ঢাকা ০৬:৪৫ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ০৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ২১ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :

সুফল মিললেও মেট্রোরেলের বাকি সব রুট অনিশ্চিত
২০৩০ সালের মধ্যে ৬টি লাইন চালুর পরিকল্পনা ছিল

৫২ বাংলা
  • আপডেট সময় : ০১:৪০:৫৫ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • / 144

ঢাকার মেট্রোরেল পরিকল্পনা

অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

২০২৬ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে বিমানবন্দর থেকে কমলাপুর পর্যন্ত মেট্রোরেল চালুর যে পরিকল্পনা ছিল, সেটি অন্তত পাঁচ বছর পিছিয়ে যাচ্ছে।

কমলাপুর থেকে নারায়ণগঞ্জ পর্যন্ত এমআরটি-৪ রুট চালুর লক্ষ্য ধরা হয়েছিল ২০৩০ সাল। কিন্তু প্রকল্পের কোনো কাজই এখনও শুরু হয়নি।

একইভাবে, সাভারের হেমায়েতপুর থেকে ভাটারা পর্যন্ত লাইন-৫ (উত্তর অংশ) চালুর কথা ছিল ২০২৮ সালের মধ্যে। কিন্তু এ কাজও আটকে আছে।

গাবতলী থেকে দাশেরকান্দি পর্যন্ত এমআরটি-৫ (দক্ষিণ রুট) নির্মাণ ব্যয় বেড়ে যাওয়ায় সরকার আপাতত প্রকল্পটি না এগোনোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে, যদিও কাজ শুরুর কথা ছিল গত বছরই।

পুরান ঢাকাকে সংযুক্ত করার জন্য এমআরটি-২ লাইন নির্মাণের যে পরিকল্পনা ছিল, সেটিও এখন আর আলোচনায় নেই।

সব মিলিয়ে ঢাকায় দ্বিতীয় মেট্রোরেল কবে বাস্তবায়ন হবে, তা নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে। ব্যয় বৃদ্ধি ও অর্থের যোগান নিশ্চিত করতে না পারাই এর প্রধান কারণ বলে কতৃপক্ষ দাবি করছে।

যানজটের শহরে উত্তরা থেকে মতিঝিল পর্যন্ত মেট্রোরেল চালুর পর নির্বিঘ্ন যাতায়াতের অভিজ্ঞতায় নগরের অন্যান্য অংশের মানুষও অপেক্ষায় আছে নতুন রুট চালুর জন্য।

২০২২ সালে চালু হওয়া এমআরটি লাইন-৬–এর মতো ২০৩০ সালের মধ্যে ঢাকাজুড়ে মোট ছয়টি লাইন চালুর লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছিল। কিন্তু বাড়তি ব্যয়, প্রত্যাশিত বিনিয়োগকারীর অভাব ও নানা জটিলতায় মেট্রোরেল প্রকল্পগুলো এখন থমকে আছে।

বর্তমানে ছয় প্রকল্পের মধ্যে পুরোপুরি কাজ চলছে শুধু এমআরটি লাইন-৬–এর বর্ধিত অংশে (মতিঝিল থেকে কমলাপুর)। এই অংশের কাজ প্রায় শেষের পথে।

আংশিকভাবে চালু আছে সাভারের হেমায়েতপুর থেকে ভাটারা পর্যন্ত লাইন-৫ উত্তর অংশের কাজ। হেমায়েতপুরে ডিপো নির্মাণের ৬৫ শতাংশ শেষ হয়েছে। ওই রুটে সাড়ে ১৩ কিলোমিটার পাতাল ও সাড়ে ৬ কিলোমিটার উড়াল রেলপথ থাকবে। এতে ৯টি পাতাল এবং ৫টি উড়াল স্টেশন নির্মাণ হবে।

ডিএমটিসিএল-এর এমডি ফারুক আহমেদ দাবি করেন, সব ঠিক থাকলে ২০২৮ সালে এ রুটে যাত্রী চলাচল শুরু হবে। অন্য রুটগুলোর প্রসঙ্গে তিনি বলেন, মেট্রোরেল লাইনএর সমীক্ষা শেষ হয়নি, আর মেট্রোরেল এর রুট এ্যালাইনমেন্টও চূড়ান্ত হয়নি।

