আমিও ধর্ষক
- আপডেট সময় : ১২:৫৮:১০ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২০
- / 1967
আরিয়ান কাল রাতে ঘুমাতে পারেনি। বারবার তার চোখে ভাসছে সিলেটের প্রিয় শিক্ষালয় এমসি কলেজ। তরুণ দম্পতির জীবন ওলট-পালট করে দেয়া ঘটনাটি তার মনে বিধে গেছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম-ও তাকে দিচ্ছে না ভুলে থাকতে। মনে হয় সবখানে, সববিষয়ে, কোথাও যেন কেউ থেকেও নেই।
ভোরে ঘুম লাগতেই আরিয়ান দেখেছে একটি স্বপ্ন। আরিয়ান লেখক নয়। তারপরও সে ভেবেছে, তার দেখা স্বপ্নটি লিখা থাকুক। কথায় বলে, গল্পের গোড়া আকাশেও উড়ে। স্বপ্ন ও ভেতরের বোধকে মেলে ধরতে আরিয়ান স্বপ্ন ও বাস্তবতার ভিতর দিয়ে হাটতে চেষ্টা করেছে। আরিয়ান এটাও জানে, ‘স্বপ্ন ও বাস্তবতা’ পরিবেশ,প্রতিবেশ ও সময়কে ধারণ করে চলে বলেই কেউ কেউ জেগে থাকে গহীন অন্ধকারকে সঙ্গী করে।
আরিয়ানের গল্পটি মনের সিনোফ্রেমে দেখা যেতে পারে:
তাড়াতাড়ি ঢুকুন, শো শুরু হয়ে যাবে এখনই। কতদিন পরে সিনেমা দেখতে এসেছি, মনে নেই। স্কুল পালিয়ে দুরু-দুরু বুকে, এই ধরা খাই-ধরা পড়ি, দেখে ফেলেনি-তো কোন বড়ভাই, পাড়ার কেউ- এই ভয়টা স্মৃতিতে উকি মারলেও হাসি না ছড়িয়ে আমরা দুজন ঢুকেছি সিনেমা হলে।
এদিক- ওদিক না থাকালেও অন্ধকারে বুঝা গেল হল ভরা মানুষ।
সিটে বসে হাতের পককর্ণ বক্স খুলে দেখছি পর্দা উঠছে।
দৃশ্যপট: এক
…….এইটা তো আমার জন্মভূমে চিত্রায়িত। আমার সিলেট। সামনের ফটকের ছবিটা দেখে আরও উত্তেজনা এলো-এই ফটক তো মনে বিধে আছে, এই পথে লেগে আছে আমাদের পায়ের কত ছাপ। পবিত্র হজে গিয়ে নবী ইব্রাহিম আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর পায়ের সংরক্ষিত ছবি দেখে মুগ্ধ হয়েছিলাম। তারপর থেকে পায়ের ছাপ নিয়ে মনে একটা বিশাল কৌতুহল কাজ করে। মনে হয় এই জনমে অগনণ মানুষের কাছে এসেছি। তাদের দেয়া সাহায্য,কৃতজ্ঞতা, ভালোবাসা, স্নেহ- মমতার ছাপগুলো এতোকাল কী আগলে রাখতে পেরেছি সযতনে? দয়াময় তো ভালোবেসে সেটা সংরক্ষণে রেখেছেন? আমাদের দেখার জন্য। ইতিহাসের ঐতিহ্য,চিহ্নকে মনে রেখে সময়কে ধারণ করার জন্য।
স্কিনে যেটা দেখছি,এটা তো আমার শিক্ষায়ল। এমসি কলেজ।
দৃশ্যপট: দুই
ক্যাম্পাসের একপাশ দিয়ে দুজন হাটছে। তরুণ-তরুণী। দেখলেই বুঝা যায়, তারা একান্ত আপনজন। আপন সময়কে ভাগাভাগি করেই হাটছে। বাংলাদেশে এই রকম দৃশ্য সচরাচর চোখে পড়ে না।
