ঢাকা ০৫:৫৩ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ০৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ২১ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :

ফ্রান্সে বিয়ানীবাজারের কালাইউরা প্রবাসীদের মিলনমেলা
প্রবাসে শিকড়ের টান:

৫২ বাংলা
  • আপডেট সময় : ০৬:২৩:২২ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১ অক্টোবর ২০২৫
  • / 500
অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

প্রবাসী অধ্যুষিত সিলেটের বিয়ানীবাজার উপজেলার মানুষ ছড়িয়ে আছেন বিশ্বের নানা প্রান্তে। শিকড়ের টানেই দেশ ও গ্রামের বন্ধন অটুট রাখতে প্রবাসীরা নিয়ে থাকেন নানা উদ্যোগ আর আয়োজন । তবে এবার ব্যতিক্রমী এক উদ্যোগ নিলেন উপজেলার  কমলা-আনারস  খ্যাত ঐতিহ্যবাহী  বৃহত্তর জলঢুপের কালাইউরা গ্রামের যুক্তরাজ্য  প্রবাসীরা।

ফ্রান্সে বসবাসরত নিজ গ্রামের প্রবাসীদের সাথে দেখা করতে যুক্তরাজ্য  থেকে একসাথে আসেন ১৮ জনের এক বড় বহর।

২৮ সেপ্টেম্বর রবিবার সন্ধ্যায় ফ্রান্সের কালাইউরা একতা ফাউন্ডেশনের আয়োজনে শিল্প-সাহিত্যের নগরী প্যারিসের অদূরে লার্কনব বিএন্ডবি হলরুমে আয়োজন করা হয় বিশেষ অনুষ্ঠান। যা  রূপ নেয় এক আবেগঘন মিলনমেলায়। দীর্ঘদিন পর পরিচিত মুখগুলোর দেখা আর আলাপ-আড্ডায় সেখানে তৈরি হয় স্মৃতিময় এক পরিবেশ।

একতা ফাউন্ডেশনের সভাপতি আহমদ হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে  প্রধান অতিথি ছিলেন লন্ডন থেকে আগত গ্রামের প্রবীণ মুরব্বি বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর  অবসরপ্রাপ্ত ফ্লাইট সার্জেন্ট  মো. ফারুক উদ্দিন।

নির্বাহী সদস্য সাংবাদিক আবু তাহের রাজুর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে  শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন সাধারণ সম্পাদক হারুনুর রশিদ, সাংগঠনিক সম্পাদক ছাদেক আহমদ এবং অর্থ সম্পাদক কবীর আহমদ।

যুক্তরাজ্য থেকে আগত অতিথিদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বিশিষ্ট সংগঠক আব্দুল মোনায়েম, লন্ডন বাংলা প্রেস ক্লাবের সদস্য, চ্যালেন এস এর সাউথ ইস্ট প্রতিনিধি  সাংবাদিক ফয়ছল আহমদ রুহেল, ব্যবসায়ী সাহেদুজ্জামান, সমাজকর্মী ও সংগঠক তারিকুল ইসলাম, আজিম উদ্দিন, উস্তার উদ্দিন, আব্দুল হক, আব্দুল আহাদ, নজরুল ইসলাম, কয়েছ উদ্দিন, নজরুল ইসলাম (২), ফয়ছল খান, সাহেদ আহমদ, মামুন খান, আব্দুল মান্নান খোকন, জবরুল হক এবং আল আমিন প্রমুখ।

অনুষ্ঠানে একতা ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে সমাজসেবা ও এলাকার সার্বিক উন্নয়নে ভূমিকা রাখায় কালাইউরা ওয়েলফেয়ার ট্রাষ্ট ইউকে, মানবকল্যান সমিতি ইউকে এবং অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষকদের নিয়ে কাজ করা সংগঠন টি আলী স্যার ফাউন্ডেশনকে বিশেষ সম্মাননা প্রদান করা হয়। সংগঠনের পক্ষ থেকে ওয়েলফেয়ার ট্রাষ্টের ফারুক উদ্দিন, মানব কল্যানের আব্দুল মোনায়েম ও ফাউন্ডেশনের পক্ষে ফয়ছল আহমদ রুহেল এই সম্মাননা স্মারক গ্রহন করেন।

অনুষ্ঠানে ছিল শিকড়ভূমি কালাইউরা গ্রাম নিয়ে স্মৃতিচারণ, একে অপরকে শুভেচ্ছা জানানো এবং প্রীতিভোজ।