সরকার কম খরচে বিনিয়োগকারী খোঁজার চেষ্টা করছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, আপনি কি চান না কম খরচে হোক? সবাই চায়, আমরাও চাই। আমাদের সব কাজ চলছে।

২০৩০ সালের মধ্যে ঢাকায় ছয়টি রুট চালুর সম্ভাবনা বিষয়ে তিনি বলেন, ওটা আগের সরকারের পরিকল্পনা ছিল। এখন আমাদের পরিকল্পনায় নেই। কিছুটা দেরি হবে।

অর্থসংকট বড় বাধা

মেট্রোরেল সূত্র জানায়, অর্থায়নের জটিলতায় লাইন-৫ (দক্ষিণ অংশ) নির্মাণ এগোচ্ছে না। সরকার ও এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক (এডিবি)—কোনো পক্ষই বিশাল ব্যয়ের এই প্রকল্পে আগ্রহ দেখাচ্ছে না।

সাড়ে সাত হাজার কোটি টাকা ব্যয় কমানোর প্রস্তাবও কাজে আসেনি। সংশোধিত প্রকল্প প্রস্তাব এখনো একনেক সভায় ওঠেনি।

ঢাকার গাবতলী থেকে আফতাবনগর হয়ে দাশেরকান্দি পর্যন্ত রুটের সম্ভাব্যতা যাচাই শেষ হয়েছে ২০২২ সালে। নকশা ও যাচাইয়ে খরচ হয়েছে ২০০ কোটি টাকা। পরিকল্পনা কমিশনের অনুমোদনের অপেক্ষায় ছিল প্রকল্পটি।

এই প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ৫৪ হাজার ৬১৯ কোটি টাকা। এর মধ্যে এডিবি ও কোরিয়ান এক্সিম ব্যাংক যৌথভাবে ৩৯ হাজার ১৩৮ কোটি টাকা ঋণ সহায়তা দেবে, আর বাকি ১৫ হাজার ৪৮১ কোটি টাকা আসবে সরকারের তহবিল থেকে।

প্রকল্পের সমীক্ষায় বলা হয়েছে, মেট্রোরেল চালু হলে বছরে ২১ কোটি ৪৯ লাখ কর্মঘণ্টা বাঁচবে, সাশ্রয় হবে ৪১ হাজার টন জ্বালানি, আর রাস্তায় নামবে না এক হাজারের বেশি গাড়ি।

প্রকল্প পরিচালক মোহাম্মদ আব্দুল ওহাব বলেন, কাজ শুরু করার সব প্রস্তুতি আছে। পরে শুরু করলে খরচ আরও বেড়ে যাবে, আগে ব্যয় করা ২০০ কোটি টাকাও নষ্ট হবে, ঋণের সুদও দিতে হবে। তবে বাস্তবায়ন হবে কিনা, সেটা সরকারের নীতিগত সিদ্ধান্ত।

মেট্রোরেলের ব্যয় কমানোর জন্য জাইকার সঙ্গে আলোচনা করতে ২৪ আগস্ট অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদের নেতৃত্বে প্রতিনিধি দল টোকিও সফরে যায়। জাপান সরকারের সঙ্গে বৈঠকেও ব্যয় কমানোর বিষয় ওঠে।

তবে জাইকা রাজি না হলে বিকল্প উৎস খোঁজার কথাও ভাবছে সরকার। এমআরটি-১ (বিমানবন্দর-কমলাপুর ও কুড়িল-পূর্বাচল) প্রকল্পে প্রাক্কলিত ব্যয় ছিল ৫২ হাজার ৫৬১ কোটি টাকা। কিন্তু জাপানি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের প্রস্তাব অনুযায়ী ব্যয় দাঁড়াবে প্রায় ৯৪ হাজার কোটি টাকা। প্রতি কিলোমিটারের খরচ হবে তিন হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়ে।

এমআরটি-১ প্রকল্পটি ১৪ ভাগে বাস্তবায়ন হচ্ছে। এর মধ্যে ডিপো উন্নয়ন কাজ এখন চলমান।

অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, সরকারের ঋণ বেড়েই চলেছে। শুরুতে ব্যয় ৪০ থেকে ৫০ শতাংশ বাড়ার কথা থাকলেও বাস্তবে বেড়েছে আরও বেশি। জাইকা ব্যয় না কমালে অন্য প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে প্রকল্প বাস্তবায়ন হতে পারে।

এমআরটি লাইন এখন আর আলোচনায় নেই

কমলাপুর থেকে নারায়ণগঞ্জ সংযোগের জন্য প্রস্তাবিত এমআরটি-৪ প্রকল্পটি সরকারের ভাবনাতেই নেই।

চলতি বছরের ১৭ ফেব্রুয়ারির এক আন্তঃমন্ত্রণালয় সভায় নারায়ণগঞ্জ-ঢাকা-জয়দেবপুর রুটে বৈদ্যুতিক কমিউটার ট্রেন চালুর উদ্যোগ নেওয়া হয়।

রেলওয়ে সূত্র বলছে, এই প্রকল্পে ব্যয় হবে ৩ হাজার ৩০০ কোটি টাকা। অথচ এমআরটি-৪–এর ব্যয় ধরা হয়েছিল প্রায় ৩০ হাজার কোটি টাকা। এরপর থেকেই আলোচনার বাইরে চলে যায় প্রকল্পটি।

বিশেষজ্ঞদের মত

যোগাযোগ প্রকৌশল বিশেষজ্ঞ ও বুয়েটের অধ্যাপক এম শামসুল হক বলেন, সময়ের সঙ্গে তাল মেলাতে হলে সঠিক সময়ে সঠিক কাজ করতে হবে। তা না হলে সমন্বিত যোগাযোগ ব্যবস্থা হবে না।

গণপরিবহন বিশেষজ্ঞ ও বুয়েটের অধ্যাপক হাদীউজ্জামান বলেন, মেট্রোরেল প্রকল্প বাদ দেওয়ার আগে এর লাভক্ষতি নগর যোগাযোগের প্রভাব যাচাই করা জরুরি।

নিউজটি শেয়ার করুন

সুফল মিললেও মেট্রোরেলের বাকি সব রুট অনিশ্চিত
২০৩০ সালের মধ্যে ৬টি লাইন চালুর পরিকল্পনা ছিল

আপডেট সময় : ০১:৪০:৫৫ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৫

২০২৬ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে বিমানবন্দর থেকে কমলাপুর পর্যন্ত মেট্রোরেল চালুর যে পরিকল্পনা ছিল, সেটি অন্তত পাঁচ বছর পিছিয়ে যাচ্ছে।

কমলাপুর থেকে নারায়ণগঞ্জ পর্যন্ত এমআরটি-৪ রুট চালুর লক্ষ্য ধরা হয়েছিল ২০৩০ সাল। কিন্তু প্রকল্পের কোনো কাজই এখনও শুরু হয়নি।

একইভাবে, সাভারের হেমায়েতপুর থেকে ভাটারা পর্যন্ত লাইন-৫ (উত্তর অংশ) চালুর কথা ছিল ২০২৮ সালের মধ্যে। কিন্তু এ কাজও আটকে আছে।

গাবতলী থেকে দাশেরকান্দি পর্যন্ত এমআরটি-৫ (দক্ষিণ রুট) নির্মাণ ব্যয় বেড়ে যাওয়ায় সরকার আপাতত প্রকল্পটি না এগোনোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে, যদিও কাজ শুরুর কথা ছিল গত বছরই।

পুরান ঢাকাকে সংযুক্ত করার জন্য এমআরটি-২ লাইন নির্মাণের যে পরিকল্পনা ছিল, সেটিও এখন আর আলোচনায় নেই।

সব মিলিয়ে ঢাকায় দ্বিতীয় মেট্রোরেল কবে বাস্তবায়ন হবে, তা নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে। ব্যয় বৃদ্ধি ও অর্থের যোগান নিশ্চিত করতে না পারাই এর প্রধান কারণ বলে কতৃপক্ষ দাবি করছে।