শুনেছি,ইউরোপে মাল্টিকালচারাল পরিবেশ ভীতুকেও সাহসী করে তুলে। সেখানে হাত ধরা, ছোয়া ছোয়ি করে হাটা চলা যায়। অনুভবে মজা লাগে। নিজেকে নাকি এইসব মুহুর্তে বীর বীর মনে হয়।
হঠাৎ কি হলো ? কয়েকজন এসে তাদের ঘিরে ধরেছে দেখছি। তারপর তাদেরকে জটলার মধ্যে রেখে হলের হোস্টেলের দিকে যাচ্ছে। সবাই ঢুকলো ভিতরে। শাড়ি পড়া মেয়েটার হাত ধরে টানা টানি চলছে। ছেলেটাকে দুজন চড় তাপ্পড় মারছে। ভালোবাসলে ধকল পোহাতে হয়।সাহস মনে জমে যায় এমনিতেই। প্রেমে পড়া, বাবা-মার অবাধ্য হয়ে ছেলে- মেয়েদের চোখে মুখেও এমন অনেক ইনসিডেন্ট দেখেছি। সিনেমা , নাটকেও দেখা যায় হরহামেশা। কিন্তু তাদের এই দুজনের চোখে-মুখে এতো ভয় কেন? সমস্ত শক্তি দিয়ে হাত ছাড়ানোর আকুতি তাদের।
তরুণ ছেলেটাকে আটকে আরেকটি রুমে বেধে রাখতে চাইছে। কি করেছে সে। কিছুই বুঝা যাচ্ছে না। সে এভাবে হাতে পায়ে ধরে কী আকুতি মিনতি করছে, কোন কারণে, দৃশ্যপটে পরিস্কার নয়।
দৃশ্যপট: চার
প্রচন্ড শব্দে চিৎকার শুনা যাচ্ছে মেয়েটার। সাথে অনেক শব্দ…‘ ভাই, আমি আপনার বোনের মতো। আমার গায়ে হাত দিও না। আমার শাড়ি ছিড়িও না ভাই। ও- আল্লাহ। আল্লা-রেবা। আমারে ছাড়ো….।’
কী হচ্ছে এখানে। সিনেমার দৃশ্যপটে ক্লাইমেক্স না থাকলে দর্শক ধরে রাখা যায় না। এখানে হঠাৎ দরজা বন্ধ করা, তরুণীর অস্বাভাবিক চিৎকার।আকুতি। মিনতি। ভয়ে প্রাণ বাচানোর মুখায়ব দেখছি শুধু…।
দৃশ্যপট পাচ :
হটাৎ রুম থেকে বেরিয়ে এলো ৩-৪ জন উঠতি যুবক। ভিতরে মেয়েটির চিৎকার,…‘ ও-ভাই, ও -আল্লাহ।
যুবকদের শব্দও ভেসে আসছে-‘… এই চুপ, চুপ। কথা কইস না। এই তুই দুই হাত ধর। কইছি নু আনা-মাতি থাখতে……।’
প্রচন্ড ধস্তাধস্তির শব্দ। মেয়ের কান্নার শব্দ,‘… ও- আম্মা…… গো, ও- আব্বা…..’ ইত্যাদি।
দৃশ্যপট : ছয়
তিন চারজন দরজা খুলে দ্রুত বের হলো।বাইরের বাকিরাও দ্রুত ঢুকলো।… ধস্তাধস্তির শব্দ কিছুটা কমে গেছে। মেয়ের কণ্ঠস্বর আগের মতো নেই।তারপরও ভেসে আসছে,‘ -আমারে মারি লাইবায়। আমারে আর মারিও না । তোমাদের পাওয় ধরিয়ার….ও- আল্লাহ।
দৃশ্যপট: সাত
সাত যুবক প্যান্টের বেল্ট লাগিয়ে দ্রুত সরে গেল। মেয়েটির কোন সাড়া শব্দ নেই। ওপাশ থেকে তরুণের কণ্ঠ শুনা যাচ্ছে- ‘…আমরারে বাচাও। ও- আল্লাহ … আমরারে বাচাও…..।‘
