ঢাকা ০৫:০৫ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ০৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ২১ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :

ইমরান খানের খোঁজ নেই, সুস্থতার তথ্যও নয়: ছেলে কাসিম খান

৫২ বাংলা
  • আপডেট সময় : ০৪:৫৯:৩৪ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৮ নভেম্বর ২০২৫
  • / 60

ইমরান খান ও তার ছোট ছেলে কাসিম খান/

অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

পাকিস্তানের কারাবন্দি সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের অবস্থান ও শারীরিক অবস্থা নিয়ে গভীর দুশ্চিন্তা ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন তার ছেলে কাসিম খান। বৃহস্পতিবার (২৭ নভেম্বর) রাতে এক্সে (সাবেক টুইটার) দেওয়া এক পোস্টে তিনি অভিযোগ করেন, ৮৪৫ দিন ধরে তার বাবা কারাগারে এবং গত ছয় সপ্তাহ ধরে সম্পূর্ণ একাকীভাবে ডেথ সেলে রাখা হয়েছে। আদালতের স্পষ্ট নির্দেশ থাকা সত্ত্বেও খানের বোনদের সাক্ষাৎ আটকে দেওয়া হয়েছে বলেও দাবি করেন তিনি।

কাসিম লিখেছেন, কোনো ফোন কল নয়, কোনো সাক্ষাৎ নয়—বাবার সুস্থতা সম্পর্কেও কোনো তথ্য পাচ্ছি না। আমি ও আমার ভাই বাবার সঙ্গে কোনোভাবেই যোগাযোগ করতে পারছি না।

তিনি আরও বলেন, এভাবে অন্ধকারে আটকে রাখা কোনো নিরাপত্তা ব্যবস্থা নয়। তার অবস্থার তথ্য গোপন করতেই এবং আমাদের পরিবারকে অনিশ্চয়তায় রাখতে ইচ্ছাকৃতভাবে এসব করা হচ্ছে।

কড়া সতর্কবার্তায় কাসিম বলেন, আমার বাবার নিরাপত্তা এবং তাকে অমানবিকভাবে বিচ্ছিন্ন করে রাখার প্রতিটি পরিণতির পূর্ণ আইনগত, নৈতিক ও আন্তর্জাতিক দায় পাকিস্তান সরকার ও তাদের ‘মনিবদের’ ওপরই পড়বে।

আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের উদ্দেশে তিনি আরও বলেন, আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা, গণতন্ত্রে বিশ্বাসী প্রতিটি কণ্ঠ ও বিশ্ব সম্প্রদায়ের কাছে জরুরি হস্তক্ষেপের আহ্বান জানাচ্ছি। তার জীবিত থাকার নিশ্চয়তা দেওয়া হোক, আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী সাক্ষাৎ নিশ্চিত করা হোক, এই অমানবিক বিচ্ছিন্নতা বন্ধ করা হোক এবং রাজনৈতিক কারণে বন্দী পাকিস্তানের জনপ্রিয়তম রাজনৈতিক নেতার মুক্তি দাবি করা হোক।

এদিকে, ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এএনআইকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ইমরান খানের বোন নোরিন নিয়াজি বলেন, “আমরা কিছুই জানি না। তারা আমাদের কিছু বলছে না, কাউকে দেখা করতে দিচ্ছে না। দলের নেতাদের নির্ধারিত সাক্ষাৎও বাতিল করা হয়েছে। চার সপ্তাহ ধরে আমাদের সাক্ষাৎ নিষিদ্ধ। ভারতে তো এমন খবরও ছড়িয়েছে যে তাকে হত্যা করা হয়েছে।”

নোরিনের অভিযোগ, ইমরানপন্থিদের দমনে পাকিস্তানি প্রতিষ্ঠানগুলো পুলিশকে পুরোপুরি খোলা ছাড় দিয়েছে। শিশু, নারী, বয়োবৃদ্ধ—কারও প্রতিই সম্মান বা সহানুভূতির আচরণ করা হচ্ছে না বলেও তিনি অভিযোগ করেন।

তার ভাষায়, “আমাদের থামাতে পুলিশকে এমনভাবে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে যে তারা যা খুশি করতে পারে। পাকিস্তানে আগে কখনো এমন হয়নি। নারীদের এভাবে অসম্মান করা হয়নি। সামনে নারী-শিশু-বয়োবৃদ্ধ যেই থাকুক, এবারই প্রথম এভাবে নির্লজ্জভাবে মানুষকে পেটানোর অনুমতি দেওয়া হয়েছে।”

এদিকে বৃহস্পতিবার (২৭ নভেম্বর) ইমরান খান ও তার স্ত্রী বুশরা বিবির অবস্থার খবর নিতে রাওয়ালপিন্ডির আদিয়ালা কারাগারে যান খাইবার পাখতুনখোয়ার মুখ্যমন্ত্রী সুহাইল আফ্রিদি। এ সময় পিটিআইয়ের আইনপ্রণেতা ও বহু সমর্থক কারাগারের বাইরে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করেন।

তবে ইমরান খানের আরেক বোন আলেমা খান ভাইয়ের খোঁজ নিতে কারাগারে প্রবেশ করতে চাইলে তাকে অনুমতি দেওয়া হয়নি। এরপর তার স্বাস্থ্যের নানা গুজব, এমনকি কিছু মাধ্যমে মৃত্যুর গুজবও ছড়িয়ে পড়ে। তবে কারা কর্তৃপক্ষ এসব গুজব প্রত্যাখ্যান করে জানায়, ইমরান খান আদিয়ালা কারাগারেই আছেন এবং সুস্থ আছেন।