যানজটের শহরে উত্তরা থেকে মতিঝিল পর্যন্ত মেট্রোরেল চালুর পর নির্বিঘ্ন যাতায়াতের অভিজ্ঞতায় নগরের অন্যান্য অংশের মানুষও অপেক্ষায় আছে নতুন রুট চালুর জন্য।

২০২২ সালে চালু হওয়া এমআরটি লাইন-৬–এর মতো ২০৩০ সালের মধ্যে ঢাকাজুড়ে মোট ছয়টি লাইন চালুর লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছিল। কিন্তু বাড়তি ব্যয়, প্রত্যাশিত বিনিয়োগকারীর অভাব ও নানা জটিলতায় মেট্রোরেল প্রকল্পগুলো এখন থমকে আছে।

বর্তমানে ছয় প্রকল্পের মধ্যে পুরোপুরি কাজ চলছে শুধু এমআরটি লাইন-৬–এর বর্ধিত অংশে (মতিঝিল থেকে কমলাপুর)। এই অংশের কাজ প্রায় শেষের পথে।

আংশিকভাবে চালু আছে সাভারের হেমায়েতপুর থেকে ভাটারা পর্যন্ত লাইন-৫ উত্তর অংশের কাজ। হেমায়েতপুরে ডিপো নির্মাণের ৬৫ শতাংশ শেষ হয়েছে। ওই রুটে সাড়ে ১৩ কিলোমিটার পাতাল ও সাড়ে ৬ কিলোমিটার উড়াল রেলপথ থাকবে। এতে ৯টি পাতাল এবং ৫টি উড়াল স্টেশন নির্মাণ হবে।

ডিএমটিসিএল-এর এমডি ফারুক আহমেদ দাবি করেন, সব ঠিক থাকলে ২০২৮ সালে এ রুটে যাত্রী চলাচল শুরু হবে। অন্য রুটগুলোর প্রসঙ্গে তিনি বলেন, মেট্রোরেল লাইনএর সমীক্ষা শেষ হয়নি, আর মেট্রোরেল এর রুট এ্যালাইনমেন্টও চূড়ান্ত হয়নি।

সরকার কম খরচে বিনিয়োগকারী খোঁজার চেষ্টা করছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, আপনি কি চান না কম খরচে হোক? সবাই চায়, আমরাও চাই। আমাদের সব কাজ চলছে।

২০৩০ সালের মধ্যে ঢাকায় ছয়টি রুট চালুর সম্ভাবনা বিষয়ে তিনি বলেন, ওটা আগের সরকারের পরিকল্পনা ছিল। এখন আমাদের পরিকল্পনায় নেই। কিছুটা দেরি হবে।

অর্থসংকট বড় বাধা

মেট্রোরেল সূত্র জানায়, অর্থায়নের জটিলতায় লাইন-৫ (দক্ষিণ অংশ) নির্মাণ এগোচ্ছে না। সরকার ও এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক (এডিবি)—কোনো পক্ষই বিশাল ব্যয়ের এই প্রকল্পে আগ্রহ দেখাচ্ছে না।

সাড়ে সাত হাজার কোটি টাকা ব্যয় কমানোর প্রস্তাবও কাজে আসেনি। সংশোধিত প্রকল্প প্রস্তাব এখনো একনেক সভায় ওঠেনি।

ঢাকার গাবতলী থেকে আফতাবনগর হয়ে দাশেরকান্দি পর্যন্ত রুটের সম্ভাব্যতা যাচাই শেষ হয়েছে ২০২২ সালে। নকশা ও যাচাইয়ে খরচ হয়েছে ২০০ কোটি টাকা। পরিকল্পনা কমিশনের অনুমোদনের অপেক্ষায় ছিল প্রকল্পটি।

এই প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ৫৪ হাজার ৬১৯ কোটি টাকা। এর মধ্যে এডিবি ও কোরিয়ান এক্সিম ব্যাংক যৌথভাবে ৩৯ হাজার ১৩৮ কোটি টাকা ঋণ সহায়তা দেবে, আর বাকি ১৫ হাজার ৪৮১ কোটি টাকা আসবে সরকারের তহবিল থেকে।