দৃশ্যপট: আট
পুলিশ আধ খোলা দরজা দিয়ে একটু দেখে দ্রুত ভিতরে ঢুকছে। মেয়েটির দুটি পা দেখা যাচ্ছে। হাটুর নিচ পর্যন্ত। পাগুলো রক্তাক্ত, তেতালো। রক্তজমাট বাধা অনেক দাগ। মনে হচ্ছে এই পা আমি একটু আগে দেখেছি। একটি যুগল হাটছিল প্রিয় এমসি কলেজ ক্যাম্পাসে। পাশাপাশি। নিরবে ।দুজনে, অনুভবের সময় পার করছিল।
যুগলের মুখ দেখা যাচ্ছে না। চিত্রগ্রাহক পেছন থেকেই ধারণ করেছে। হয়তো দৃশ্যপটকে আরও বেশী ক্লাইমেক্স এ রাখতে দৃশ্যটি এভাবেই রাখা হয়েছে।
দৃশ্যপট: নয়
এই অংশে,হঠাৎ দৃশ্য বদল। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের ছবি আসছে। দেখা যাচ্ছে, একটি মেয়ের পায়ের রক্তাক্ত ছবি। পুলিশের ছবি। কয়েক যুবকের ছবি। ট্রলের ছবিগুলোকে এবার ফ্রিজ করা হয়েছে। ছবিগুলো দেখি আমাদের দুজনের চেনা। আমাদের এমসি কলেজ এর প্রধান ফটকের ছবি। ঝটলা ধরা ছেলেগুলো এই যুগলদের নিয়ে গিয়েছিল হোস্টেলে। প্যান্টের ব্যাল্ট লাগিয়ে হলরুম থেকে দ্রুত সরিয়ে পড়া ছেলেগুলো তো এই রুমেই ছিল।
দৃশ্যপট : দশ
দৃশ্যে ভাসছে মেয়েটির রক্তাক্ত পায়ের ছবি। পুলিশ বলছে আসামি ক্ষমতাসীন দল বা যতই প্রভাবশালী হোক কেউ রেহাই পাবে না।
পুলিশ মলিন মুখ ধরে রাখার চেষ্টা করে বলছে- তরুণীকে হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে….।
দৃশ্যপট: এগারো
আমি আর নিতে পারছিনা। আমাদের পপকর্ণ আর খাওয়া হয়নি। পাশে থাকা বৌ নিলীমাও পপকর্ণ স্পর্শ করেনি। অথচ সেই সবার আগে সাবাড় করে মুখরোচক এইসব।
নীলিমা কোন কথা বলছেনা। আমি নীলিমার হাতের উপর হাত রেখেছি। বুঝতে পারছি তার হাতও নড়ছে না। চোখে চোখ রাখবো। সেটাও পারছি না।
হাত মুঠোবদ্ধ করে বসার চেয়ারে একটি সজরে আঘাত করলাম।
দেখি নিলীমা কাদছে। বলল- আমার পরিবাররে যদি কেউ হতো তাহলে নিজ হাতে ওর লিঙ্গ কেটে দিতাম। ছি…। কী হচ্ছে এসব…।
আমি বললাম – এই শালাদের ক্রস ফায়ারে না দিয়ে কুচি কুচি করে কেটে মাগুর- পাঙ্গাস মাছকে খাওয়াতে পারলে কিছুটা শান্তি পেতাম।
পেছনেও শুনি অনেক উচ্চকণ্ঠ .. শালাদের মা বোন নাই। বৌ-বাচ্চা নাই। পরের বৌরে ছু…‘ এতো শখ। তোর নিজের বৌরে যদি এমন গণ‘….ছু..’ দিত তখন বুঝতি। এগুলা বেজম্মার জাত..।আরও তো সরকারী দলের, দেখবা কোন কিছুই হবে না… ইত্যাদি।
দৃশ্যপট: তের
পুলিশ কমিশনার সংবাদ সম্মেলন করছেন। ফেইসবুক লাইভ দৃশ্য এখন দেখাচ্ছে পর্দায়।
