ঢাকা ০১:৩৬ অপরাহ্ন, শনিবার, ০৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ২২ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
আরও পেছাল খালেদা জিয়ার লন্ডনযাত্রা ইসলামে পারিবারিক নির্যাতনের কোনো স্থান নেই-শায়খ আব্দুল কাইয়ুম লিবিয়া থেকে ৩১০ বাংলাদেশি দেশে ফিরলেন যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশে আরও ৩০ দেশের নাগরিকের ওপর নিষেধাজ্ঞা খাঁচা থেকে বের হওয়া সিংহী আড়াই ঘণ্টা পর নিয়ন্ত্রণে লন্ডনে ফ্লাই রবিবার, নির্জন কারাবাস থেকেই খালেদা জিয়ার ‘নানা রোগের সূচনা’ জানালেন ফখরুল মহাকাশ থেকে পবিত্র  কাবা শরিফের উজ্জ্বল ছবি আন্দোলনে থাকা প্রাথমিকের শিক্ষকদের বদলি, ‘শাটডাউন’ কর্মসূচি স্থগিত তারেক রহমানের দেশে ফেরা আবার অনিশ্চিত, কীভাবে ভোটার হবেন? খালেদা জিয়া ছাড়া পরিবারের কেউ ভিভিআইপি সুবিধা পাবেন না

অধ্যাপক ইউনূসের ‘পদত্যাগের ভাবনা’, রাজনৈতিক অঙ্গনে কে কী বলছে

৫২ বাংলা
  • আপডেট সময় : ১১:২৭:৫০ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৩ মে ২০২৫
  • / 251
অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

বাংলাদেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে দ্রুতগতিতে ঘটছে একের পর এক ঘটনা। এসবের সর্বশেষ সংযোজন হলো—অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের পদত্যাগের চিন্তা করছেন এমন খবর।

বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় জাতীয় নাগরিক পার্টির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় গিয়ে তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। তিনি জানান, পদত্যাগের সম্ভাবনার কথা শুনে তিনি অধ্যাপক ইউনূসের সঙ্গে দেখা করেন এবং পদত্যাগ না করার অনুরোধ জানান।

এই খবরে রাজনৈতিক দলগুলোসহ নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ বিভিন্ন প্রতিক্রিয়া জানাচ্ছেন।

রাজনৈতিক দলের প্রতিক্রিয়া

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজ থেকে বৃহস্পতিবার রাতে এক পোস্টে জানানো হয়, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, গণঅধিকার পরিষদ, জাতীয় নাগরিক পার্টিসহ মোট পাঁচটি দলের জরুরি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৈঠকে চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হয়।

জুলাই গণঅভ্যুত্থানের নেতৃত্ব দেওয়া তরুণদের সংগঠন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) দক্ষিণাঞ্চলীয় মুখ্য সংগঠক হাসনাত আব্দুল্লাহ তার ভেরিফায়েড ফেসবুক প্রোফাইলে লেখেন, “দেশ ও জাতির স্বার্থে হঠাৎ দেখা দেওয়া বিভাজন নিরসন করতে হবে। আমরা সবাই একত্রিত হয়েছিলাম বলেই দীর্ঘ দেড় দশকের ফ্যাসিবাদী শক্তিকে প্রতিহত করতে পেরেছি। যদি বিভক্ত হই, তবে পতিত ফ্যাসিবাদ ও তাদের দেশি-বিদেশি মিত্ররা আমাদের ভেঙে ফেলতে চাইবে। আমাদের ঐক্য কোনো ব্যক্তি বা গোষ্ঠীর স্বার্থে নয়, এটি দেশের স্বার্থে। তাই ঐক্যবদ্ধ থাকার বিকল্প নেই।”

এদিকে, দেশের চলমান পরিস্থিতিতে সর্বদলীয় বৈঠক ডাকার আহ্বান জানিয়েছেন জামায়াতে ইসলামীর আমির শফিকুর রহমান। জামায়াতের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, বৃহস্পতিবার দলটির একটি বৈঠকে সার্বিক পরিস্থিতি পর্যালোচনার পর এ আহ্বান জানানো হয়।

