ঢাকার মিরপুরের রূপনগর এলাকায় একটি পোশাক কারখানা ও রাসায়নিকের গুদামে অগ্নিকাণ্ডে নয় জনের মৃত্যুর খবর দিয়েছে ফায়ার সার্ভিস।
মঙ্গলবার বিকেল ৪টার দিকে মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেন ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের মিডিয়া কর্মকর্তা তালহা বিন জসিম।
তিনি জানান, নিহতদের নাম-পরিচয় এখনো জানা যায়নি। তালহা বিন জসিম বলেন, “এ সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।”
অগ্নিকাণ্ডে দগ্ধ তিনজনকে জাতীয় বার্ন ইনস্টিটিউটে ভর্তি করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ইনস্টিটিউটের আবাসিক সার্জন ডা. শাওন বিন রহমান।
ফায়ার সার্ভিস জানায়, মঙ্গলবার বেলা পৌনে ১২টার দিকে রূপনগরের শিয়ালবাড়ি এলাকার ‘কসমিক ফার্মা’ নামে একটি কেমিক্যাল গুদাম এবং পাশের পোশাক কারখানায় আগুন লাগে।
পরে ফায়ার সার্ভিসের ১২টি ইউনিট ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা শুরু করে। তবে বিকাল সোয়া ৪টা পর্যন্ত আগুন পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়নি।
ফায়ার সার্ভিসের পরিচালক (অপারেশন ও মেইনটেন্যান্স) লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম চৌধুরী ঘটনাস্থলে সাংবাদিকদের বলেন, “আমাদের সদস্যরা গিয়ে দুই প্রতিষ্ঠানে একসঙ্গে আগুন দেখতে পান। কেমিক্যাল গুদাম থেকে নাকি গার্মেন্টস থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়েছে, সেটা এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি।”
তিনি আরও বলেন, “এ পর্যন্ত নয়টি লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। তবে সার্চিং অপারেশন এখনো চলছে। অপারেশন শেষ হলে বিস্তারিত জানা যাবে।”
তিনি জানান, পোশাক কারখানার দ্বিতীয় ও তৃতীয় তলা থেকে লাশগুলো উদ্ধার করা হয়েছে।
নিহতদের লাশ শনাক্ত করা কঠিন বলে উল্লেখ করে তাজুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, “নিহতরা নারী না পুরুষ বোঝা যাচ্ছে না। তারা স্তূপ আকারে ছিল।”
তিনি আরও জানান, “পোশাক কারখানায় আগুন নেই, কিন্তু ধোঁয়া আছে; আর রাসায়নিকের গুদামে এখনো আগুন জ্বলছে। এটা আসলে খুব রিস্কি জায়গা। সেখানে কাউকে প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হয়নি— এমনকি ফায়ার ফাইটারদেরও না।”
আগুন নিয়ন্ত্রণে ড্রোনসহ বিভিন্ন প্রযুক্তি ব্যবহার করা হচ্ছে বলে জানান তিনি।
দায়িত্বরত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের কমপক্ষে ৩০০ গজ দূরত্ব বজায় রাখতে অনুরোধ করেন তিনি।
কারখানার মালিক বা কর্মচারীদের সঙ্গে যোগাযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে তাজুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, “যতটুকু জেনেছি, এটা আলম কেমিকেল ফ্যাক্টরি নামে পরিচিত। কিন্তু মালিকের কোনো মোবাইল নম্বর বা কর্মচারী, ম্যানেজার— কাউকেই পাওয়া যাচ্ছে না। পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা চেষ্টা করছেন, কিন্তু কাউকে পাওয়া যাচ্ছে না। আমরা গার্মেন্টস অফিসে এখন পর্যন্ত নয়জনের লাশ পেয়েছি।”
রাসায়নিকের গুদামের অনুমোদন ছিল কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, “অনুমোদনের বিষয়টি এখনো জানা যায়নি। যতটুকু শুনেছি, অনুমোদন ছিল না। যাচাই ও তদন্ত শেষে নিশ্চিতভাবে বলা যাবে।”

