দেখে মনে হচ্ছে পুলিশ কমিশনার সপ্রতিভ মুডে আছেন। সামনে গণমাধ্যমের অসংখ্য মাইক্রো-বুম রাখা। কমিশনার শুরু করলেন ‘ -.. একটা বিষয় পরিস্কারভাবে জানিয়ে দিতে চাই- যারা এই পাশবিক কাজে জড়িত তাদের ছাড় দেয়া হবে না। আমরা ইতিমধ্যে ৩ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করেছি। তদন্ত কমিটির রিপোর্টের ভিত্তিতে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
মুখ থেকে অপকটে বের হলো খিস্তি খেউড়,…. শালা, ঐ একই প্যাচাল, তদন্ত কমিটির রিপোর্ট দেখে ব্যবস্থা নেয়া হবে। না পারলে ,আমাদের হাতে ছেড়ে দেয়। দেখ কি করি..।
নীলিমা মনে হলো ক্রোধে কাপছে– আমি যদি পাইতাম, তাইলে ওর সুনোটারে কেটে ওর পাছায় ঠুকিয়ে দিতাম…..।
পিছনেও চলছে সমালোচনা, শুনা যাচ্ছে এইসব ,‘… শালা সব ভন্ড। সরকারী দল। ক্যাডার পুষে পুলিশ। তারা করবে নিরপেক্ষ তদন্ত…।
কমিশনার প্রায় শেষ করেছেন তার সংবাদ সম্মেলন। একজন সংবাদকর্মী পেছন থেকে বলছেন স্যার- স্যার একটি বিষয় জানার ছিল।
কমিশনার বললেন, এর চেয়ে বেশী বলার এখনও সময় আসেনি। যা বলার তা বলেছি । এখানে লুকানো- চাপানোর কিছু নেই।
-স্যার জানতে চাইছি- অভিযুক্তদের নাম ও পরিচয়টি প্রকাশ করবেন আমাদেরকে। ইতিমধ্যে তাদের নাম সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম সহ সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশ পেয়েছে। আপনাদের বক্তব্য কী?
কমিশনাররের মুখ ও কণ্ঠে কিছুটা অপ্রতিভ ভাব। তারপর সহকারী একজন পুলিশ অফিসারের কাছ থেকে তালিকাটি নিয়ে প্রকাশ করতে লাগলেন- ধর্ষকদের নাম, পরিচয়,ঠিকানা ।
নীলিমা বললো- ও -আল্লাহ এতো দেখি আমাদের উপজেলারও দুজন।
আমিও শুনছি। বললাম- কথা বলবে না এখন, আগে শুনি।
নীলিমা আবার বলল, কী বলছে এসব, কমিশনার।
এখানে তাদের নাম আসলো কীভাবে। আমাদের ভাইদের নাম এখানে কিভাবে আসতে পারে?
আমি হীম হয়ে রইলাম। কারণ পুলিশ আমাদের উপজেলার যে দুজনে নাম বলেছে, তারা দুজন আমাদেরই স্বজন। নীলিমা ও আমি সম্পর্কে মামা- ফুফাতো ভাই- বোন। আমাদের বিয়ের তিন বছর চলছে।
ধর্ষণকারী দুজন আমাদের দুজনের দুই ভাই। তারা দুজনই এমসি কলেজে পড়ত।
আমার খুব ইচ্ছে হচ্ছে আমার মুখ লুকিয়ে নীলিমাকে দেখতে। কিন্ত পারছি না। নীলিমার-ও কী মনে হচ্ছে – আমার মতো?