সরকারের প্রতিক্রিয়া

স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ তার ফেসবুক স্ট্যাটাসে লেখেন, “বিএএল, নর্থ ও দিল্লি একত্র হয়ে যে কুমির আনছেন, সেটা আপনাদেরই খেয়ে ফেলবে।”
(এখানে ‘নর্থ’ বলতে সাধারণত ক্যান্টনমেন্টকে বোঝানো হয় এবং ‘বিএএল’ অর্থ বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ।)

তিনি আরও লেখেন, “আমাদের না আছে মরার ভয়, না কিছু হারানোর। একমাত্র দুঃখ—গণতান্ত্রিক রূপান্তর এবং এদেশের মানুষের ভাগ্য হয়তো আর ইতিবাচক পথে যাবে না। স্বপ্ন দেখেই কষ্ট পেতে হয়—এই যেন দেশের নিয়তি।”

তথ্য উপদেষ্টা মাহফুজ আলম তার ফেসবুক স্ট্যাটাসে লিখেছেন, “পূর্বের যেকোনো বিভাজনমূলক বক্তব্য ও শব্দচয়নের জন্য আমি আন্তরিকভাবে দুঃখিত। ব্যক্তি বা গোষ্ঠীর চেয়ে দেশ বড়, দেশপ্রেমিক শক্তির ঐক্য অপরিহার্য। আর একদিনও সরকারে থাকলে অভ্যুত্থান-সম্পৃক্ত সকল শক্তির প্রতি সম্মান ও সংবেদনশীলতা রেখে কাজ করতে চাই।”

উল্লেখ্য, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র হিসেবে বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেনকে শপথ পড়ানো নিয়ে চলমান আন্দোলনে দুই উপদেষ্টার—মাহফুজ আলম ও আসিফ মাহমুদের—পদত্যাগের দাবি উঠেছে।

স্ট্যাটাসে মাহফুজ আলম আরও লেখেন, “পুরনো বন্দোবস্তের বিভেদমূলক স্লোগান ও তকমাবাজি, যা বৃহত্তর জনগোষ্ঠীকে সহিংসতার লক্ষ্যবস্তু করে তোলে—তা পরিহার করলেই ভবিষ্যতের রাষ্ট্র গণতান্ত্রিক ও অন্তর্ভুক্তিমূলক হতে পারে। দেশের শত্রুরা এখন ঐক্যবদ্ধ এবং আগ্রাসী। সার্বভৌমত্ব ও গণতান্ত্রিক সব প্রতিষ্ঠান আজ হুমকির মুখে। জুলাই অভ্যুত্থানে ঐক্যবদ্ধ জনগণের সামনে এখন কঠিন এক পরীক্ষা অপেক্ষা করছে—এটি ঐক্য ও ধৈর্যের পরীক্ষা, এবং তা উত্তীর্ণ হতেই হবে।”

বিশিষ্ট নাগরিকদের প্রতিক্রিয়া

শুক্রবার সকালে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুকে একটি পোস্ট করেছেন কবি ও চিন্তক ফরহাদ মজহার। পোস্টে তিনি লেখেন, ‘ড. ইউনূস পদত্যাগের ইচ্ছা প্রকাশ করে ভুল করেছেন। পদত্যাগ করা হবে তাঁর ব্যর্থতা, তাঁর জন্য আত্মঘাতী। কোন ব্যক্তি বা দল নয়, তাঁর উচিত জনগণের ঐতিহাসিক অভিপ্রায়কে সম্মান করা, কোন দল বা গোষ্ঠির চাপে বিভ্রান্ত না হয়ে জনগণের ওপর আস্থা রাখা।

