যুক্তরাষ্ট্রে অভিবাসন দমন অভিযান, নর্থ ক্যারোলাইনায় গ্রেফতার শুরু
- আপডেট সময় : ০৫:১৪:২০ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৬ নভেম্বর ২০২৫
- / 68
মার্কিন ফেডারেল কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, নর্থ ক্যারোলাইনার বৃহত্তম শহর শার্লটে অভিবাসন দমন অভিযান চলছে। শহরের বিভিন্ন এলাকায় বহু মানুষকে গ্রেফতার করতে দেখা গেছে।
শনিবার (১৫ নভেম্বর) এক বিবৃতিতে ডিপার্টমেন্ট অব হোমল্যান্ড সিকিউরিটির সহকারী সচিব ট্রিশিয়া ম্যাকলাফলিন জানান, ট্রাম্প প্রশাসন নথিহীন অভিবাসীদের সঙ্গে জড়িত অপরাধ ঠেকাতে শার্লটে কর্মকর্তাদের মোতায়েন করছে। এই তথ্য কাতারভিত্তিক গণমাধ্যম আল জাজিরার প্রতিবেদনে এসেছে।
তিনি বলেন, “আমেরিকানরা যেন সহিংস অপরাধী, অবৈধ বিদেশিদের কারণে নিজেদের, তাদের পরিবার বা তাদের প্রতিবেশীদের ক্ষতির ভয়ে না থাকে।”
আরও বলেন, “আমরা শার্লটে হোমল্যান্ড সিকিউরিটির আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী পাঠাচ্ছি, যাতে আমেরিকানরা নিরাপদ থাকে এবং জননিরাপত্তার জন্য হুমকিস্বরূপ ব্যক্তিদের অপসারণ করা যায়।”
শার্লটে চলমান এই অভিযানটি ডেমোক্র্যাট-নেতৃত্বাধীন শহরগুলোতে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসনের সর্বশেষ অভিবাসন দমন উদ্যোগ।
শার্লটের মেয়র ভি লাইয়েলসসহ অন্য কর্মকর্তারা এসব পদক্ষেপের তীব্র সমালোচনা করে বলেছেন, অভিযানের কারণে অপ্রয়োজনীয় ভয় ও অনিশ্চয়তা তৈরি হচ্ছে।
কাউন্টি কমিশনার মার্ক জেরেল এবং শার্লট-মেকলেনবুর্গ শিক্ষা বোর্ডের সদস্য স্টেফানি স্নিডসহ সই করা এক বিবৃতিতে আরও বলা হয়, আমরা চাই শার্লট ও মেকলেনবুর্গ কাউন্টির মানুষ জানুক—আমরা সব বাসিন্দার পাশে আছি, যারা শুধু তাদের স্বাভাবিক জীবনযাপন চালিয়ে যেতে চায়।
সাম্প্রতিক মাসগুলোতে রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প শিকাগো, লস অ্যাঞ্জেলেস এবং ওয়াশিংটন ডিসির মতো শহরে বড় আকারের অভিযান পরিচালনার নির্দেশ দিয়েছেন।
স্থানীয় তথ্য অনুযায়ী, শার্লট একটি বর্ণগতভাবে বৈচিত্র্যময় শহর, যেখানে ৯ লাখের বেশি মানুষের বাস—যাদের মধ্যে ১ লাখ ৫০ হাজারেরও বেশি বিদেশে জন্মগ্রহণকারী।
২০২৪ সালের একই সময়ের তুলনায় এ বছরের আগস্ট পর্যন্ত শহরে অপরাধের হার কমেছে। তবে আগস্টে শার্লটের লাইট-রেল ট্রেনে ইউক্রেনীয় শরণার্থী ইরিনা জারুত্সকার হত্যাকাণ্ডকে কেন্দ্র করে ট্রাম্প প্রশাসন দাবি করে আসছে—ডেমোক্র্যাট নিয়ন্ত্রিত শহরগুলো বাসিন্দাদের সুরক্ষায় ব্যর্থ হয়েছে।
বাসিন্দাদের অনেকে জানিয়েছেন, শুক্রবার থেকে কাস্টমস অ্যান্ড বর্ডার প্রোটেকশন এবং ইমিগ্রেশন অ্যান্ড কাস্টমস এনফোর্সমেন্ট (আইসিই) কর্মকর্তাদের টহল ও গ্রেফতার কার্যক্রম স্পষ্টভাবে বেড়েছে।
ট্রাম্প প্রশাসনের দাবি, লস অ্যাঞ্জেলেস ও শিকাগোর মতো শহরে ফেডারেল অভিযান অপরাধ নিয়ন্ত্রণ ও অভিবাসন আইন বাস্তবায়নের জন্য জরুরি। তবে লাখো অভিবাসীকে বহিষ্কারের এই প্রচেষ্টার বিরুদ্ধে অধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ উঠেছে এবং একাধিক মামলা হয়েছে।
নর্থ ক্যারোলাইনার গভর্নর জশ স্টাইন—যিনি ডেমোক্র্যাট—বলেন, এই অভিযানে আটক হওয়া অধিকাংশ মানুষের কোনো অপরাধের রেকর্ড নেই, এমনকি কেউ কেউ মার্কিন নাগরিকও।
শার্লটের কর্মকর্তারা জানান, অভিযানের ভয়ে কিছু ব্যবসা সাময়িকভাবে বন্ধ হয়ে গেছে।
কমিউনিটি ডেভেলপমেন্ট গ্রুপ শার্লটইস্ট-এর নির্বাহী পরিচালক গ্রেগ আসিয়ুট্টো এপিকে পাঠানো ইমেইলে জানিয়েছেন, তাদের এলাকায় বহু ব্যবসা বন্ধ ছিল এবং কতদিন এই পরিস্থিতি চলবে তা অনিশ্চিত হওয়ায় কীভাবে তাদের সহায়তা করা যায় তা নিয়ে ভাবতে হচ্ছে।
শার্লটের পূর্বাঞ্চলে সিটি কাউন্সিল সদস্য জেডি মাজুয়েরা আরিয়াস বলেন, এটি শুধু অভিবাসীদের নয়, মার্কিন নাগরিকদের সাংবিধানিক অধিকারেরও গুরুতর লঙ্ঘন।


