প্রকল্পের সমীক্ষায় বলা হয়েছে, মেট্রোরেল চালু হলে বছরে ২১ কোটি ৪৯ লাখ কর্মঘণ্টা বাঁচবে, সাশ্রয় হবে ৪১ হাজার টন জ্বালানি, আর রাস্তায় নামবে না এক হাজারের বেশি গাড়ি।

প্রকল্প পরিচালক মোহাম্মদ আব্দুল ওহাব বলেন, কাজ শুরু করার সব প্রস্তুতি আছে। পরে শুরু করলে খরচ আরও বেড়ে যাবে, আগে ব্যয় করা ২০০ কোটি টাকাও নষ্ট হবে, ঋণের সুদও দিতে হবে। তবে বাস্তবায়ন হবে কিনা, সেটা সরকারের নীতিগত সিদ্ধান্ত।

মেট্রোরেলের ব্যয় কমানোর জন্য জাইকার সঙ্গে আলোচনা করতে ২৪ আগস্ট অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদের নেতৃত্বে প্রতিনিধি দল টোকিও সফরে যায়। জাপান সরকারের সঙ্গে বৈঠকেও ব্যয় কমানোর বিষয় ওঠে।

তবে জাইকা রাজি না হলে বিকল্প উৎস খোঁজার কথাও ভাবছে সরকার। এমআরটি-১ (বিমানবন্দর-কমলাপুর ও কুড়িল-পূর্বাচল) প্রকল্পে প্রাক্কলিত ব্যয় ছিল ৫২ হাজার ৫৬১ কোটি টাকা। কিন্তু জাপানি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের প্রস্তাব অনুযায়ী ব্যয় দাঁড়াবে প্রায় ৯৪ হাজার কোটি টাকা। প্রতি কিলোমিটারের খরচ হবে তিন হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়ে।

এমআরটি-১ প্রকল্পটি ১৪ ভাগে বাস্তবায়ন হচ্ছে। এর মধ্যে ডিপো উন্নয়ন কাজ এখন চলমান।

অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, সরকারের ঋণ বেড়েই চলেছে। শুরুতে ব্যয় ৪০ থেকে ৫০ শতাংশ বাড়ার কথা থাকলেও বাস্তবে বেড়েছে আরও বেশি। জাইকা ব্যয় না কমালে অন্য প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে প্রকল্প বাস্তবায়ন হতে পারে।

এমআরটি লাইন এখন আর আলোচনায় নেই

কমলাপুর থেকে নারায়ণগঞ্জ সংযোগের জন্য প্রস্তাবিত এমআরটি-৪ প্রকল্পটি সরকারের ভাবনাতেই নেই।

চলতি বছরের ১৭ ফেব্রুয়ারির এক আন্তঃমন্ত্রণালয় সভায় নারায়ণগঞ্জ-ঢাকা-জয়দেবপুর রুটে বৈদ্যুতিক কমিউটার ট্রেন চালুর উদ্যোগ নেওয়া হয়।

রেলওয়ে সূত্র বলছে, এই প্রকল্পে ব্যয় হবে ৩ হাজার ৩০০ কোটি টাকা। অথচ এমআরটি-৪–এর ব্যয় ধরা হয়েছিল প্রায় ৩০ হাজার কোটি টাকা। এরপর থেকেই আলোচনার বাইরে চলে যায় প্রকল্পটি।

বিশেষজ্ঞদের মত

যোগাযোগ প্রকৌশল বিশেষজ্ঞ ও বুয়েটের অধ্যাপক এম শামসুল হক বলেন, সময়ের সঙ্গে তাল মেলাতে হলে সঠিক সময়ে সঠিক কাজ করতে হবে। তা না হলে সমন্বিত যোগাযোগ ব্যবস্থা হবে না।

গণপরিবহন বিশেষজ্ঞ ও বুয়েটের অধ্যাপক হাদীউজ্জামান বলেন, মেট্রোরেল প্রকল্প বাদ দেওয়ার আগে এর লাভক্ষতি নগর যোগাযোগের প্রভাব যাচাই করা জরুরি।