ঢাকা ১২:৪২ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ০৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ২১ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশে আরও ৩০ দেশের নাগরিকের ওপর নিষেধাজ্ঞা খাঁচা থেকে বের হওয়া সিংহী আড়াই ঘণ্টা পর নিয়ন্ত্রণে লন্ডনে ফ্লাই রবিবার, নির্জন কারাবাস থেকেই খালেদা জিয়ার ‘নানা রোগের সূচনা’ জানালেন ফখরুল মহাকাশ থেকে পবিত্র  কাবা শরিফের উজ্জ্বল ছবি আন্দোলনে থাকা প্রাথমিকের শিক্ষকদের বদলি, ‘শাটডাউন’ কর্মসূচি স্থগিত তারেক রহমানের দেশে ফেরা আবার অনিশ্চিত, কীভাবে ভোটার হবেন? খালেদা জিয়া ছাড়া পরিবারের কেউ ভিভিআইপি সুবিধা পাবেন না কুকুরছানা হত্যা মামলায় মায়ের সঙ্গে কারাগারে ২ বছরের শিশু খালেদা জিয়াকে লন্ডন নিতে ঢাকায় আসছেন জুবাইদা যুক্তরাজ্যের ৯ বিশ্ববিদ্যালয়ে নিষিদ্ধ বাংলাদেশি শিক্ষার্থী!

অবশেষে ‘শাপলা কলি’ই নিচ্ছে এনসিপি, ৩০০ আসনে প্রার্থী দেওয়ার ঘোষণা

৫২ বাংলা
  • আপডেট সময় : ০৫:৩৩:২৬ অপরাহ্ন, রবিবার, ২ নভেম্বর ২০২৫
  • / 69

নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে বৈঠক শেষে এনসিপির ব্রিফিং

অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

প্রতীক হিসেবে ‘শাপলা’র দাবিতে অনড় অবস্থান থেকে সরে এসেছে গণঅভ্যুত্থানের নেতৃত্ব দেওয়া তরুণদের দল জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)।

রোববার (২ নভেম্বর) বিকেলে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এর সঙ্গে বৈঠক শেষে এ সিদ্ধান্তের কথা জানান এনসিপির মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী।

তিনি বলেন, “শাপলা, সাদা শাপলা ও শাপলা কলিকে দলের প্রতীক হিসেবে চেয়ে ইসিতে চিঠি দিয়েছে জাতীয় নাগরিক পার্টি। শাপলা কলি দেওয়া হলে এনসিপি নেবে। তৃণমূল কলিকে ইতিবাচক হিসেবে নিয়েছে।”

আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে এনসিপিসহ দুটি দলকে নিবন্ধন দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।

এর মধ্যে এনসিপিকে তফসিলে থাকা ৫০টি প্রতীকের মধ্যে থেকে প্রতীক বেছে নিতে ৭ অক্টোবর পর্যন্ত সময়সীমা নির্ধারণ করেছিল ইসি। কিন্তু নির্ধারিত সময়ের মধ্যে প্রতীক না নিয়ে বিধি সংশোধন করে শাপলা প্রতীকের দাবি জানায় এনসিপি। তবে ইসির পক্ষ থেকে জানানো হয়, তালিকায় না থাকায় শাপলা প্রতীক দেওয়া সম্ভব নয়।

এরপর এনসিপি নেতারা ঘোষণা দেন, তাঁরা শাপলা প্রতীকেই ভোট করবেন, আর এই প্রতীক না পেলে নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে আন্দোলন করবেন।

এই অনড় অবস্থান ও রাজপথে নামার হুঁশিয়ারির মধ্যেই গত বৃহস্পতিবার ইসি প্রতীক তালিকায় ‘শাপলা কলি’সহ চারটি নতুন প্রতীক যুক্ত করে।

তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় এনসিপির যুগ্ম সদস্য সচিব জহিরুল ইসলাম মুসা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “এনসিপি শাপলাই চায়। আমরা যখন শাপলা চেয়েছি, তখন নির্বাচন কমিশন বলেছে— ‘তালিকায় নাই তাই, দেওয়া যাবে না’। এখন তারা ‘শাপলা কলি’ কীভাবে প্রতীক তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করেছে, তা স্পষ্ট করতে হবে।”

‘শাপলা’ প্রতীক নিয়ে অনড় অবস্থান থেকে সরে আসার বিষয়ে এক প্রশ্নে নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেন, “এটাকে ইঞ্জিনিয়ারিং কমিশন বলতে পারি। এই ইঞ্জিনিয়ারিং কমিশনে এসেছি, এখানে অনেক কিছু ইঞ্জিনিয়ারিং হচ্ছে। সো ইঞ্জিনিয়ারিং কমিশনের জায়গা থেকে আমরা আমাদের ফাইটটা করে যাচ্ছি। এবং সেই ফাইটিংয়ের জায়গায় আমরা শাপলা কলি নিচ্ছি, অ্যাপ্লাই করেছি।”