ফেইসবুকে ট্রল হচ্ছে ছয়জনের ছবি। এর মধ্যে আমরা স্বামী-স্ত্রী দুজনের দুই ভাই এর ছবি-ও।
আমি দাড়াতে চাইছি। কিন্তু পারছি না। নীলিমা দাড়িয়েছে। পিছন দিক থেকে দর্শক বলছে, এই ম্যাডাম আপনার আবার কী হলো, বসুন তাড়াতাড়ি। আমরা দেখতে পারছি না। আরেকজন বলল- মনে হয় উনার কোন আত্নীয়-টাত্নীয় হবে,দেখে পালাতে চাইছে।
আমি ঘামতে শুরু করেছি। নীলিমাকে বললাম- চল বেরিয়ে পড়ি।
পেছন থেকে আওয়াজ এলো- আপনি ঠিকই কইছেন ভাই। ধর্ষণকারীদের ছবি দেখে তারা হয়তো চিনে গেছে। তাই ক্লাইমেকস সময়েই পালাচ্ছে।
দৃশ্যপট : পনের
আমরা দ্রুত পায়ে হাটছি। মনে হচ্ছে পেছন দিক থেকে কেউ আমাদের দেখছে। কেউ একজন ডাকছেও।
নীলিমা বলল- আমরা এখন কোথায় যাবো। বাড়িতে?নাকি ভাইদের খুজতে?
আমি নির্বাক হাটছি।
নীলিমা চরম রাগ করে বলল ,কথা বলছো না কেন? কানে যায় না।
আমি বললাম- তুমি বলো- কোথায় যাওয়া উচিত?
-আমি জানিন না।
আমি বললাম আমারও মাথায় আসছে না- কোথায় যাবো?বাড়িতে?নাকি ভাইদের খুজতে?না- নির্যাতিত তরুণীর পাশে?
নীলিমা আমার দিকে চেয়ে আছে। কিছুই বলছে না। প্রথম থেকেই নীলিমার চোখগুলো আমার ভালোলাগে। জলভরা, মায়াভরা চোখগুলো আমার খুব পছন্দ। একটু কিছু হলেই তার চোখে জল চলে আসে। এদৃশ্য আমার যাপিত জীবনে খুব স্বাভাবিক। কিন্তু এই প্রথম নীলিমার চোখে কোন জল নেই।
সে আমার ডান হাতে ধরে দ্রুত সামনে চললো- আমাদের এখানে ভাই বলে কেউ নেই। আমরা বোনটির পাশে যাচ্ছি।
তারপর থানায় যাবো। যতদিন ধর্ষক ধরা না পড়ছে।ততোদিন স্বেচ্চায় কারাবন্দি থাকবো। নীলিমা আমার হাত ছেড়ে পার্ক করা গাড়ির দিকে এগুতে লাগল।
আমি কিছুটা পেছনে পড়ে গেলাম। প্রিয় ভাইটির মুখ খুজতে চাইছিলাম অজান্তেই। কিন্তু ভাইয়ের মুখ ভাসছে না। নির্যাতিত নিস্পাপ মেয়েটির রক্তাক্ত পা গুলো চোখে আটকে রইল।
নীলিমা আমি দুজনই হাটছি। এতক্ষণে আমাদের মধ্যখানে কিছুটা দূরত্ব তৈরী হয়েছে। আমি একটু দৌড়ে তার পাশাপাশি হলাম। তারপর, তার মতো, যেমনটি আমাকে একটু আগে ধরে ছিল, হঠাৎ করে। সেভাবে, হাত ধরে বললাম- আমিও আমি যাচ্ছি তোমার সাথে। একই কাজে, এক সাথে।
এখন থেকে আমরাও অপরাধী। যতদিনে পর্যন্ত ধর্ষকরা ধরা পড়ছে না। আমরা স্বেচ্ছায় কারাবন্দি থাকবো। পুলিশ না নিলে সমস্যা নেই। থানার পাশে খোলা আকাশের নিচে দিন পার করবো যতদিন ধর্ষক গ্রেফতার না হয়।
নীলিমা আমার চোখের দিকে চেয়ে আছে। আমি খুজছি নিস্পাপ যুগলদের আগামী দিনের দীর্ঘশ্বাস।
আনোয়ারুল ইসলাম অভি : কবি , সাংবাদিক । লন্ডন
আরও পড়ুন:
https://52banglatv.com/2020/04/18032/
























