ঢাকা ০৩:৫৪ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ০৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ২১ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
লিবিয়া থেকে ৩১০ বাংলাদেশি দেশে ফিরলেন যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশে আরও ৩০ দেশের নাগরিকের ওপর নিষেধাজ্ঞা খাঁচা থেকে বের হওয়া সিংহী আড়াই ঘণ্টা পর নিয়ন্ত্রণে লন্ডনে ফ্লাই রবিবার, নির্জন কারাবাস থেকেই খালেদা জিয়ার ‘নানা রোগের সূচনা’ জানালেন ফখরুল মহাকাশ থেকে পবিত্র  কাবা শরিফের উজ্জ্বল ছবি আন্দোলনে থাকা প্রাথমিকের শিক্ষকদের বদলি, ‘শাটডাউন’ কর্মসূচি স্থগিত তারেক রহমানের দেশে ফেরা আবার অনিশ্চিত, কীভাবে ভোটার হবেন? খালেদা জিয়া ছাড়া পরিবারের কেউ ভিভিআইপি সুবিধা পাবেন না কুকুরছানা হত্যা মামলায় মায়ের সঙ্গে কারাগারে ২ বছরের শিশু খালেদা জিয়াকে লন্ডন নিতে ঢাকায় আসছেন জুবাইদা

মোকাব্বির খানের শপথে গণফোরাম ক্ষুব্ধ

৫২ বাংলা
  • আপডেট সময় : ০৪:৩২:৩০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২ এপ্রিল ২০১৯
  • / 1580
অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

সংসদ সদস্য হিসেবে শপথ নিতে দলীয় প্যাডে স্পিকারের কাছে আবেদন করেন গণফোরামের প্রেসিডিয়াম সদস্য মোকাব্বির আহম্মেদ খান। আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে সংসদ সচিবায়ে মঙ্গলবার দুপুর ১২টায় তার শপথ পড়ানো হয়।দুপুরে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী তাকে শপথবাক্য পাঠ করান।

সিলেট-২ আসন থেকে নির্বাচিত গণফোরাম নেতা মোকাব্বির আহম্মেদ খান বলেছেন, মানসিক বিপর্যস্ত হয়ে আমার বিরুদ্ধে প্যাড চুরির অভিযোগ করেছেন দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য জগলুল হায়দার আফ্রিক। এটি একটি অরুচিকর কথা। শুনতেও বাজে লাগে। আমি দল থেকে অনুমতি নিয়েই সংসদে এসেছি।
মঙ্গলবার জাতীয় সংসদে এমপি হিসেবে শপথ নেয়ার পর তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় সাংবাদিকদের একথা বলেন তিনি।

তবে সিলেট-২ আসন থেকে বিজয়ী ঐক্যফ্রন্টের মোকাব্বির দলীয় প্যাড চুরি করে শপথের আবেদন করেছেন বলে দাবি করেছেন গণফোরামের প্রেসিডিয়াম সদস্য জগলুল হায়দার আফ্রিক। তিনি বলেন, ‘দলের সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে শপথ নিতে যাচ্ছেন মোকাব্বির খান। তিনি দলীয় প্যাড চুরি করে শপথ নেয়ার জন্য স্পিকারকে চিঠি দিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘মোকাব্বির কোথা থেকে, কীভাবে দলের প্যাড চুরি করেছেন, তা আমার জানা নেই।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে মোকাব্বির বলেন, ‘এর আগে ৭ মার্চ আমার শপথ নেয়ার কথা ছিল। কিন্তু আমার দলের প্রেসিডিয়াম সভায় সিদ্ধান্ত হলো যে ৭ মার্চ শপথ না নিয়ে অন্য যে কোনো দিন আমি যেন শপথ নেই। সেদিনও কিন্তু দলের যে প্যাডে যে প্রক্রিয়ায় আমি চিঠি দিয়েছিলাম সেই একই প্রক্রিয়া অনুসরণ করে একইভাবে প্রেসিডিয়ামের সিদ্ধান্ত নিয়ে সংসদে যোগদান করেছি।’

