অসমে ফের মুসলিমদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সরকারি কোপ
- আপডেট সময় : ১১:৩৫:৪৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৪ ফেব্রুয়ারী ২০২০
- / 1555
অসমে মুসলিমদের শিক্ষা ও সংস্কৃতি রীতিমতো হুমকির মুখে! সংবিধানের আর্টিকল ৩০ অনুযায়ি ধর্মীয় ও নিজস্ব শিক্ষা-সংস্কৃতির চর্চা করা, স্কুল-মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠা করা সংখ্যালঘুদের সাংবিধানিক অধিকার হলেও বিজেপি শাসিত রাজ্য অসমে সে-সকল অধিকার একে একে খর্ব হচ্ছে! ২০১৬ সালে প্রথম বারের মতো বিজেপি নেতৃত্বাধীন এনডিএ (জোট সরকার) অসমে ক্ষমতাসীন হওয়ার পর থেকে একে একে মুসলিমদের শিক্ষা-সংস্কৃতিতে ধস নেমেছে! সর্বানন্দ সনোয়ালের মুখ্যমন্ত্রিত্বে এনডিএ সরকার গঠন করার পর থেকে ক্রমে রাজ্যের সংখ্যালঘু প্রতিষ্ঠান সমূহকে টার্গেট করা হয়েছে। প্রথমে মাদ্রাসা সমূহের শুক্রবারের সাপ্তাহিক ছুটি বাতিল করে রবিবার করা হয়েছে।
আগে রমজান মাসে সরকারি মাদ্রাসাগুলো পূর্ণ এক মাসের জন্য ছুটি থাকত। বিজেপি সরকার সেই যুগ যুগ ধরে চলতে থাকা পরম্পরাগত রমজান মাসের ছুটি বাতিল করে দেয়। বছরের পর বছর ধরে রাজ্যের সরকারি মাদ্রাসাগুলো নিয়ন্ত্রিত হত রাজ্যিক মাদ্রাসা বোর্ড ও মাদ্রাসা সঞ্চালকালয় দ্বারা। বিজেপি ক্ষমতায় আসার পর মাদ্রাসা বোর্ড ভেঙে দিয়ে মাদ্রাসা সঞ্চালকালয়কে বাতিল করে দেয় ও মাধ্যমিক সঞ্চালকালয় দ্বারা মাদ্রাসা শিক্ষা নিয়ন্ত্রিত হচ্ছে। সম্প্রতি রাজ্যের ৭০৬ টি সরকারি ও অনুদানপ্রাপ্ত টাইটেল মাদ্রাসা, এরাবিক কলেজ, সিনিয়র মাদ্রাসা ও প্রি-সিনিয়র মাদ্রাসাকে মাধ্যমিক স্কুলে রূপান্তরিত করার কথা ঘোষণা করা হয়েছে।
এখানেই শেষ নয়; গতকাল শিক্ষামন্ত্রী হিমন্তবিশ্ব শর্মা ঘোষণা করেছেন, রাজ্যের ৬৩ টি মক্তবকেও প্রাথমিক স্কুলে রূপান্তরিত করা হবে! উল্লেখ্য, মক্তবগুলোতে প্রাথমিক শিক্ষা-ই দেয়া হয়ে থাকে। কিন্তু ‘মক্তব’ শব্দে শিক্ষামন্ত্রী হিমন্তবিশ্ব শর্মার তীব্র আপত্তি। তাই, অবিলম্বে ইসলামি গন্ধযুক্ত শব্দ বাদ দিতে রাজ্যের শিক্ষা বিভাগকে নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। এ নিয়ে মুসলিম জনমানসে তীব্র অসন্তোষ পরিলক্ষিত হচ্ছে। অনেকেই আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন, অদূর ভবিষ্যতে মুসলিম ছেলেমেয়েদের ইসলামি নামকরণেও নিষেধাজ্ঞা প্রদান করতে পারে অসমের বিজেপি সরকার! কেউ কেউ মায়ান্মারের নির্যাতিত রোহিঙাদের সঙ্গে অসমের মুসলিমদের তুলনা করতে শুরু করে দিয়েছেন! কিন্তু কোথাও সরকারের এসব অসাংবিধানিক কর্মকাণ্ডের জোরালো প্রতিবাদ পরিলক্ষিত হচ্ছে না। কেউ কেউ অবশ্য আইনের আশ্রয় নেয়ার কথা বলছেন।

