অতিথিদের বিশেষ উপহার হিসেবে প্রদান করা হয় গ্রামের স্কুল, মসজিদ ও খেলার মাঠের ছবি সম্বলিত ফ্রেম। যেখানে গ্রামের প্রবাসীদের  মন পড়ে থাকে সিংহভাগ সময়।

অতিথিরা জানান, এই আয়োজন শুধু পুরনো সম্পর্কের বন্ধনকে পুনরুজ্জীবিত করে থেমে থাকেনি, বরং গ্রামমুখী উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের অনুপ্রেরণাও জুগিয়েছে। পাশাপাশি  বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে থাকা গ্রামের নবীন-প্রবীণদের মধ্যে তৈরী করেছে ঐক্যের ব্রিজ। যা আগামীতে ঐতিহ্যবাহি কালাইউরা গ্রামকে আরও আলোকিত করতে অগ্রণী ভূমিকা রাখবে।

অতিথিদের অভিবাদন জানিয়ে বক্তব্য দেন একতা ফাউন্ডেশনের উপদেষ্টা শামিম উদ্দিন, খলিল উদ্দিন, খয়রুল ইসলাম, জয়নাল হোসেনসহ অনেকে।

অনুষ্ঠানে ফাউন্ডেশনের স্বপ্নদ্রষ্টা ও প্রতিষ্ঠাতা প্রধান উপদেষ্টা মরহুম পারভেজ আহমদের রুহের মাগফিরাত কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করা হয়।

স্মৃতিচারণ, আবেগ আর শিকড়ের বন্ধনে ভরপুর এই মিলনমেলা প্রবাস জীবনের ব্যস্ততার মাঝে এনেছিল  গ্রামবাংলার মাটির গন্ধ, মায়া ও আত্মার উষ্ণতা ।

আগামীতে আরও কোন একদিন এভাবে মিলিত হওয়ার প্রত্যাশা নিয়ে মধ্যরাতে  গ্রামের প্রবাসী স্বজনদের নিজ নিজ ঘরে ফেরার সময়ে, যেন সবার  মনে  ছিল অভিন্ন অনুভূতি- ‘আবার কবে দেখা ….’।

নিউজটি শেয়ার করুন

ফ্রান্সে বিয়ানীবাজারের কালাইউরা প্রবাসীদের মিলনমেলা
প্রবাসে শিকড়ের টান:

আপডেট সময় : ০৬:২৩:২২ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১ অক্টোবর ২০২৫

প্রবাসী অধ্যুষিত সিলেটের বিয়ানীবাজার উপজেলার মানুষ ছড়িয়ে আছেন বিশ্বের নানা প্রান্তে। শিকড়ের টানেই দেশ ও গ্রামের বন্ধন অটুট রাখতে প্রবাসীরা নিয়ে থাকেন নানা উদ্যোগ আর আয়োজন । তবে এবার ব্যতিক্রমী এক উদ্যোগ নিলেন উপজেলার  কমলা-আনারস  খ্যাত ঐতিহ্যবাহী  বৃহত্তর জলঢুপের কালাইউরা গ্রামের যুক্তরাজ্য  প্রবাসীরা।

ফ্রান্সে বসবাসরত নিজ গ্রামের প্রবাসীদের সাথে দেখা করতে যুক্তরাজ্য  থেকে একসাথে আসেন ১৮ জনের এক বড় বহর।

২৮ সেপ্টেম্বর রবিবার সন্ধ্যায় ফ্রান্সের কালাইউরা একতা ফাউন্ডেশনের আয়োজনে শিল্প-সাহিত্যের নগরী প্যারিসের অদূরে লার্কনব বিএন্ডবি হলরুমে আয়োজন করা হয় বিশেষ অনুষ্ঠান। যা  রূপ নেয় এক আবেগঘন মিলনমেলায়। দীর্ঘদিন পর পরিচিত মুখগুলোর দেখা আর আলাপ-আড্ডায় সেখানে তৈরি হয় স্মৃতিময় এক পরিবেশ।

একতা ফাউন্ডেশনের সভাপতি আহমদ হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে  প্রধান অতিথি ছিলেন লন্ডন থেকে আগত গ্রামের প্রবীণ মুরব্বি বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর  অবসরপ্রাপ্ত ফ্লাইট সার্জেন্ট  মো. ফারুক উদ্দিন।