তিনি আরো লেখেন, বাংলাদেশের জনগণ নির্বাচনের মধ্য দিয়ে নয়, রক্তাক্ত গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে ড. ইউনূসকে নির্বাচিত করেছে। তাঁকে অবশ্যই খুনিদের বিচার করতে হবে, নতুন গঠনতন্ত্র প্রণয়ণের মধ্য দিয়ে নতুন বাংলাদেশ গঠন করবার প্রক্রিয়া শুরু করতে হবে, কাছা খোলা বাজার ব্যবস্থার জবরদস্তি দ্বারা বৈশ্বিক কর্পোরেট দখলদারি কায়েমের বিপরীতে গণবান্ধব ও বিনিয়োগবান্ধব নীতি প্রণয়ন ও কার্যকর করতে হবে, সর্বোপরি দিল্লি ও মায়ানমারসহ শত্রুদেশের বিরুদ্ধে লড়ে জিতবার ক্ষমতাসম্পন্ন শক্তিশালী সেনাবাহিনী গঠন করতে হবে; কারণ রোহিঙ্গাদের তাদের নিজের দেশে যাবার ব্যবস্থা নিশ্চিত করা এবং তাদের পুনর্বাসনের হিম্মত বাংলাদেশকেই অর্জন করতে হবে। বাংলাদেশের সৈনিকেরা এই দেশের সন্তান বাংলাদেশের জনগণের সামষ্টিক ইচ্ছা বা অভিপ্রায়ের সঙ্গে তারা অঙ্গাঙ্গী জড়িত। জনগণের স্বার্থ তাদেরও স্বার্থ। কারণ তারাও জনগণের অংশ–আমরা কেউই মঙ্গলগ্রহ থেকে আসিনি।

ফরহান মজহার লেখেন, এই সকল লক্ষ্য অর্জনের জন্য জনগণ চায় প্রধান উপদেষ্টা ও বাংলাদেশের সেনাবাহিনীর সঙ্গে ড. ইউনূসের ভুল বোঝাবুঝির অবসান হোক। নির্বাচন অবশ্যই যত দ্রুত সম্ভব হতে হবে, কিন্তু কুচক্রী মহলের ষড়যন্ত্রে সেনাপ্রধান তাঁর এখতিয়ারের বাইরে নির্বাচন নিয়ে যে মন্তব্য করেছেন তা লুটেরা ও মাফিয়া শ্রেণিকে পুনরায় ক্ষমতায় বসানোর যুক্তি। গণ অভ্যুত্থানের অংশগ্রহণকারী জনগণ তা মেনে নেবে না। দেশকে বিভিন্ন শক্তির ক্ষমতা দখলের প্রতিযোগিতার ময়দান ও গৃহযুদ্ধের দিকে ঠেলে দেবার দায় তখন সেনাপ্রধানের ওপর বর্তাবে। সবাই দায়িত্বশীল আচরণ করে দেশ ও জাতিকে রক্ষা করবেন, জনগণ সেই আশাই করে।

কথাসাহিত্যিক জাকির তালুকদার মন্তব্য করেছেন, “আগামী কয়েকদিন নাপা-র সঙ্গে সম্মিলিতভাবে জামায়াত-শিবির-হেফাজত ড. ইউনূসের পক্ষে বড় ধরনের শোডাউন করবে।”

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

অধ্যাপক ইউনূসের ‘পদত্যাগের ভাবনা’, রাজনৈতিক অঙ্গনে কে কী বলছে

আপডেট সময় : ১১:২৭:৫০ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৩ মে ২০২৫

বাংলাদেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে দ্রুতগতিতে ঘটছে একের পর এক ঘটনা। এসবের সর্বশেষ সংযোজন হলো—অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের পদত্যাগের চিন্তা করছেন এমন খবর।

বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় জাতীয় নাগরিক পার্টির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় গিয়ে তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। তিনি জানান, পদত্যাগের সম্ভাবনার কথা শুনে তিনি অধ্যাপক ইউনূসের সঙ্গে দেখা করেন এবং পদত্যাগ না করার অনুরোধ জানান।

এই খবরে রাজনৈতিক দলগুলোসহ নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ বিভিন্ন প্রতিক্রিয়া জানাচ্ছেন।

রাজনৈতিক দলের প্রতিক্রিয়া

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজ থেকে বৃহস্পতিবার রাতে এক পোস্টে জানানো হয়, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, গণঅধিকার পরিষদ, জাতীয় নাগরিক পার্টিসহ মোট পাঁচটি দলের জরুরি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৈঠকে চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হয়।

