয়েছে বলে উঠে আসে। সেই সময় গুড়িয়ে দেয়া কবরস্থানের ওপরে ইটের সঙ্গে মানবদেহের খণ্ড-বিখণ্ড অংশ পাওয়া যায়।

তবে চীন বলছে, প্রদেশটির বাসিন্দারা পুরোপুরি ধর্মীয় স্বাধীনতা উপভোগ করেন। গত সপ্তাহে দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ওয়াং ওয়েনবিন বলেন, জিনজিয়াংয়ে প্রায় ২৪ হাজার মসজিদ রয়েছে। সেখানকার জনসংখ্যার তুলনায় মসজিদের এই হার বিশ্বের অন্যান্য অনেক মুসলিম দেশের তুলনায় বেশি।

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

উইঘুর মুসলিমদের হাজার হাজার মসজিদ ধ্বংস করেছে চীন

আপডেট সময় : ০৫:৫২:২৩ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২০

সংখ্যালঘু উইঘুর মুসলিম অধ্যুষিত চীনের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের জিনজিয়াং প্রদেশে হাজার হাজার মসজিদ ধ্বংস করেছে চীনা কর্তৃপক্ষ। শুক্রবার অস্ট্রেলিয়ার একটি থিঙ্ক ট্যাঙ্ক প্রতিষ্ঠান এক প্রতিবেদনে জিনজিয়াংয়ে মুসলিমদের মসজিদ, কবরস্থান, মাজার ধ্বংস করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে।

উইঘুর মুসলিমদের ওপর চীনা কর্তৃপক্ষের ব্যাপক মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা প্রায়ই বিশ্ব গণমাধ্যমে আসছে। মানবাধিকার সংস্থাগুলো বলছে, ১০ লাখের বেশি উইঘুরকে জিনজিয়াংয়ের শত শত বন্দিশিবিরে আটকে রাখা হয়েছে। চীনের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় এই উইঘুরদের বেশিরভাগই তুর্কি মুসলিম। ঐতিহ্যবাহী ধর্মীয় কার্যক্রম ও ইসলামি রীতি-নীতি ত্যাগে উইঘুরদের ওপর চাপ প্রয়োগ করছে চীন।

অস্ট্রেলীয় স্ট্র্যাটেজিক পলিসি ইনস্টিটিউটের (এএসপিআই) প্রতিবেদনে জিনজিয়াংয়ে প্রায় ১৬ হাজার মসজিদ ধ্বংস অথবা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে জানানো হয়েছে। ওই এলাকার পরিসংখ্যানগত মডেলিংয়ের মাধ্যমে স্যাটেলাইটে প্রাপ্ত চিত্র বিশ্লেষণ করে শতাধিক পবিত্র স্থান ও হাজার হাজার মসজিদ ধ্বংসের প্রমাণ পেয়েছে সংস্থাটি।

এএসপিআই বলছে, বেশিরভাগ মসজিদ ধ্বংস করা হয়েছে গত তিন বছরে। প্রায় সাড়ে ৮ হাজার মসজিদ পুরোপুরি গুঁড়িয়ে দেয়া হয়েছে। এই ধ্বংসযজ্ঞ বেশি চালানো হয়েছে জিনজিয়াংয়ের রাজধানী উরুমকি ও কাশগর শহরের আশপাশে।

অস্ট্রেলীয় এই থিঙ্ক ট্যাঙ্ক বলছে, যেসব মসজিদ ধ্বংসযজ্ঞ থেকে রক্ষা পেয়েছে, সেসবের মিনার এবং গম্বুজ ভেঙে ফেলা হয়েছে। তবে এখনও জিনজিংয়াংয়ে প্রায় ১৫ হাজার ৫০০ মসজিদ অক্ষত এবং আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত অবস্থায় টিকে আছে।

এএসপিআই বলছে, এই পরিসংখ্যান যদি সত্যি হয়, তাহলে ১৯৯০ এর দশকে চীনে সাংস্কৃতিক বিপ্লবের পর মুসলিমদের উপাসনালয়ের সংখ্যা এবারই সর্বনিম্ন হবে। মসজিদ ধ্বংস করা হলেও জিনজিয়াংয়ে খ্রিস্টানদের গির্জা এবং বৌদ্ধদের মন্দির অক্ষত অবস্থায় রয়েছে বলে জানিয়েছে সংস্থাটি।

অস্ট্রেলীয় স্ট্র্যাটেজিক পলিসি ইনস্টিটিউট বলছে, মসজিদ ছাড়াও জিনজিয়াংয়ের অন্যান্য ইসলামি পবিত্র স্থাপনা – কবরস্থান, মাজার এবং তীর্থযাত্রার পথের এক-তৃতীয়াংশই ধ্বংস করা হয়েছে।

এর আগে, গত বছর ফরাসী বার্তাসংস্থা এএফপির এক অনুসন্ধানেও চীনের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের এই প্রদেশে কয়েক ডজন কবরস্থান ধ্বংস করা হয়েছে বলে উঠে আসে। সেই সময় গুড়িয়ে দেয়া কবরস্থানের ওপরে ইটের সঙ্গে মানবদেহের খণ্ড-বিখণ্ড অংশ পাওয়া যায়।

তবে চীন বলছে, প্রদেশটির বাসিন্দারা পুরোপুরি ধর্মীয় স্বাধীনতা উপভোগ করেন। গত সপ্তাহে দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ওয়াং ওয়েনবিন বলেন, জিনজিয়াংয়ে প্রায় ২৪ হাজার মসজিদ রয়েছে। সেখানকার জনসংখ্যার তুলনায় মসজিদের এই হার বিশ্বের অন্যান্য অনেক মুসলিম দেশের তুলনায় বেশি।