নিউজটি শেয়ার করুন

ইমরান খানের খোঁজ নেই, সুস্থতার তথ্যও নয়: ছেলে কাসিম খান

আপডেট সময় : ০৪:৫৯:৩৪ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৮ নভেম্বর ২০২৫

পাকিস্তানের কারাবন্দি সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের অবস্থান ও শারীরিক অবস্থা নিয়ে গভীর দুশ্চিন্তা ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন তার ছেলে কাসিম খান। বৃহস্পতিবার (২৭ নভেম্বর) রাতে এক্সে (সাবেক টুইটার) দেওয়া এক পোস্টে তিনি অভিযোগ করেন, ৮৪৫ দিন ধরে তার বাবা কারাগারে এবং গত ছয় সপ্তাহ ধরে সম্পূর্ণ একাকীভাবে ডেথ সেলে রাখা হয়েছে। আদালতের স্পষ্ট নির্দেশ থাকা সত্ত্বেও খানের বোনদের সাক্ষাৎ আটকে দেওয়া হয়েছে বলেও দাবি করেন তিনি।

কাসিম লিখেছেন, কোনো ফোন কল নয়, কোনো সাক্ষাৎ নয়—বাবার সুস্থতা সম্পর্কেও কোনো তথ্য পাচ্ছি না। আমি ও আমার ভাই বাবার সঙ্গে কোনোভাবেই যোগাযোগ করতে পারছি না।

তিনি আরও বলেন, এভাবে অন্ধকারে আটকে রাখা কোনো নিরাপত্তা ব্যবস্থা নয়। তার অবস্থার তথ্য গোপন করতেই এবং আমাদের পরিবারকে অনিশ্চয়তায় রাখতে ইচ্ছাকৃতভাবে এসব করা হচ্ছে।

কড়া সতর্কবার্তায় কাসিম বলেন, আমার বাবার নিরাপত্তা এবং তাকে অমানবিকভাবে বিচ্ছিন্ন করে রাখার প্রতিটি পরিণতির পূর্ণ আইনগত, নৈতিক ও আন্তর্জাতিক দায় পাকিস্তান সরকার ও তাদের ‘মনিবদের’ ওপরই পড়বে।

আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের উদ্দেশে তিনি আরও বলেন, আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা, গণতন্ত্রে বিশ্বাসী প্রতিটি কণ্ঠ ও বিশ্ব সম্প্রদায়ের কাছে জরুরি হস্তক্ষেপের আহ্বান জানাচ্ছি। তার জীবিত থাকার নিশ্চয়তা দেওয়া হোক, আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী সাক্ষাৎ নিশ্চিত করা হোক, এই অমানবিক বিচ্ছিন্নতা বন্ধ করা হোক এবং রাজনৈতিক কারণে বন্দী পাকিস্তানের জনপ্রিয়তম রাজনৈতিক নেতার মুক্তি দাবি করা হোক।

এদিকে, ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এএনআইকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ইমরান খানের বোন নোরিন নিয়াজি বলেন, “আমরা কিছুই জানি না। তারা আমাদের কিছু বলছে না, কাউকে দেখা করতে দিচ্ছে না। দলের নেতাদের নির্ধারিত সাক্ষাৎও বাতিল করা হয়েছে। চার সপ্তাহ ধরে আমাদের সাক্ষাৎ নিষিদ্ধ। ভারতে তো এমন খবরও ছড়িয়েছে যে তাকে হত্যা করা হয়েছে।”

নোরিনের অভিযোগ, ইমরানপন্থিদের দমনে পাকিস্তানি প্রতিষ্ঠানগুলো পুলিশকে পুরোপুরি খোলা ছাড় দিয়েছে। শিশু, নারী, বয়োবৃদ্ধ—কারও প্রতিই সম্মান বা সহানুভূতির আচরণ করা হচ্ছে না বলেও তিনি অভিযোগ করেন।

তার ভাষায়, “আমাদের থামাতে পুলিশকে এমনভাবে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে যে তারা যা খুশি করতে পারে। পাকিস্তানে আগে কখনো এমন হয়নি। নারীদের এভাবে অসম্মান করা হয়নি। সামনে নারী-শিশু-বয়োবৃদ্ধ যেই থাকুক, এবারই প্রথম এভাবে নির্লজ্জভাবে মানুষকে পেটানোর অনুমতি দেওয়া হয়েছে।”

এদিকে বৃহস্পতিবার (২৭ নভেম্বর) ইমরান খান ও তার স্ত্রী বুশরা বিবির অবস্থার খবর নিতে রাওয়ালপিন্ডির আদিয়ালা কারাগারে যান খাইবার পাখতুনখোয়ার মুখ্যমন্ত্রী সুহাইল আফ্রিদি। এ সময় পিটিআইয়ের আইনপ্রণেতা ও বহু সমর্থক কারাগারের বাইরে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করেন।

তবে ইমরান খানের আরেক বোন আলেমা খান ভাইয়ের খোঁজ নিতে কারাগারে প্রবেশ করতে চাইলে তাকে অনুমতি দেওয়া হয়নি। এরপর তার স্বাস্থ্যের নানা গুজব, এমনকি কিছু মাধ্যমে মৃত্যুর গুজবও ছড়িয়ে পড়ে। তবে কারা কর্তৃপক্ষ এসব গুজব প্রত্যাখ্যান করে জানায়, ইমরান খান আদিয়ালা কারাগারেই আছেন এবং সুস্থ আছেন।