তিনি আরও বলেন, “আমরা শাপলা কলি নিব। আমরা এখন এখানে একটা বিষয় আপনাদের থাকতে পারে যে, আমরা বলছি শাপলার, কিন্তু আমরা এখনো ব্যাখ্যা পাইনি। নির্বাচন কমিশনের যে স্বেচ্ছাচারী আচরণ; কিন্তু এখন কি তাহলে আমরা প্রতীক নিয়ে পড়ে থাকব, আমরা ইলেকশন ফেজে ঢুকব না? তো সেই জায়গা থেকে আমরা বৃহত্তর স্বার্থ চিন্তা করে এই ডিসিশনটা নিচ্ছি।”

জোটগতভাবে ভোট করলেও নিজস্ব প্রতীকে নির্বাচনে অংশ নিতে হবে—এমন বিধান সংবলিত গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) সংশোধন অধ্যাদেশে গত ২৩ অক্টোবর চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে উপদেষ্টা পরিষদ। তবে এ বিধান বাতিলের দাবি তুলে ইসিকে চিঠি দিয়েছে বিএনপি, যেখানে জামায়াতে ইসলামী বিপরীত অবস্থান নিয়ে এ বিধান বহাল রাখার পক্ষে মত দিয়েছে।

এরই ধারাবাহিকতায় রোববার এনসিপিও ওই বিধান বহাল রাখার পক্ষে সিইসির কাছে লিখিত আবেদন জমা দেয়। এতে বলা হয়, “আমরা মনে করি, প্রতিটি নিবন্ধিত দলকে তাদের নিজস্ব প্রতীকে নির্বাচন করার যে সিদ্ধান্ত নির্বাচন কমিশন নিয়েছে, তা একটি ঐতিহাসিক ও নীতিগতভাবে সঠিক পদক্ষেপ।

পরবর্তীতে উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে আরপিওর সংশোধনীর মাধ্যমে উক্ত বিধান অনুমোদিত হয়েছে এবং শুধুমাত্র গেজেট প্রকাশের ঠিক আগ মুহূর্তে যদি সরকার বা নির্বাচন কমিশন বিএনপির রাজনৈতিক চাপে পাশ হওয়া সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসে, তবে তা শুধু কমিশনের স্বাধীনতার ওপরই আঘাত নয়, বরং পুরো নির্বাচন প্রক্রিয়ার বিশ্বাসযোগ্যতা ও সরকারের কর্মকাণ্ডের ওপরও আঘাত।**”

এনসিপির মতে, বিএনপির চাপে নির্বাচন কমিশন অবস্থান পরিবর্তন করলে কমিশনের ‘নিরপেক্ষতা ও সক্ষমতা’ এবং সামগ্রিক নির্বাচনী প্রক্রিয়ার বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে জনগণের সন্দেহ আরও গভীর হবে।

রোববারের বৈঠকে এনসিপির প্রতিনিধি দলে নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারীর সঙ্গে ছিলেন দলের যুগ্ম আহ্বায়ক খালেদ সাইফুল্লাহ, যুগ্ম সদস্য সচিব জহিরুল ইসলাম মুসা এবং ইসি সচিব আখতার আহমেদ।

নিউজটি শেয়ার করুন

অবশেষে ‘শাপলা কলি’ই নিচ্ছে এনসিপি, ৩০০ আসনে প্রার্থী দেওয়ার ঘোষণা

আপডেট সময় : ০৫:৩৩:২৬ অপরাহ্ন, রবিবার, ২ নভেম্বর ২০২৫

প্রতীক হিসেবে ‘শাপলা’র দাবিতে অনড় অবস্থান থেকে সরে এসেছে গণঅভ্যুত্থানের নেতৃত্ব দেওয়া তরুণদের দল জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)।

রোববার (২ নভেম্বর) বিকেলে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এর সঙ্গে বৈঠক শেষে এ সিদ্ধান্তের কথা জানান এনসিপির মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী।

তিনি বলেন, “শাপলা, সাদা শাপলা ও শাপলা কলিকে দলের প্রতীক হিসেবে চেয়ে ইসিতে চিঠি দিয়েছে জাতীয় নাগরিক পার্টি। শাপলা কলি দেওয়া হলে এনসিপি নেবে। তৃণমূল কলিকে ইতিবাচক হিসেবে নিয়েছে।”

আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে এনসিপিসহ দুটি দলকে নিবন্ধন দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।

এর মধ্যে এনসিপিকে তফসিলে থাকা ৫০টি প্রতীকের মধ্যে থেকে প্রতীক বেছে নিতে ৭ অক্টোবর পর্যন্ত সময়সীমা নির্ধারণ করেছিল ইসি। কিন্তু নির্ধারিত সময়ের মধ্যে প্রতীক না নিয়ে বিধি সংশোধন করে শাপলা প্রতীকের দাবি জানায় এনসিপি। তবে ইসির পক্ষ থেকে জানানো হয়, তালিকায় না থাকায় শাপলা প্রতীক দেওয়া সম্ভব নয়।