এ সময় সাংবদিকদের প্যাড দেখিয়ে তিনি আরও বলেন, ‘এটাকে যদি ভেরিভাই করতে চান তাহলে করতে পারেন। এখানে কোনো ধরনের বিতর্কের সুযোগ নেই। এটাকে যারা বিতর্কে নিয়ে যেতে চাচ্ছেন, আমি মনে করি তারা কোনো বিশেষ মহলের পারপাস সার্ভ করছেন অথবা তারা মানসিক বিপর্যস্ত। হয়তো তাদের একটা অ্যাসাইমেন্ট ছিল। সেই অ্যাসাইমেন্ট পালন করতে না পারায় তারা এমন আচরণ করছেন।’

এ ধরনের অভিযোগ উঠল কেন, সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে মোকাব্বির আহম্মেদ বলেন, ‘আমরা সবাই আদমের সন্তান। হয়তো কেউ মানসিকভাবে বিপর্যস্ত। বাংলাদেশে কত ধরনের রাজনীতি হচ্ছে, অপরাজনীতি হচ্ছে। হয়তো কেউ অপরাজনীতির মানসিকতা নিয়ে বিভিন্ন মহলের ফায়দা হাসিলের জন্য এটা করে যাচ্ছেন। কারণ সব দলিলাদি যখন কথা বলে, তখন আমি মনে করি আমার নিজের মুখ থেকে তেমন কিছু বলার নেই।’

এক প্রশ্নের জবাব তিনি বলেন, ‘আমি ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থী ছিলাম না। আমি বিএনপি করি না। আমি গণফোরাম করি। গণফোরামের মনোনয়ন নিয়ে সূর্য মার্কায় নির্বাচন করেছি।’

সংসদে গণফোরাম বিরোধী দল হিসেবে কাজ করবে দাবি করে মোকাব্বির আহম্মেদ বলেন, ‘সংসদে আমি শতভাগ বিরোধী দলের ভূমিকা নেব। জনগণের কথা বলব। গণফোরামের যে বক্তব্য সেগুলো তুলে ধরব। দেশের জনগণের চিন্তাভাবনা আমার মুখ থেকে যেন সবাই শুনতে পায় সেই হিসেবে কাজ করব।’

এর আগে শুরুতেই তিনি তার নিজ নির্বাচনী এলাকার জনগণ ও নিজ দল গণফোরামের সভাপতি ড. কামাল হোসেনকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞকা জানান।

তিনি বলেন, ‘২৬ বছর আমরা দীর্ঘ সংগ্রাম করেছি। গণতন্ত্রের সংগ্রাম, আদর্শের সংগ্রাম, মূল্যবোধের সংগ্রাম। যে সংগ্রাম বঙ্গবন্ধু শুরু করেছিলেন, বঙ্গবন্ধুর যে নীতি-আদর্শ-মূল্যবোধ নিয়ে আমরা স্বাধীনতা অর্জন করেছি, সেটা রক্ষা করে গণফোরাম থেকে আমি নির্বাচিত হয়েছি। আমার প্রধান কাজ ও মূল লক্ষ্য হবে সেই বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও মূল্যবোধকে ধরে এগিয়ে যাওয়া। বঙ্গবন্ধুর রাজনীতি যাতে বাংলাদেশে প্রতিষ্ঠিত করতে পারি, সেই লক্ষ্যে কাজ করে যাব। তখনই মনে হবে আমার রাজনীতি স্বার্থক, আমার দলের রাজনীতি স্বার্থক।’

এর আগে ঐক্যফ্রন্টের আরেক সদস্য গণফোরাম নেতা (বহিষ্কৃত) সুলতান মনসুর শপথ নিয়েছেন। তবে দলীয় নিয়ম ভেঙে শপথগ্রহণ করায় তাকে গণফোরাম থেকে বহিষ্কার করা হয়।