জুলাই গণঅভ্যুত্থানের নেতৃত্ব দেওয়া তরুণদের সংগঠন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) দক্ষিণাঞ্চলীয় মুখ্য সংগঠক হাসনাত আব্দুল্লাহ তার ভেরিফায়েড ফেসবুক প্রোফাইলে লেখেন, “দেশ ও জাতির স্বার্থে হঠাৎ দেখা দেওয়া বিভাজন নিরসন করতে হবে। আমরা সবাই একত্রিত হয়েছিলাম বলেই দীর্ঘ দেড় দশকের ফ্যাসিবাদী শক্তিকে প্রতিহত করতে পেরেছি। যদি বিভক্ত হই, তবে পতিত ফ্যাসিবাদ ও তাদের দেশি-বিদেশি মিত্ররা আমাদের ভেঙে ফেলতে চাইবে। আমাদের ঐক্য কোনো ব্যক্তি বা গোষ্ঠীর স্বার্থে নয়, এটি দেশের স্বার্থে। তাই ঐক্যবদ্ধ থাকার বিকল্প নেই।”

এদিকে, দেশের চলমান পরিস্থিতিতে সর্বদলীয় বৈঠক ডাকার আহ্বান জানিয়েছেন জামায়াতে ইসলামীর আমির শফিকুর রহমান। জামায়াতের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, বৃহস্পতিবার দলটির একটি বৈঠকে সার্বিক পরিস্থিতি পর্যালোচনার পর এ আহ্বান জানানো হয়।

সরকারের প্রতিক্রিয়া

স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ তার ফেসবুক স্ট্যাটাসে লেখেন, “বিএএল, নর্থ ও দিল্লি একত্র হয়ে যে কুমির আনছেন, সেটা আপনাদেরই খেয়ে ফেলবে।”
(এখানে ‘নর্থ’ বলতে সাধারণত ক্যান্টনমেন্টকে বোঝানো হয় এবং ‘বিএএল’ অর্থ বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ।)

তিনি আরও লেখেন, “আমাদের না আছে মরার ভয়, না কিছু হারানোর। একমাত্র দুঃখ—গণতান্ত্রিক রূপান্তর এবং এদেশের মানুষের ভাগ্য হয়তো আর ইতিবাচক পথে যাবে না। স্বপ্ন দেখেই কষ্ট পেতে হয়—এই যেন দেশের নিয়তি।”

তথ্য উপদেষ্টা মাহফুজ আলম তার ফেসবুক স্ট্যাটাসে লিখেছেন, “পূর্বের যেকোনো বিভাজনমূলক বক্তব্য ও শব্দচয়নের জন্য আমি আন্তরিকভাবে দুঃখিত। ব্যক্তি বা গোষ্ঠীর চেয়ে দেশ বড়, দেশপ্রেমিক শক্তির ঐক্য অপরিহার্য। আর একদিনও সরকারে থাকলে অভ্যুত্থান-সম্পৃক্ত সকল শক্তির প্রতি সম্মান ও সংবেদনশীলতা রেখে কাজ করতে চাই।”

উল্লেখ্য, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র হিসেবে বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেনকে শপথ পড়ানো নিয়ে চলমান আন্দোলনে দুই উপদেষ্টার—মাহফুজ আলম ও আসিফ মাহমুদের—পদত্যাগের দাবি উঠেছে।

স্ট্যাটাসে মাহফুজ আলম আরও লেখেন, “পুরনো বন্দোবস্তের বিভেদমূলক স্লোগান ও তকমাবাজি, যা বৃহত্তর জনগোষ্ঠীকে সহিংসতার লক্ষ্যবস্তু করে তোলে—তা পরিহার করলেই ভবিষ্যতের রাষ্ট্র গণতান্ত্রিক ও অন্তর্ভুক্তিমূলক হতে পারে। দেশের শত্রুরা এখন ঐক্যবদ্ধ এবং আগ্রাসী। সার্বভৌমত্ব ও গণতান্ত্রিক সব প্রতিষ্ঠান আজ হুমকির মুখে। জুলাই অভ্যুত্থানে ঐক্যবদ্ধ জনগণের সামনে এখন কঠিন এক পরীক্ষা অপেক্ষা করছে—এটি ঐক্য ও ধৈর্যের পরীক্ষা, এবং তা উত্তীর্ণ হতেই হবে।”