এরপর এনসিপি নেতারা ঘোষণা দেন, তাঁরা শাপলা প্রতীকেই ভোট করবেন, আর এই প্রতীক না পেলে নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে আন্দোলন করবেন।

এই অনড় অবস্থান ও রাজপথে নামার হুঁশিয়ারির মধ্যেই গত বৃহস্পতিবার ইসি প্রতীক তালিকায় ‘শাপলা কলি’সহ চারটি নতুন প্রতীক যুক্ত করে।

তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় এনসিপির যুগ্ম সদস্য সচিব জহিরুল ইসলাম মুসা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “এনসিপি শাপলাই চায়। আমরা যখন শাপলা চেয়েছি, তখন নির্বাচন কমিশন বলেছে— ‘তালিকায় নাই তাই, দেওয়া যাবে না’। এখন তারা ‘শাপলা কলি’ কীভাবে প্রতীক তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করেছে, তা স্পষ্ট করতে হবে।”

‘শাপলা’ প্রতীক নিয়ে অনড় অবস্থান থেকে সরে আসার বিষয়ে এক প্রশ্নে নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেন, “এটাকে ইঞ্জিনিয়ারিং কমিশন বলতে পারি। এই ইঞ্জিনিয়ারিং কমিশনে এসেছি, এখানে অনেক কিছু ইঞ্জিনিয়ারিং হচ্ছে। সো ইঞ্জিনিয়ারিং কমিশনের জায়গা থেকে আমরা আমাদের ফাইটটা করে যাচ্ছি। এবং সেই ফাইটিংয়ের জায়গায় আমরা শাপলা কলি নিচ্ছি, অ্যাপ্লাই করেছি।”

তিনি আরও বলেন, “আমরা শাপলা কলি নিব। আমরা এখন এখানে একটা বিষয় আপনাদের থাকতে পারে যে, আমরা বলছি শাপলার, কিন্তু আমরা এখনো ব্যাখ্যা পাইনি। নির্বাচন কমিশনের যে স্বেচ্ছাচারী আচরণ; কিন্তু এখন কি তাহলে আমরা প্রতীক নিয়ে পড়ে থাকব, আমরা ইলেকশন ফেজে ঢুকব না? তো সেই জায়গা থেকে আমরা বৃহত্তর স্বার্থ চিন্তা করে এই ডিসিশনটা নিচ্ছি।”

জোটগতভাবে ভোট করলেও নিজস্ব প্রতীকে নির্বাচনে অংশ নিতে হবে—এমন বিধান সংবলিত গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) সংশোধন অধ্যাদেশে গত ২৩ অক্টোবর চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে উপদেষ্টা পরিষদ। তবে এ বিধান বাতিলের দাবি তুলে ইসিকে চিঠি দিয়েছে বিএনপি, যেখানে জামায়াতে ইসলামী বিপরীত অবস্থান নিয়ে এ বিধান বহাল রাখার পক্ষে মত দিয়েছে।

এরই ধারাবাহিকতায় রোববার এনসিপিও ওই বিধান বহাল রাখার পক্ষে সিইসির কাছে লিখিত আবেদন জমা দেয়। এতে বলা হয়, “আমরা মনে করি, প্রতিটি নিবন্ধিত দলকে তাদের নিজস্ব প্রতীকে নির্বাচন করার যে সিদ্ধান্ত নির্বাচন কমিশন নিয়েছে, তা একটি ঐতিহাসিক ও নীতিগতভাবে সঠিক পদক্ষেপ।

পরবর্তীতে উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে আরপিওর সংশোধনীর মাধ্যমে উক্ত বিধান অনুমোদিত হয়েছে এবং শুধুমাত্র গেজেট প্রকাশের ঠিক আগ মুহূর্তে যদি সরকার বা নির্বাচন কমিশন বিএনপির রাজনৈতিক চাপে পাশ হওয়া সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসে, তবে তা শুধু কমিশনের স্বাধীনতার ওপরই আঘাত নয়, বরং পুরো নির্বাচন প্রক্রিয়ার বিশ্বাসযোগ্যতা ও সরকারের কর্মকাণ্ডের ওপরও আঘাত।**”

এনসিপির মতে, বিএনপির চাপে নির্বাচন কমিশন অবস্থান পরিবর্তন করলে কমিশনের ‘নিরপেক্ষতা ও সক্ষমতা’ এবং সামগ্রিক নির্বাচনী প্রক্রিয়ার বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে জনগণের সন্দেহ আরও গভীর হবে।

রোববারের বৈঠকে এনসিপির প্রতিনিধি দলে নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারীর সঙ্গে ছিলেন দলের যুগ্ম আহ্বায়ক খালেদ সাইফুল্লাহ, যুগ্ম সদস্য সচিব জহিরুল ইসলাম মুসা এবং ইসি সচিব আখতার আহমেদ।