একক ভিসায় সৌদিসহ ছয় দেশ ভ্রমণ, চালু হচ্ছে আগামী বছর
- আপডেট সময় : ১০:১২:০০ অপরাহ্ন, শনিবার, ৮ নভেম্বর ২০২৫
- / 96
দীর্ঘ পরিকল্পনার পর অবশেষে উপসাগরীয় সহযোগিতা পরিষদ (জিসিসি) চালু করতে যাচ্ছে বহুল প্রতীক্ষিত একক পর্যটন ভিসা। আগামী বছর থেকেই এই ভিসা কার্যকর হবে বলে জানিয়েছেন সৌদি আরবের পর্যটনমন্ত্রী আহমেদ আল-খাতিব।
তিনি জানান, চার বছরের সমন্বিত উদ্যোগের ফল এটি। উপসাগরীয় দেশগুলোর পর্যটন ও ভ্রমণ খাতকে সংযুক্ত করার সবচেয়ে বড় পদক্ষেপগুলোর একটি হিসেবে তিনি এই একক ভিসা প্রকল্পকে উল্লেখ করেন।
বাহরাইনের রাজধানী মানামায় গালফ গেটওয়ে ইনভেস্টমেন্ট ফোরামে দেওয়া বক্তৃতায় সৌদির পর্যটনমন্ত্রী আল-খাতিব বলেন, পর্যটন খাতে জিসিসি এখন এক ঐতিহাসিক সম্প্রসারণের দিকে এগোচ্ছে। আঞ্চলিক সমৃদ্ধ সংস্কৃতি, আধুনিক অবকাঠামো এবং নিরাপদ পরিবেশ এই অগ্রগতিকে সম্ভব করেছে।
তিনি বলেন, “জিসিসি দেশগুলো পর্যটন খাতে এক ঐতিহাসিক রূপান্তরের সাক্ষী হচ্ছে; যেখানে বর্তমানে তেল ও বাণিজ্যের পাশাপাশি এক গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক স্তম্ভে পরিণত হয়েছে পর্যটন খাত।”
এই একক প্রবেশাধিকার ভিসার আনুষ্ঠানিক নাম হবে ‘জিসিসি গ্র্যান্ড ট্যুরস ভিসা’। এর মাধ্যমে একবার আবেদন করেই ভ্রমণকারীরা সংযুক্ত আরব আমিরাত, সৌদি আরব, কাতার, বাহরাইন, কুয়েত ও ওমান সফর করতে পারবেন।
২০২৩ সালের নভেম্বরে ওমানে অনুষ্ঠিত জিসিসি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীদের বৈঠকে এই প্রকল্পের অনুমোদন দেওয়া হয়। সে সময় ইউরোপীয় ইউনিয়নের শেনজেন ভিসার মতো যৌথ মডেলে এই ভিসা চালুর পরিকল্পনা করা হয়।
জিসিসি কর্মকর্তাদের মতে, উপসাগরীয় অঞ্চলের অর্থনৈতিক বৈচিত্র্য পরিকল্পনার মূল উপাদান হবে এই ভিসা। এতে এমন পর্যটকরা উপকৃত হবেন, যারা একাধিক দেশে ভ্রমণ করতে চান কিন্তু প্রতিবার আলাদা ভিসা, ভিন্ন নিয়ম ও বাড়তি কাগজপত্রের ঝামেলায় যেতে চান না। প্রাথমিকভাবে এটি পর্যটন ও পারিবারিক ভ্রমণের জন্য প্রযোজ্য হবে এবং আবেদন করা যাবে অনলাইনে।
ভ্রমণকারীরা চাইলে একটি দেশ বা ছয়টি দেশই বেছে নিতে পারবেন; যার মেয়াদ হতে পারে এক থেকে তিন মাস। এই ভিসা পৃথক ভিসার তুলনায় কম খরচসাপেক্ষ হবে বলেও আশা করা হচ্ছে।
ভিসা কার্যকর হলে আবেদনকারীদের পাসপোর্টের ন্যূনতম ছয় মাস মেয়াদ, আবাসনের তথ্য, পাসপোর্ট সাইজ ছবি, ভ্রমণ বিমা, আর্থিক সক্ষমতার প্রমাণ এবং ফেরার বা পরবর্তী ফ্লাইটের টিকিট জমা দিতে হবে। জিসিসি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, প্রক্রিয়াটি হবে সহজ—সরকারি অনলাইন পোর্টালে নথি আপলোড, ফি প্রদান এবং ই-মেইলে ডিজিটাল ভিসা পাওয়া যাবে।
আল-খাতিব বলেন, উপসাগরীয় অঞ্চলে বিমান যোগাযোগ দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে, যা সদস্য দেশগুলোর মধ্যে যাতায়াতের সম্ভাবনা আরও বাড়িয়ে দিচ্ছে। তিনি জানান, গত বছর উপসাগরীয় অঞ্চলের চারটি প্রধান এয়ারলাইনস প্রায় ১৫ কোটি যাত্রী পরিবহন করেছে। এর মধ্যে ৭ কোটি যাত্রী উপসাগরীয় দেশগুলোর মধ্যেই ভ্রমণ করেছেন। এটি দেখায় যে আভ্যন্তরীণ ভ্রমণে বড় সম্ভাবনা এখনো অব্যবহৃত রয়েছে।
উপসাগরীয় কয়েকটি দেশের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, জিসিসি একক ভিসা চালু হলে পর্যটকদের অবস্থানকাল বৃদ্ধি পাবে, তারা একাধিক শহরে ভ্রমণ করবেন এবং ব্যয় বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে পড়বে। আগামী কয়েক মাসের মধ্যে এ বিষয়ে আরও বিস্তারিত প্রকাশ করা হবে এবং আনুষ্ঠানিক চালুর আগে আবেদন পোর্টাল খুলে দেওয়া হবে।
সূত্র: গালফ নিউজ।

