উল্লেখ্য, গত ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত একাদশ সংসদ নির্বাচনে বিএনপির জোট থেকে মনোনয়ন নিয়ে নির্বাচিত হন গণফোরামের দুই নেতা সুলতান মনসুর ও মোকাব্বির খান। ধানের শীষ প্রতীকে নির্বাচন করে জয়ী হওয়া সুলতান মনসুর গত ৭ মার্চ শপথ নিয়ে এরই মধ্যে সংসদ অধিবেশনে যোগ দিয়েছেন। ওই সময় মোকাব্বিরও শপথ নেবেন বলে জানানো হলেও শেষ পর্যন্ত তখন পিছু হটেন তিনি।

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

মোকাব্বির খানের শপথে গণফোরাম ক্ষুব্ধ

আপডেট সময় : ০৪:৩২:৩০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২ এপ্রিল ২০১৯

সংসদ সদস্য হিসেবে শপথ নিতে দলীয় প্যাডে স্পিকারের কাছে আবেদন করেন গণফোরামের প্রেসিডিয়াম সদস্য মোকাব্বির আহম্মেদ খান। আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে সংসদ সচিবায়ে মঙ্গলবার দুপুর ১২টায় তার শপথ পড়ানো হয়।দুপুরে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী তাকে শপথবাক্য পাঠ করান।

সিলেট-২ আসন থেকে নির্বাচিত গণফোরাম নেতা মোকাব্বির আহম্মেদ খান বলেছেন, মানসিক বিপর্যস্ত হয়ে আমার বিরুদ্ধে প্যাড চুরির অভিযোগ করেছেন দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য জগলুল হায়দার আফ্রিক। এটি একটি অরুচিকর কথা। শুনতেও বাজে লাগে। আমি দল থেকে অনুমতি নিয়েই সংসদে এসেছি।
মঙ্গলবার জাতীয় সংসদে এমপি হিসেবে শপথ নেয়ার পর তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় সাংবাদিকদের একথা বলেন তিনি।

তবে সিলেট-২ আসন থেকে বিজয়ী ঐক্যফ্রন্টের মোকাব্বির দলীয় প্যাড চুরি করে শপথের আবেদন করেছেন বলে দাবি করেছেন গণফোরামের প্রেসিডিয়াম সদস্য জগলুল হায়দার আফ্রিক। তিনি বলেন, ‘দলের সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে শপথ নিতে যাচ্ছেন মোকাব্বির খান। তিনি দলীয় প্যাড চুরি করে শপথ নেয়ার জন্য স্পিকারকে চিঠি দিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘মোকাব্বির কোথা থেকে, কীভাবে দলের প্যাড চুরি করেছেন, তা আমার জানা নেই।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে মোকাব্বির বলেন, ‘এর আগে ৭ মার্চ আমার শপথ নেয়ার কথা ছিল। কিন্তু আমার দলের প্রেসিডিয়াম সভায় সিদ্ধান্ত হলো যে ৭ মার্চ শপথ না নিয়ে অন্য যে কোনো দিন আমি যেন শপথ নেই। সেদিনও কিন্তু দলের যে প্যাডে যে প্রক্রিয়ায় আমি চিঠি দিয়েছিলাম সেই একই প্রক্রিয়া অনুসরণ করে একইভাবে প্রেসিডিয়ামের সিদ্ধান্ত নিয়ে সংসদে যোগদান করেছি।’

এ সময় সাংবদিকদের প্যাড দেখিয়ে তিনি আরও বলেন, ‘এটাকে যদি ভেরিভাই করতে চান তাহলে করতে পারেন। এখানে কোনো ধরনের বিতর্কের সুযোগ নেই। এটাকে যারা বিতর্কে নিয়ে যেতে চাচ্ছেন, আমি মনে করি তারা কোনো বিশেষ মহলের পারপাস সার্ভ করছেন অথবা তারা মানসিক বিপর্যস্ত। হয়তো তাদের একটা অ্যাসাইমেন্ট ছিল। সেই অ্যাসাইমেন্ট পালন করতে না পারায় তারা এমন আচরণ করছেন।’