নির্বাহী সদস্য সাংবাদিক আবু তাহের রাজুর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে  শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন সাধারণ সম্পাদক হারুনুর রশিদ, সাংগঠনিক সম্পাদক ছাদেক আহমদ এবং অর্থ সম্পাদক কবীর আহমদ।

যুক্তরাজ্য থেকে আগত অতিথিদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বিশিষ্ট সংগঠক আব্দুল মোনায়েম, লন্ডন বাংলা প্রেস ক্লাবের সদস্য, চ্যালেন এস এর সাউথ ইস্ট প্রতিনিধি  সাংবাদিক ফয়ছল আহমদ রুহেল, ব্যবসায়ী সাহেদুজ্জামান, সমাজকর্মী ও সংগঠক তারিকুল ইসলাম, আজিম উদ্দিন, উস্তার উদ্দিন, আব্দুল হক, আব্দুল আহাদ, নজরুল ইসলাম, কয়েছ উদ্দিন, নজরুল ইসলাম (২), ফয়ছল খান, সাহেদ আহমদ, মামুন খান, আব্দুল মান্নান খোকন, জবরুল হক এবং আল আমিন প্রমুখ।

অনুষ্ঠানে একতা ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে সমাজসেবা ও এলাকার সার্বিক উন্নয়নে ভূমিকা রাখায় কালাইউরা ওয়েলফেয়ার ট্রাষ্ট ইউকে, মানবকল্যান সমিতি ইউকে এবং অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষকদের নিয়ে কাজ করা সংগঠন টি আলী স্যার ফাউন্ডেশনকে বিশেষ সম্মাননা প্রদান করা হয়। সংগঠনের পক্ষ থেকে ওয়েলফেয়ার ট্রাষ্টের ফারুক উদ্দিন, মানব কল্যানের আব্দুল মোনায়েম ও ফাউন্ডেশনের পক্ষে ফয়ছল আহমদ রুহেল এই সম্মাননা স্মারক গ্রহন করেন।

অনুষ্ঠানে ছিল শিকড়ভূমি কালাইউরা গ্রাম নিয়ে স্মৃতিচারণ, একে অপরকে শুভেচ্ছা জানানো এবং প্রীতিভোজ।

অতিথিদের বিশেষ উপহার হিসেবে প্রদান করা হয় গ্রামের স্কুল, মসজিদ ও খেলার মাঠের ছবি সম্বলিত ফ্রেম। যেখানে গ্রামের প্রবাসীদের  মন পড়ে থাকে সিংহভাগ সময়।

অতিথিরা জানান, এই আয়োজন শুধু পুরনো সম্পর্কের বন্ধনকে পুনরুজ্জীবিত করে থেমে থাকেনি, বরং গ্রামমুখী উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের অনুপ্রেরণাও জুগিয়েছে। পাশাপাশি  বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে থাকা গ্রামের নবীন-প্রবীণদের মধ্যে তৈরী করেছে ঐক্যের ব্রিজ। যা আগামীতে ঐতিহ্যবাহি কালাইউরা গ্রামকে আরও আলোকিত করতে অগ্রণী ভূমিকা রাখবে।

অতিথিদের অভিবাদন জানিয়ে বক্তব্য দেন একতা ফাউন্ডেশনের উপদেষ্টা শামিম উদ্দিন, খলিল উদ্দিন, খয়রুল ইসলাম, জয়নাল হোসেনসহ অনেকে।

অনুষ্ঠানে ফাউন্ডেশনের স্বপ্নদ্রষ্টা ও প্রতিষ্ঠাতা প্রধান উপদেষ্টা মরহুম পারভেজ আহমদের রুহের মাগফিরাত কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করা হয়।

স্মৃতিচারণ, আবেগ আর শিকড়ের বন্ধনে ভরপুর এই মিলনমেলা প্রবাস জীবনের ব্যস্ততার মাঝে এনেছিল  গ্রামবাংলার মাটির গন্ধ, মায়া ও আত্মার উষ্ণতা ।

আগামীতে আরও কোন একদিন এভাবে মিলিত হওয়ার প্রত্যাশা নিয়ে মধ্যরাতে  গ্রামের প্রবাসী স্বজনদের নিজ নিজ ঘরে ফেরার সময়ে, যেন সবার  মনে  ছিল অভিন্ন অনুভূতি- ‘আবার কবে দেখা ….’।