বিশিষ্ট নাগরিকদের প্রতিক্রিয়া

শুক্রবার সকালে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুকে একটি পোস্ট করেছেন কবি ও চিন্তক ফরহাদ মজহার। পোস্টে তিনি লেখেন, ‘ড. ইউনূস পদত্যাগের ইচ্ছা প্রকাশ করে ভুল করেছেন। পদত্যাগ করা হবে তাঁর ব্যর্থতা, তাঁর জন্য আত্মঘাতী। কোন ব্যক্তি বা দল নয়, তাঁর উচিত জনগণের ঐতিহাসিক অভিপ্রায়কে সম্মান করা, কোন দল বা গোষ্ঠির চাপে বিভ্রান্ত না হয়ে জনগণের ওপর আস্থা রাখা।

তিনি আরো লেখেন, বাংলাদেশের জনগণ নির্বাচনের মধ্য দিয়ে নয়, রক্তাক্ত গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে ড. ইউনূসকে নির্বাচিত করেছে। তাঁকে অবশ্যই খুনিদের বিচার করতে হবে, নতুন গঠনতন্ত্র প্রণয়ণের মধ্য দিয়ে নতুন বাংলাদেশ গঠন করবার প্রক্রিয়া শুরু করতে হবে, কাছা খোলা বাজার ব্যবস্থার জবরদস্তি দ্বারা বৈশ্বিক কর্পোরেট দখলদারি কায়েমের বিপরীতে গণবান্ধব ও বিনিয়োগবান্ধব নীতি প্রণয়ন ও কার্যকর করতে হবে, সর্বোপরি দিল্লি ও মায়ানমারসহ শত্রুদেশের বিরুদ্ধে লড়ে জিতবার ক্ষমতাসম্পন্ন শক্তিশালী সেনাবাহিনী গঠন করতে হবে; কারণ রোহিঙ্গাদের তাদের নিজের দেশে যাবার ব্যবস্থা নিশ্চিত করা এবং তাদের পুনর্বাসনের হিম্মত বাংলাদেশকেই অর্জন করতে হবে। বাংলাদেশের সৈনিকেরা এই দেশের সন্তান বাংলাদেশের জনগণের সামষ্টিক ইচ্ছা বা অভিপ্রায়ের সঙ্গে তারা অঙ্গাঙ্গী জড়িত। জনগণের স্বার্থ তাদেরও স্বার্থ। কারণ তারাও জনগণের অংশ–আমরা কেউই মঙ্গলগ্রহ থেকে আসিনি।

ফরহান মজহার লেখেন, এই সকল লক্ষ্য অর্জনের জন্য জনগণ চায় প্রধান উপদেষ্টা ও বাংলাদেশের সেনাবাহিনীর সঙ্গে ড. ইউনূসের ভুল বোঝাবুঝির অবসান হোক। নির্বাচন অবশ্যই যত দ্রুত সম্ভব হতে হবে, কিন্তু কুচক্রী মহলের ষড়যন্ত্রে সেনাপ্রধান তাঁর এখতিয়ারের বাইরে নির্বাচন নিয়ে যে মন্তব্য করেছেন তা লুটেরা ও মাফিয়া শ্রেণিকে পুনরায় ক্ষমতায় বসানোর যুক্তি। গণ অভ্যুত্থানের অংশগ্রহণকারী জনগণ তা মেনে নেবে না। দেশকে বিভিন্ন শক্তির ক্ষমতা দখলের প্রতিযোগিতার ময়দান ও গৃহযুদ্ধের দিকে ঠেলে দেবার দায় তখন সেনাপ্রধানের ওপর বর্তাবে। সবাই দায়িত্বশীল আচরণ করে দেশ ও জাতিকে রক্ষা করবেন, জনগণ সেই আশাই করে।

কথাসাহিত্যিক জাকির তালুকদার মন্তব্য করেছেন, “আগামী কয়েকদিন নাপা-র সঙ্গে সম্মিলিতভাবে জামায়াত-শিবির-হেফাজত ড. ইউনূসের পক্ষে বড় ধরনের শোডাউন করবে।”