এ ধরনের অভিযোগ উঠল কেন, সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে মোকাব্বির আহম্মেদ বলেন, ‘আমরা সবাই আদমের সন্তান। হয়তো কেউ মানসিকভাবে বিপর্যস্ত। বাংলাদেশে কত ধরনের রাজনীতি হচ্ছে, অপরাজনীতি হচ্ছে। হয়তো কেউ অপরাজনীতির মানসিকতা নিয়ে বিভিন্ন মহলের ফায়দা হাসিলের জন্য এটা করে যাচ্ছেন। কারণ সব দলিলাদি যখন কথা বলে, তখন আমি মনে করি আমার নিজের মুখ থেকে তেমন কিছু বলার নেই।’

এক প্রশ্নের জবাব তিনি বলেন, ‘আমি ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থী ছিলাম না। আমি বিএনপি করি না। আমি গণফোরাম করি। গণফোরামের মনোনয়ন নিয়ে সূর্য মার্কায় নির্বাচন করেছি।’

সংসদে গণফোরাম বিরোধী দল হিসেবে কাজ করবে দাবি করে মোকাব্বির আহম্মেদ বলেন, ‘সংসদে আমি শতভাগ বিরোধী দলের ভূমিকা নেব। জনগণের কথা বলব। গণফোরামের যে বক্তব্য সেগুলো তুলে ধরব। দেশের জনগণের চিন্তাভাবনা আমার মুখ থেকে যেন সবাই শুনতে পায় সেই হিসেবে কাজ করব।’

এর আগে শুরুতেই তিনি তার নিজ নির্বাচনী এলাকার জনগণ ও নিজ দল গণফোরামের সভাপতি ড. কামাল হোসেনকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞকা জানান।

তিনি বলেন, ‘২৬ বছর আমরা দীর্ঘ সংগ্রাম করেছি। গণতন্ত্রের সংগ্রাম, আদর্শের সংগ্রাম, মূল্যবোধের সংগ্রাম। যে সংগ্রাম বঙ্গবন্ধু শুরু করেছিলেন, বঙ্গবন্ধুর যে নীতি-আদর্শ-মূল্যবোধ নিয়ে আমরা স্বাধীনতা অর্জন করেছি, সেটা রক্ষা করে গণফোরাম থেকে আমি নির্বাচিত হয়েছি। আমার প্রধান কাজ ও মূল লক্ষ্য হবে সেই বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও মূল্যবোধকে ধরে এগিয়ে যাওয়া। বঙ্গবন্ধুর রাজনীতি যাতে বাংলাদেশে প্রতিষ্ঠিত করতে পারি, সেই লক্ষ্যে কাজ করে যাব। তখনই মনে হবে আমার রাজনীতি স্বার্থক, আমার দলের রাজনীতি স্বার্থক।’

এর আগে ঐক্যফ্রন্টের আরেক সদস্য গণফোরাম নেতা (বহিষ্কৃত) সুলতান মনসুর শপথ নিয়েছেন। তবে দলীয় নিয়ম ভেঙে শপথগ্রহণ করায় তাকে গণফোরাম থেকে বহিষ্কার করা হয়।

উল্লেখ্য, গত ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত একাদশ সংসদ নির্বাচনে বিএনপির জোট থেকে মনোনয়ন নিয়ে নির্বাচিত হন গণফোরামের দুই নেতা সুলতান মনসুর ও মোকাব্বির খান। ধানের শীষ প্রতীকে নির্বাচন করে জয়ী হওয়া সুলতান মনসুর গত ৭ মার্চ শপথ নিয়ে এরই মধ্যে সংসদ অধিবেশনে যোগ দিয়েছেন। ওই সময় মোকাব্বিরও শপথ নেবেন বলে জানানো হলেও শেষ পর্যন্ত তখন পিছু হটেন তিনি।